সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, রহমাতুল্লিল আলামীন, ক্বয়িদুল মুরসালীন, রউফুর রহীম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র জীবনী মুবারক (২২৮৩)
, ০২ যিলহজ্জ শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ৩১ ছানী আ’শার, ১৩৯২ শামসী সন , ৩০ মে, ২০২৫ খ্রি:, ১৭ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
কা’ব ইবনে আসাদের অঙ্গীকার ভঙ্গ:
একজন বলেই ফেললো-
كَانَ مُحَمّدٌ يَعِدُنَا أَنْ نَأْكُلَ كُنُوزَ كِسْرَى وَقَيْصَرَ
‘সম্মানিত মুসলমানরা স্বপ্ন দেখছেন যে, উনারা কিসরা ও কায়সার বিজয় করবেন। ’
হযরত ইবনে ইসহাক্ব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, হারিসা ইবনে হারিস গোত্রের আউস ইবনে কায়যী তার গোত্রের একটি বড় মজলিসে বলে উঠলো, ইয়া রসূলাল্লাহ! ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমাদের বাড়ি-ঘর অরক্ষিত এবং শত্রুর মুখে। আপনি যদি দয়া করে অনুমতি মুবারক দিতেন তাহলে আমরা বাড়িতে চলে যেতাম। কারণ আমাদের বাড়ি হচ্ছে, পবিত্র মদীনা শরীফ উনার বাইরে। কিন্তু দেখা গেলো কাফির-মুশরিক, ইহুদী, মুনাফিকদের ষড়যন্ত্রমূলক কোন কাজই সফল হলো না। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি প্রায় ২৫ দিন যাবত নিজ নিজ অবস্থানে সম্মানিত জিহাদের প্রস্তুতি নিয়ে অবস্থান করলেন। অবরোধ, প্রস্তর নিক্ষেপ ও তীর চালনা ব্যতীত বিশেষ কোন জিহাদই হলো না।
উল্লেখ্য যে, পবিত্র হিজরত মুবারক উনার পর মুসলমান ও ইহুদীদের মাঝে সন্ধি হয়েছিলো। কিন্তু সম্মানিত খন্দক জিহাদ চলাকালে ইহুদীরা সেই সন্ধি থেকে সরে যায় এবং বিশ্বাসঘাতকতা শুরু করে। তখন হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা ইহুদীদের সাথে যে চুক্তি ছিলো তা থেকে সরে আসেন।
হযরত সা’দ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ! ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমরা ও ইহুদীরা ছিলাম এমন জাতি যারা মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে শরীক স্থির করতাম। আমরা মহান আল্লাহ পাক এবং উনার সম্মানিত রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদেরকে চিনতাম না। কিন্তু সেই সময়েও মেহমানদারী কিংবা ক্রয়-সূত্র ছাড়া ইহুদীরা আমাদের একটি খেজুরের প্রতি লোলুপ দৃষ্টি নিক্ষেপ করতে সাহস পেতো না। আর আজ যখন মহান আল্লাহ পাক এবং উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা আমাদেরকে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার দ্বারা সম্মানিত করেছেন, আমাদেরকে হিদায়েতের পথ দেখিয়েছেন এবং সম্মানিত দ্বীন ইসলাম এবং আপনার উছীলা মুবারকে আমাদের জাহির-বাতিনী শক্তিশালী করছেন তখন আমরা তাদেরকে কেন কর দিবো?
মহান আল্লাহ পাক উনার ক্বসম! তাদের সাথে আমাদের কোন চুক্তির প্রয়োজন নাই। তাদেরকে আমরা তরবারি ছাড়া কিছুই দিবো না। এভাবেই আমরা আমাদের ও তাদের মাঝে মহান আল্লাহ পাক ও উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের ফায়সালা মুবারকের অপেক্ষা করবো। ইনশাআল্লাহ!
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, আপনি ঠিকই বলেছেন, আপনার কথাই ঠিক থাকলো। তখন হযরত সা’দ বিন মুয়াজ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি মুসলমান ও ইহুদীদের সাথে চুক্তিপত্রটির লেখাগুলো মুছে ফেললেন। তারা আমাদের বিরুদ্ধে যা পারে করুক। তারা আমাদের সাথে কোন দিন পারবে না।
হযরত ইবনে ইসহাক রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা সতর্ক প্রহরায় নিযুক্ত থাকলেন। বিপরীত দিকে শত্রু বাহিনী তাদের ঘৃণ্য অবরোধ চালিয়ে গেলো। কিন্তু উভয় দলের মধ্যে কোন মুখোমুখি জিহাদ সংঘটিত হলো না। তবে কুরাইশ কাফির-মুশরিকদের মধ্য থেকে কতিপয় কাফির অশ্বারোহী যথা- আমির ইবনে দুয়াঈ গোত্রীয় আমর ইবনে আব্দ উদ্দ ইবনে আবূ কাইস; হযরত ইবনে হিশাম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, তাকে আমর ইবনে আব্দ ইবনে আবূ কাইসও বলা হয়, ইকরামা ইবনে আবূ জাহল, হুবাইরা ইবনে আবূ ওয়াহাব মাখযূমী ও মুহাবির ইবনে ফিহর গোত্রের কবি যিরার ইবনে খাত্তাব ইবনে মিরদাস অস্ত্র-সজ্জিত হয়ে ঘোড়ায় চড়ে বনূ কিনানার শিবিরে গিয়ে হাযির হলো এবং তাদের বলে দিলো, হে বানূ কিনানা! যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হও। কে কেমন যোদ্ধা আজ তার পরিচয় হবে। এরপর তারা ঘোড়া হাঁকিয়ে ছুটলো। কিন্তু পরিখা তাদের সামনে বাধা হয়ে দাঁড়ালো। তারা পরিখা দেখে বলে উঠলো, মহান আল্লাহ পাক উনার ক্বসম! এর আগে আরবরা এরূপ হিকমত বা কৌশল অবলম্বন করেননি।
-আল্লামা সাইয়্যিদ শাবীব আহমদ।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (৩)
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ইসলামী শরীয়ত মুতাবিক- ছবি তোলা হারাম
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক করেন-
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (২)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যাকাত সম্পর্কিত আহকাম, মাসায়িল ও ফাযায়িল (২)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পর্দা পালন করা পুরুষ-মহিলা সবার জন্য ফরজ
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত মুবারক করা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীর জন্য ফরযে আইন
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের আলোকে ছিরাতুল মুস্তাক্বীম উনার ছহীহ তাফসীর- ০১
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)












