হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা অবশ্যই সত্যের মাপকাঠি; অস্বীকারকারীরা কাট্টা কাফির (১৪)
, ০৪ রবীউছ ছানী শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ১০ খ্বমিস , ১৩৯২ শামসী সন , ০৮ অক্টোবর , ২০২৪ খ্রি:, ২৩ আশ্বিন, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
বিরুদ্ধবাদীদের কিছু যুক্তি ও জবাব:
* একমাত্র নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনিই হচ্ছেন সত্যের মাপকাঠি, অন্য কেউ সত্যের মাপকাঠি নন। এ বিষয়ে তারা কয়েকখানা পবিত্র আয়াত শরীফ থেকে দলীল দেয়। যেখানে মহান আল্লাহ পাক তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অনুসরণ করার জন্য নির্দেশ মুবারক দিয়েছেন।
এখানে বলতে হয় যে, কেউ যদি বলে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ঈমানদার কি না? উনার মুবারক শানে এটা বলা যেমন বেয়াদবী, ঠিক একইভাবে উনাকে সত্যের মাপকাঠি বলাও এক ধরণের বেয়াদবী। কেননা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হচ্ছেন স্বয়ং ঈমান এবং ঈমান দানকারী। উনার প্রতি ঈমান আনলে একজন মানুষ সে ঈমানদার হয়। আর উনাকে অস্বীকার করলে হয় বেঈমান। না‘ঊযুবিল্লাহ!
একইভাবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নিজেই হচ্ছেন স্বয়ং হক্ব বা সত্য। আর হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে পরিপূর্ণভাবে ইত্তিবা মুবারক করার কারণে উনারা হচ্ছেন সত্যের মাপকাঠি।
আমরা পবিত্র কালিমা শরীফ পাঠ করি لا إله إلا الله محمد رسول الله صلى الله عليه وسلم এই পবিত্র কালিমা শরীফ উনার মাঝে মু’মিন উনাদের জন্য দু’টি হক্ব রয়েছে। ১. মহান আল্লাহ পাক উনার হক্ব এটা হচ্ছে তাওহীদ। ২. নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার হক্ব এটা হচ্ছে সম্মানিত রিসালাত মুবারক। প্রত্যেক বান্দা-বান্দীর দায়িত্ব হচ্ছে এই দু’টি হক্ব মুবারক আদায় করা। তবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার হক্ব মুবারক আদায় করলেই মহান আল্লাহ পাক উনার হক্ব মুবারক আদায় হয়ে যায়।
যেমন মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
مَنْ يُطِعِ الرَّسُولَ فَقَدْ أَطَاعَ اللَّهَ
অর্থ : যে ব্যক্তি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ইতা‘আত বা অনুসরণ মুবারক করলো, সে মূলত মহান আল্লাহ পাক উনারই ইতা‘আত মুবারক করলো। সুবহানাল্লাহ! (পবিত্র সূরা নিসা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৮০)
এখন বান্দা-বান্দী, উম্মতের জন্য দায়িত্ব হচ্ছে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অনুসরণ করা, উনাকে তা’যীম-তাকরীম মুবারক করা, উনাকে মুহব্বত করা। তাহলে বান্দা-বান্দী, উম্মতরা কিভাবে এই আমলগুলো করবে? আর এই আমলগুলো করতে হলেই দেখতে হবে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা কিভাবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অনুসরণ মুবারক করেছেন, কিভাবে উনাকে তা’যীম-তাকরীম মুবারক করেছেন, কিভাবে উনাকে মুহব্বত মুবারক করেছেন। আর একারণেই হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারাই হচ্ছেন- ‘সত্যের মাপকাঠি’।
* এরপর বাতিলপন্থীরা হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের হায়াত মুবারকে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ঘটনা উল্লেখ করে বলতে চায়, উনারা যদি সত্যের মাপকাঠি হন তাহলে এসব ঘটনা কেন ঘটলো? না‘ঊযুবিল্লাহ!
