আসছে শীত, সাথে করে নিয়ে আসছে ধূলা দূষণ। মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে নগরবাসী। নিষ্ক্রিয় ও নির্লিপ্ত ডিসিসি ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়। সরকার এবং জনগণ উভয়েরই উচিত- ধূলা দূষণসহ সর্বপ্রকার পরিবেশ দূষণ রোধে সচেষ্ট হওয়া।
, ০৫ জুমাদাল উলা শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২২ সাদিস ১৩৯১ শামসী সন , ২০ নভেম্বর, ২০২৩ খ্রি:, ০৪ অগ্রহায়ণ কার্তিক, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) মন্তব্য কলাম
শীতকালে বাতাসে আর্দ্রতা অনেক কম থাকায় বাতাস পরিবেশ থেকে পানি শোষণ করে। তাই এ সময় পানির বাষ্পায়ন বেশি হয়। যেমন শীতকালে ভেজা কাপড় শুকাতে দিলে পানি তাড়াতাড়ি বাষ্পীভূত হয়ে কাপড়কে শুকিয়ে ফেলে। তো এভাবে বেশি বেশি পানি বাষ্পায়নের ফলে আবহাওয়া শুষ্ক হয়ে যায় এবং ধুলাবালি বেড়ে যায়। তাইতো শীতকালে ধুলাবালি বেশি দেখা যায়।
এ ব্যাপারে শেখ মুহম্মদ মেহেদী আহসান বলেন, ধুলাবালি যে শুধু শীতে বাড়ে তা কিন্তু নয়; এটি থাকে বর্ষাকালেও। সে সময় ধুলাবালি বৃষ্টির কারণে বৃষ্টির সাথে মিশে মাটিতে নেমে আসে। এজন্য আমরা এটা দেখতে পাই না বা উপলব্ধি করতে পারি না। কিন্তু শীতকালে যেহেতু বৃষ্টি হয় না তাই ধুলাবালি বাতাসে ভেসে বেড়ায় এবং ভারি হয়ে যায় বাতাস। এতে করে আলো ঠিকমতো ঢুকতে পারে না। ধোঁয়াশার মতো সৃষ্টি হয়। শীতকালে খেয়াল করবেন সন্ধ্যা আগে নেমে আসে। এর কারণ বাতাসের ধুলা অর্থাৎ বায়ু দূষণ।
সম্প্রতি পরিবেশ সংস্থাগুলোর জরিপে দেখা যায়, ঢাকার বাতাসে প্রতিদিন শ্বাস নিলে ২৬টি সিগারেট খাওয়ার সমপরিমাণ ক্ষতি হয়। এ থেকে বলা বাহুল্য হবে না যে, ঢাকার বাসিন্দারা ধুলার শহরেই বাস করে আসছে বিগত কয়েক দশক ধরে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঢাকার বাতাসে মানবদেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর পারদ, সিসা, ক্যাডমিয়াম, নিকেলসহ নানা ধরনের ভারী বস্তুকণা ভাসছে। এসব ধুলা ঘরেও প্রবেশ করছে। ফলে বাসায় থেকেও শিশুরা রক্ষা পাচ্ছে না।
আক্রান্ত হচ্ছে পরিবারের সবাই। সূক্ষ¥ বস্তুকণাগুলো ভেসে ভেসে ১০০ থেকে ২০০ ফুট পর্যন্ত উঁচুতে উঠছে। বাতাসের সঙ্গে তা ঘরে ঢুকছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ধূলার কারণে শ্বাসকষ্ট হচ্ছে, আগে যা ধূমপানের মাধ্যমে হতো। আবার ধূলার কারণে নাক দিয়ে পানি ঝরা, চোখ জ্বালাও করতে পারে। উদ্ভিদের ক্ষেত্রে খাদ্যোৎপাদনে ব্যাঘাত ও শারীরিক বৃদ্ধি হ্রাস পেতে পারে। সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, ধূলা দূষণের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য রাষ্ট্রীয় নীতি ও তার প্রয়োগ পাশাপাশি নাগরিক সচেতনতা প্রয়োজন।
রাজধানীর মগবাজার, মালিবাগ, রাজারবাগ, সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ী, বঙ্গবাজার, মহাখালী, গাবতলী ও সদরঘাটসহ বিভিন্ন জনাকীর্ণ এলাকায় ধূলার প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। এর প্রভাবে নগরবাসী অতিষ্ঠ। এ অবস্থা চলতে থাকলে রাজধানী ঢাকা মহানগরী শিগগিরই ধূলার নগরে পরিণত হবে। এই ধূলা দূষণ স্বাস্থ্য ও অর্থনীতির উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। তাছাড়া ধূলাদূষণ যেমন স্বাস্থ্যহানি ঘটাচ্ছে তেমনি দৈনন্দিন জীবনেও নানা নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
