সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, রিসালতে পানাহ, ছাহিবু কা’বা কাওসাইন আও আদনা, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নির্মল হাসি-খুশি মুবারক
, ১২ জুমাদাল ঊখরা শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২৭ সাবি’ ১৩৯১ শামসী সন , ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রি:, ১১ পৌষ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِي رَسُولِ اللهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ
অর্থ: “অবশ্যই তোমাদের জন্য নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মধ্যেই রয়েছেন সর্বোত্তম আদর্শ মুবারক।” (পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ২১)
যিনি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পূর্ণ জীবন মুবারকই হলো গোটা মানবজাতির জন্য পূর্ণাঙ্গ জীবনাদর্শ। মানব জীবনের এমন কোন দিক নেই, যেখানে উনার অনুপম মুবারক আদর্শের পদরেখা পড়েনি। জীবনের সকল ক্ষেত্রে তিনি ছিলেন নিপুণতায় সর্বাধিক সমুজ্জ্বল। তাইতো আমরা উনার পবিত্র সীরত মুবারকে কিছু অনাবিল হাসি-খুশির সন্ধান পাই। কিন্তু উনার এই নির্মল হাসি-খুশি মুবারকের মধ্যে কোন রঙ্গ-রস, তামাশা, চটুলতা, উদ্দমতা, অশালীনতা, মিথ্যাচারিতার বিন্দুমাত্র ঠাঁই ছিলো না।
এ প্রসঙ্গে হযরত আবু হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন, একদিন হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ আরজ করলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনিও কি হাসি-খুশি করেন? জবাবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “হ্যাঁ, আমিও মাঝে মাঝে হাসি-খুশি করি। তবে তা কেবল সত্য কথা ও সত্য বিষয় অবলম্বনে করে থাকি।” (শামায়েলে তিরমিযী)
নিম্নে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কতিপয় হাসি-খুশিমূলক ওয়াকেয়া মুবারক উল্লেখ করা হলো।
(১) একবার নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কয়েকজন হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের সাথে বসে খেজুর খাচ্ছিলেন। সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল আউওয়াল কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনিও এ মজলিসে ছিলেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এবং অন্যান্য হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা খেজুর খেয়ে বিচিগুলো সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল আউওয়াল কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার সামনে রাখলেন। খাওয়া শেষে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, “দেখুন সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল আউওয়াল কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম কত খাদ্য গ্রহণকারী; তিনি কতগুলো খেজুর খেয়েছেন।” সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল আউওয়াল কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি ব্যাপারটি বুঝতে পেরে হাসি মুবারক দিয়ে বললেন, “আমার সামনে তো বিচি আছে, কিন্তু আপনাদের সম্মুখে তো তাও নেই।”
(২) একদিন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এক ব্যক্তিকে হঠাৎ করে জিজ্ঞাসা করলেন, “তোমার মামার বোন তোমার কি হয়?” সরলমতি লোকটি মাথা নিচু করে ভাবতে শুরু করলেন। তার নিকট থেকে কোন জবাব না পেয়ে শেষ পর্যন্ত নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নিজেই মুচকি হেসে বললেন, “কি আশ্চর্য! আপনি আপনার মাকেই ভুলে গেলেন।”
(৩) হযরত আব্দুর রহমান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু নামক জনৈক ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু একটি বিড়াল ছানা পুষতেন। বিড়াল ছানাটিকে তিনি প্রায়শই জামার আস্তিনের মধ্যে লুকিয়ে রাখতেন। এমনকি অনেক সময় বিড়াল ছানাটিকে তিনি ঐভাবে মসজিদে নিয়ে আসতেন। বিড়াল ছানাটির সাথে উনার এ রকমভাব লক্ষ্য করে একদা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনাকে উদ্দেশ্য করে বললেন, “হে আবু হুরায়রা!” অর্থাৎ হে বিড়াল ছানার পিতা! এরপর থেকেই তিনি ‘আবু হুরায়রা’ নামে মশহূর হয়ে যান।
(৪) শেরে খোদা হযরত ইমামুল আউওয়াল কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি একবার মাটিতে শুয়েছিলেন। এতে উনার মুখমন্ডলে কিছু ধুলা-বালি লেগে যায়। এমতাবস্থায় নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনাকে দেখে বললেন, “হে আবু তুরাব! অর্থাৎ হে ধুলিকণার পিতা!”
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যে ধরনের হাসি-খুশি মুবারক করেছেন তা বাস্তবিকই আমাদের জন্য উত্তম আদর্শ। উনার এই হাসি-খুশি মুবারকের মধ্যে ফুটে উঠতো উনার নিষ্কলুষ চরিত্র মুবারক, স্নেহ মুবারক, মুহব্বত মুবারক, মমতা মুবারক, উজ্জল আভাদীপ্ত প্রতিভা মুবারক, উত্তম আর্দশ মুবারক গ্রহণের অপরূপ দৃষ্টান্ত।
-মুহম্মদ সা’দ
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া কবীরা গুনাহ
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হযরত আব্বাস ইবনে মিরদাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যাকাত সম্পর্কিত আহকাম, মাসায়িল ও ফাযায়িল (৪)
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
প্রাণীর ছবি তোলা হারাম ও নাফরমানীমূলক কাজ
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
অ্যান্টার্কটিকা নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় বিজ্ঞানীরা
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম (৪)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা অবশ্যই সত্যের মাপকাঠি; অস্বীকারকারীরা কাট্টা কাফির (১)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ উনাদের আলোকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দু‘আ বা মুনাজাত (১১তম অংশ)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)












