জীবনী মুবারক
হযরত খাজা বাহাউদ্দীন নকশবন্দ বুখারী রহমতুল্লাহি আলাইহি (৩)
বিলাদত শরীফ: ৭১৮ হিজরী (১৩১৮ খ্রিস্টাব্দ) বিছাল শরীফ: ৭৯১ হিজরী (১৩৮৯ খ্রিস্টাব্দ) বয়স মুবারক: ৭৩ বছর
, ১৬ মুহররমুল হারাম শরীফ, ১৪৪৭ হিজরী সন, ১৩ ছানী, ১৩৯৩ শামসী সন , ১২ জুলাই, ২০২৫ খ্রি:, ২৮ আষাঢ়, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
অন্যান্য বর্ণনা:
হযরত খাজা বাহাউদ্দীন নকশবন্দ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, যখন আমি হযরত সাইয়্যিদ আমীর কুলাল রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার খিদমতে পৌঁছলাম, তিনি আমার প্রতি অশেষ দয়া দেখালেন এবং বিশেষ তাওয়াজ্জুহ সহকারে সবকের তালক্বীন দিলেন, নফী ও ইছবাতের যিকির খফী (গোপন) নিয়মে শিক্ষা দিলেন। (নাফাহাতুল উনস)
হযরত খাজা বাহাউদ্দীন নকশবন্দ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে হযরত বাবা সাম্মাসী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি নিজের সন্তান হিসাবে কবুল করেছিলেন এবং হযরত সাইয়্যিদ আমীর কুলাল রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনাকে রুহানী তরবীয়ত (তা’লীম) দান করেন। তবে তিনি সবচেয়ে বেশী রুহানী ফয়েজ প্রাপ্ত হন হযরত খাজা আব্দুল খালিক্ব গাজদাওয়ানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে। (মিরাতুল আসরার)
হযরত খাজা বাহাউদ্দীন নকশবন্দ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার বয়স মুবারক যখন চার বৎসর তখন থেকে উনার কারামত মুবারক প্রকাশ হতে থাকে। এই সময় তিনি স্বপ্নে দেখেন যে, হযরত হাকীম আতা রহমতুল্লাহি আলাইহি, যিনি তুর্কী মাশায়েখ উসাদের একজন ছিলেন, উনাকে দরবেশীর তালক্বীন দিচ্ছেন।
একদিন বোখারার বাজারে হযরত খাজা বাহাউদ্দীন নকশবন্দ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি হযরত হাকীম আতা রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সাক্ষাত পান। তিনি উনাকে দেখে চিনতে পারলেন, কিন্তু উনার ছোহবত মুবারকে যাওয়া সহজ হলো না। যখন তিনি ঘরে ফিরে গেলেন, রাত্রে এক ব্যক্তি এসে উনাকে খবর দিয়ে গেলো যে, হযরত খলীল আতা রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনাকে স্মরণ করছেন।
হযরত খাজা বাহাউদ্দীন নকশবন্দ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি তৎক্ষণাৎ উনার নিকট চলে গেলেন এবং স্বপ্নের ঘটনা উনাকে অবগত করাতে চাইলেন। কিন্তু হযরত খলীল দরবেশ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি তুর্কী ভাষায় বললেন, যা কিছু আপনার মনে রয়েছে, তা সব আমার জানা আছে। তা বলার প্রয়োজন নেই।
হযরত নকশবন্দ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, উনার কথায় আমার মধ্যে এক অদ্ভুত হাল সৃষ্টি হলো। আমার অন্তরে উনার প্রতি এক মজবুত মুহব্বতের সম্পর্ক সৃষ্টি হয়ে গেলো। ফলে উনার ছোহবত মুবারকে অনেক আশ্চর্যজনক হাল আমার মুশাহাদা হতে লাগলো। আমি ছয় বৎসর উনার খিদমতে থাকলাম।
অতঃপর উক্ত দরবেশ মাওরাউন্নাহার দেশের বাদশাহ হয়ে গেলেন এবং লোকেরা উনাকে সুলতান খলীল রহমতুল্লাহি আলাইহি বলে সম্বোধন করতেন। উনার বাদশাহী অবস্থায়ও আমি উনার খিদমত করতে লাগলাম এবং এ অবস্থায়ও উনার ছোহবত মুবারকে আশ্চর্যজনক হালসমূহ প্রকাশ হতে লাগলো। তিনি আমার সঙ্গে নেহাত দয়া ও সহানুভূতির সাথে ব্যবহার করতেন এবং পবিত্র ছোহবত মুবারক উনার আদব-কায়দা শিক্ষা দিতেন। তাতে ছায়র ও সুলূকের পথে আমার বিশেষ ফায়দা হলো। উনার খিদমতে এভাবে আরো ছয় বৎসর সময় আমি অতিবাহিত করলাম।
কিছুদিন পরই তিনি ক্ষমতাচ্যুত হলেন এবং উনার বাহ্যিক দুনিয়াবী শান শওকত শেষ হয়ে গেলো। ইহা দেখে দুনিয়ার প্রতি আমার অন্তর সম্পূর্ণ বীতশ্রদ্ধ হয়ে গেলো। আমি বোখারা চলে গেলাম এবং সেখানে “আনওয়ারতুন” নামে এক গ্রামে চুপচাপ নিজের কাজে মশগুল রইলাম। (মিরাতুল আসরার)
হযরত সুলতান খলীল রহমতুল্লাহি আলাইহি থেকে পৃথক হওয়ার বেশ কিছুদিন পর হযরত খাজা আব্দুল খালিক্ব গাজদাওয়ানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনাকে খফী (গোপন) যিকিরের রুহানী তা’লীম দিতে লাগলেন। অতঃপর, যেহেতু হযরত খাজা বাবা সাম্মাসী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনাকে তা’লীম ও তরবীয়ত দেয়ার কাজ হযরত সাইয়্যিদ আমীর কুলাল রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার উপর সোপর্দ করেছিলেন, তিনি উনার খিদমতে উপস্থিত হলেন। তিনিও উনাকে খফী যিকিরের তা’লীম দিলেন। সঙ্গে সঙ্গে তিনি জলী (উচ্চস্বরে) যিকিরও করতেন। (ইনশাআল্লাহ চলবে)
-আল্লামা সাঈদ আহমদ গজনবী।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
ইলিম অর্জন করার পর সে অনুযায়ী যে আমল করে না, তার তিনটি অবস্থার যে কোনো একটি হবেই-
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (৪)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ঢিলা-কুলুখের বিধান
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
বেপর্দা হওয়া শয়তানের ওয়াসওয়াসাকে সহজ করার মাধ্যম
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
মহান আল্লাহ পাক উনার রাস্তায় খরচ করলে তা দ্বিগুণ-বহুগুনে বৃদ্ধি করে ফিরিয়ে দেয়া হয়
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
আসমাউর রিজাল, জারাহ ওয়াত তা’দীল, উছুলে হাদীছ শরীফ উনার অপব্যাখ্যা করে অসংখ্য ছহীহ হাদীছ শরীফ উনাকে জাল বলছে ওহাবী সালাফীরা (১)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (৩)
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ইসলামী শরীয়ত মুতাবিক- ছবি তোলা হারাম
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক করেন-
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার)












