ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী বাংলার হিন্দু ধনিক-বণিক, বেনিয়া শ্রেণী, ব্যাংকার প্রভৃতির সাথে এক গভীর ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে মুসলিম
, ২২ জুমাদাল ঊলা শরীফ, ১৪৪৭ হিজরী সন, ১৬ সাদিস, ১৩৯৩ শামসী সন , ১৪ নভেম্বর, ২০২৫ খ্রি:, ২৯ কার্তিক, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) ইতিহাস
শাসনের অবসান ঘটায়। এতে করে স্থানীয় হিন্দুত্ববাদী কোম্পানীগুলো বিপুলভাবে বৈষয়িক, বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক সুযোগ সুবিধা লাভ করে।
কোম্পানীর অধীনে চাকুরী-বাকুরী ও ব্যবসা বাণিজ্য করার জন্যে স্থানীয় হিন্দুরা খুব দ্রুতই বুঝতে পেরেছিলো ‘English is money’ ইংরেজী ভাষার অপর নাম অর্থ এবং এজন্যে তারা যতটুকুই ইংরেজী ভাষা রপ্ত করতে পারুক না কেন, তার জন্যে প্রবল আগ্রহান্বিত হয়ে পড়ে। অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষার্ধে যেখানে সেখানে কোলকাতা ও তার আশেপাশে ইংরেজী স্কুল গড়ে উঠে এবং হিন্দুরা এসব স্কুল থেকে কাজ চালাবার মতো ইংরেজী ভাষা শিক্ষা করে।
অপরদিকে মুসলমানদের অবস্থা কি ছিলো তারও কিঞ্চিৎ আলোচনা করা যাক।
w.w. Hunter তার গ্রন্থে বলে, “শত শত প্রাচীন মুসলিম পরিবার ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়ে গেছে। ফলে লাখেরাজ ভূসম্পত্তির দ্বারা মুসলমানদের যে শিক্ষা ব্যবস্থা পরিচালিত হচ্ছিলো তাও চিরতরে বন্ধ হয়ে গেছে”। -(W.W. Hunter: The Indian Mussalmans, Bangladesh Edition 1975, p.167)
সাধারণ মুসলমানতো দূরের কথা, ইংরেজদের আগমনের পর তারা মুসলিম সমাজের প্রতি যে বর্বর উৎপীড়নমূলক আচরণ করেছে, যার ফলে নবাবের বংশধরদের কোন মর্মন্তুদ পরিণতি হয়েছিলো তার একটি করুণ চিত্র এঁকেছে হান্টার তার গ্রন্থে-
“প্রতিটি জেলায় সাবেক নবাবদের কোন না কোন বংশধর ছাদবিহীন ভগ্ন প্রাসাদে অথবা শেওলা-শৈবালে পূর্ণ জরাজীর্ণ পুকুর পাড়ে অন্তর্জ্বালায় ধুঁকে ধুঁকে মরছে। এরূপ পরিবারের অনেকের সাথেই আমার ব্যক্তিগত পরিচয়ের সুযোগ হয়েছে। এদের ধ্বংসপ্রাপ্ত দালান কোঠায় তাদের বয়স্ক ছেলে-মেয়ে, নাতি-নাতনী, ভাইপো-ভাইঝি গিজগিজ করছে এবং এসব ক্ষুধার্ত বংশধরদের কারো কোন সুযোগ নেই জীবনে কিছু করার। তারা জীর্ণ বারান্দায় অথবা ফুটো ছাদযুক্ত বৈঠকখানায় বসে বসে মৃত্যুর প্রহর গুণছে আর নিমজ্জিত হচ্ছে ঋনের গভীর গহ্বরে। অবশেষে প্রতিবেশী হিন্দু মহাজন তাদের সাথে ঝগড়া বাধিয়ে এমন অবস্থার সৃষ্টি করছে যে, হঠাৎ তাদেরকে তাদের যথাসর্বস্ব ঋণের দায়ে বন্ধক দিতে হচ্ছে। এভাবে ঋণ তাদেরকে গ্রাস করে ফেলছে এবং প্রাচীন মুসলিম পরিবারগুলির অস্তিত্ব দুনিয়ার বুক থেকে মুছে যাচ্ছে”। (W. W.Hunter The Indian Mussalmans. Dhaka Edition, 1975, p. 138)
ইংরেজদের আগমনের পর তৎকালীন ভারতের গোটা মুসলিম জাতিই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাংলার মুসলমানরা।
-০-
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
কেমন ছিলো মোঘল সালতানাতের গোলন্দাজ এবং অশ্বারোহী বাহিনী
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পান্থনিবাস ও সরাইখানা নির্মাণে মুসলমানদের অনবদ্য অবদান
২৬ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা (৩৯)
১৫ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
মুসলমানদের শিক্ষা-দীক্ষার বিরোধিতায় বিধর্মী-অমুসলিমরা
১৪ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ইউরোপকে যেভাবে সমৃদ্ধ করেছেন আফ্রিকান মুসলমানরা
১২ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
গুজরাটের সুলতান মুজাফফর শাহের পরহেজগারিতা এবং ভ্রাতৃত্ববোধ
০২ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা (৩৭)
০১ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
কেমন ছিলেন ইসলামী ইতিহাসের প্রথম আইনশৃঙ্খলা বাহিনী
০১ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ঐতিহাসিক মুসলিমবাগ ঈদগাহ-ই কি আজকের ঢাকেশ্বরী মন্দির?
২৯ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
১২টি চন্দ্রমাসের নাম এবং নামকরণের সার্থকতা (২)
২৯ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ঐতিহাসিক খেমকারান যুদ্ধ: যেভাবে বাংলাদেশের জাতীয়তাবোধের উদ্ভব
২৫ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা (৩৬)
২৫ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার)












