ইমামুল আইম্মাহ, ইমামুল মুসলিমীন, মুহ্ইউস সুন্নাহ, মুজাদ্দিদে মিল্লাত ওয়াদ দ্বীন,
সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মাক্বাম মুবারক
, ১৩ রমাদ্বান শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২৫ আশির, ১৩৯১ শামসী সন , ২৪ মার্চ, ২০২৪ খ্রি:, ১০ চৈত্র, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
ইমামুল মুহাদ্দিছীন, সিরাজুল উম্মাহ, ইমামুল আইম্মাহ, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণিত ‘উহাদিয়্যাত ও ‘ছুনাইয়্যাতকে তো আপনারা দেখে নিয়েছেন। ‘ছুলাছিয়্যাত’ উনার মধ্যেও এত বেশি ও অধিক পরিমাণে উনার রেওয়ায়েত বিদ্যমান রয়েছে, যার সঠিক গণনাও সীমিত করা অসম্ভব। যেই অধিক পরিমাণে উনার পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার উস্তাদগণ রয়েছেন, এর থেকে আরো অধিক পরিমাণে উনার ছাত্রগণ বিদ্যমান রয়েছেন। মুহাদ্দিছে জলীল হযরত আল্লামা ইবনে হাজার হাইছামী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ‘খাইরাতুল হিসান’ কিতাবে উল্লেখ করেছেন-
اِنَّ شُيُوْخَهٗ كَثِيْرُوْنَ لَايَسَعُ هٰذَا الْـمُخْتَصَرِ وَقَدْ ذَكَرَ مِنْهُمُ الْاِمَامُ اَبُوْ حَفْصِ الْكَبِيْرُ اَرْبَعَةَ اٰلَافِ شَيْخٍ وَقَالَ غَيْرُهٗ لَهٗ اَرْبَعَةُ اٰلَافِ شَيْخٍ مِّنَ التَّابِعِيْنَ فَمَا بَالُكَ بِغَيْرِهِمِ
অর্থ: “নিঃসন্দেহে হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার অসংখ্য উস্তাদ ছিলেন। এই সংক্ষিপ্ত পরিসরে তার বিস্তারিত আলোচনা অবকাশ নেই। হযরত ইমাম আবু হাফস আল কবীর রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার চার হাজার উস্তাদের কথা উল্লেখ করেছেন। আর অপর একজনের বর্ণনা যে, শুধু তাবিয়ীদের মধ্য হতে হযরত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার চার হাজার উস্তাদ ছিলেন। সুতরাং এতে অনুধাবন করা যায় যে, তাবিয়ীন ছাড়া উনার অন্যান্য উস্তাদ কত হতে পারে?
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম, হযরত তাবিয়ীনে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা হচ্ছেন ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার শায়েখ-মুর্শিদ ক্বিবলা তথা উস্তাদ:
ব্যক্তির মর্যাদা-মর্তবা ও শ্রেষ্ঠত্বের অন্যতম বহিঃপ্রকাশ শায়েখ বা মুর্শিদ ক্বিবলা তথা উস্তাদ। কার ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করেছেন, কার কাছ থেকে ইলিম হাছিল করেছেন আহলে ইলিমগণের নিকট তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও বিবেচ্য বিষয়। ইমামগণ উনাদের মধ্যে ইমামুল মুসলিমীন, ইমামুল মুহাদ্দিছীন, মুজাদ্দিদে মিল্লাত ওয়াদ দ্বীন সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি একমাত্র ব্যক্তিত্ব যিনি হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের পবিত্র ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করার সৌভাগ্য লাভ করেছেন। সুবহানাল্লাহ! হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা হচ্ছেন উনার সম্মানিত শায়েখ বা মুর্শিদ ক্বিবলা তথা উস্তাদ। উনাদের সম্পর্কে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
لاَ تَمَسُّ النَّارُ مُسْلِمًا رَاٰنِىْ أَوْ رَاٰى مَنْ رَاٰنِىْ
অর্থ: ঐ সকল মুসলমান উনাদেরকে (জাহান্নামের) আগুন স্পর্শ করবে না যারা আমাকে দেখেছেন অর্থাৎ হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম। আর যারা আমাকে দেখেছেন উনাদেরকে যারা দেখেছেন অর্থাৎ তাবিয়ীনে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম। (তিরমিযী শরীফ)
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
خَيْرُ أُمَّتِي قَرْنِيْ ثُمَّ الَّذِيْنَ يَلُوْنَهُمْ ثُمَّ الَّذِيْنَ يَلُوْنَهُمْ
অর্থ: আমার যুগই সর্বশ্রেষ্ঠ যুগ। অতঃপর হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের যুগ। তারপর হযরত তাবিয়ীনে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের যুগ। ”
ইমামুল মুসলিমীন, ইমামুল মুহাদ্দিছীন, মুজাদ্দিদে মিল্লাত ওয়াদ দ্বীন, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি খইরুল কুরূন তথা সর্বশ্রেষ্ঠ যুগ পেয়েছেন। আর উনার খুছূছিয়ত বা বৈশিষ্ট্য মুবারক ছিল যে, কোনো হাদীছ শরীফ উনার বিপরীতে ক্বিয়াস গ্রহণযোগ্য নয়। সে হাদীছ শরীফ যদি দ্বয়ীফও হয় কিংবা আছার তথা হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের কথা মুবারক, কাজ মুবারক ও সম্মতি মুবারক হোক না কেন।
