সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হায়াতুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম (৩)
, ০৯ জুলাই, ২০২৫ ১২:০০:০০ এএম ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিলো যে, আপনার নিকটবর্তী, দূরবর্তী এবং পরবর্তীতে আগন্তুকদের পবিত্র দুরূদ শরীফ সমূহের অবস্থা কি হবে? তদুত্তরে তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
اَسْمَعُ صَلَوْةَ اَهْلِ مَحَبَّتِىْ وَاَعْرِفُهُمْ.
অর্থ: আমার সঙ্গে মুহব্বত ধারণকারীদের পবিত্র দুরূদ শরীফ আমি স্বয়ং নিজে শুনি এবং আমি তাদের পরিচয় পাই। সুবহানাল্লাহ! (দালাইলুল খায়রাত, মাতালিউল মুসাররাত)
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন-
فِي رِوَايَةِ الْحَنَفِيِّ قَالَ: عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: مَنْ صَلَّى عَلَيَّ عِنْدَ قَبْرِي سَمِعْتُه.
অর্থ: “যে ব্যক্তি আমার পবিত্র রওযা মুবারকের নিকটে এসে আমার প্রতি পবিত্র দুরূদ শরীফ পাঠ করবে আমি অবশ্যই তার পবিত্র দুরূদ শরীফ শুনতে পাই। ” (বাইহাক্বী শরীফ, মেশকাত শরীফ/৮৭)
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
اصحابى اخوانى صلوا على فى كل يوم الاثنين والجمعة فانى اسمع صلوتكم بلا واسطة.
অর্থ: “হে আমার ছাহাবীগণ, হে আমার উম্মতগণ! আপনারা আমার প্রতি প্রত্যেক ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ বা সোমবার ও ইয়াওমুল জুমুয়াহ বা জুমুয়াবার পবিত্র দুরূদ শরীফ পাঠ করুন। নিশ্চয়ই আপনাদের সেই পবিত্র দুরূদ শরীফ আমি বিনা মধ্যস্থতায় শুনতে পাই। ” (মেশকাত শরীফ)
উক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার ব্যাখ্যায় কিতাবে উল্লেখ করা হয়েছে-
سمعته سمعا حقيقيا بلا واسطة
অর্থ: “(নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন), আমি হাক্বীক্বীভাবে বিনা মধ্যস্থতায় তা শুনতে পাই। ” (মিরকাত শরীফ ২য় খন্ড, ৩৪৭ পৃষ্ঠা)
কিতাবে আরো উল্লেখ আছে-
ان النبى صلى الله عليه وسلم فى قبره حى
অর্থ: “নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি রওযা মুবারকে জীবিত অবস্থায়ই আছেন। ” (মিরকাত শরীফ ২য় খন্ড ২২৩ পৃষ্ঠা)
উপরোক্ত বর্ণনার আলোকে এটাই প্রমাণিত হলো যে, আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র রওযা মুবারকে স্বীয় উম্মতের দুরূদ শরীফ ও সালাম মুবারক শুনতে পান। যদি তিনি হায়াতুন্ নবী না-ই হন তবে কি করে তা শুনতে পান? অবশ্যই তিনি হায়াতুন্ নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
এ সম্পর্কে আরো উল্লেখ রয়েছে-
قال حضرت ابراهيم بن شيبان رضى الله تعالى عنه حججت فجئت المدينة فتقدمت الى القبر الشريف فسلمت على رسول الله صلى الله عليه وسلم فسمعت. من داخل الحجرة يقول وعليك السلام.
অর্থ: হযরত ইবরাহীম বিন শায়বান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, আমি পবিত্র হজ্জ শেষে পবিত্র মদীনা মুনাওয়ারায় হাজির হলাম। তারপর পবিত্র রওযা মুবারকের নিকটস্থ হয়ে সালাম শরীফ পেশ করলাম। তখন পবিত্র রওযা শরীফ উনার ভিতর থেকে “ওয়া আলাইকাস সালাম উনার ধ্বনি শ্রবণ করলাম। (আল কাউলুল বাদী’)
এ সম্পর্কে আরো উল্লেখ রয়েছে-
ليس من عبد يصلى على الا بلغنى صوته حيث كان قلنا وبعد وفاتك قال وبعد وفاتى ان الله عزوجل حرم على الارض ان تأكل اجساد الانبياء.
অর্থ: নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যে ব্যক্তি আমার উপর দুনিয়ার যে কোন স্থান থেকে পবিত্র দুরূদ শরীফ পাঠ করুক আমি তার দুরূদ শরীফের আওয়াজ শুনতে পাই। হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা আরজু করলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনার বিছালী শান মুবারক প্রকাশের পরেও কি শুনতে পাবেন? তদুত্তরে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, হ্যাঁ পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশের পরও। কারণ একথা নিশ্চিত যে, মহান আল্লাহ পাক তিনি যমীনের উপর হযরত নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের পবিত্র জিসিম মুবারক ভক্ষণ করা হারাম করেছেন। সুবহানাল্লাহ! (জালাউল আফহাম, হুজ্জাতুল্লাহিল আলামীন)
এ পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার দ্বারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দরবার শরীফে দুরূদ শরীফ পৌঁছে থাকে বলে ছাবিত হলো। এতে দূরবর্তী এবং নিকটবর্তীর কোন বাধ্যবাধকতা নেই এবং কাউকে পরিচয় করার শর্তও নেই। বরং স্বয়ং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শ্রবণ করা প্রমাণিত হয়েছে যাতে হায়াতুন নবী উনার সঙ্গে সঙ্গে উনার চরম উচ্চমানের শ্রবণ শক্তির সুস্পষ্ট দলীল রয়েছে। (চলবে)
-আল্লামা আবু আহমদ হুসাইন।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম (৩)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুনিয়ার যমীনে অবস্থানকালীন সময়ে ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ যে রোযা মুবারক রাখতেন সে রোযা মুবারক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১২ই শরীফ উনার দিনে হওয়াটা ছিলো একটি বিরল ঘটনা (২)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত হাযির-নাযির শান মুবারক (১)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
প্রাণীর ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িজ
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
আল্লাহওয়ালী মহিলা উনাদের তিনটি বৈশিষ্ট্য-
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
পুরুষের জন্য কমপক্ষে একমুষ্ঠি পরিমাণ দাড়ি রাখা ফরয
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম (২)
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মুসলমানদের সবচেয়ে বড় শত্রু কাফির-মুশরিকরা (২)
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পর্দা পালন করা নারী-পুরুষ সকলের জন্যই শান্তি ও পবিত্রতা হাছিলের কারণ
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সীমালঙ্ঘনকারী কাফির-মুশরিকদের বিরুদ্ধে জিহাদ করা মহান আল্লাহ পাক উনার নির্দেশ মুবারক
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)