এখানে প্রথম কথা হলো, আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াত উনাদের আক্বীদাহ হচ্ছে, সমস্ত হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা হচ্ছেন মাহফূয বা সংরক্ষিত। অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক তিনি উনাদেরকে সমস্ত প্রকার গুনাহের কাজ থেকে সংরক্ষিত রেখেছেন। এরপরও যে সমস্ত ঘটনা মুবারক ঘটেছে তারমধ্যে কিছু হচ্ছে পরবর্তী উম্মতের তা’লীমের জন্য, বিভিন্ন মাসয়ালা-মাসায়েল ছাবেত হওয়ার জন্য ঘটেছে। যা বিভিন্ন হাদীছ শরীফ দ্বারা প্রমাণিত। আর কিছু আছে যা পরবর্তী উম্মতের বোধগম্যের বাহিরে। যে বিষয়ে মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারাই অধিক জ্ঞাত।
এদের সম্পর্কে আলোচনা করতে যেয়ে হযরত আল্লামা ত্বীবী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বিশিষ্ট ছাহাবী হযরত হাসসান বিন ছাবিত রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার একখানা কবিতার পংক্তি উল্লেখ করেছেন-
أَتَهْجُوهُ وَلَسْت لَهُ بِكُفْءٍ ... فَشَرُّكُمَا لِخَيْرِكُمَا الْفِدَاءُ
“তোমরা এমন ব্যক্তিত্ব মুবারক উনাদের শানে সমালোচনা করছো, অথচ কোনো দিক থেকেই তোমরা উনাদের সমতুল্য নও। তোমাদের এই মন্দ কাজসমূহ, তোমাদের ভালো কাজের উপর কুরবান হোক। অর্থাৎ তোমরা ছুরতান যতো ভালো কাজই করো না কেন, তাতে তোমাদের কোনো ফায়দা হবে না। তোমরাতো লা’নতগ্রস্ত। না‘ঊযুবিল্লাহ! (শরহুল মিশকাত লিত্ব ত্বীবী ১২/৩৮৪৬)
এই সমস্ত কোনো ঘটনা বা আমল নিয়েই পরবর্তী উম্মতের কথা বলা জায়িয নেই। কেউ যদি বলে তাহলে সে কাট্টা কাফির হবে, মালঊন হবে। না‘ঊযুবিল্লাহ!
সেটাই মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনি একখানা উছূল মুবারক শিক্ষা দিয়েছেন, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারাসহ উনাদের উপরে যারা রয়েছেন উনাদের সম্পর্কে বা উনাদের কোনো আমল মুবারক বিষয়ে পরবর্তী উম্মতের কোনো প্রকার কথা বলার, চূ-চেরা করার অধিকার নেই। যারা চূ-চেরা কিল-কাল করবে তারা কাট্টা কাফির চির জাহান্নামী হবে।
মহান আল্লাহ পাক তিনি আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার সম্মানার্থে আমাদেরকে এবং দুনিয়ার সমস্ত মুসলমানদেরকে হিফাযত করুন। আমীন!
-হাফিয মুহম্মদ ইমামুল হুদা।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের প্রতি বিশুদ্ধ আক্বীদা-হুসনে যন পোষণ করা ঈমান
০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (৬)
০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুনিয়ার যমীনে অবস্থানকালীন সময়ে ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ যে রোযা মুবারক রাখতেন সে রোযা মুবারক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১২ই শরীফ উনার দিনে হওয়াটা ছিলো একটি বিরল ঘটনা (১)
০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহিলাদের প্রতি মহান আল্লাহ পাক উনার বিশেষ নির্দেশনা মুবারক- পর্দা পালন করা
০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
খরচ করার ব্যাপারে মহান আল্লাহ পাক উনার ফায়সালা
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (৫)
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মুসলমানদের সবচেয়ে বড় শত্রু কাফির-মুশরিকরা (১)
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ছবি তোলা হারাম, যা জাহান্নামী হওয়ার কারণ
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
বিজাতীয় বিধর্মী তথা ইহুদী-নাছারাদেরকে অনুসরণ করা ইসলামী শরীয়তে হারাম-নাজায়িয
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পবিত্র ‘ছলাতুল জুমুয়াহ’ উনার পূর্বে ৪ রাকায়াত সুন্নত নামায অর্থাৎ পবিত্র ‘ক্বাবলাল জুমুয়াহ’ নামায নিয়ে বাতিলপন্থিদের বিভ্রান্ত্রিকর ও মিথ্যা বক্তব্যের দলীলভিত্তিক জাওয়াব (৬)
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)