অথচ ইমাম শাফিয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনিসহ অন্যান্য ইমামগণ উনারা দ্বয়ীফ হাদীছ শরীফ যদি ক্বিয়াসের খিলাফ বা বিপরীত হয় তাহলে ক্বিয়াসকে প্রাধান্য দেয়ার নীতি নির্ধারণ করেছেন।
তাছাড়া সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি সম্মানিত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের দশজন ইমাম উনাদের ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করার সৌভাগ্য লাভ করেছেন। উনাদের কাছ থেকে তা’লীম গ্রহণ করেছেন। আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের দশজন হচ্ছেন-
১। ইমামুল খ্বমিস সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম বাকির আলাইহিস সালাম।
২। ইমামুস সাদিস সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম জা’ফর ছাদিক আলাইহিস সালাম।
৩। ইমামুস সাবি’ সাইয়্যিদুনা হযরত মূসা কাযিম আলাইহিস সালাম।
৪। সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম যায়িদ ইবনে আলী যাইনুল আবিদীন আলাইহিস সালাম।
৫। সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আব্দুল্লাহ ইবনে আলী যাইনুল আবিদীন আলাইহিস সালাম।
৬। সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আব্দুল্লাহ ইবনে হাসান মুসান্না ইবনে হাসান মুজতাবা ইবনে ইমামুল আউওয়াল আলী আলাইহিমুস সালাম।
৭। সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম হাসান আল মুসাল্লাস ইবনে হাসান আল মুসান্না আলাইহিস সালাম।
৮। সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম হাসান বিন যায়িদ আলাইহিস সালাম।
৯। সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম হাসান ইবনে মুহম্মদ ইবনে হানাফিয়্যাহ আলাইহিস সালাম।
১০। সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম জা’ফর ইবনে তাম্মাম বিন আব্বাস আলাইহিস সালাম।
এছাড়াও বিশিষ্ট হযরত তাবিয়ীনে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের মধ্যে যারা সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনার সম্মানিত শায়েখ বা উস্তাদ ছিলেন উনাদের সংখ্যা চার হাজারেরও অধিক ছিলেন। সুবহানাল্লাহ! উনারা শুধু উস্তাদই ছিলেন না বরং সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে পেয়ে উনারা গৌরবান্বিত হয়েছিলেন। ফখর করেছেন, উনার প্রতি সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। কেউ কেউ একথা বলেছেন যে, হে ফুক্বাহায়ে কিরাম! আপনারা হচ্ছেন ডাক্তার আর আমরা মুহাদ্দিছগণ ঔষধ বিক্রেতা। আর হে ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি! আপনি উভয়ই। সুবহানাল্লাহ!
-০-
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
খরচ করার ব্যাপারে মহান আল্লাহ পাক উনার ফায়সালা
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (৫)
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মুসলমানদের সবচেয়ে বড় শত্রু কাফির-মুশরিকরা (১)
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ছবি তোলা হারাম, যা জাহান্নামী হওয়ার কারণ
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
বিজাতীয় বিধর্মী তথা ইহুদী-নাছারাদেরকে অনুসরণ করা ইসলামী শরীয়তে হারাম-নাজায়িয
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পবিত্র ‘ছলাতুল জুমুয়াহ’ উনার পূর্বে ৪ রাকায়াত সুন্নত নামায অর্থাৎ পবিত্র ‘ক্বাবলাল জুমুয়াহ’ নামায নিয়ে বাতিলপন্থিদের বিভ্রান্ত্রিকর ও মিথ্যা বক্তব্যের দলীলভিত্তিক জাওয়াব (৬)
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ইলিম অর্জন করার পর সে অনুযায়ী যে আমল করে না, তার তিনটি অবস্থার যে কোনো একটি হবেই-
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (৪)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ঢিলা-কুলুখের বিধান
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
বেপর্দা হওয়া শয়তানের ওয়াসওয়াসাকে সহজ করার মাধ্যম
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার)












