সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার মহামূল্যবান নছীহত মুবারক:
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের অনুসরণে মু’মিনদের জীবন গড়ে তোলা দায়িত্ব-কর্তব্য
, ২৯ ছফর শরীফ, ১৪৪৭ হিজরী সন, ২৫ ছালিছ, ১৩৯৩ শামসী সন , ২৪ আগস্ট, ২০২৫ খ্রি:, ০৯ ভাদ্র, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) মহিলাদের পাতা
(১ম অংশ)
মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার সূরা তওবা শরীফ উনার ১২০নং আয়াত শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-
مَاكَانَ لِاَهْلِ الْمَدِيْنَةِ وَمَنْ حَوْلَهُمْ مِنَ الْاَعْرَابِ اَنْ يَتَخَلَّفُوْا عَنْ رَسُوْلِ اللهِ وَلَايَرْغَبُوْا بِاَنْفُسِهِمْ عَنْ نَفْسِه.
অর্থ: আরব, আযম কারো জন্য জায়েয হবে না শাহিদুন নবী নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে পিছিয়ে থাকা এবং উনার থেকে নিজেদেরকে বেশি প্রাধান্য দেয়া।
সুতরাং, সর্বক্ষেত্রে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে প্রাধান্য দিতে হবে। যেমন মহব্বত করার ক্ষেত্রে সমস্ত কিছু থেকে উনাকে এবং উনার মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে বেশী মহব্বত করতে হবে, তেমন তর্জ-ত্বরীকা মানার ক্ষেত্রেও সমস্ত তাগুতের অনুসরণ থেকে বিরত থেকে একমাত্র উনার তর্জ-ত্বরীকা মুবারক গ্রহণ করতে হবে।
আর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ক্বায়েম-মাক্বাম হিসাবে পরবর্তীতে যারা আসবেন; বান্দা-বান্দী, জিন-ইনসান সকলের জন্য উনারা হবেন অনুসরণীয়। এ প্রসঙ্গে মহাসম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حضرت اِبْنِ عَبَّاسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ اَلشَّيْخُ فِيْ اَهْلِه كَالنَّبِيِّ فِيْ اُمَّتِه وَ فِيْ رِوَايَةٍ اَلشَّيْخُ لِقَوْمِه كَالنَّبِيِّ فِيْ اُمَّتِه
অর্র্থ: হযরত নবী আলাইহিস সালাম তিনি উম্মতের নিকট যেরূপ সম্মানিত ও অনুসরণীয়, হযরত শায়েখ বা মুর্শিদ আলাইহিস সালাম তিনিও উনার অধীনস্ত তথা মুরীদের নিকট তদ্রুপ সম্মানিত ও অনুসরণীয়। (মাকতুবাত শরীফ, দাইলামী শরীফ)
সুতরাং বিষয়টি স্পষ্ট যে, যিনি নায়িবে নবী বা মুর্শিদ হবেন তিনি মুরীদের নিকট প্রতিটি ক্ষেত্রে অনুসরণীয় এবং সম্মানিত হবেন। অর্থাৎ সম্মানিত শায়েখ উনাকে সর্বক্ষেত্রে, সর্বাবস্থায় প্রাধান্য দিতে হবে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, মহাসম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
اِنَّ اللهَ جَعَلَ الْحَقَّ عَلى لِسَانِ حَضَرَتْ عُمَر ابْنِ خَطَّابٍ عَلَيْهِ السَّلَامِ وَقَلْبِه وَهُوَ الْفَارُقُ فَرَّقَ اللهُ بِه بَيْنَ الْحَقِّ وَالْبَاطِلِ.
অর্থ: মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত ফারুক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার যবান ও ক্বলব মুবারকে সত্য রেখেছেন। তিনি হচ্ছেন হযরত ফারুক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম। মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত ফারুক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার মাধ্যমে হক্ব ও নাহক্বের পার্থক্য করেছেন। সুবহানাল্লাহ! (সুনানে আবূ দাউদ শরীফ)
লক্ষণীয় বিষয় হল, সমস্ত কাফেররা সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার শত্রু। সেই প্রেক্ষিতে মুসলমানদেরও শত্রু। এই নিকৃষ্ট কাফেররা সবসময় একজোট এবং তাদের কার্যাবলীও থাকে এক। তারা যদি নিজেরা একটা কাফের সমাজ তৈরী করতে পারে, দুনিয়ার পুজারী- গাইরুল্লাহ তালাশী তারা যদি ঘর-সংসার ত্যাগ করে সারাদিন দুনিয়ার পিছনে ছুটতে পারে, তাহলে আমরা যারা ঈমানদার দাবী করি আমরা কেন শরীয়তের মধ্যে পর্দায় থেকে ঈমানদার সমাজ তৈরী করতে পারিনা? ঈমান-আমল, পরকাল এবং মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য কেন আমরা পরস্পর পরস্পরের প্রতি সহানুভূতিশীল হয়ে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের অনুসরণে জীবন-যাপন করতে পারি না?
