সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল আউওয়াল কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার কতিপয় কারামত মুবারক
, ১৭ রমাদ্বান শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২৯ আশির, ১৩৯১ শামসী সন , ২৮ মার্চ, ২০২৪ খ্রি:, ১৪ চৈত্র, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
(১) দু’জন লোককে তাদের পারস্পরিক বাক-বিতন্ডার পর হযরত ইমামুল আউওয়াল কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার নিকট আনা হয়েছিল। হযরত ইমামুল আউওয়াল কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি তখন এক প্রাচিরের পাদদেশে বসেছিলেন। এক ব্যক্তি হযরত ইমামুল আউওয়াল কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনাকে বলল: প্রাচিরটি পড়ে যেতে পারে। তিনি উত্তর দিলেন: যাও, মহান আল্লাহ পাক তিনি যথেষ্ট রক্ষাকর্তা। এরপর তিনি সেই দু’ ব্যক্তির সালিশ করে মিটমাট করে দিলেন এবং সেখান থেকে উঠে গেলেন। তিনি উঠে যাওয়ার পর পরই প্রাচিরটা সেখানেই ভেঙ্গে পড়ল।
(২) একবার যখন হযরত ইমামুল আউওয়াল কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি হাদীছ শরীফ বর্ণনা করছিলেন, তখন এক ব্যক্তি উনাকে মিথ্যা বর্ণনার অভিযোগে অভিযুক্ত করল। হযরত ইমামুল আউওয়াল কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি তখন বললেন: আমি যদি মিথ্যা বলে থাকি তাহলে তোমাকে অভিস¤পাত দিব? সে ব্যক্তি বলল: অভিস¤পাত দিন। তিনি তখন তাকে অভিস¤পাত দিলেন। অতঃপর উক্ত ব্যক্তি সে স্থান ত্যাগ করার পূর্বেই তার দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে গেল।
(৩) একজন ইহুদী হযরত ইমামুল আউওয়াল কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার নিকট গিয়ে উনাকে বলল: আমাদের মহান আল্লাহ পাক কখন থেকে আছেন? হযরত ইমামুল আউওয়াল কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার চেহারা মুবারক রাগে লাল হয়ে গেল এবং তিনি বললেন: “সৃষ্টি যখন হয়নি, তখনও তিনি ছিলেন। কোন প্রাণীর অস্তিত্ব যখন ছিল না, তখনও তিনি ছিলেন। কোন কারণ ছাড়া তিনি আছেন। উনার কোন আদি নেই ও অন্ত নেই। সকল সীমা উনার কাছে কম পড়ে, কারণ তিনি সকল অন্তের অন্ত। ” এ কথা শুনে ইহুদীটি ইসলাম গ্রহণ করল।
(৪) হযরত ইমামুল আউওয়াল কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি যখন ছিফ্ফিন অভিযান করেন, তিনি উনার একটি বর্মকোট হারিয়ে ফেলেন। বর্ম কোটটি এক ইহুদীর হাতে আসলে হযরত হযরত ইমামুল আউওয়াল কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি তাকে বললেন: বর্ম কোটটি আমার, আমি এটি বিক্রয় করিনি, বা কাউকে দানও করিনি। ইহুদী ব্যক্তিটি বলল: এটি আমার বর্মকোট এবং এটি আমার অধিকারে আছে। হযরত ইমামুল আউওয়াল কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি তাকে বললেন: চল, কাযীর কাছে যাই। হযরত ইমামুল আউওয়াল কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি ইহুদীটির আগে গিয়ে হযরত কাযী শুরাইহ্ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার পাশে বসে বললেন: আমার বিপক্ষ বক্তি যদি একজন ইহুদী না হত, তাহলে আমি অবশ্যই বিচারালয়ে তার সঙ্গে একই স্তরে আসন নিতাম। কিন্তু আমি মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বলতে শুনেছি: তাদের সঙ্গে অস¤মানজনক ব্যবহার করো। কারণ মহান আল্লাহ পাক তিনি তাদের সঙ্গে অস¤মানজনক ব্যবহার করেন। হযরত কাযী শুরাইহ্ রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেলন: হে আমীরুল মু’মিনীন, শুরু করুন। হযরত ইমামুল আউওয়াল কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি বললেন: হাঁ, এই বর্ম-কোট যা ইহুদী ব্যক্তির হাতে আছে ওটা আমার- আমি এটা বিক্রয় করিনি, কাউকে দানও করি নি। তখন হযরত কাযী শুরাইহ্ রহমতুল্লাহি আলাইহি বললেন: হে আমীরুল মু’মিনীন! আপনার কি কোন প্রমাণ আছে? হযরত ইমামুল আউওয়াল কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি বললেন: হাঁ, কানবার এবং আমার পুত্র হাসান সাক্ষী যে বর্ম-কোটটি আমার। হযরত কাযী শুরাইহ্ রহমতুল্লাহি আলাইহি উত্তর দিলেন: পিতার অনূকুলে পুত্রের সাক্ষ্য গ্রহণযোগ্য হবে না। হযরত ইমামুল আউওয়াল কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম বললেন: কি! জান্নাতবাসীদের একজনের সাক্ষ্য গ্রহণযোগ্য হবে না! আমি মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ইরশাদ মুবারক করতে শুনেছি:
اَلْحَسَنُ وَالْحُسَيْنُ سَيِّدَا شَبَابِ أَهْلِ الْجَنَّةِ
(অর্থ: হযরত হাসান আলাইহিস সালাম ও হযরত হুসাইন আলাইহিস সালাম জান্নাতী যুবকদের সর্দার)। ইহুদী বলল: আমীরুল মু’মিনীন আমাকে কাযীর সামনে এনেছেন, আর কাযী উনার বিরুদ্ধে রায় দিলেন। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, এই দ্বীন সত্য। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মহান আল্লাহ পাক তিনি ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই। আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল এবং এই বর্ম-কোট হল আপনার বর্ম-কোট। অর্থাৎ ইহুদী মুসলমান হয়ে গেল এবং বর্ম কোটটি ফেরত দিল। সুবহানাল্লাহ! (তারীখুল খুলাফা)
-আল্লামা সাঈদ আহমদ গজনবী।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
খরচ করার ব্যাপারে মহান আল্লাহ পাক উনার ফায়সালা
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (৫)
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মুসলমানদের সবচেয়ে বড় শত্রু কাফির-মুশরিকরা (১)
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ছবি তোলা হারাম, যা জাহান্নামী হওয়ার কারণ
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
বিজাতীয় বিধর্মী তথা ইহুদী-নাছারাদেরকে অনুসরণ করা ইসলামী শরীয়তে হারাম-নাজায়িয
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পবিত্র ‘ছলাতুল জুমুয়াহ’ উনার পূর্বে ৪ রাকায়াত সুন্নত নামায অর্থাৎ পবিত্র ‘ক্বাবলাল জুমুয়াহ’ নামায নিয়ে বাতিলপন্থিদের বিভ্রান্ত্রিকর ও মিথ্যা বক্তব্যের দলীলভিত্তিক জাওয়াব (৬)
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ইলিম অর্জন করার পর সে অনুযায়ী যে আমল করে না, তার তিনটি অবস্থার যে কোনো একটি হবেই-
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (৪)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ঢিলা-কুলুখের বিধান
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
বেপর্দা হওয়া শয়তানের ওয়াসওয়াসাকে সহজ করার মাধ্যম
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার)












