সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র হাদীছ শরীফ হলো পবিত্র ওহী মুবারক উনার অন্তর্ভুক্ত (২)
, ৩০ মুহররমুল হারাম শরীফ, ১৪৪৭ হিজরী সন, ২৭ ছানী, ১৩৯৩ শামসী সন , ২৬ জুলাই, ২০২৫ খ্রি:, ১২ শ্রাবণ, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে-
عن حضرت العرباض بن سارية رضى الله تعالى عنه قال قام رسول الله صلى الله عليه وسلم فقال ايـحسب احدكم متكئا على اريكته يظن ان الله لـم يـحرم شيئا الا ما فى هذا القران الا وانى والله قد امرت ووعظت ونـهيت عن اشياء انـها كمثل القران او اكثر.
অর্থ: “হযরত ইরবাদ্ব ইবনে সারিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন, একবার নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি (আমাদের মধ্যে) দাঁড়ালেন এবং বললেন, তোমাদের মধ্যে কেউ কি তার গদীতে হেলান দিয়ে একথা মনে করে যে, মহান আল্লাহ পাক তিনি এই পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে যা হারাম করেছেন তা ব্যতীত তিনি আর কিছুই হারাম করেননি? তোমরা জেনে রাখো, আমি মহান আল্লাহ পাক উনার কসম করে বলছি, নিশ্চয়ই আমি তোমাদের অনেক বিষয় আদেশ দিয়েছি, উপদেশ দিয়েছি এবং অনেক বিষয় নিষেধও করেছি। আমার এ সমস্ত বিষয়ও নিশ্চয়ই কুরআন শরীফ উনার বিষয়সমূহের ন্যায় বরং তা অপেক্ষা অধিক হবে। ” (আবু দাউদ শরীফ, মিশকাত শরীফ)
এ পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার বর্ণনা থেকে প্রতীয়মাণ হলো যে, পবিত্র কুরআন শরীফ উনার আয়াত শরীফ উনার তুলনায় পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার সংখ্যা বেশি। শুধু তাই নয়, সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার বিধি-বিধান পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার দ্বারাই অধিক সাব্যস্ত হয়েছে। বিশেষ করে পবিত্র কুরআন শরীফ উনার আয়াত শরীফ দ্বারা সাধারণত ফরয বিষয়সমূহ নির্ধারিত হয়েছে। কিন্তু পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার দ্বারা ফরয, ওয়াজিব, সুন্নত, নফল যাবতীয় বিষয় নির্ধারিত হয়েছে। সুতরাং কার্যক্ষেত্রে পবিত্র কুরআন শরীফ উনার তুলনায় পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার গুরুত্ব অধিক বলে প্রমাণিত।
এছাড়া কেউ যদি পবিত্র হাদীছ শরীফ না মানে বা বিশ্বাস না করে তাহলে তার পক্ষে পবিত্র কুরআন শরীফ উনাকেও বিশ্বাস করা সম্ভব হবে না। যেমন পবিত্র কুরআন শরীফ যে মহান আল্লাহ পাক উনার কালাম তা আমাদেরকে কে জানালেন? স্বয়ং যিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি জানিয়েছেন। অর্থাৎ যিনি আমাদেরকে উক্ত বিষয় সম্পর্কে বলেছেন বা জানিয়েছেন উনার সেই বলাটা ও জানানোটাই তো পবিত্র হাদীছ শরীফ। কাজেই পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার গুরুত্ব ও তাৎপর্য বলার অপেক্ষাই রাখে না।
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার সংখ্যা এত অধিক যে, তা নির্ধারণ করা সম্ভব হয়নি। তাই পবিত্র হাদীছ শরীফ ও উছূল বিশারদগণ হাদীছ শরীফ উনার সংখ্যা বর্ণনায় উল্লেখ করেছেন যে-
السنة هى اكثر من عدد الرمل والـحصى
অর্থ: “সুন্নাহ শরীফ বা হাদীছ শরীফ হলো বালুকণা ও পাথরকণা অপেক্ষা অধিক। ” (উছূলুশ শাশী)
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার গুরুত্ব ও ফযীলত সম্পর্কে আরো বর্ণিত রয়েছে-
عن حضرت مالك بن انس رضى الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه و سلم تركت فيكم امرين لن تضلوا ماتـمسكتم بـهما كتاب الله وسنة رسوله.
অর্থ: “হযরত মালিক ইবনে আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমি তোমাদের মাঝে দু’টি নিয়ামত রেখে যাচ্ছি। যতক্ষণ পর্যন্ত উক্ত নিয়ামত দু’টি আকড়ে ধরে থাকবে ততক্ষণ পর্যন্ত তোমরা গুমরাহ বা পথভ্রষ্ট হবে না। এক- মহান আল্লাহ পাক উনার কিতাব কুরআন শরীফ, দুই- মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সুন্নাহ শরীফ বা হাদীছ শরীফ। ” (মুয়াত্তা মালিক শরীফ, মিশকাত শরীফ)
মোট কথা, সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার ৪টি উছূল বা মূলনীতির মধ্যে দু’টি হচ্ছে প্রধান- কুরআন শরীফ ও হাদীছ শরীফ। অর্থাৎ সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার ৪টি উছূলের মধ্যে দ্বিতীয় উছূল হচ্ছে পবিত্র হাদীছ শরীফ। পবিত্র হাদীছ শরীফ ব্যতীত সম্মানিত দ্বীন ইসলাম বোঝা, উপলব্ধি করা, সম্মানিত দ্বীন উনার উপর চলা কখনোই সম্ভব নয়। এ সম্মানিত উছূল তথা পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাকে অস্বীকার করা ঐরূপ কুফরী এবং কাফির ও জাহান্নামী হওয়ার কারণ যেরূপ পবিত্র কুরআন শরীফ উনাকে অস্বীকার করলে কাফির ও জাহান্নামী হতে হয়। (সমাপ্ত)
-০-
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা ও বাক্বা সারা কায়িনাত (৩২)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ইজতিহাদ সংক্রান্ত মওযূ হাদীছ ও তার খন্ডনমূলক জবাব (৭)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা ও বাক্বা সারা কায়িনাত (৩১)
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ইজতিহাদ সংক্রান্ত মওযূ হাদীছ ও তার খন্ডনমূলক জবাব (৬)
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক শানে ব্যবহৃত একখানা শব্দ মুবারক পবিত্র “নূরুন নাজাত” মুবারক উনার ব্যাপকতা ও বিশালতা
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারকে মানহানীকারীদের যুগে যুগে ভয়াবহ পরিণতি (৩০)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ইজতিহাদ সংক্রান্ত মওযূ হাদীছ ও তার খন্ডনমূলক জবাব (৫)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্মানিত সম্বোধন মুবারক করার বিষয়ে কতিপয় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র লফ্য বা পরিভাষা মুবারক
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনি তিনজন উনাদের মুহব্বত ফরয করে দিয়েছেন-
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ মেহমানদারী করার মাধ্যমে উদযাপনে শাফায়াত মুবারক লাভ
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা ও বাক্বা সারা কায়িনাত (৩০)
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ইজতিহাদ সংক্রান্ত মওযূ হাদীছ ও তার খন্ডনমূলক জবাব (৪)
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)












