আজ মহাপবিত্র ২৮শে ছফর শরীফ। সুবহানাল্লাহ! যা পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার পঞ্চম খলীফা, সাইয়্যিদুশ শুহাদা, সাইয়্যিদু শাবাবি আহলিল জান্নাহ, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছানী মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র শাহাদাতী শান মুবারক প্রকাশ দিবস। ও হাদ্বিনাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আল ঊলা আলাইহাস সালাম উনার মহাপবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ দিবস।
এবং ইমামে রব্বানী সাইয়্যিদুনা হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার বিছালী শান মুবারক প্রকাশ দিবস। সুবহানাল্লাহ! গোটা উম্মাহ ও মুসলিম বিশ্বের প্রত্যেক সরকারের দায়িত্ব-কর্তব্য হচ্ছে- যথাযথ ভাবমর্যাদা ও ভাবধারার সাথে মহিমান্বিত এ দিবস মুবারক পালন করা
এডমিন, ২৮ ছফর শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ১৬ রবি’ ১৩৯১ শামসী সন , ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রি:, ৩০ ভাদ্র, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) সম্পাদকীয়

(১)
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো বর্ণিত রয়েছে, “হযরত যায়িদ ইবনে আরকাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম, উম্মু আবীহা সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন্ নূরুর রাবি’য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম, খলীফায়ে খামীস সাইয়্যিদুনা ইমামুছ ছানী মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং শুহাদায়ে কারবালা সাইয়্যিদুনা ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের সম্পর্কে ইরশাদ মুবারক করেছেন, যারা উনাদের প্রতি শত্রুতা পোষণ করবে, তারা প্রকৃতপক্ষে আমার সাথেই শত্রুতা পোষণ করলো। নাঊযুবিল্লাহ! নাঊযুবিল্লাহ! নাঊযুবিল্লাহ! পক্ষান্তরে যে উনাদের সাথে সদ্ব্যবহার করবে, আমি তাদের সাথে সদ্ব্যবহার করবো। ” সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! (তিরমিযী শরীফ)
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে এরকম বেমেছাল তম্বিহ থাকার পরও সাইয়্যিদু শাবাবি আহলিল জান্নাহ হযরত ইমামুছ ছানী মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শত্রুরা উনাকে শহীদ করার উদ্দেশ্যে একে একে পাঁচবার বিষ পান করায়। নাঊযুবিল্লাহ! প্রতিবারই তিনি মারীদ্বী শান মুবারক নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র রওযা শরীফ উনার নিকট গিয়ে দোয়া মুবারক করেন, আর সাথে সাথেই ছিহহাতী শান মুবারক জাহির হয়ে যায়। কিন্তু শেষবার অর্থাৎ ষষ্ঠবার যে বিষ পান করানো হয়, তা ছিলো অত্যন্ত মারাত্মক বিষ।
উক্ত মারাত্মক বিষক্রিয়ার কারণেই ৪৯ হিজরী সনের ২৮শে ছফর শরীফ প্রায় ৪৬ বৎসর বয়স মুবারকে তিনি শাহাদাতী শান মুবারক প্রকাশ করেন তথা পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। অর্থাৎ আজকের মহিমান্বিত তারিখটিই উনার মহাসম্মানিত, মহাপবিত্র শাহাদাতী শান মুবারক প্রকাশের দিন। সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সাইয়্যিদুশ শুহাদা, সাইয়্যিদু শাবাবি আহলিল জান্নাহ, খলীফায়ে খামীস সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছানী মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র রওযা শরীফ পবিত্র জান্নাতুল বাক্বী শরীফ উনার মধ্যে অবস্থিত।
(২)
বিশেষভাবে উল্লেখ্য, কায়িনাতের বুকে হাদ্বিনাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আল ঊলা আলাইহাস সালাম তিনিই একমাত্র ব্যক্তিত্ব মুবারক যিনি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের পূর্ব থেকে মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত দীদার মুবারক-এ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক নেয়া পর্যন্ত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! স্বয়ং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নিজে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আল ঊলা আলাইহাস সালাম উনাকে বলতেন, ‘আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আম্মাজান আলাইহাস সালাম উনার পর তিনি আমার মহাসম্মানিত মা। ’ সুবহানাল্লাহ! উনার সম্মানিত ও পবিত্র ইসম বা নাম মুবারক হচ্ছেন- সাইয়্যিদাতুনা হযরত বারাকাহ্ আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ! উনার সম্মানিত কুনিয়াত মুবারক হচ্ছেন- সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু আইমান আলাইহাস সালাম, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু উসামাহ্ আলাইহাস সালাম, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুয যিবা’ আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ!
