ইতিহাস কি বলে? হিজরী সন বাদ দিতেই কি পহেলা বৈশাখ তথা ফসলী সন চালু করা হয়েছিলো?
, ০৯ শাওওয়াল শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ০৯ হাদি আশির, ১৩৯২ শামসী সন , ০৮ এপ্রিল, ২০২৫ খ্রি:, ২৫ চৈত্র, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) ইতিহাস
“১৩১৮ ফসলি সনে লেখক আনন্দনাথ তার ‘বারভূঁইয়া’ গ্রন্থে লিখেছে- ‘আকবর বাদশাহর রাজত্বকালে মুশরিক-বিধর্মী সম্প্রদায় বাদশাহর কাছে জ্ঞাপন করে, আমাদের ধর্মকর্ম সম্পর্কীয় অনুষ্ঠানে হিজরী সন ব্যবহার করতে ইচ্ছা করি না। আপনি আমাদের জন্য পৃথক সন নির্দিষ্ট করে দিন। আকবর মুশরিক-বিধর্মী প্রজার মনোরঞ্জনার্থে হিজরী সন থেকে দশ-এগারো বছর কমিয়ে এলাহি সন নামে একটি সনের প্রচলন করে। যা আমাদের বঙ্গদেশের সন বলে চলে আসছে। ’
আকবরের সময়কাল থেকেই পহেলা বৈশাখ উদযাপন শুরু হয়। তখন প্রত্যেককে চৈত্র মাসের শেষ দিনের মধ্যে সব খাজনা, মাশুল ও শুল্ক পরিশোধ করতে হতো।
আধুনিক নববর্ষ উদযাপনের খবর প্রথম পাওয়া যায় ১৯১৭ সালে। প্রথম মহাযুদ্ধে ব্রিটিশদের বিজয় কামনা করে সে বছর পহেলা বৈশাখে হোমকীর্ত্তন ও পূজার ব্যবস্থা করা হয়। এরপর ১৯৩৮ সালেও অনুরূপ কর্মকা-ের উল্লেখ পাওয়া যায়। পরবর্তী সময়ে ১৯৬৭ সনের আগে ঘটা করে পহেলা বৈশাখ পালনের রীতি তেমন একটা জনপ্রিয় হয়নি। ”
আকবরের কাছে যেসব মূর্তি পূজারীরা হিজরী সন বাতিলের আবেদন করেছিল, তারা বাঙালি ছিল না। কারণ আকবরের রাজধানী ছিল দিল্লীতে। অর্থাৎ আনন্দনাথের রায়ের বক্তব অনুযায়ী- ‘মুশরিক-বিধর্মী প্রজাদের মনোরঞ্জনার্থে’ দিল্লীর মুঘল রাজদরবারে যে ফসলী সন তথা পহেলা বৈশাখ চালু হয়েছিল, তা পালন করলে বড়জোর মুশরিক-বিধর্মী হওয়া যেতে পারে, বাঙালি নয়।
একটু চিন্তা করুন, আকবর বাদশাহ বললো আর হিন্দুরা সেটা তাদের ধর্মের অঙ্গ বানিয়ে নিলো।
হোমকীর্ত্তন ও পূজা করে, সর্বপ্রথম ঘটা করে ১৯১৭ সালে (অর্থাৎ মাত্র ১০৭ বছর হয়েছে) পহেলা বৈশাখ পালন করা হয়েছিলো। তা করা হয়েছিলো প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ব্রিটিশদের বিজয় কামনা করে, যেহেতু হিন্দুরা ছিলো ব্রিটিশদের খাছ গোলাম। অর্থাৎ ঘটা করে পহেলা বৈশাখ পালন করলে বড়জোর ব্রিটিশদের গোলাম হওয়া যেতে পারে, বাঙালি নয়।
১৯১৭ সালের পর লম্বা বিরতি দিয়ে ১৯৬৭ সালে ফের বটতলার পহেলা বৈশাখ পালন শুরু হয়। মূল উদ্দেশ্য পাকিস্তান আমলে এদেশের মুসলমান বাঙালীদেরকে মুশরিক-বিধর্মী বানানো। নাউযুবিল্লাহ!
সুতরাং সামান্য শিক্ষা ও আক্বল-সমঝ যদি থেকে থাকে বলে কেউ দাবি করে, তাহলে সে ‘আবহমান বাংলার সংস্কৃতি’র দাবিতে বিভ্রান্ত হয়ে এই পহেলা বৈশাখ পালন করবে না। ইতিহাস অনুযায়ী পহেলা বৈশাখ কোনোপ্রকার আবহমান সংস্কৃতি নয়, বরং দ্বীন ইসলাম উনার বিরোধিতা করার জন্য কৃত্রিমভাবে তৈরিকৃত বানোয়াটি সংস্কৃতি। ইতিহাস সাক্ষ্য দিচ্ছে যে, যুগে যুগে এই পহেলা বৈশাখ বারবার গজিয়ে উঠেছে বটতলাকে ঘিরেই।
-গোলাম মাওলা।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
কেমন ছিলো মোঘল সালতানাতের গোলন্দাজ এবং অশ্বারোহী বাহিনী
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পান্থনিবাস ও সরাইখানা নির্মাণে মুসলমানদের অনবদ্য অবদান
২৬ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা (৩৯)
১৫ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
মুসলমানদের শিক্ষা-দীক্ষার বিরোধিতায় বিধর্মী-অমুসলিমরা
১৪ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী বাংলার হিন্দু ধনিক-বণিক, বেনিয়া শ্রেণী, ব্যাংকার প্রভৃতির সাথে এক গভীর ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে মুসলিম
১৪ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ইউরোপকে যেভাবে সমৃদ্ধ করেছেন আফ্রিকান মুসলমানরা
১২ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
গুজরাটের সুলতান মুজাফফর শাহের পরহেজগারিতা এবং ভ্রাতৃত্ববোধ
০২ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা (৩৭)
০১ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
কেমন ছিলেন ইসলামী ইতিহাসের প্রথম আইনশৃঙ্খলা বাহিনী
০১ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ঐতিহাসিক মুসলিমবাগ ঈদগাহ-ই কি আজকের ঢাকেশ্বরী মন্দির?
২৯ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
১২টি চন্দ্রমাসের নাম এবং নামকরণের সার্থকতা (২)
২৯ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ঐতিহাসিক খেমকারান যুদ্ধ: যেভাবে বাংলাদেশের জাতীয়তাবোধের উদ্ভব
২৫ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার)












