সুলত্বানুল হিন্দ, কুতুবুল মাশায়িখ, মুজাদ্দিদুয যামান, গরীবে নেওয়াজ, আওলাদে রসূল, হাবীবুল্লাহ
সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চীশতী আজমিরী সাঞ্জারী রহমতুল্লাহি আলাইহি (৬৬)
(বিলাদত শরীফ ৫৩৬ হিজরী, বিছাল শরীফ ৬৩৩ হিজরী)
, ০৬ মুহররমুল হারাম শরীফ, ১৪৪৭ হিজরী সন, ৩ ছানী, ১৩৯৩ শামসী সন , ২ জুলাই, ২০২৫ খ্রি:, ১৮ আষাঢ়, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
সাইয়্যিদুনা হযরত গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার নছীহত মুবারক:
সাইয়্যিদুনা হযরত গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি আরো বলেন, আমি ‘জামিউল হিকায়েত’ কিতাবে দেখেছি, প্রাচীনকালে একজন যুবক ছিলো। সে অত্যন্ত দুশ্চরিত্র ও ব্যভিচারী ছিলো। সমস্ত মুসলমান তার প্রতি অসন্তুষ্ট ছিলো। সবাই তাকে বুঝানোর চেষ্টা করেছিলো। কিন্তু সে কারো কোন কথাই মানতো না। আর ঐ অবস্থায় সে ইন্তিকাল করলো।
রাতে এক বুযূর্গ ব্যক্তি তাকে স্বপ্নে দেখলেন যে, তার মাথায় নূরানী তাজ (টুপি) এবং তার কোমরে স্বর্ণখচিত কোমরবন্দ (বেল্ট) এবং মহামূল্যবান পোশাক পরিহিত। হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের প্রতি নির্দেশ মুবারক হয়েছে যে, ‘উনাকে জান্নাতে পৌঁছে দিন’। সেই বুযূর্গ ব্যক্তি উনাকে জিজ্ঞাসা করলেন, আপনি তো অপকর্ম ও কুকর্ম ছাড়া অন্য কিছু করতেন না। তাহলে আপনি এ সৌভাগ্য কিভাবে লাভ করলেন?
তিনি বললেন, দুনিয়াতে আমি একটিই ভালো কাজ করেছি। আমি যখন কোথাও পবিত্র কুরআন শরীফ দেখতাম উনার সম্মানে দাঁড়িয়ে যেতাম। অত্যন্ত তা’যীম-তাকরীমের (সম্মানের) সাথে দেখতে থাকতাম। পবিত্র কালাম পাক উনাকে তা’যীম-তাকরীম ও সম্মান প্রদর্শনের কারۖেণ মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাকে এই নিয়ামত মুবারক দান করেছেন। সুবহানাল্লাহ! (গরীবে নেওয়াজের পূর্ণাঙ্গ জীবনী-২৯০)
সুলত্বানুল হিন্দ, কুতুবুল হিন্দ, সাইয়্যিদুনা হযরত গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, পাঁচটি জিনিসের প্রতি দৃষ্টি দেয়া ইবাদত এবং গোনাহ মাফের কারণ। তার তৃতীয়টি হচ্ছে- ওলীআল্লাহগণ উনাদের মুবারক ছোহবত ইখতিয়ার তথা চেহারা মুবারক দেখা।
যখন কোন ব্যক্তি মুহব্বত ও তা’যীম-তাকরীমের সাথে কোন ওলীআল্লাহ উনার চেহারা মুবারকের প্রতি দৃষ্টি দেয় তখন মহান আল্লাহ পাক তিনি সাথে সাথে একজন ফেরেশতা আলাইহিস সালাম উনাকে পয়দা করেন। যে ফেরেশতা আলাইহিস সালাম ক্বিয়ামত পর্যন্ত উক্ত ব্যক্তির জন্য দোয়া ও প্রার্থনা করতে থাকেন। সুবহানাল্লাহ! আর যার অন্তরে হক্কানী-রব্বানী আলিম তথা ওলীআল্লাহগণ উনাদের মুহব্বত ও তা’যীম-তাকরীম সর্বদা বিরাজ করে মহান আল্লাহ পাক তিনি তাকে হাজার বছরের ইবাদত-বন্দেগীর ছওয়াব দান করেন এবং ঐ সময়কালে তথা অন্তরে মুহব্বত ও তা’যীম-তাকরীম বিরাজমান অবস্থায় ইন্তিকাল করে তাহলে মহান আল্লাহ পাক তিনি তাকে হক্কানী-রব্বানী আলিমগণের মর্যাদা-মর্তবা দান করেন। তাকে ইল্লিনে স্থান দেন। সুবহানাল্লাহ!
