জীবনী মুবারক
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (২)
বিলাদত শরীফ: ৬০৮ খৃ: বিছাল শরীফ: ৭৪ হিজরী (৬৯৪ খৃ:) বয়স মুবারক: ৮৭ বছর।
, ০৫ জুমাদাল ঊখরা শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ১০ সাবি’, ১৩৯২ শামসী সন , ০৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রি:, ২৩ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
প্রশাসনিক দায়িত্ব থেকে দূরে অবস্থান:
আমিরুল মু’মিনীন, সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার খিলাফতযুগে তিনি প্রশাসনিক কর্মকা-ে অংশগ্রহণের সুযোগ লাভ করেন। সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনি উনাকে কাজীর পদ গ্রহণের প্রস্তাব দেন। কিন্তু তিনি এই প্রস্তাব হতে রুখসত আরজী করেন এই বলে যে, আমি দুই ব্যক্তির মধ্যে ফায়সালা করি না, দুই ব্যক্তির ইমামতিও করি না। কারণ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন, কাজী তিন শ্রেণীর। এক, জাহিল। তাদের ঠিকানা জাহান্নাম। দুই, দুনিয়াদার আলিম। তারাও জাহান্নামী। তিন, যারা ইজতিহাদ করে সঠিক সিদ্ধান্তে উপনীত হয়। তাদের জন্য না আছে শাস্তি না আছে পুরস্কার।
খলীফা বললেন, আপনার পিতাও তো ফায়সালা করতেন।
তিনি বললেন, হ্যাঁ; এ কথা সত্য। তবে কোন সমস্যায় পড়লে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কাছে যেতেন। কিন্তু আমি এখন কার কাছে যাবো? মহান আল্লাহ পাক উনার ওয়াস্তে আমাকে অব্যাহতি দিন।
খলীফা উনাকে অব্যাহতি দিয়েছিলেন। তবে উনার কাছ থেকে অঙ্গীকার নিয়েছিলেন যে, এ কথা তিনি অন্য কারো নিকট প্রকাশ করবেন না। কারণ; খলীফা জানতেন, লোকেরা যদি জানতে পারে হযরত ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি কাজীর পদ গ্রহণে রুখসত চেয়েছেন, তাহলে এ পদের জন্য আর কোন সত্যনিষ্ঠ মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না। সকলেই হযরত ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার পদাঙ্ক অনুসরণ করবে। সুতরাং দেখা যায়, দ্বীনি নির্দেশের বিশ্লেষণে সিদ্ধান্তহীনতার আশঙ্কায় হযরত ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি কাজীর পদ গ্রহণে রুখসত চেয়েছেন। পরবর্তীতে তিনি উনার সমগ্র জীবন শিক্ষা ও দ্বীনি-বিষয়ক কাজে অতিবাহিত করেন।
মুনাফিকদের সৃষ্ট আভ্যন্তরীণ ফিতনা-ফাসাদ শুরু হওয়ার পর হযরত ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি সম্পূর্ণ নির্জনতা অবলম্বন করেন। খিলাফতের কোন কর্মকা-ে তিনি অংশগ্রহণ করেননি। সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার শাহাদাত মুবারকের পর লোকেরা উনাকে খিলাফতের দায়িত্ব গ্রহণের অনুরোধ জানায়। তিনি দৃঢ়তার সাথে প্রত্যাখ্যান করেন। তখন কিছু উচ্ছৃংখল লোকেরা উনাকে শহীদ করার হুমকি দেয়। কিন্তু তিনি বিন্দুমাত্র বিচলিত না হয়ে নিজ সিদ্ধান্তে অটল থাকেন।
হযরত ইমামুল আউওয়াল কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম ও হযরত মুয়াবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু- এ দুইজনের মধ্যে ইখতিলাফের সময় তিনি কাকে সমর্থন দিয়েছিলেন, সে সম্পর্কে মতভেদ আছে।
হযরত ইবনে হাজার আসকালানী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, হযরত ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি মনে করতেন, যতক্ষণ পর্যন্ত কোন লোকের ব্যাপারে জনগণের ইজমা বা ঐক্যমত না হয় ততক্ষণ উনার হাতে বাইয়াত করা উচিত নয়। এই দৃষ্টিকোণ থেকেই কোন কোন বর্ণনা ধারণা করা হয়, তিনি হযরত ইমামুল আউওয়াল কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার হাতে বাইয়াত গ্রহণ করেননি। কিন্তু মুসতাদরিকের একটি বর্ণনা মতে তিনি হযরত ইমামুল আউওয়াল কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার হাত মুবারকে বাইয়াত গ্রহণ করেছিলেন; তবে তিনি উট ও ছিফ্ফীনের যুদ্ধে কোন পক্ষেই যোগদান করেননি। তবে তিনি জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল আউওয়াল কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার পক্ষে যোগদান না করায় আফসুস করেছেন।
সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল আউওয়াল কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার শাহাদাত মুবারকের পর সিবতু রসূল আর রবি’ সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছানী মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি খিলাফত মুবারকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। অতঃপর হযরত মুয়াবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার খিলাফত আমলে হযরত ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বিভিন্ন অভিযানে শরীক হন। কনষ্টান্টিনোপল অভিযানে তিনি যোগদান করেছিলেন। (অসমাপ্ত)
-আল্লামা সাঈদ আহমদ গজনবী।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
উলামায়ে সূ’ ধর্ম ব্যবসায়ীদের পরিচিতি ও হাক্বীক্বত (১)
২৪ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িয
২৪ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৪ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুল খুলাফা, আবুল খুলাফা, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম তিনি বাংলাদেশতো অবশ্যই; এমনকি সারা পৃথিবীতে, সারা কায়িনাতে সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ্ মুবারক প্রতিষ্ঠা করবেনই করবেন ইনশাআল্লাহ
২৪ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা (৬)
২৪ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সর্বোচ্চ সম্মানিত ভাষায় সম্বোধন মুবারক করতে হবে
২৪ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সম্মানিত মি’রাজ শরীফে রোযা রাখার বিশেষ ফযীলত মুবারক
২৪ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহাসম্মানিত মি’রাজ শরীফ উনার তারিখ নিয়ে মতভেদ সৃষ্টিকারীরাই ধর্মব্যবসায়ী উলামায়ে ছু
২৪ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সাওয়ানেহ উমরী মুবারক (৪)
২৩ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ছাহিবে কা’বা কাওসাইনে আও আদনা, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আযিমুশ শান মি’রাজ শরীফ উনার বর্ণনা মুবারক (৫)
২৩ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
“আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম” কিতাবের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে বিরোধিতাকারীদের আপত্তির জবাব
২৩ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
২৩ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)