ইমামুল আইম্মাহ, মুহ্ইউস সুন্নাহ, মুজাদ্দিদে মিল্লাত ওয়াদ দ্বীন,
সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ইমামুল মুহাদ্দিছীন তথা মুহাদ্দিছগণ উনাদের ইমাম
, ১৬ রজবুল হারাম শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ৩১ সামিন, ১৩৯১ শামসী সন , ২৯ জানুয়ারি, ২০২৪ খ্রি:, ১৪ মাঘ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
حَضْرَتْ اَبُوْ حَنِيْفَةَ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ الْمِحْنَةُ مَنْ اَحَبَّ اَبَا حَنِيْفَةَ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ فَهُوَ سُنِّىُّ وَمَنْ اَبْغَضَ فَهُوَ مُبْتَدِعٌ
অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ছিলেন পরীক্ষার বস্তু। যারা উনাকে মুহব্বত করে তারা সুন্নী। আর যারা বিদ্বেষ পোষণ করে তারা বিদয়াতী।” (স্মারকগ্রন্থ-৩৬৪)
অর্থাৎ আহলে সুন্নত ওয়াল জামাআত উনাদের কেউই উনার প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করেননি এবং ভবিষ্যতেও করবেন না। তবে যারা চির বঞ্চিত, অভিশাপগ্রস্ত তারাই উনার বিরুদ্ধাচরণ করেছে, করছে এবং করবে। তিনি হচ্ছেন সত্য মিথ্যার পার্থক্যকারী। ভালো-মন্দ বিচারের মাপকাঠি। সুবহানাল্লাহ!
হযরত মিসওয়ার ইবনে মিকদাম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ইমামুল মুহাদ্দিছীন মুজাদ্দিদে মিল্লাত ওয়াদ দ্বীন সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার হাদীছ শরীফের জগতে গৌরবোজ্জ্বল অবস্থানের বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন-
طَلَبْتُ مَعَ اَبِىْ حَنِيْفَةَ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ الْحَدِيْثَ فَغَلَبَنَا وَاَخَذْنَا فِى الزُّهْدِ فَبَرِعَ عَلَيْنَا وَطَلَبْنَا مَعَهُ الْفِقْهَ فَجَاءَ مَا تَرَوْنَ
অর্থ: আমি সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সাথে পবিত্র হাদীছ শরীফ অন্বেষণ করেছি। কিন্তু তিনি আমার উপর গালিব বা প্রাধান্য লাভ করেছেন। যুহদ্ (দুনিয়া বিরাগী) এবং পরহেযগারীতেও তিনি আমার অগ্রগামী হয়েছেন। উনার সাথে ইলমে ফিক্বাহ অর্জন করেছি। কিন্তু আপনারা নিজেরাই উনার সফলতা চাক্ষুষ দেখতে পাচ্ছেন। (তালখীছ, স্মারকগ্রন্থ-৩৬১)
উল্লেখ্য যে, এই হযরত মিসওয়ার ইবনে মিকদাম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার ইমাম ছিলেন। উনার স্মরণশক্তি ও নির্ভরযোগ্যতার কারণে ইমাম শু’বা রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে মাছহাফ লক্ববে আখ্যায়িত করেছিলেন। হাফিয আবু মুহম্মদ রামহারমুজী রহমতুল্লাহি আলাইহি উছূলে হাদীছ শরীফের প্রথম দিকের সংকলন اَلْجَامِعُ الْفَاضِلُ কিতাবে উল্লেখ করেছেন যে, হযরত ইমাম শু’বা রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার এবং হযরত ইমাম সুফিয়ান ছাওরী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাদের মাঝে যখন কোনো হাদীছ শরীফের ব্যাপারে মতানৈক্য দেখা দিতো তখন উভয়ে বলতেন-
اَذْهَبْنَا اِلَى الْـمِيْزَانِ مِسْوَرٍ
অর্থ: “আমাদেরকে পবিত্র হাদীছ শরীফ শাস্ত্রের মানদন্ড হযরত মিসওয়ার রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার কাছে নিয়ে যান।”
