জীবনী মুবারক
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আল ঊলা আলাইহাস সালাম (৫)
বিলাদত শরীফ: হিজরত পূর্ব ৬৭ সন বিছাল শরীফ: ২৮ হিজরী (৬৫০ খ্রি:) বয়স মুবারক: ৯৫ বছর
, ০৮ জুমাদাল ঊখরা শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২৩ সাবি’ ১৩৯১ শামসী সন , ২২ ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রি:, ০৭ পৌষ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
(গতকালের পর)
পবিত্র নিসবাতুল আযীমাহ শরীফ:
অতঃপর সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আল ঊলা আলাইহাস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও হযরত উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা কুবরা আলাইহাস সালাম উনাদের সাথে অবস্থান করতে থাকেন। সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আল ঊলা আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, আমি উনাকে ছাড়িনি এবং তিনিও আমাকে ছাড়েননি। একদিন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আল ঊলা আলাইহাস সালাম উনাকে ডেকে বললেন, ইয়া উম্মাহ! (হে আমার মা!) আমি এখন বিবাহিত, কিন্তু আপনি এখনও অবিবাহিতা। আপনার কি ইচ্ছা হয়, কেউ যদি আপনার সাথে বিবাহের প্রস্তাব দেয়, তবে আপনি তা গ্রহণ করবেন? সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আল ঊলা আলাইহাস সালাম তিনি সম্মত হচ্ছিলেন না। কারণ পরে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ছেড়ে যেতে হয় কিনা? সেই চিন্তা করে তিনি প্রথমে রাজী হচ্ছিলেন না। পরবর্তীতে হযরত উবায়েদ ইবনুল হারেছ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু যিনি ছিলেন পবিত্র মদীনা শরীফের খাযরাজ গোত্রের ব্যক্তি উনার সাথে বিবাহের প্রস্তাব নিয়ে আসা হলো। অবশেষে হযরত উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা কুবরা আলাইহাস সালাম উনার মুবারক সম্মতিতে তিনি বিবাহের প্রস্তাবে রাজী হলেন। উনার এই সম্মানিত আহাল উনার ঘরে একজন সন্তান বিলাদত শরীফ গ্রহণ করেন। যাঁর নাম রেখেছিলেন “হযরত আয়মান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু”। আর এই জন্যেই সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আল ঊলা আলাইহাস সালাম উনাকে উম্মে আয়মান আলাইহাস সালাম বলে ডাকা হতো। উনার সন্তান হযরত আয়মান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি হিজরত করেছিলেন এবং জিহাদও করেছিলেন। তিনি হুনাইনের জিহাদে শহীদ হয়েছিলেন। (সিয়ারু আ’লামিন নুবালা)
পবিত্র দ্বীন ইসলাম গ্রহণ এবং হিজরত মুবারক:
শুরুতেই দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন বলে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আল ঊলা আলাইহাস সালাম উনাকে “আস-সাবিকূনাল-আউওয়ালূন” (প্রাথমিক মুসলমান) উনাদের মধ্যে গণ্য করা হয়। তিনি হাবশায় এবং পরে পবিত্র মদীনা শরীফে হিজরত করেন। পবিত্র মদীনা শরীফে হিজরতের ঘটনা বর্ণনা করতে গিয়ে তিনি নিজেই বলেন, পবিত্র মক্কা শরীফ হতে মদীনা শরীফের উদ্দেশ্যে বের হলাম। আমার কোন বাহন ও পাথেয় ছিল না। পবিত্র মদীনা শরীফের উপকন্ঠে মুনছারিফ নামক স্থানে উপস্থিত হলাম। ঐ দিন রোযা ছিলাম। ইফতারের সময় কোন পানি পেলাম না। পিপাসার কারণে পানি পানের খুব ইচ্ছা জাগলো। এমন সময় আকাশ হতে আমার শিয়রের কাছে একটি পানি ভরা বালতি নামতে দেখলাম। পরিতৃপ্তি সহকারে এই পানি পান করলাম। বালতিটি আকাশের দিকে উঠে গেল। ফল এই দাঁড়ায় যে, আমি জীবনে আর কখনও পিপাসার্থ হইনি। এমনকি প্রচ- গরমে দুপুরেও রোযা অবস্থায় আমার পিপাসা হয় না। (তবাকাত, হায়াতুছ ছাহাবা)
ফযীলত ও মর্যাদা:
পবিত্র উহুদ, খাইবার, হুনাইনসহ বিভিন্ন জিহাদে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে তিনি যোগদান করেছেন। তিনি সৈনিকগণকে পানি পান করাতেন এবং আহতদের শুশ্রুষা করতেন।
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনাকে অত্যন্ত সম্মান করতেন। উনাকে তিনি “উম্মাহ” (আমার মা) বলে সম্বোধন করতেন এবং বলতেন, আমার মাতা আলাইহাস সালাম উনার পর আপনিই আমার মাতা।
পবিত্র মদীনা শরীফের কাজী আবু বকর ইবনে হাজ্জ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সম্মুখে জনৈক ব্যক্তি তাচ্ছিল্য ভরে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আল ঊলা আলাইহাস সালাম উনার নাম মুবারক উল্লেখ করলে সেই কাজী ঐ ব্যক্তিকে শাস্তি হিসাবে সত্তরটি বেত্রাঘাত করে বলেছিলেন, স্বয়ং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যাঁকে মা বলে সম্বোধন করতেন, উনাকে তুমি নাম ধরে তাচ্ছিল্যভরে উল্লেখ করলে? তোমাকে ক্ষমা করলে মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাকে ক্ষমা করবেন না।
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি প্রায়ই সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আল ঊলা আলাইহাস সালাম উনার বাড়ীতে গিয়ে খোঁজ খবর নিতেন। (ইনশাআল্লাহ চলবে)
-আল্লামা সাঈদ আহমদ গজনবী।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া কবীরা গুনাহ
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হযরত আব্বাস ইবনে মিরদাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যাকাত সম্পর্কিত আহকাম, মাসায়িল ও ফাযায়িল (৪)
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
প্রাণীর ছবি তোলা হারাম ও নাফরমানীমূলক কাজ
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
অ্যান্টার্কটিকা নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় বিজ্ঞানীরা
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম (৪)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা অবশ্যই সত্যের মাপকাঠি; অস্বীকারকারীরা কাট্টা কাফির (১)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ উনাদের আলোকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দু‘আ বা মুনাজাত (১১তম অংশ)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)












