সারাবিশ্বে একই দিনে ঈদ পালন ও রোযা শুরু করার কথা বলার উদ্দেশ্য পবিত্র ঈদ ও পবিত্র রোযাকে নষ্ট করা, যা মূলত মুনাফিকদের একটি ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত (৬৬)
, ৩ রা জুমাদাল ঊখরা শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ০৮ সাবি’, ১৩৯২ শামসী সন , ০৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রি:, ২১ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
“কম দূরত্বের কারণে সময়ের পার্থক্য যেহেতু মান্য করা ফরয, সেহেতু বেশি দূরত্বের কারণে দিনের পার্থক্য মেনে ভিন্ন ভিন্ন দিনে পবিত্র ঈদ পালন করাও পবিত্র রোযা শুরু করা ফরযে আইন”
মোদ্দাকথা হলো:
সারাবিশ্বে একই দিনে পবিত্র রোযা শুরু ও পবিত্র ঈদ পালন করার দাবি করা একটি নিকৃষ্ট বিদয়াতী ও কুফরী কাজ। যা সুস্পষ্টভাবে পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ বিরোধী।
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম, তাবেয়ীন, তাবে-তাবেয়ীনসহ কোন ইমাম-মুজতাহিদ উনারা কেউই কোনদিন সারাবিশ্বে একইদিনে পবিত্র রোযা শুরু ও পবিত্র ঈদ পালন করার দাবি করেন নাই। বরং উনারা আজীবন নতুন চাঁদ উদয়স্থলের ভিন্নতা অনুযায়ী ভিন্ন ভিন্ন দিনে পবিত্র রোযা ও পবিত্র ঈদ পালন করেছেন। পক্ষান্তরে যারা সারাবিশ্বে একই দিনে পবিত্র ঈদ ও পবিত্র রোযা পালন করার পক্ষে দলীল দিয়ে উক্ত দলীলগুলিতে কোথাও মিথ্যা অর্থযুক্ত, অপব্যাখ্যা করেছে, কোথাও সরাসরি মিথ্যাচার ও ধোঁকাবাজি করেছে, কোথাও পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার অর্থ বিকৃতি করে মনগড়া ব্যাখ্যা করেছে। তারা স্পষ্ট কুফরী ও নেফাক্বী করেছে। যার কারণে এ ধরনের ধোঁকাবাজ, প্রতারক দাজ্জালে-কাযযাবদের থেকে দূরে থাকা মুসলমানদের জন্য ফরয-ওয়াজিব।
তিনটি কারণে একই দিনে সারাবিশ্বে রোযা শুরু করা ও ঈদ পালন করা একেবারেই অসম্ভব তা হলো:
১। اِخْتِلَافُ الْاَوْقَاتِ : সময়ের পার্থক্য।
২। اِخْتِلَافُ الْمَطَالِعِ: নতুন চাঁদ উদয়স্থলের পার্থক্য।
৩। اَلْمَسَافَاتُ الْجِغْرَافِيَّةُ: ভৌগলিক দূরত্ব।
সময়ের পার্থক্য সম্পর্কে বলতে হয়:
“সময়ের ভিন্নতাকে গ্রহণ করে যদি সারাবিশ্বে ভিন্ন ভিন্ন সময়ে পবিত্র ঈদ পালন ও পবিত্র রোযা শুরু করা ফরয হয়, তাহলে উক্ত সময়ের ভিন্নতাকে কেন্দ্র করে দূরত্বের কারণে দিনের ভিন্নতা হওয়াতে, সারাবিশ্বে ভিন্ন ভিন্ন দিনে পবিত্র ঈদ পালন ও পবিত্র রোযা শুরু করা ফরযে আইন”
স্থান হিসেবে বলতে হয়:
কম দূরত্বের কারণে যদি ভিন্ন ভিন্ন সময়ে পবিত্র সাহরী-ইফতারীতে সময়ের শুরু-শেষ মেনে নেয়া ফরয হয়, তাহলে বেশি দূরবর্তী স্থানে দিনের ভিন্ন হওয়াতে ভিন্ন ভিন্ন দিনে পবিত্র ঈদ ও পবিত্র রোযা শুরু করা ফরযে আইন”
অথবা
স্বল্প স্থানের দূরত্বের কারণে যদি একই সময়ে পবিত্র ইফতার করা ও পবিত্র সাহরীর শুরু-শেষ সময় নির্ধারণ করা জায়িয না হয়, তাহলে বেশি দূরবর্তী স্থানে একই দিনে বা একই তারিখ ও বারে পবিত্র ঈদ পালন ও পবিত্র রোযা শুরু করার দাবি করা নিঃসন্দেহে হারাম ও কুফরী। এবং এটা মুসলমানদের পবিত্র ঈদ ও পবিত্র রোযাকে নষ্ট করার কঠিন ষড়যন্ত্র ছাড়া অন্য কিছু নয়।
নতুন চাঁদ উদয় স্থলের পার্থক্য সম্পর্কে বলতে হয়:
উদয়স্থলের ভিন্নতার কারণে যদি সারাবিশে^ পবিত্র ছলাত উনার মাকরূহ ওয়াক্ত ভিন্ন ভিন্ন দিনে পালন করতে হয়, তাহলে সারাবিশ্বে একই দিনে পবিত্র ঈদ ও পবিত্র রোযা পালন করার দাবি করা কাট্টা মুনাফিক্বী।
সৌদি আরবের চাঁদ দেখার অনুসরণে পবিত্র রোযা শুরু করা ও পবিত্র ঈদ পালন করা সম্পর্কে বলতে হয়:
সৌদি আরব বা মধ্য প্রাচ্যে নতুন চাঁদ দেখার সাথে সাথে যদি সারাবিশ্বে পবিত্র রোযা শুরু করতে হয় ও পবিত্র ঈদ পালন করতে হয় তাহলে সৌদি আরব বা মধ্য প্রাচ্যে নতুন চাঁদ দেখার সাথে সাথে সারাবিশ্বে পবিত্র ছলাতুল মাগরিব আদায় করাও ফরয। কেননা, সৌদি আরব বা মধ্য প্রাচ্যে নতুন চাঁদ দেখার সাথে সাথে সর্বাগ্রে পবিত্র ছলাতুল মাগরিব আদায় করাই ফরয হয়।
মূলত: তাদের বক্তব্যগুলি হলো মনগড়া, বানোয়াট, মিথ্যাচার, প্রতারণা এবং পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার অপব্যখ্যা এবং তাফসীর রায়। যার মধ্যে তাদের নেফাক্বী ও কুফরী চরিত্র পরিষ্কার হয়েছে।
তাই প্রত্যেকের স্থানীয় সময় অনুযায়ী সাহরী ও ইফতার না করলে যেমনভাবে কারো পবিত্র রোযা আদায় হবে না বরং গোনাহ হবে তদ্রুপ প্রত্যেকের স্থানীয় সময়ের অনুসরণে পবিত্র ঈদ ও পবিত্র রোযা পালন না করলে পবিত্র রোযা ও পবিত্র ঈদ মোটেও আদায় হবে না বরং হারাম ও কুফরী হবে। সমাপ্ত....
-মুহম্মদ মুফীদ্বুর রহমান।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সুলত্বানুল হিন্দ, কুতুবুল মাশায়িখ, মুজাদ্দিদুয যামান, গরীবে নেওয়াজ, আওলাদে রসূল, হাবীবুল্লাহ সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চীশতী আজমিরী সাঞ্জারী রহমতুল্লাহি আলাইহি (৬৪)
১৭ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে গরুর গোস্ত শি‘আরুল ইসলাম (১১)
১৭ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
অসংখ্য হাদীছ শরীফ দ্বারা প্রমাণিত- প্রাণীর ছবি হারাম
১৭ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৭ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
যে সকল ওলামায়ে সূ’রা মন্দির ও মূর্তি পাহারা দিয়েছে, হিন্দুদের পূজায় গিয়েছে, তাদেরকে পূজা করতে সাহায্য-সহযোগীতা করেছে, সমর্থন করেছে, সম্মতি প্রকাশ করেছে, তাদের সাথে মুছাফাহা ও মুয়ানাক্বা করেছে, তাদেরকে সম্মান করেছে, তা’যীম করেছে, তাদের সম্পর্কে সম্মানসূচক শব্দ ব্যবহার করেছে এবং সম্মানসূচক শব্দ দ্বারা সম্বোধন করেছে, বাহ বাহ দিয়েছে এবং বেশী বেশী মূর্তি তৈরী করতে বলেছে এবং বেশী বেশী পূজা করতে বলেছে তারা প্রত্যেকেই মূর্তিপূজারী ও মুশরিক হয়ে কাট্টা কাফির ও মুরতাদ হয়েছে (৩০)
১৭ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
কদমবুছী করা খাছ সুন্নত মুবারক
১৭ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সংক্ষেপে মো./সাঃ/দঃ/ S.M ইত্যাদি লেখার বিষয়ে সম্মানিত ইসলামী শরীয়ত কি বলে?
১৭ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মুসলমানদের বিজ্ঞানে অবদানসমূহ চুরি করে অমুসলিমদের বিজ্ঞানী সাজা নিউটনের চৌর্যবৃত্তির স্বরূপ উন্মোচন: পদার্থবিজ্ঞানের ৩টি গতিসূত্র, ভরবেগ ও জড়তার ধারণা সর্বপ্রথম আবিষ্কার করেছিলেন ইবনে সীনা ও অন্যান্য মুসলিম বিজ্ঞানীগণ, যেগুলো নিউটন নিজের নামে চালিয়ে দিয়েছিলো
১৬ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সর্বকালে সবার জন্য উসওয়াতুন হাসানাহ্
১৬ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
পবিত্র মীলাদ শরীফ পাঠ করা ও তা’যীমার্থে ক্বিয়াম শরীফ করা সুন্নত হওয়ার অকাট্য প্রমাণ
১৬ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
পর্দা পালন করা নারী-পুরুষ সকলের জন্যই শান্তি ও পবিত্রতা হাছিলের কারণ
১৬ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৬ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)