এখানে ফিকিরের বিষয় হলো- হযরত ইমাম শু’বা রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি এবং হযরত ইমাম সুফিয়ান ছাওরী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি অর্থাৎ উভয়ে ছিলেন আমীরুল মু’মিনীন ফিল হাদীছ। উনাদের মানদন্ড হচ্ছেন ইমাম হযরত মিসওয়ার ইবনে মিকদাম রহমতুল্লাহি আলাইহি। যিনি ইলমে হাদীছ শরীফ-এ সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে নিজের উপর প্রাধান্য দিতেন। আর উনার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। তাহলে ইহা আর বুঝতে অসুবিধা হবে না যে, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার জগতে কোন্ স্তরে উপনীত হয়েছিলেন।
ইমামুল মুহাদ্দিছীন, ইমামুল আইম্মাহ, মুহ্ইউস সুন্নাহ, মুজাদ্দিদে মিল্লাত ওয়াদ দ্বীন, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি দুনিয়ার যমীনে খ¦ালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার কুদরত মুবারকের এক মহান নিদর্শন। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত নুবুওওয়াত ও রিসালাত মুবারকের অদ্বিতীয় মহান আমানতদার। তিনি শুধু মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা নন। এছাড়া যত মর্যাদা-মর্তবা মুবারক রয়েছে সব মর্যাদা-মর্তবা মুবারকের অধিকারী হচ্ছেন তিনি। অনুসরণীয়-অনুকরণীয় সকল ইমাম, মুজতাহিদ ও আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম চিরন্তন সত্য এ বিষয়টির সর্বান্তকরণে, সুস্পষ্টরূপে স্বীকৃতি দিয়েছেন। পক্ষান্তরে উলামায়ে ‘সূ’, পরশ্রীকাতর, দাজ্জালে কাযযাব, দুনিয়াদার আলিম তারা বিনা দলীলে মনগড়াভাবে তা অস্বীকার করেছে। ইতিহাসের একজন সাধারণ ছাত্রও এই চিরসত্য বিষয়টি সম্পর্কে সম্যক অবগত যে, তৎকালীন হক্কানী-রব্বানী সকল আলিম, ইমাম, মুজতাহিদগণ এই মহান ইমাম, ইমামুল মুসলিমীন, মুজাদ্দিদে মিল্লাত ওয়াদ দ্বীন সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আবু হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সুউচ্চ মর্যাদা, বুযুর্গী সম্মানের সামনে নতশীর হয়েছেন। এমনকি যারা বিভ্রান্তিতে পড়ে উনার প্রতি বিদ্বেষভাবাপন্ন হয়েছিল তারাও উনার ইলিম-আক্বল, সমঝ, আচার-আচরণ এবং আল্লাহভীতি দেখে তওবা ইস্তিগফার করে নিজের অবস্থান পরিবর্তন করেন। পরবর্তীতে জীবনে আর কখনো বিরোধিতা করেননি। বরং উনার ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করে নিজেকে ধন্য মনে করেছিলেন।
হযরত হাফিয যাহাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি সহ অনুসরণীয় সকল ঐতিহাসিকগণ উনার আলোচনা মুবারক “ইমামে আ’যম আবু হানীফা” শিরোনাম দিয়ে শুরু করেছেন।
উনারা সবাই উনাকে ছিক্বাহ, তাবিয়ী, আলিমে বা-আমল, শ্রেষ্ঠ আবিদ, সর্বশ্রেষ্ঠ যাহিদ ও সর্বজ্ঞানে মহাজ্ঞানী এবং সম্মানিত দ্বীনের ধারক ও বাহক মনে করতেন।
-০-
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া কবীরা গুনাহ
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হযরত আব্বাস ইবনে মিরদাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যাকাত সম্পর্কিত আহকাম, মাসায়িল ও ফাযায়িল (৪)
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
প্রাণীর ছবি তোলা হারাম ও নাফরমানীমূলক কাজ
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
অ্যান্টার্কটিকা নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় বিজ্ঞানীরা
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম (৪)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা অবশ্যই সত্যের মাপকাঠি; অস্বীকারকারীরা কাট্টা কাফির (১)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ উনাদের আলোকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দু‘আ বা মুনাজাত (১১তম অংশ)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)












