সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আইয়াদ শরীফ
সম্মানিত মীলাদ শরীফ পাঠে অনন্য তাজদীদ মুবারক
, ০১ রবীউল আউওয়াল শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ০৮ রবি , ১৩৯২ শামসী সন , ০৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রি:, ২১ ভাদ্র , ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) শিক্ষামূলক জিজ্ঞাসা
সুওয়াল: রাজারবাগ শরীফ সিলসিলা ভুক্তদেরকে সম্মানিত মীলাদ শরীফ পাঠকালে ছলাত শরীফ বলার সময় নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক না বলে লক্বব মুবারক যথা রসূলিল্লাহ ও হাবীবিল্লাহ বলে থাকেন। আর অন্য যারা মীলাদ শরীফ পড়েন উনারা সরাসরি নাম মুবারক বলেন।
আবার সালাম পেশ করার সময় আপনারা আসসালামু আলাইকুম ইয়া রসূলাল্লাহ, আসসালামু আলাইকুম ইয়া নাবিয়্যাল্লাহ, আসসালামু আলাইকুম ইয়া হাবীবাল্লাহ বলেন। আর অন্যরা ইয়া নাবী সালামু আলাইকা, ইয়া রসূল সালামু আলাইকা, ইয়া হাবীব সালামু আলাইকা বলে থাকেন।
সম্মানিত মীলাদ শরীফ পাঠের উক্ত দুই নিয়মের মধ্যে কোন নিয়মটি উত্তম? দলীলসহ জানিয়ে বাধিত করবেন।
জাওয়াব: (১ম অংশ)
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
اِنَّ اللهَ يَبْعَثُ لِـهٰذِ الْاُمَّةِ عَلٰى رَأْسِ كُلِّ مِأَةِ سَنَةٍ مَنْ يُّـجَدِّدُ لَـهَا دِيْنَهَا
অর্থ: নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি এই উম্মতের (হিদায়েতের) জন্য প্রত্যেক হিজরী শতকের মাথায় এমন একজন সুমহান ব্যক্তি উনাকে প্রেরণ করবেন যিনি সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার তাজদীদ করবেন। অর্থাৎ তিনিই হচ্ছেন যামানার সুমহান মুজাদ্দিদ। (আবূ দাউদ শরীফ, মিশকাত শরীফ)
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে অন্যত্র বর্ণিত হয়েছে-
مَنْ لَّـمْ يَعْرِفْ اِمَامَ زَمَانِهٖ فَقَدْ مَاتَ مَيْتَةَ الْـجَاهِلِيَّةِ
অর্থ: যে ব্যক্তি যামানার যিনি সম্মানিত ইমাম উনাকে চিনলো না, সে জাহিলী যুগের মৃতদের ন্যায় মৃত্যুবরণ করবে। অর্থাৎ তার মৃত্যু হিদায়েতের উপর হবে না। নাউযুবিল্লাহ! (মুসলিম শরীফ)
স্মরণীয় যে, হযরত তাবিয়ীনে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের যামানা বা যুগ থেকেই হযরত মুজাদ্দিদ আলাইহিমুস সালাম উনাদের আগমনের ধারা শুরু। যিনি প্রথম মুজাদ্দিদ তিনি হচ্ছেন হানাফী মাযহাবের যিনি সম্মানিত ইমাম, যিনি ইমামে আ’যম হিসেবে সারাবিশ্বে মশহূর। তিনি সম্মানিত তাবিয়ী ছিলেন। সুবহানাল্লাহ! উনার সময়কাল হচ্ছে দ্বিতীয় শতাব্দী। আর বর্তমান সময়কাল হচ্ছে পঞ্চদশ শতাব্দী। এ শতাব্দীকালে সুমহান মুজাদ্দিদ হচ্ছেন পবিত্র রাজারবাগ শরীফ উনার সম্মানিত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি। যিনি সম্মানিত আহলে বাইত ও আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অন্তর্ভুক্ত। সুবহানাল্লাহ!
