ছহিবু সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, আস সাফফাহ, আল জাব্বারিউল আউওয়াল, আল ক্বউইউল আউওয়াল, হাবীবুল্লাহ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মাওলানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
দুনিয়ার বুরায়ী বা খারাবী (২০)
, ২৭ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০:০০ এএম ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
এ প্রসঙ্গে বলা হয় যে, একদিন মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি একটা গোল চক্কর দিলেন। একটা দায়রা আঁকলেন। এঁকে মধ্যে একটা চিহ্ন দিলেন, চিহ্ন থেকে কিছু রেখা আঁকলেন, সেই চক্কর থেকে অনেক লম্বা।
যখন আঁকলেন তখন হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! এটা আপনি কি আঁকলেন? আমরা বুঝতে পারলাম না সেটা।
তখন মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন যে দেখ, “এই চিহ্ন যেটা দেয়া হয়েছে, সেটা হচ্ছে- মানুষের জন্মস্থান। আর আমি গোল চক্কর যেটা দিয়েছি, সেটা তার মৃত্যুর স্থান। অর্থাৎ তার হায়াত এতটুকু। আর লম্বা লম্বা যে আঁকগুলি আমি দিয়েছি, এটা তার লম্বা লম্বা আশা-আকাঙ্খা। সে মনে করে এটা করবে, সেটা করবে ইত্যাদি ইত্যাদি সে করবে। কিন্তু এক সময় তার মৃত্যু এসে যাবে। যার কারণে তার সেই লম্বা আশাগুলি আর কখনোই পুরা হবেনা। সে আশা নিয়েই থাকবে। কিন্তু তার লম্বা আশাগুলি কখনোই পূরণ হবে না। তার মৃত্যু এক সময় তাকে পাকড়াও করে ফেলবে। যার ফলশ্রুতিতে তার পক্ষে সেই লম্বা আশা-আকাঙ্খাগুলি পূরণ করা কখনোই সম্ভব হবেনা, প্রত্যেক ব্যক্তিরই সেটা হবে। ”
কাজেই সেই মৃত্যু আসার পূর্বেই নিজের আমল, নিজের আখলাক এবং দুনিয়ার মুহব্বত তরক করে মহান আল্লাহ পাক উনার মুহব্বতে গরক হয়ে যেতে হবে। এজন্য পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে যে,
كُونُوا مِنْ أَبْنَاءِ الآخِرَةِ ، وَلاَ تَكُونُوا مِنْ أَبْنَاءِ الدُّنْيَا
“তোমরা পরকালের সন্তান হয়ে যাও, দুনিয়ার সন্তান হয়োনা। ”
এ প্রসঙ্গে বলা হয় যে, মহান আল্লাহ পাক উনার নবী, জলীলুল ক্বদর রসূল, যিনি উলুল আযম মিনার রুসুল, হযরত ঈসা রূহুল্লাহ আলাইহি ওয়া সালাম তিনি বর্ণনা করেছেন যে, একস্থানে তিনি একবার রাস্তা দিয়ে কোথাও হেঁটে যাচ্ছিলেন, হঠাৎ দেখলেন দুনিয়াকে। তার ছূরত হচ্ছে- মহিলার ছূরত।
তার প্রতি লক্ষ্য করে দেখলেন যে, তার একটা হাত সামনে, একটা হাত পিছনে। সামনেরটা খুব রঙ্গীন, চাকচিক্যময়। উনি দুনিয়াকে দেখে জিজ্ঞেস করলেন, “হে দুনিয়া! তোমার এই ছূরত কেন? তোমার একটা হাত সামনে, একটা হাত পিছনে। তোমার পিছনের হাতটা আমাকে দেখাও দেখি। ”
যখন মহান আল্লাহ পাক উনার নবী হযরত ঈসা রূহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি একথা বললেন, তখন সে পিছনের হাতটা দেখাল। দেখা গেল, তার পিছনের হাতের মধ্যে একটা ছুরি, তা থেকে রক্ত ঝরছে।
তিনি তাকে বললেন, এটার কি হাক্বীক্বত রয়েছে?
দুনিয়া বললো, হে মহান আল্লাহ পাক উনার নবী হযরত ঈসা রূহুল্লাহ আলাইহিস সালাম, মূলতঃ আমার সামনে যে হাতটা আপনি দেখছেন রঙ্গীন, চাকচিক্যময়, এটা দিয়ে আমি মানুষকে ভুলিয়ে ফেলি, ধোঁকা দেই। আর মানুষ এই রঙ্গীন-চাকচিক্যময় এসব দেখে দুনিয়ার মোহে মোহগ্রস্ত হয়ে তারা দুনিয়াতে গরক হয়ে যায়। আর আমার পিছনের যে হাতটা দেখছেন, তাতে ছুরি রয়েছে, রক্ত ঝরছে, আমি সেই হাতটা দিয়ে দুনিয়ায় তাকে মোহগ্রস্ত করে হত্যা করে ফেলি। দুনিয়ার মোহের মধ্যে রেখে তার মৃত্যু পর্যন্ত পৌঁছিয়ে দেই। সেই রক্তই আমার এই ছুরি থেকে ঝরছে। সেই বান্দারা দুনিয়ার মোহে মোহগ্রস্ত হয়ে যায় এবং সে অবস্থায় সে ইন্তেকাল করে। যার ফলশ্রুতিতে সে জান্নাতে না গিয়ে জাহান্নামে যায়।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া কবীরা গুনাহ
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হযরত আব্বাস ইবনে মিরদাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যাকাত সম্পর্কিত আহকাম, মাসায়িল ও ফাযায়িল (৪)
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
প্রাণীর ছবি তোলা হারাম ও নাফরমানীমূলক কাজ
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
অ্যান্টার্কটিকা নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় বিজ্ঞানীরা
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম (৪)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা অবশ্যই সত্যের মাপকাঠি; অস্বীকারকারীরা কাট্টা কাফির (১)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ উনাদের আলোকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দু‘আ বা মুনাজাত (১১তম অংশ)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)












