সুলত্বানুল হিন্দ, কুতুবুল মাশায়িখ, মুজাদ্দিদুয যামান, গরীবে নেওয়াজ, আওলাদে রসূল, হাবীবুল্লাহ
সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চীশতী আজমিরী সাঞ্জারী রহমতুল্লাহি আলাইহি (৬২)
(বিলাদত শরীফ ৫৩৬ হিজরী, বিছাল শরীফ ৬৩৩ হিজরী)
, ২৯ যিলক্বদ শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ২৯ ছানী আ’শার, ১৩৯২ শামসী সন , ২৮ মে, ২০২৫ খ্রি:, ১৫ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
সুলত্বানুল হিন্দ, কুতুবুল মাশায়িখ, মুজাদ্দিদে যামান, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার প্রথম মাকতুবাত বা চিঠি মুবারক:
সুলত্বানুল হিন্দ, সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চিশতী আজমিরী সানজারী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার খলীফা সুলত্বানুল আরেফীন, সাইয়্যিদুনা হযরত কুতুবুদ্দীন বখতিয়ার কাকী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে উদ্দেশ্য করে লেখেন- “মহান আল্লাহ পাক উনার অনন্ত-অসীম রহমতের ভা-ার হতে যৎসামান্য আলোক রশ্মি আপনার জন্য পেশ করছি। আপনি তা আপনার হাক্বীক্বী মুরীদ ও মহান আল্লাহ পাক উনার পরম নৈকট্য মুবারক লাভের আকাঙ্খীগণকে শিখিয়ে দিবেন। যেন তারা কোন প্রকার ভ্রান্তির মধ্যে না পরে। আর তারা সঠিক পথের উপরই ইস্তিক্বামত বা অবিচল থাকতে পারে।”
“প্রিয় কুতুবুদ্দীন! মনে রাখুন, যে ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক উনাকে চিনতে পেরেছে সে ব্যক্তি কখনো কোন প্রশ্ন, ইচ্ছা, আকাঙ্খা প্রকাশ করে না। যারা এখনো উনাকে চিনতে পারেনি তারা মহান আল্লাহ পাক উনার কালাম (পবিত্র কুরআন শরীফ) বুঝতে পারে না।”
“লোভ-লালসা, কামনা-বাসনাকে সম্পূর্ণরূপে পরিত্যাগ করতে হবে। কাজেই, যারা লোভ-লালসা, কামনা-বাসনাকে পরিত্যাগ করতে পেরেছে, তারা তাদের মাকছুদ (উদ্দেশ্য) হাছিল করতে পেরেছে।”
“আর যে ব্যক্তি ভোগ-বিলাসে, আনন্দ উল্লাসে নিজের নফসকে নিয়োজিত রেখেছে, আর মহান আল্লাহ পাক উনার থেকে নিজেকে ফিরিয়ে নিয়েছে, সে মূলত লা’নতের (অভিসম্পাত) কাফনে নিজেকে জড়িয়ে নিয়ে দুঃখের জমিনে তা দাফন করে ফেলেছে।”
“পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি আশা-আকাংখা ও কামনা-বাসনাকে মহান আল্লাহ পাক উনার পথে বিসর্জন দিয়েছে, সে নিজেকে রহমতের কাফনে জড়িয়ে সালামতের (নিরাপদ) যমিনে নিজেকে সুরক্ষিত করতে পেরেছে।”
সাইয়্যিদুনা হযরত গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি আরো বলেন, “সুলত্বানুল আরেফীন সাইয়্যিদুনা হযরত বায়েজিদ বোস্তামী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, একদিন আমি মহান আল্লাহ পাক উনাকে (মেছালী সূরতে) স্বপ্নে দেখলাম। তিনি আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন, বায়েজিদ! আপনি কি চান?