সুলত্বানুল হিন্দ, কুতুবুল মাশায়িখ, মুজাদ্দিদে যামান, আওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি আরো বলেন, আমি “ফাতওয়ায়ে যহীরিয়া” কিতাবে দেখেছি, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যে ব্যক্তি কোন হক্কানী-রব্বানী আলিম এবং ওলীআল্লাহ উনার ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার তথা উনাদের জিয়ারত মুবারক করার জন্য সাধ্যানুযায়ী পরিশ্রম করে, চেষ্টা-কোশেশ করে। আর সেই চেষ্টা-কোশেশ সাতদিন পর্যন্ত চালিয়ে যায়, ঐ সাত দিনে রোযা রাখে এবং রাত্রি জাগরণ করে তাহলে মহান আল্লাহ পাক তিনি সাত হাজার বছর আমল করার ছাওয়াব তার আমলনামায় লিখার জন্য হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে নির্দেশ মুবারক দান করেন। সুবহানাল্লাহ!
সুলত্বানুল হিন্দ, কুতুবুল মাশায়িখ, মুজাদ্দিদে যামান, আওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি এ প্রসঙ্গে একটি ওয়াকেয়া বর্ণনা করেন, অনেক দিন পূর্বের কথা। এমন এক ব্যক্তি ছিলো, সে যখন কোন পীর-মাশায়িখকে দেখতো অবজ্ঞাভরে সাথে সাথে মুখ ফিরিয়ে নিতো। ক্রোধ হিংসা ও অহংকারের আগুনে জ্বলতে থাকতো। নাউযুবিল্লাহ! এক সময় সে ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করলো। গোসল, কাফন ও জানাজার নামায পড়ার পর কবরে নামানো হলো। আর সাথে সাথে তার মুখটা ক্বিবলার দিক থেকে ফিরে গেলো। বাম দিকে কাত হয়ে গেলো। লোকজন ডান দিকে তথা ক্বিবলামুখী করার জন্য অনেক চেষ্টা-কোশেশ করতে লাগলো। কিন্তু কিছুতেই ক্বিবলামুখী করতে পারলো না। এ অবস্থা দেখে সবাই হতবাক হয়ে গেলো।
এমতাবস্থায় গায়েবী আওয়াজ হলো- তোমরা এ লোকটির জন্য কেন অযথা চেষ্টা-কোশেশ করছো। তোমরা কখনই তাকে ক্বিবলামুখী করতে পারবে না। কারণ, এতো সেই লোক, যে আমার ওলী, পীর-মাশায়িখগণকে দেখলে মুখ ফিরিয়ে নিতো। যে আমার ওলী উনার দর্শন করা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়, সে কখনো আমার রহমত লাভ করতে পারে না। সে পথভ্রষ্ট ও গোমরাহ হয়েছে। ক্বিয়ামতের দিন তাকে শুকরের চেহারায় হাশরের ময়দানে উত্তোলন করা হবে। নাউযুবিল্লাহ!
-০-
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম (৩)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুনিয়ার যমীনে অবস্থানকালীন সময়ে ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ যে রোযা মুবারক রাখতেন সে রোযা মুবারক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১২ই শরীফ উনার দিনে হওয়াটা ছিলো একটি বিরল ঘটনা (২)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত হাযির-নাযির শান মুবারক (১)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
প্রাণীর ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িজ
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
আল্লাহওয়ালী মহিলা উনাদের তিনটি বৈশিষ্ট্য-
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
পুরুষের জন্য কমপক্ষে একমুষ্ঠি পরিমাণ দাড়ি রাখা ফরয
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম (২)
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মুসলমানদের সবচেয়ে বড় শত্রু কাফির-মুশরিকরা (২)
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পর্দা পালন করা নারী-পুরুষ সকলের জন্যই শান্তি ও পবিত্রতা হাছিলের কারণ
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সীমালঙ্ঘনকারী কাফির-মুশরিকদের বিরুদ্ধে জিহাদ করা মহান আল্লাহ পাক উনার নির্দেশ মুবারক
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)