ধূলা দূষণের ফলে শ্বাসকষ্ট, যক্ষ্মা, অ্যাজমা, হাঁপানি, চোখের নানা ধরনের রোগ, ব্রঙ্কাইটিসসহ বিভিন্ন রকমের রোগ হতে পারে। তিনি অবিলম্বে ধূলা দূষণ কমাতে সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আহবান জানান। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, নানা কারণে প্রতিদিন রাস্তায় ধূলা উড়ছে। এই ধূলা চলন্ত যানবাহনের গতিতে বাতাসে মিশছে এবং দূষণের সৃষ্টি করছে। গ্যাস, পানি, টেলিফোন, পয়ঃনিষ্কাশন ইত্যাদি পরিষেবার ভূগর্ভস্থ সংযোগ প্রায় সবক্ষেত্রে রাস্তার নিচ দিয়ে গিয়েছে। তা খননে সৃষ্ট মাটি রাস্তার উপরেই স্তুপ করে রাখা হয়। নানাভাবে এই মাটি পুরো রাস্তা ও এর আশেপাশে ছড়িয়ে পড়ে। এছাড়া বাড়ি ও নানা অবকাঠামো নির্মাণের সময় নির্মাণ সামগ্রী রাস্তার উপর বা রাস্তার পাশে খোলা জায়গায় রাখা হচ্ছে যা থেকে ধূলা দূষণের সৃষ্টি হচ্ছে। দালান-কোঠা বা অবকাঠামো ভাঙ্গার সময়ও যথাযথ পদ্ধতি ও প্রতিরোধক ব্যবস্থা না নেয়ায় ধূলা দূষণ সৃষ্টি হচ্ছে। অনকে সময় এসব বাহনে মাটি, বালি, ইটসহ এধরনের জিনিস বহন করা হয় ঠিকমত রাস্তার পাশের নালা পরিষ্কার করার সময় নালা থেকে তোলা আবর্জনা রাস্তার পাশে জমিয়ে রাখা হচ্ছে। যা রাস্তায় ছড়িয়ে পড়ছে এবং শুকিয়ে ধূলায় পরিণত হচ্ছে এবং ধূলা দূষণ সৃষ্টি করছে।
এছাড়া কোনো এলাকায় ভাঙ্গাচোরা রাস্তা দীর্ঘদিন মেরামত করা হচ্ছে না। এসব ভাঙ্গাচোরা রাস্তায় প্রচুর ধূলা উৎপন্ন হচ্ছে। বাতাস বা যানবাহনের গতিতে এসব ধূলা সবসময় বাতাসকে দূষিত করে রাখছে। আবার রাস্তা মেরামতেও দীর্ঘ সময় নেয়া হচ্ছে, যা থেকেও ধূলা উৎপন্ন হচ্ছে এবং অনুরূপভাবে ধূলা দূষণ তৈরি করছে। এসব ধূলা দূরীকরণের দায়িত্ব ডিসিসি’র। কিন্তু তারা এ বিষয়ে কোনো ভূমিকা রাখছে না। এ বিষয়ে ডিএসসিসি’র প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের দাবি করেছে, ঢাকা শহরে ধূলার প্রভাব বৃদ্ধি পেয়েছে বিভিন্ন নির্মাণ কাজ ও সংস্কার কাজ চলার কারণে। এজন্য ডিসিসি’র গাড়ি দিয়ে কোথাও কোথাও পানি ছিটানো হচ্ছে। তবে জনবল সঙ্কটের কারণে নগরীর সব স্থানে পানি ছিটিয়ে ধূলা দূর করা সম্ভব হচ্ছে না।
প্রত্যেক রাজধানীবাসীই চায় সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন জনপোযোগী শহর। তাই অবিলম্বে ধূলা দূষণ করা বন্ধ করা অত্যন্ত জরুরী। দূষণ নিয়ন্ত্রণে সরকারকে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা ও তার যথাযথ প্রয়োগ করতে হবে। নাগরিক সচেতনতা তৈরি করতে হবে। নিয়মিত রাস্তা পরিষ্কার করতে হবে। রাস্তা খনন, মেরামত সব কাজের পর সৃষ্ট উচ্ছিষ্ট সম্পূর্ণ সরিয়ে ফেলতে হবে। দালান কোঠা, যেকোনো অবকাঠামো তৈরির সময় আচ্ছাদন বা দূষণ প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিতে হবে। নির্মাণ সামগ্রী রাস্তার উপর বা খোলা জায়গায় রাখা যাবে না। ড্রেন পরিষ্কার করার সময় আবর্জনা রাস্তার পাশে জমিয়ে রাখা যাবে না। সব আবর্জনা দ্রুত যথাযথ স্থানে ফেলতে হবে। সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক আবর্জনা সংগ্রহ ও পরিবহনের সময় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। ফুটপাত নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে। ঢাকায় চলাচলকারী যানবাহনগুলো যথাযথ পরিষ্কার রাখতে হবে। সরকার এবং জনগণ উভয়েরই উচিত পরিবেশ দূষণ রোধে সচেষ্ট হওয়া।
-আল্লামা মুহম্মদ ওয়ালীউর রহমান।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
মুসলমানকে ‘মুসলমানিত্ব’ বুঝতে হবে। ‘আশহাদু আন্না মুহম্মাদার রসূলুল্লাহ’ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাক্বীক্বীভাবে বলতে হবে ও আমলে আনতে হবে।
০৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে অন্যসব কিছুর চেয়ে গ্রন্থাগারের বিস্তার ও মান উন্নয়নে স্মার্টলি কাজ করতে হবে ইনশাআল্লাহ
০৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম মদের বিরুদ্ধে দিয়েছে অসংখ্য সতর্কবাণী ও নির্দেশনা। অথচ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলিম দেশে দেয়া হবে মদের লাইসেন্স! মদ-জুয়ার প্রসার মহান আল্লাহ পাক উনার চরম অসন্তুষ্টির কারণ। যার পরিণতি হতে পারে খোদায়ী গযব। নাউযুবিল্লাহ!
০৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ইতিহাসের নিরীখে, বর্তমান সংবিধান প্রণেতা গণপরিষদেরই কোন আইনী ভিত্তি বা বৈধতা ছিল না। গত ৫৪ বৎসর দেশবাসীকে যে অবৈধ সংবিধানের অধীনে বাধ্যগত করে রাখা হয়েছিলো এর প্রতিকার দিবে কে? ৯৮ ভাগ জনগোষ্ঠী মুসলমানের দ্বীন ইসলামের প্রতিফলন ব্যাতীত কোন সংবিধানই বৈধ হতে পারে না কারণ দেশের মালিক ৯৮ ভাগ জনগোষ্ঠী মুসলমান
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
স্বাধীনতার বয়স ৫৪ বছরে দেশ জাতি- ‘মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সরকার, সামরিক সরকার, জাতীয়তাবাদী সরকার, স্বৈরাচার সরকার, তত্তাবধায়ক সরকার, কথিত ফ্যাসিস্ট বা মাফিয়া সরকারের পর নতুন অন্তবর্তী সরকারের’ আবর্তে জনতার না চেয়ে শুধু ছাত্র সমন্বয়কদের চাওয়া-পাওয়াকে প্রাধান্য দিয়ে বর্তমান উপদেষ্টা সরকার প্রতিষ্ঠা করে- কথিত অন্তর্বর্তী সরকারকে জন্মগতভাবে বৈষম্যম-িত করা হয়েছে
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
আইনের দৃষ্টিতে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হলেও বাংলাদেশে লিভ টুগেদারের স্রোত শুরু হয়েছে। লিভ টুগেদার কালচার ঠেকানোর নৈতিক ভিত্তি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রের নেই। লিভ টুগেদার সমাজে যে ভয়াবহ ক্রাইম তৈরী করছে তা প্রতিহত করতে ইসলামী অনুশাসনের বিকল্প নেই।
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
বাজারে ভয়ংকর ঘন চিনি মিথ্যা ঘোষণায় আসছে আমদানি নিষিদ্ধ ঘন চিনি পুরুষত্বহানি, মূত্রাশয়ে ক্যান্সারের তথা জনস্বাস্থ্যের জন্য চরম ক্ষতিকর এই ঘন চিনি বন্ধে সরকারকে এখনি জিহাদ ঘোষণা করতে হবে
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
প্রসঙ্গ: সেবা পেতে ঘুষকে স্বাভাবিক মনে করছে দেশের সিংহভাগ মানুষ। বছরে ঘুষ গ্রহণের পরিমাণ ১০ হাজার কোটি টাকারও বেশি। ঘুষই সমাজে সব অভাব থেকে অনিয়মের মূল কারণ।
০২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সমাজের স্রোত বা সময়ের সাথে আপোসকারীরা উলামায়ে হক্ব নয়। ইসলামী আহকাম ও আন্দোলন পদ্ধতি সময়ের সাথে পরিবর্তিত হয় না। ইবনুল ওয়াক্ত নয়; কেবলমাত্র আবুল ওয়াক্ত উনারাই পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার ত্রাণকর্তা ও অনুসরণীয়।
০১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ডিজিটালাইজেশনের নামে শিশু-কিশোরদের ইন্টারনেট ব্যবহারে উৎসাহিত করা হচ্ছে। দেশের ইন্টারনেট জগতে নিয়ন্ত্রণ না থাকায় শিশু-কিশোররা আক্রান্ত হচ্ছে অশ্লীলতায়। শিখছে অনৈতিকতা, বেহায়াপনা, হিংস্রতা।
৩১ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
রোগের খনি সাদা চিনি! বিপরীতে ব্র্যান্ডিং, যথাযথ প্রচারণার অভাবে অবহেলায় উপকারি দেশীয় লাল চিনি সরকারের উচিত, লাল চিনিকে বাজারসুলভ করে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষিত রাখা।
৩০ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্থীরা গবেষণার দিকে আগ্রহী না হয়ে বিসিএস পরীক্ষায় আগ্রহী হয় বিশ্ববিদ্যালয়ে তহবিল বা অর্থায়ন আসার প্রক্রিয়াটি সরকারের পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগের মাধ্যমে সম্পন্ন হতে হবে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে শিল্পপ্রতিষ্ঠানের সম্পর্ক স্থাপন হয়নি
২৯ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)