নূরে মুজাসসাম হবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের ১৪ বছর পূর্বে পবিত্র ২৮শে ছফর শরীফ ইয়াওমুছ ছুলাছা শরীফ সম্মানিত হাবশায় সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আল ঊলা আলাইহাস সালাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। অর্থাৎ আজকের মহিমান্বিত দিনটি উনার বিলাদতী শান মুবারক উনার সাথে সম্পৃক্ত থাকায় আলাদাভাবে সম্মানিত ও পবিত্র হয়েছে। সুবহানাল্লাহ!
(৩)
পাশাপাশি উল্লেখ্য, আজ মহাপবিত্র ২৮শে ছফর শরীফ। যা ক্বইয়্যুমে আউওয়াল, আবুল বারাকাত, বদরুদ্দিন শায়েখ আহমদ ফারূক্বী সিরহিন্দী হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ দিবস।
ক্বইয়্যুমে আউওয়াল, আবুল বারাকাত, বদরুদ্দিন শায়েখ আহমদ ফারূক্বী সিরহিন্দী হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার কথা মুবারক বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। কারণ উনি ছিলেন হাজার বছরের তথা দ্বিতীয় হিজরী শতাব্দির মুজাদ্দিদ। তাই উনাকে মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলা হয়। একদিকে প্রবল প্রতাপশালী আকবরী রাজশক্তির ‘দ্বীনে ইলাহী’ কুফরী ফিতনা, অপরদিকে নামধারী তথাকথিত মশহুর উলামা তথা উলামায়ে ‘সূ’ গোষ্ঠীর কুতৎপরতা- সবকিছুই তিনি নির্মূল করেছিলেন। বাতিল ও বিদয়াতকে মিটিয়ে দিয়েছিলেন। পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার জাগরণ ঘটিয়েছিলেন, সুন্নতের পুনঃপ্রচলন করেছিলেন। তাই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনাকে লক্বব মুবারক দিয়েছিলেন- ‘মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি। ’ সুবহানাল্লাহ! (পবিত্র মকতুবাত শরীফ)
ক্বইয়্যুমে আউওয়াল, আবুল বারাকাত, বদরুদ্দিন শায়েখ আহমদ ফারূক্বী সিরহিন্দী হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ১০৩৪ হিজরী সনের সুমহান ২৮ ছফর শরীফ ৬৩ বছর বয়স মুবারকে পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। অর্থাৎ তিনি খাছ সুন্নতী বয়স মুবারক পেয়েছিলেন। সুবহানাল্লাহ! সে হিসেবে আজ উনার পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ দিবস। সঙ্গতকারণেই উনার ফযীলত মুবারক সম্পর্কে অবগতি এবং উনার মূল্যায়ন রহমত মুবারক ও নিয়ামত মুবারক হাছিলের কারণ।
সঙ্গতকারণেই আজ সব গণমাধ্যমের জন্য সাইয়্যিদুশ শুহাদা, সাইয়্যিদু শাবাবি আহলিল জান্নাহ, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছানী মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহিমাহিম শাহাদাতী শান মুবারকের বিষয়, হাদ্বিনাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আল ঊলা আলাইহাস সালাম উনার সাওয়ানেহ উমরী মুবারক এবং ক্বইয়্যূমে আউওয়াল হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মহিমান্বিত বিছাল শরীফ বিষয় মুবারককে বিশেষ ক্বদর দেয়া উচিত ছিল। পাশাপাশি সব মুসলমানেরও উচিত ছিল উনাদের পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক, পবিত্র শাহাদাতী শান মুবারক তথা পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ উপলক্ষে উনাদের নিয়ামত লাভে অংশ গ্রহণের জন্য তীব্র প্রতিযোগীতা করা। বিশেষ উৎসাহী হওয়া, আবেগ তাড়িত হওয়া, মুহব্বতে উচ্ছল হওয়া, খুশিতে প্লাবিত হওয়া, শুকরিয়া জ্ঞাপনে ও হাদিয়া প্রদানে তথা খিদমতের আঞ্জামে সর্বোচ্চ কোশেশ করা।
ছহিবে সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ মুর্র্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার নেক ছোহবত মুবারক-এ কেবলমাত্র তা লাভ করা সম্ভব। খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে তা নছীব করুন। (আমীন)