সুওয়াল: পবিত্র কুরবানীর পশুর গোশত বণ্টনের কোন পদ্ধতি আছে কি?
, ০৮ যিলক্বদ শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ১৮ ছানী আশার, ১৩৯১ শামসী সন , ১৭ মে, ২০২৪ খ্রি:, ০৩ জৈষ্ঠ্য, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
يَسْتَحِبُّ التَّصَرُّفُ ثُلُثٌ لِنَفْسِه ثُلُثٌ هَدِيَّةٌ ثُلُثٌ لِلْفُقَرَاءِ وَالْـمَسَاكِيْنَ وَاِنْ كَانَتْ وَصِيَّةٌ يَتَصَدَّقُ بِـجَمِيْعِهَا.
অর্থ : “পবিত্র কুরবানী উনার গোশত বণ্টন করার মুস্তাহাব নিয়ম হচ্ছে- এক তৃতীয়াংশ নিজের জন্য রাখবে, এক তৃতীয়াংশ আত্মীয়-স্বজন পাড়া-প্রতিবেশীর জন্য হাদিয়া স্বরূপ দিবে আর এক তৃতীয়াংশ গরীব-মিসকীনের জন্য দান স্বরূপ দিবে। আর যদি কুরবানীকৃত পশুটি ওছিয়তকৃত হয়ে থাকে তাহলে সম্পূর্ণটাই গরীব-মিসকীনকে দান করে দিতে হবে। ” (ফিক্বাহর কিতাবসমূহ)
অর্থাৎ কুরবানীদাতার জন্য কুরবানীকৃত পশুর গোশ্ত কাউকে দেয়া বা না দেয়া তার ইখতিয়ারের অন্তর্ভুক্ত। সে ইচ্ছা করলে সম্পূর্ণটাই দান করে দিতে পারে, আবার ইচ্ছা করলে সম্পূর্ণটাই রেখে খেতে পারে। এতে কুরবানী উনার কোন ত্রুটি হবেনা।
উল্লেখ্য, কোন কোন গ্রামে-গঞ্জে বা মহল্লায় দেখা যায়, সেখানে যত পশু পবিত্র কুরবানী করা হয় প্রত্যেক কুরবানীদাতার কুরবানীকৃত পশুর এক তৃতীয়াংশ গোশত এক স্থানে জমা করে উক্ত এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিগণ জমাকৃত গোশতগুলোকে এলাকার গরীব মিসকীন ও ধনী অর্থাৎ যারা পবিত্র কুরবানী করেছে আর যারা পবিত্র কুরবানী করেনি তাদের প্রত্যেককেই সমহারে বণ্টন করে দেয়।
এই ধরণের বণ্টনের কারণে গরীব মিসকীনের হক নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কেননা গণ্যমান্য ব্যক্তিগণ জমাকৃত গোশতগুলোকে এলাকার গরীব মিসকীন ও ধনী নির্বিশেষে সকলের মাঝেই বণ্টন করছে।
আরো উল্লেখ্য, এলাকাবাসী যদি গরীব-মিসকীনকে বণ্টন করে দেয়ার জন্যই এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদেরকে গোশত দিয়ে থাকে। তাহলে এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিদের দায়িত্ব ও কর্তব্য হবে শুধুমাত্র গরীব-মিসকিনদের মধ্যেই উক্ত গোশ্ত বণ্টন করে দেয়া। এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিগণ যদি বিপরীত কাজ করে তাহলে তারাই গরীব-মিসকীনের হক নষ্টকারী হিসাবে সাব্যস্ত হবে এবং এর জন্য তাদেরকে কঠিন জবাবদিহি করতে হবে। আর তারাই দায়ী থাকবে।
এছাড়াও এতে কুরবানীদাতারও হক্ব নষ্টের সম্ভাবনা রয়েছে। কেননা কুরবানীদাতাদের মধ্যে যারা এক তৃতীয়াংশ গোশত দিয়ে দিলে তারা তাদের পরিবারবর্গ বা অধীনস্থদেরকেই পবিত্র ঈদ উনার দিন তৃপ্তিসহকারে খাওয়াতে পারবেনা এমন ব্যক্তির নিকট থেকেও গোশত সংগ্রহ করা হচ্ছে। তাই এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিগণ যদি প্রকৃতপক্ষেই গরীব-মিসকিনদের উপকার করতে চায় তাহলে তাদের উচিত হবে এলাকার ঐ সমস্ত কুরবানীদাতাদের নিকট থেকে এক তৃতীয়াংশ গোশত সংগ্রহ করা। যারা এক তৃতীয়াংশ গোশত দেয়ার পরও তাদের পরিবার বা অধীনস্থদের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ গোশত থেকে যায়, অথবা যারা স্বেচ্ছায় দান করে। যাদের নিকট পর্যাপ্ত পরিমাণে গোশত নেই অর্থাৎ যারা এক তৃতীয়াংশ গোশ্ত দিয়ে দিলে তারা তাদের পরিবারবর্গ বা অধীনস্থদেরকেই পবিত্র ঈদ উনার দিন তৃপ্তিসহকারে খাওয়াতে পারবেনা এমন ব্যক্তির নিকট থেকে জবরদস্তি করে গোশত সংগ্রহ করলে ছওয়াবের পরিবর্তে কঠিন গুণাহই হবে।
আর বণ্টনের ক্ষেত্রে ওই সমস্ত লোকদেরকে গোশত দিতে হবে যারা পবিত্র কুরবানী দেয়নি অথবা যদি পবিত্র কুরবানী দিয়েও থাকে তথাপিও তারা চাহিদা মুতাবিক গোশত পায়নি। পবিত্র কুরবানী দেয়ার কারণে যাদের নিকট পর্যাপ্ত পরিমাণে গোশত রয়েছে তাদেরকে মিসকীনের অংশ থেকে গোশত দেয়া কখনই নেকীর কাজ হবেনা। (মিরকাত, বাহরুর রায়িক, আলমগীরী, শামী)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া কবীরা গুনাহ
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হযরত আব্বাস ইবনে মিরদাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যাকাত সম্পর্কিত আহকাম, মাসায়িল ও ফাযায়িল (৪)
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
প্রাণীর ছবি তোলা হারাম ও নাফরমানীমূলক কাজ
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
অ্যান্টার্কটিকা নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় বিজ্ঞানীরা
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম (৪)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা অবশ্যই সত্যের মাপকাঠি; অস্বীকারকারীরা কাট্টা কাফির (১)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ উনাদের আলোকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দু‘আ বা মুনাজাত (১১তম অংশ)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)












