সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, উম্মু আবীহা সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবিআহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার ফাযায়িল-ফযীলত, বুযুর্গী-সম্মান, খুছূছিয়ত-বৈশিষ্ট্য মুবারক সম্পর্কে ছহিবু সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, আস সাফফাহ, আল জাব্বারিউল আউওয়াল, আল ক্বউইউল আউওয়াল, হাবীবুল্লাহ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মাওলানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ (৩৯)
, ২৭ জুমাদাল ঊখরা শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ১২ সামিন, ১৩৯১ শামসী সন , ১০ জানুয়ারি, ২০২৪ খ্রি:, ২৬ পৌষ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
এখন উনার যিনি আওলাদ, লখতে জিগার তিনি তো সেই রকমই করবেন। সুবহানাল্লাহ! উনারা তো সব দান-খয়রাত করে দিয়েছেন। এখন তো মেহমানদারী করতে হবে। এখন উনারা যে সম্পূর্ণ মহান আল্লাহ পাক খালিক্ব মালিক রব উনার উপর তাওয়াক্কুল করতেন-
مَنْ يَّتَوَكَّلْ عَلَى اللهِ فَهُوَ حَسْبُهٗ
যিনি মহান আল্লাহ পাক উনার উপর ভরসা বা তাওয়াক্কুল করেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি সেই ব্যক্তি উনার জন্যে যথেষ্ট। মহান আল্লাহ পাক তিনি সবসময় প্রমাণ করে দিয়েছেন যে, দেখ- উনারা কিন্তু দুনিয়াবী কোন মাল-সামানার মুহ্তাজ নন। উনারা সরাসরি আমার মুহ্তাজ। সুবহানাল্লাহ! এখন হযরত ইমামুল আউওয়াল আলী র্কারামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি চিন্তা করলেন, তাহলে কিছু তো বাজার থেকে মেহমানদারীর জন্য আনা প্রয়োজন। তিনি রওয়ানা হলেন, যখন বাজারের দরজার মুখে গেলেন একজন ব্যক্তি একটা ঘোড়া নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। তিনি চিন্তা করলেন টাকা-পয়সার কোন একটা ব্যবস্থা করবেন, কারো কাছ থেকে হয়তো করজ নিবেন অথবা অন্য কোনভাবে একটা ব্যবস্থা করবেন। এমতাবস্থায় ঐ ঘোড়াওয়ালা ব্যক্তি ডেকে বলতেছেন, হে হযরত ইমামুল আউওয়াল আলাইহিস সালাম! আপনি কি আমার এই ঘোড়াটা খরিদ করবেন? তিনি বললেন, আমি যে আপনার ঘোড়া খরিদ করবো সে লক্ষ্যে আমি তো কোন টাকা পয়সা আনিনি। তখন ঐ ব্যক্তি জাওয়াব দিলেন যে, এখন আমাকে নগদ টাকা-পয়সা না দিলেও চলবে, ঘোড়াটা বিক্রি করে টাকা-পয়সা দিলেও চলবে। কত এটার মূল্য রয়েছে? ছয় দীনার। ঠিক আছে। উনি সেটা নিয়ে রওয়ানা দিলেন, বাজারের ভিতরে প্রবেশ করলেন। আরেকজন ব্যক্তি নিজের থেকেই ডেকে বললেন, হে হযরত ইমামুল আউওয়াল র্কারামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম! আপনি কি আপনার এই ঘোড়াটা বিক্রি করবেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ আমি বিক্রি করার জন্য এনেছি। আপনার এটার মূল্য কত? স্বয়ং হযরত ইমামুল আউওয়াল র্কারামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, আপনি কত দিয়ে নিবেন? ঐ ব্যক্তি নিজ থেকে বললেন, আমি দশ দীনার দিবো। তিনি বললেন, ঠিক আছে।
এখন উনি দশ দীনার নিয়ে ঐ ব্যক্তির ছয় দীনার পরিশোধ করে বাকী চার দীনার যা লাভ করলেন সেটা দিয়ে কিছু খাদ্য দ্রব্য কিনে সরাসরি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের নবী, রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খিদমত মুবারকে পৌঁছলেন। অর্থাৎ উনার মুবারক খিদমতে পেশ করলেন। যখন খিদমত মুবারকে পেশ করা হলো, খাবারের জন্য দেয়া হলো তখন স্বয়ং হযরত ইমামুল আউওয়াল কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি হাসতে হাসতে বলতেছিলেন, ইয়া রসূলাল্লাহু ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আজকে একটা ঘটনা ঘটেছে। কি ঘটনা ঘটেছে।
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের নবী, রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কিন্তু সবকিছু জানেন।
أُعْطِيتُ جَوَامِعَ الْكَلِمِ
মুসলিম শরীফ কিতাবের মধ্যে বর্ণিত হয়েছে বিশুদ্ধ হাদীছ শরীফ “মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাকে সৃষ্টির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সমস্ত ইলিম হাদিয়া করেছেন।” সুবহানাল্লাহ!
