হাক্বীক্বী মুহব্বত-মা’রিফত ও নিসবত-কুরবত মুবারক ব্যতিত কখনোই পবিত্র কুরআন শরীফ এবং পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের হাক্বীক্বী অর্থ ও ব্যাখ্যা করা সম্ভব না (২)
, ২০ শা’বান শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ২৩ তাসি’, ১৩৯২ শামসী সন , ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রি:, ০৬ ফালগুন, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
.jpg)
ছহীহ মুসলিম শরীফে বর্ণিত হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
إِنَّ هَذَا الْعِلْمَ دِينٌ فَانْظُرُوا عَمَّنْ تَأْخُذُونَ دِينَكُمْ.
অর্থ: “নিশ্চয়ই (পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের) ইলিমই হচ্ছে সম্মানিত দ্বীন। সুতরাং কার নিকট থেকে তোমরা ইলিম গ্রহণ বা শিক্ষা করতেছো তাকে দেখে নাও। অর্থাৎ তার ঈমান-আক্বীদা, আমল-আখলাক্ব শুদ্ধ আছে কি-না তথা কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ সম্মত কি-না, তা যাচাই করে নাও। ”
অতএব, যাদের ঈমান-আক্বীদাতে ত্রুটি বা কুফরী রয়েছে অর্থাৎ যাদের আক্বীদা আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াত উনাদের অনুযায়ী নয়, যাদের আমল-আখলাক্বে ত্রুটি রয়েছে অর্থাৎ আমল-আখলাক্ব সুন্নত মুয়াফিক নয়, যাদের মধ্যে তাক্বওয়া বা আল্লাহভীতি নেই, যারা শরীয়ত ও সুন্নতের পাবন্দ নয়, যারা হারাম-নাজায়িয, শরীয়তের খিলাফ কাজে মশগুল, যাদের ক্বলব্ (অন্তর) পরিশুদ্ধ নয়, যারা ইখলাছ অর্জন করেনি; এমন ব্যক্তির নিকট থেকে ইলমে দ্বীন অর্জন বা শিক্ষা করা এবং ওয়াজ-নছীহত শ্রবণ করা যেরূপ জায়িয নেই তদ্রƒপ তাদের লিখিত কিতাবাদি পাঠ করা ও শ্রবণ করাও জায়িয নেই।
স্মরণীয় যে, কথিত তাফসীরকারকদের আক্বীদা ও আমলের মধ্যে বহু অশুদ্ধ ও কুফরী আক্বীদা ও আমল রয়েছে। যেমন মালানা মাহিউদ্দীন খান তার আক্বীদা হচ্ছে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মাটির তৈরি। নাউযুবিল্লাহ! তিনি অন্যান্য মানুষের মতো রক্ত গোশতে গড়া মানুষ। নাউযুবিল্লাহ! তিনি ইলমে গইব সম্পর্কে জানেন না। নাউযুবিল্লাহ! ইত্যাদি। অনুরূপ আক্বীদার অধিকারী মাআরিফুল কুরআনের লেখক পাকিস্তানের মুফতে শফী এবং তাফহীমুল কুরআনের লেখক পাকিস্তানের মওদূদিও। নাউযুবিল্লাহ! এছাড়া নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্পর্কে তাদের আরো বহু কুফরী আক্বীদা রয়েছে। তারা মীলাদ শরীফ ও ক্বিয়াম শরীফ, সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ উনাদের বিরোধী। নাউযুবিল্লাহ! তারা প্রত্যেকেই ছবি তুলেছে, ভোট নির্বাচন করেছে এবং ফরয-ওয়াজিব ফতওয়া দিয়েছে। তাদের মতে মহিলা নেতৃত্ব জায়িয, বেপর্দা হওয়া জায়িয, খেলাধুলা জায়িয ইত্যাদি।
কাজেই, যাদের আক্বীদা স্বয়ং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান-মান, ছানা-ছিফত বর্ণনার বিরুদ্ধে এবং যাদের আমল সম্মানিত শরীয়ত উনার বিরোধী তাদের লিখিত কিতাবাদি কখনোই নির্ভরযোগ্য ও অনুসরণীয় হতে পারে না। বরং তাদের কিতাবাদী পাঠ না করাটা সর্বসাধারণের জন্য ফরয-ওয়াজিব এবং ঈমান ও আমল হিফাযতের কারণ।
পক্ষান্তরে যারা নেককার, পরহেযগার আলিম, আল্লাহওয়ালা, সম্মানিত শরীয়ত ও পবিত্র সুন্নত মুবারক উনার পাবন্দ উনাদেরকে অনুসরণ করতে হবে, উনাদের নিকট থেকে ইলিম অর্জন করতে হবে, উনাদের কিতাবাদী পাঠ করতে হবে। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
وَاتَّبِعْ سَبِيلَ مَنْ أَنَابَ إِلَيَّ