কাজেই, বর্তমান যামানার যিনি সম্মানিত মুজাদ্দিদ তিনি বিগত সম্মানিত মুজাদ্দিদ আলাইহিমুস সালাম উনাদের বিলায়েত ও মুজাদ্দিদিয়াত উনার সত্যায়নকারী এবং তিনি সমসাময়িক সকল হক্কানী-রব্বানী আলিম এবং আউলিয়ায়ে কিরাম উনাদের মধ্যে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম তথা পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের সর্বশ্রেষ্ঠ ব্যাখ্যাদানকারী।
উল্লেখ্য, সাধারণত মুজাদ্দিদে আ’যম সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফ উনার সম্মানিত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার কোন ফতওয়া, কোন মাসয়ালা, কোন তাজদীদ, কোন আমল মুবারক অতীতের কোন সম্মানিত মুজাদ্দিদ আলাইহিমুস সালাম উনাদের ফতওয়া, মাসয়ালা, আমল বা তাজদীদ মুবারক উনার ব্যতিক্রম হওয়ার কথা নয়। তবে সম্মানিত মাযহাব ভেদে ব্যতিক্রম হতে পারে। কিন্তু একই মাযহাব হওয়া সত্ত্বে ব্যতিক্রম হলে বুঝতে হবে অতীতের সম্মানিত মুজাদ্দিদ আলাইহিমুস সালাম উনাদের ফতওয়া, মাসয়ালা, আমল ও তাজদীদ মুবারকসমূহের চূড়ান্ত বা পূর্ণাঙ্গরূপ হচ্ছে বর্তমান যামানার সম্মানিত মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার ফতওয়া, মাসয়ালা, তাজদীদ ও আমল মুবারকসমূহ। সুবহানাল্লাহ!
উদাহরণস্বরূপ হানাফী মাযহাবের অতীতের অনেক সম্মানিত ইমাম ও মুজতাহিদ উনারা ফতওয়া দিয়েছেন যে, মহিলাদের জন্য মসজিদে গিয়ে জামায়াতে নামায পড়া মাকরূহ তাহরীমী।
কিন্তু মুজাদ্দিদে আ’যম সাইয়্যিদুনা ইমামুল উমাম ইমাম রাজারবাগ শরীফ উনার সম্মানিত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি উক্ত ফতওয়ার চূড়ান্ত রূপ প্রকাশ করে ফতওয়া প্রকাশ করেছেন যে, মহিলাদের জন্য মসজিদে গিয়ে জামায়াতে নামায পড়া মাকরূহ তাজরীমী; এটা হচ্ছে আম ফতওয়া। কিন্তু খাছ বা মূল ফতওয়া হচ্ছে, মহিলাদের জন্য মসজিদে গিয়ে জামায়াতে নামায পড়া কুফরী। কেননা, মহিলারা মসজিদে গিয়ে জামায়াতে নামায পড়ার দ্বারা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছছালিছাহ ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত মতকে অমান্য করা হয়। অমান্য করা হয় হযরত খুলাফায়ে রাশিদীন আলাইহিমুস সালাম উনাদের দ্বিতীয় ব্যক্তিত্ব আমীরুল মু’মিনীন হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার আদেশ মুবারককে এবং অনুসরণীয় হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের ইজমায়ে আযীমতকে, যা প্রকাশ্য কুফরীর অন্তর্ভুক্ত।
তদ্রুপ আলোচ্য পবিত্র মীলাদ শরীফ পড়ার মাসয়ালার ক্ষেত্রেও তাই।
(মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ থেকে সংকলিত)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
প্রসঙ্গ: হজ্জের ফরজ আদায়ে হারাম ছবি তোলাকে সাময়িক বৈধতা প্রদান....
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সুন্নতী কদমবুছি বিষয়ে কওমী মুখপত্রের শরীয়তের খেলাফ বক্তব্যের খন্ডনমূলক জাওয়াব
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
কথিত ট্রান্সজেন্ডার বিষয়ে শরঈ ফতওয়া (১৪)
৩০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
প্রসঙ্গ: হজ্জের ফরজ আদায়ে হারাম ছবি তোলাকে সাময়িক বৈধতা প্রদান....
২৫ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হযরত আদম আলাইহিস সালাম ও হযরত হাওয়া আলাইহাস সালাম উনাদেরকে ‘নাফরমান’ বলা চরম বেয়াদবী ও কুফরী (৬)
২৪ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
হযরত আদম আলাইহিস সালাম ও হযরত হাওওয়া আলাইহাস সালাম উনাদেরকে ‘নাফরমান’ বলা চরম বেয়াদবী ও কুফরী (৫)
১৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
প্রসঙ্গ: পুরুষ-মহিলা নামায আদায়ের ছহীহ পদ্ধতি
১১ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হযরত আদম আলাইহিস সালাম ও হযরত হাওওয়া আলাইহাস সালাম উনাদেরকে ‘নাফরমান’ বলা চরম বেয়াদবী ও কুফরী (৪)
১০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
প্রসঙ্গ: পবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালন সম্পর্কে বাতিলদের মনগড়া বক্তব্য খন্ড
০৪ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হযরত আদম আলাইহিস সালাম ও হযরত হাওওয়া আলাইহাস সালাম উনাদেরকে ‘নাফরমান’ বলা চরম বেয়াদবী ও কুফরী (৩)
০৩ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
কথিত ট্রান্সজেন্ডার বিষয়ে শরঈ ফতওয়া (১০)
০২ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
প্রসঙ্গ: পবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালন সম্পর্কে বাতিলদের মনগড়া বক্তব্য খন্ডন
২৮ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)