তখন তিনি জিজ্ঞাসা করলেন যে, কি ঘটেছে? তখন হযরত ইমামুল আউওয়াল র্কারামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, আপনি যখন তাশরীফ এনেছেন আমাদের এখানে, তখন তো আপনার মেহমানদারী করার জন্য কিছু প্রয়োজন রয়েছে। বাজারে গিয়েছিলাম মেহমানদারীর ব্যবস্থা করা যায় কি-না। হঠাৎ গিয়ে দেখলাম, বাজারের মোড়ে একজন লোক দাঁড়িয়ে আছেন একটা ঘোড়া নিয়ে। সে ব্যক্তি আমাকে বলতেছেন যে, আপনি কি ঘোড়াটা খরিদ করবেন? হযরত ইমামুল আউওয়াল র্কারামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, আমার কাছে তো টাকা-পয়সা নেই কিভাবে খরিদ করবো? সে ব্যক্তি তিনি বললেন, আপনি বাকিতে নিয়ে যান। আমি বাকিতে নিলাম, কত? ছয় দীনার।
এখন বাজারে প্রবেশ করতে না করতেই একজন লোক এসে বললো: আপনি কি এটা বিক্রি করবেন? আমি বললাম: হ্যাঁ, কত দিয়ে কিনবেন আপনি? কত মূল্য? সে ব্যক্তি নিজ থেকে বললো দশ দীনার। আমি দশ দীনার বিক্রি করে ছয় দীনার দিয়ে ঋণ শোধ করে চার দীনার দিয়ে আপনার জন্য কিছু খাদ্যদ্রব্য নিয়ে এসেছি। সুবহানাল্লাহ!
এটা শুনে স্বয়ং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের নবী, রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হাসতে হাসতে বললেন যে, আসলে হে হযরত ইমামুল আউওয়াল র্কারামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম! আপনি লোক দুটিকে চিনেছেন কি? তিনি বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি তো উনাদেরকে চিনতে পারিনি। তখন স্বয়ং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের নবী, রসূল আলাইহিমুস সালাম তিনি বললেন, আসলে যেহেতু আমি আপনাদের হুজরা শরীফের মধ্যে তাশরীফ এনেছি, তাই আমার মেহমানদারী আপনারা করবেন। ব্যতিব্যস্ত হয়ে গেছেন আপনারা। এখন কিভাবে করবেন, চিন্তিত হয়ে গেছেন। এখন এখানে দুটি বিষয়; একটা হচ্ছে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের নবী, রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের রসূল উনার মেহমানদারী তো অবশ্যই করতে হবে, এটা ফরয-ওয়াজিব। আবার এদিকে সাইয়্যিদাতুন নিসা হযরত আন নূরুর রবিআহ যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি চিন্তিত হয়ে গেছেন । তিনি চিন্তিত থাকুন মহান আল্লাহ পাক তিনি সেটা পছন্দ করেন না। সেজন্য কি করলেন, সাথে সাথে হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম উনাকে একটা ঘোড়া দিয়ে পাঠালেন যে, আপনি যান এই ঘোড়াটা হযরত ইমামুল আউওয়াল কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি বাজারে আসতেছেন কিছু খাদ্যদ্রব্য কিনার জন্য, তিনি এখন টাকা-পয়সা কোথায় পাবেন? আপনি ঘোড়াটা নিয়ে যান, যেয়ে বলবেন, আপনি ঘোড়াটা খরিদ করবেন? তিনি যদি রাজি হন তাহলে আপনি বাকিতে ছয় দীনার বিক্রি করবেন। আর পিছনে রয়ে গেলেন হযরত মীকাইল আলাইহিস সালাম, তিনি দশ দীনার নিয়ে অপেক্ষা করতেছেন। তিনি যখন বাজারে প্রবেশ করবেন ঘোড়াটি নিয়ে তখন আপনি বলবেন, আপনি বিক্রি করবেন? তিনি বলবেন হ্যাঁ। তাহলে আপনি উনাকে দশ দীনার দিয়ে দিবেন। তিনি দশ দীনার নিয়ে ছয় দীনার শোধ করবেন। চার দীনার থাকবে, তা দিয়ে তিনি খাদ্যদ্রব্য নিয়ে যাবেন। সুবহানাল্লাহ! স্বয়ং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের নবী, রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, একজন হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম আর একজন হযরত মীকাইল আলাইহিস সালাম উনাদেরকে মহান আল্লাহ পাক তিনি পাঠিয়েছেন আপনাকে এই চার দীনার হাদিয়া দেয়ার জন্য। সুবহানাল্লাহ! বিষয়টা খুব সূক্ষ্ম বিষয়।
(পবিত্র ওয়াজ শরীফ অডিও রেকর্ড পেতে যোগাযোগ করুন- তাহযীব তামাদ্দুন বিভাগ, রাজারবাগ শরীফ ঢাকা)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া কবীরা গুনাহ
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হযরত আব্বাস ইবনে মিরদাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যাকাত সম্পর্কিত আহকাম, মাসায়িল ও ফাযায়িল (৪)
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
প্রাণীর ছবি তোলা হারাম ও নাফরমানীমূলক কাজ
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
অ্যান্টার্কটিকা নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় বিজ্ঞানীরা
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম (৪)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা অবশ্যই সত্যের মাপকাঠি; অস্বীকারকারীরা কাট্টা কাফির (১)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ উনাদের আলোকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দু‘আ বা মুনাজাত (১১তম অংশ)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)