অর্থ: “ঐ ব্যক্তির পথ অনুসরণ করো, যিনি আমার দিকে রুজু রয়েছেন অর্থাৎ আল্লাহওয়ালা হয়েছেন। ” (পবিত্র সূরা লুক্বমান শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ১৫)
মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন-
أَطِيعُوا اللَّهَ وَأَطِيعُوا الرَّسُولَ وَأُولِي الْأَمْرِ مِنْكُمْ
অর্থ: “মহান আল্লাহ পাক উনার আনুগত্য করো, সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আনুগত্য করো এবং তোমাদের মধ্যে যারা উলিল আমর উনাদের আনুগত্য করো। ” (পবিত্র সূরা নিসা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৫৯)
অত্র পবিত্র আয়াত শরীফ উনার দ্বারা প্রতিভাত হয় যে, মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার প্রিয়তম রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং হযরত উলিল আমর উনাদের প্রত্যেকের আনুগত্য এক ও অভিন্ন এবং প্রত্যেকের আনুগত্য বা অনুসরণ ফরয।
অর্থাৎ যিনি উলিল আমর হবেন উনাকে পরিপূর্ণরূপে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অনুসারী বা পাবন্দ হতে হবে। আর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অনুসরণ করার অর্থই হচ্ছে মহান আল্লাহ পাক উনাকে অনুসরণ করা। যেমন, মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
مَنْ يُطِعِ الرَّسُولَ فَقَدْ أَطَاعَ اللَّهَ
অর্থ: “যে ব্যক্তি সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আনুগত্য করলো, প্রকৃতপক্ষে সে ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক উনারই আনুগত্য করলো। ” সুবহানাল্লাহ! (পবিত্র সূরা নিসা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৮০) (চলবে)
-০-
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সম্মানিত যাকাত উনার আহকাম, মাসায়িল ও ফাযায়িল (৬)
২৫ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পর্দা পালন করা নারী-পুরুষ সকলের জন্যই শান্তি ও পবিত্রতা হাছিলের কারণ
২৫ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৫ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
তারা প্রত্যেকেই মূর্তিপূজারী ও মুশরিক হয়ে কাট্টা কাফির ও মুরতাদ হয়েছে (২২)
২৫ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ইসলামী শরীয়তের দৃষ্টিতে ‘পহেলা এপ্রিল’ বা ‘এপ্রিল ফুল’ হারাম। ‘এপ্রিল ফুল’ এর সংক্ষিপ্ত ইতিহাস (১)
২৫ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, রহমাতুল্লিল আলামীন, ক্বয়িদুল মুরসালীন, রউফুর রহীম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র জীবনী মুবারক (২২৭৬)
২৫ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সম্মানিত যাকাত উনার আহকাম, মাসায়িল ও ফাযায়িল (৫)
২৪ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
ছবি তোলা শক্ত হারাম, রয়েছে কঠিন শাস্তি
২৪ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৪ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
‘গরুর গোস্তে রোগ আছে’ এই সংক্রান্ত বাতিল হাদীছ ও তার খন্ডনমূলক জবাব
২৪ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
একদিকে রুজু থেকে মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের সন্তুষ্টি মুবারক হাছিলের উদ্দেশ্যে দ্বীনি ইলম শিক্ষা করতে হবে, তাহলেই কামিয়াবী
২৪ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সম্মানিত যাকাত উনার আহকাম, মাসায়িল ও ফাযায়িল (৪)
২৩ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)