আমি বললাম, আয় বারে ইলাহী! আমি সেটাই চাই যেটা আপনি চান। তখন মহান আল্লাহ পাক তিনি অত্যন্ত খুশি হয়ে বললেন, আপনি যেমন আমার আমি তেমন আপনার। সুবহানাল্লাহ! প্রিয় কুতুবুদ্দীন! আপনি যদি সম্মানিত ইলমে তাছাউফের হাক্বীক্বতে (প্রকৃত অবস্থান) পৌঁছতে চান তাহলে আরাম-আয়েশ এবং কামনা বাসনার সব দরজা-জানালা বন্ধ করে দিন। মুহব্বতকে সঙ্গী করে দু হাত গেড়ে বসে যেতে পারেন, তাহলে মনে করবেন সম্মানিত ইলমে তাছাউফের জগতে আপনার ক্বদম মুবারক মজবুত রয়েছে।”
মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত হাবীব ও মাহবূব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মুহব্বত মা’রিফাত মুবারক হাছিলের আকাঙ্খীগণকে বিষয়টি মন-প্রাণ দিয়ে ভালোভাবে উপলব্ধি করতে হবে। তাহলে তারা বিতাড়িত শয়তানের ধোঁকা ও ওয়াসওয়াসা থেকে নাজাত বা মুক্তি পাবে। আর তখনই দুনিয়া ও আখিরাত উভয় জগতের একান্ত কাম্য বস্তু ও বিষয় হাছিলে সক্ষম হবে। (হযরত গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি পূর্ণাঙ্গ জীবনী-২১৮)
সুলত্বানুল হিন্দ, কুতুবুল মাশায়িখ, মুজাদ্দিদে যামান, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি আরো বলেন, “আমার সম্মানিত শায়েখ, ছাহিবে রহমত, সুলত্বানুল আউলিয়া, শায়খুল মাশায়িখ, খাজায়ে খাজেগা, সাইয়্যিদুনা হযরত উছমান হারূনী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, মুঈনুদ্দীন! আপনি কি জানেন ‘ছাহিবে হুযূর’ কাকে বলে? ছাহিবে হুযূর সেই ব্যক্তিকে বলা হয়, যিনি সব সময় আবদিয়াতের মাক্বামে অবস্থান করেন। প্রত্যেক কাজ-কর্ম ও বিষয়কে মহান আল্লাহ পাক উনার তরফ থেকে হয় বা আসে বলে বিশ্বাস করেন, চিন্তা করেন। অর্থাৎ যা কিছু হয় তা মহান আল্লাহ পাক উনার ইচ্ছায় ও উনার নির্দেশ মুবারকে হয় বলেন, তদানুযায়ী আমল করেন, কাজ করেন।”
উল্লেখ্য যে, আবদিয়াতের মাক্বাম অর্থাৎ দাসত্ব বা গোলামীর মাক্বাম। আবদিয়াতের মাক্বাম হচ্ছে শ্রেষ্ঠতম মাক্বাম।
সাইয়্যিদুনা হযরত গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, “আবদিয়াতের মাক্বাম হাছিলকারী বান্দা, সে শুধু সব জাহানের বাদশাহই নয় বরং সব বাদশাহই উনার নিকট অনুগ্রহ প্রার্থনা করে থাকে। সুবহানাল্লাহ!”
তিনি আরো বলেন, “আমার সম্মানিত শায়েখ ও মুর্শিদ ক্বিবলা রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি আমাকে অন্য একদিন একটি লক্বব মুবারক দ্বারা সম্বোধন করে বলেন, এমন কিছু দরবেশ আছে, যাঁরা বলেন যে, সালিক বা মুরীদ যখন কামালিয়াত হাছিল করে বা পূর্ণতায় পৌঁছে যায়, তখন কোন চিন্তা-পেরেশানী থাকে না, বিপদ আপদ আসে না। একথাটি সম্পূর্ণই ভুল।”
-০-
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (৩)
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ইসলামী শরীয়ত মুতাবিক- ছবি তোলা হারাম
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক করেন-
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (২)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যাকাত সম্পর্কিত আহকাম, মাসায়িল ও ফাযায়িল (২)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পর্দা পালন করা পুরুষ-মহিলা সবার জন্য ফরজ
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত মুবারক করা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীর জন্য ফরযে আইন
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের আলোকে ছিরাতুল মুস্তাক্বীম উনার ছহীহ তাফসীর- ০১
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)












