হুব্বে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
, ০৬ যিলহজ্জ শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ০৪ আউওয়াল, ১৩৯৩ শামসী সন , ০৩ জুন, ২০২৫ খ্রি:, ২১ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) মহিলাদের পাতা
খ্বালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি মহাপবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেছেন-
فَاِنْ اٰمَنُوْا بِـمِثْلِ مَا اٰمَنْتُمْ بِهِ فَقَدِ اهْتَدَوْا.
অর্থাৎ হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা যেরূপ সম্মানিত ঈমান মুবারক এনেছেন তদ্রƒপ যদি তোমরা সম্মানিত ঈমান মুবারক গ্রহণ করতে পারো তাহলে তোমরা হিদায়েত মুবারক লাভ করতে পারবে। (পবিত্র সূরা বাক্বারাহ শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ১৩৭)
এ লিখনীতে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের বে-মেছাল মহব্বত মুবারক প্রকাশের কতিপয় দৃষ্টান্ত উল্লেখ করা হবে। ইনশাআল্লাহ!
(৩)
সুমহান শান মুবারক উনার খিলাফ বলায় আপন পিতাকেও যিনি আপোস করেননি
সম্মানিত ইসলাম উনার প্রথম খলীফা, আফদ্বালুন নাস বা’দাল আম্বিয়া সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার পিতা হযরত আবূ কুহাফা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু। ৮ম হিজরীতে মহাসম্মনিত মহাপবিত্র মক্কা শরীফ বিজয়ের পর তিনি সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করেন।
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণের পূর্বে একদিন তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার সামনে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্পর্কে উনার মহাসম্মানিত মহাপবিত্র শান মুবারকের খিলাফ এক অসৌজন্যমূলক মন্তব্য করেন।
সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি পিতার এ মন্তব্য শুনে খুবই কষ্ট পেলেন। তৎক্ষনাৎ পিতাকে সজোরে আঘাত করলেন। যা সাধারণত সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার থেকে কল্পনাও করা যায় না।
পিতা হযরত আবূ কুহাফা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি নিজ হাতে বিচার না করে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কাছে এ ব্যাপারে নালিশ করলেন।
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনাকে জিজ্ঞেস করলেন : আপনি স্বীয় পিতার সাথে এমন আচরণ করলেন কেন?
সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার অন্তরে পিতা-মাতা, আহলিয়া ও ছেলে-সন্তানের মহব্বতের তুলনায় নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহব্বত মুবারক ছিলো শত গুণ বেশি।
তিনি উত্তর দিলেন- ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! ঐ সময় তো আমার কাছে তরবারী ছিলো না, যদি আমার কাছে তরবারী থাকতো তাহলে আপনার সম্পর্কে আপনার সুমহান শান মুবারক উনার খিলাফ এমন মন্তব্যের জন্য আমি উনার শিরñেদ করতেও দ্বিধা করতাম না। সুবহানাল্লাহ!
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহু হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার এই সীমাহীন মহব্বত মুবারকের পরিপ্রেক্ষিতে মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র আয়াত শরীফ নাযিল করেন-
لا تَجِدُ قَوْمًا يُؤْمِنُونَ بِاللهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ يُوَادُّونَ مَنْ حَادَّ اللهَ وَرَسُولَهٗ وَلَوْ كَانُوا آبَاءَهُمْ أَوْ أَبْنَاءَهُمْ أَوْ إِخْوَانَهُمْ أَوْ عَشِيرَتَهُمْ أُولٰئِكَ كَتَبَ فِي قُلُوْبِـهِمُ الْإِيْـمَانَ وَأَيَّدَهُمْ بِرُوحٍ مِنْهُ وَيُدْخِلُهُمْ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِنْ تَحْتِهَا الأنْهَارُ خَالِدِيْنَ فِيْهَا رَضِيَ اللهُ عَنْهُمْ وَرَضُوا عَنْهُ أُولٰئِكَ حِزْبُ اللهِ أَلَا إِنَّ حِزْبَ اللهِ هُمُ الْمُفْلِحُونَ.
অর্থ : যারা মহান আল্লাহ পাক ও পরকালে বিশ্বাস করেন উনাদেরকে আপনি মহান আল্লাহ পাক ও উনার মহাসম্মানিত মহাপবিত্র রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের বিরুদ্ধাচরণকারীদের সাথে বন্ধুত্ব করতে দেখবেন না। যদিও তারা উনাদের পিতা-পুত্র, ভাই অথবা জ্ঞাতিগোষ্ঠিও হয়। মহান আল্লাহ পাক তিনি উনাদের অন্তরে ঈমান লিখে দিয়েছেন এবং উনাদেরকে শক্তিশালী করেছেন উনার অদৃশ্য শক্তি দ্বারা। তিনি উনাদেরকে জান্নাতে দাখিল করবেন। যার তলদেশে নহর প্রবাহিত। সেখানে উনারা চিরকাল থাকবেন। মহান আল্লাহ পাক তিনি উনাদের প্রতি সন্তুষ্ট। উনারাও মহান আল্লাহ পাক উনার প্রতি সন্তুষ্ট। উনারাই মহান আল্লাহ পাক উনার দল। জেনে রাখুন, মহান আল্লাহ পাক উনার দলই সফলকাম হবেন। (পবিত্র সূরা মুজাদালাহ শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ-২২)
-মুহম্মদ আলমগীর হুসাইন মুরাদী।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
তিন ধরনের লোক বেহেশতে প্রবেশ করবে না
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
হযরত উম্মে সুরাইকা দাওসিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহা
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা বেমেছাল ফযীলত মুবারকের অধিকারী
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সর্বক্ষেত্রে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে প্রাধান্য দিতে হবে
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সৃষ্টির শুরুতেই মহান আল্লাহ পাক উনার কুদরত মুবারক উনার মধ্যে ছিলেন, আছেন এবং অনন্তকাল থাকবেন
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি তওবাকারীকে পছন্দ করেন (৩)
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ক্বলবী যিকির জারী না থাকলে শয়তানের ওয়াসওয়াসা থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব নয়
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
দোযখে বেপর্দা হওয়া নারীদের শাস্তির বর্ণনা (১০)
১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
জামায়াতের জন্য মহিলাদের মসজিদে ও ঈদগাহে যাওয়া হারাম ও কুফরী (৪)
১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্বোধন মুবারক করার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ আদব-শরাফত বজায় রাখতে হবে
১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
১১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)












