ইমামুল মুসলিমীন, মুজাদ্দিদে মিল্লাত ওয়াদ দ্বীন, হাকিমুল হাদীছ, ইমামুল আইম্মাহ, মুহ্ইস সুন্নাহ ইমামে আ’যম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি
(বিলাদাত শরীফ- ৮০ হিজরী, বিছাল শরীফ- ১৫০ হিজরী)
, ৩০ রবীউছ ছানী শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ১৭ সাদিস ১৩৯১ শামসী সন , ১৫ নভেম্বর, ২০২৩ খ্রি:, ৩০ কার্তিক, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
ইমামুল মুহাদ্দিসীন, ইমামুল মুসলিমীন, মুজাদ্দিদে মিল্লাত ওয়াদ দ্বীন, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি সম্মানিত ওহী মুবারক ব্যতীত সকল ইলিম মুবারকের অধিকারী ছিলেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি ছিলেন। ফিরাসাত বা অন্তর্দৃষ্টি সম্পন্ন, খাছ ইলমে লাদুন্নীপ্রাপ্ত। হযরত আবূ উমামাহ বাহেলী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
اِتَّقُوْا فِرَاسَةَ الْـمُؤْمِنْ فَاِنَّه يَنْظُرُ بِنُوْرِ اللهِ تَعَالى
অর্থ: “তোমরা মু’মিনগণের ফিরাসাত বা অন্তর্দৃষ্টিকে ভয় করো। কেননা, উনারা মহান আল্লাহ পাক উনার নূর মুবারক দ্বারা দেখে থাকেন।” (মাজমাউয যাওয়ায়িদ, তবারানী শরীফ, তিরমিযী শরীফ, তোহফাতুল আহওয়াজী)
অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক তিনি যা দেখেন তিনি উনার মাহবূব বান্দাগণ উনাদেরকে তাই দেখান। কাজেই, ইমাম, মুজতাহিদ ও আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণ উনাদেরকে সেভাবে তা’যীম-তাকরীম করা, খিদমত মুবারক উনার আঞ্জাম দেয়া উচিত।
ইমামুল মুসলিমীন, মুজাদ্দিদে মিল্লাত ওয়াদ দ্বীন, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উক্ত হাদীছ শরীফখানা উনার পুরোপুরি মিছদাক্ব, হক্বদার ছিলেন।
আমীরুল মু’মিনীন ফিল হাদীছ, সুলত্বানুল আরিফীন, ইমাম আব্দুল্লাহ ইবনে মুবারক রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, ইমামুল মুহাদ্দিসীন, মুজাদ্দিদে মিল্লাত ওয়াদ দ্বীন সাইয়্যিদুনা ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ফিরাসাত অন্তর্দৃষ্টি সম্পন্ন ছিলেন। উনার সমকক্ষ সমসাময়িক কেউ ছিলেন না।
শাসক হারুনুর রশীদের সামনে একবার সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সম্পর্কে আলোচনা মুবারক হলো। সে উনার জন্য মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট দোয়া করতঃ বললো, মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার উপর রহমত বর্ষণ করুন। কেননা তিনি ফিরাসাত বা অর্ন্তদৃষ্টি ও বিচক্ষণতার দ্বারা এমন অনেক বিষয়-বস্তু দেখেন যা অন্য কারো পক্ষে দেখা কখনোই সম্ভব নয়।” (তাযকিরাতুন নু’মান-৩২৩)
সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আবূ ইউসুফ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি অতি অল্প বয়সে উনার সম্মানিত পিতাকে হারিয়েছেন। উনার মা ছিলেন উনার অভিভাবক। তিনি উনার মাকে না বলে ইমামুল মুসলিমীন, মুজাদ্দিদে মিল্লাত ওয়াদ দ্বীন হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করার জন্য আসতেন। উনার সম্মানিত মাতা প্রথমতঃ বিষয়টি পছন্দ করতেন না। তাই একদিন সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে বললেন, আমার ছেলেকে আপনার ছোহবত মুবারকে আসতে বারণ করুন। ইমামুল মুসলিমীন, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনাকে উনার সম্মানিত মায়ের সাথে পাঠিয়ে দিলেন।
কিন্তু সাইয়্যিদুনা ইমাম আবূ ইউসুফ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি পরের দিন আবারো চলে আসলেন। কয়েকবারই এমন হলো। তিনি ফেরত পাঠান আর তিনি আবার চলে আসেন।
একদিন তিনি সাইয়্যিদুনা ইমাম আবূ ইউসুফ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার অসচ্ছলতার দিকে দৃষ্টিপাত করতঃ সান্তনা দিয়ে বললেন, আপনার তখন কেমন মনে হবে, যখন আপনি ফিরোযা (মূল্যবান সবুজ পাথর) নির্মিত প্রাসাদে বসে সুস্বাদু ফালুদা খাবেন?
ইমামুল মুসলিমীন, মুজাদ্দিদে মিল্লাত ওয়াদ দ্বীন, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন। আর সাইয়্যিদুনা ইমাম আবু ইউসুফ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি হারুনুর রশীদের প্রধান বিচারকের আসন অলঙ্কৃত করেছেন। শাসক হারুনুর রশীদ সে সাইয়্যিদুনা ইমাম আবু ইউসুফ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে তার রাজ প্রাসাদে দাওয়াত করলো। উনার সামনে দিলো সুস্বাদু ফালুদা। ইমাম আবু ইউসুফ রহমতুল্লাহি আলাইহি সুস্বাদু ফালুদা দেখে বিমুগ্ধ হাসি দিলেন। হারুনুর রশীদ হাসির কারণ জানতে চাইলো। সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আবু ইউসুফ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার উপর রহমত বর্ষণ করুন। অতঃপর বিগত জীবনের ঘটে যাওয়া সেই ঘটনা বিস্তারিত বললেন। তা শুনে শাসক হারুনুর রশীদ হতবাক হলো।
শাসক হারুনুর রশীদ আরো বললো, ইলিম মানুষকে উভয় জাহানে অতি সম্মানের অধিকারী করে তোলে। ইমামুল মুসলিমীন সাইয়্যিদুনা ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ফিরাসাত বা অন্তর্দৃষ্টি এমন ছিল যে, তিনি এমন অনেক বিষয়বস্তু দেখতেন যা স্বাভাবিক চোখে কখনো দেখা যায় না।
-মুফতী মুহম্মদ আল কাওছার।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
হযরত আব্বাস ইবনে মিরদাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যাকাত সম্পর্কিত আহকাম, মাসায়িল ও ফাযায়িল (৪)
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
প্রাণীর ছবি তোলা হারাম ও নাফরমানীমূলক কাজ
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
অ্যান্টার্কটিকা নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় বিজ্ঞানীরা
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম (৪)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা অবশ্যই সত্যের মাপকাঠি; অস্বীকারকারীরা কাট্টা কাফির (১)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ উনাদের আলোকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দু‘আ বা মুনাজাত (১১তম অংশ)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম (৩)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুনিয়ার যমীনে অবস্থানকালীন সময়ে ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ যে রোযা মুবারক রাখতেন সে রোযা মুবারক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১২ই শরীফ উনার দিনে হওয়াটা ছিলো একটি বিরল ঘটনা (২)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)