মূলত আমরা মহাসম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনাকে মুফতে লাভ করেছি, এজন্য মহাসম্মানিত দ্বীন-ইসলাম উনার ক্বদর আজ আমাদের মাঝে নেই। নাঊযুবিল্লাহ! যদি ক্বদর থাকত তাহলে আমলের মাধ্যমেই বিষয়টির বহিঃপ্রকাশ ঘটতো।
মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম ও হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের জীবনী মুবারকে আমরা দেখতে পাই, উনারা নুরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সর্বশ্রেষ্ঠ নিয়ামত মুবারক হিসেবে পেয়ে উনার পরিপূর্ণ অনুসরণ করার মাধ্যমে সর্বশ্রেষ্ঠ উম্মতের পরিচয় দিয়েছেন। উনারা খাওয়া-পরা, সংসার, কাপড়-চোপড়, বিলাসিতা নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন না, বরং প্রতিটি মুহূর্তে সম্মানিত দ্বীন-ইসলাম উনার কাজে ব্যস্ত ছিলেন। উনাদের জান-মাল, আল-আওলাদ সমস্ত কিছু মহান আল্লাহ পাক উনার রাস্তায় বিলীন করে দিয়ে আমাদের জন্য সম্মানিত দ্বীন ইসলাম প্রতিষ্ঠিত করে গিয়েছেন। যা উনাদের আমলের মাধ্যমেই ফুটে উঠতো। সুবহানাল্লাহ!
বিশেষভাবে উল্লেখ্য, মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম ও হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা মহান আল্লাহ পাক উনার মুবারক সন্তুষ্টির লক্ষ্যে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার জন্য জিহাদ করাকে সমস্ত কিছুর ঊর্ধ্বে প্রাধান্য দিতেন। নিজেদের ব্যক্তিগত চাহিদা বা দুনিয়াবী বিলাসিতাকে উনারা কখনই প্রাধান্য দিতেন না। যার কারণে দেখা যায়, সবকিছু উনাদের অনুকুলে থাকা সত্ত্বেও উনারা অনেক সময় না খেয়েও জিহাদ করেছেন। উনারা কখনো হালাল কামাইয়ের অযুহাত দিয়ে কাফের-মুশরিক, ফাসেক-ফুজ্জারদের গোলামীর মাধ্যমে উপার্জন করে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে হাদিয়া দেননি বা নেক কাজে শরীক থাকেননি।
এমনকি উনারা পরস্পর পরস্পরের প্রতি ছিলেন সহানুভূতিশীল। উনাদের মাঝে কেউ যদি কারো গোলাম থাকতেন তাহলে অপরজন উনাকে কিনে আযাদ করে দিতেন, যেন তিনি মহাসম্মানিত দ্বীন-ইসলাম সঠিকভাবে পালন করতে পারেন। (সুবহানাল্লাহ)
(মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ বালিকা শাখা)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথেই হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের বিষয় উল্লেখ থাকা উচিত
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক ছেড়ে দেয়া মানেই পথভ্রষ্ট হওয়া। নাউযুবিল্লাহ!
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
খছম বা ঝগড়া কু-স্বভাবটি পরিহার করা অপরিহার্য কর্তব্য
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যে ৪ শ্রেণীর লোকদের জন্য ক্বিয়ামতের দিন সুপারিশ ওয়াজিব হবে
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মুসলমান পুরুষ ও মহিলা সকলের জন্যই ফরযে আইন হচ্ছে- যথাযথভাবে ৫ ওয়াক্ত নামায তারতীব অনুযায়ী যথাসময়ে আদায় করে নেয়া
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা বেমেছাল ফযীলত মুবারকের অধিকারী
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হুব্বে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সৃষ্টির শুরুতেই মহান আল্লাহ পাক উনার কুদরত মুবারক উনার মধ্যে ছিলেন, আছেন এবং অনন্তকাল থাকবেন
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি তওবাকারীকে পছন্দ করেন (১)
৩০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ক্বলবী যিকির জারী না থাকলে শয়তানের ওয়াসওয়াসা থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব নয়
৩০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)












