ইলিশ ধরায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শুরু মৎস্য খাতে বাংলাদেশ বিশ্বে ৪র্থ হলেও বছরে মৎস্য আহরণে নিষেধাজ্ঞা থাকছে প্রায় ১১ মাস!
বিপরীতে নিষেধাজ্ঞার সময় দেশের সমুদ্রসীমায় মাছ লুট করছে বিদেশী জেলেরা। ২ কোটি জেলের জীবন জীবিকা পর্যুদস্ত করা দেশপ্রেমিক সরকারের কাজ হতে পারেনা।
, ২৮ রবীউল আউওয়াল শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ১৫ খ্বমীছ ১৩৯১ শামসী সন , ১৪ অক্টোবর, ২০২৩ খ্রি:, ২৯ আশ্বিন, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) মন্তব্য কলাম
মহিপুর মৎস্য বন্দরের জেলে হারুন আকন বলেন, আমাদের অবরোধ দেয়া হচ্ছে। আমরা সরকারি নির্দেশ মানছি, কিন্তু ফাঁকা মাঠে গোল দিচ্ছে ভারতের জেলেরা, আমরা যখন সরকারি নির্দেশ মেনে ঘাটে চলে আসি তখন ফাঁকা মাঠে ভারতের জেলেরা আমাদের সাগরের মাছ ধরে নিয়ে চলে যায়।
জেলেরা আরো জানান তাদের যে প্রণোদনা দেয়া হয় তা খুবই সামান্য। যা দিয়ে জেলেরা অবরোধকালীন সময়ে সংসার চালাতে পারেন না। তার দাবি জেলে সংখ্যার চেয়ে প্রণোদনা কম পাওয়া যায়। অনেক প্রকৃত জেলেরা সরকারের দেয়া প্রণোদনা সঠিকভাবে পাচ্ছেন না।
দৌলতদিয়া নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জে এম সিরাজুল কবির বলেন, ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞায় কোনো জেলে পদ্মা নদীতে নামতে পারবে না। পুরো পদ্মা নদী জেলেশূন্য থাকবে। কোনো বরফ কারখানায় মাছ মজুত করা যাবে না। কোনো যানবাহনে মাছ পরিবহন করা যাবে না। আমরা পদ্মা নদীতে সর্বক্ষণ নজরদারি করব। সমালোচক মহল মনে করেন এদেশের মাছ ভারতের হাতে তুলে দেয়ার জন্যই এরকম কঠোর আত্মঘাতী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, দৈনিক আল ইহসান শরীফের এক পর্যবেক্ষনে দেখা গেছে, দেশের মৎস্যসম্পদ পুরো ভ্রান্ত নিষেধাজ্ঞার বেড়াজালে আবদ্ধ হয়ে গেছে। প্রায় সারা বছরই কথিত মৎস্য সম্পদ রক্ষার নাম দিয়ে দেশের কোনো না কোনো এলাকায় বন্ধ থাকে ইলিশসহ সব ধরনের মাছ শিকার। প্রতিবছর ১ নভেম্বর থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত টানা ৮ মাস দেশের নদ-নদীতে বন্ধ থাকে মাছ ধরা। একই সঙ্গে দেশের ৬টি মাছের অভয়াশ্রমে বছরে ২ মাস বন্ধ রাখা হয় মাছ শিকার। এছাড়া প্রজনন মৌসুমে টানা ২২ দিন ইলিশ ধরা বন্ধ থাকে। ৩ দফায় প্রায় ১১ মাস ইলিশ এবং অন্য মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা থাকছে। অন্যদিকে, এখন আবার সরকার ২০মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত সাগরে ৬৫ দিন মাছ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। সেইসাথে গত ১ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা ছিলো। কিন্তু নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার পরও কৃষকেরা মাছ ধরতে পারেনি ঘুর্নিঝড় ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ কেটে যাওয়ার পর জেলেরা যখন মাছ ধরার প্রস্তুতি নিচ্ছে ঠিক তখনই আবার মে থেকে জুলাই পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা। অথচ এই সময়ে সাগরে ইলিশের প্রায় ৮১ শতাংশ ধরা পড়ে। অর্থাৎ ভরা মৌসুম। আর এর ফলে বার বার এই নিষেধাজ্ঞার প্রভাবে ধীরে ধীরে মৎস্য পেশা থেকে নিজেদের গুটিয়ে নিচ্ছে জেলেরা।
জানা গেছে, সরকার এই সময়ে বঙ্গোপসাগরে অবরোধ জারি করলেও ভারতসহ পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর সমুদ্রের নৌসীমায় কোনো অবরোধ না থাকায় ওই সকল দেশের জেলেরা সমুদ্রে অবাধে মাছ শিকার করে। তারা এ সময় বাংলাদেশের নৌসীমায় ঢুকে মাছ শিকার করে নিয়ে যায়। বঙ্গোপসাগরের বাংলাদেশ নৌসীমায় ভারত ও থাইল্যান্ডসহ ভিনদেশি জেলেরা অনুপ্রবেশ করে অবাধে দাপিয়ে বেড়ায়। এক হিসেবে প্রতিবছর সরকারের নীতির কারণে যখন বাংলাদেশি জেলেরা ভরা মৌসুমেও মাছ ধরতে পারছেনা তখন ভারত, থাইল্যান্ডসহ ভীনদেশি জেলেরা মৎস্যসম্পদ লুট করে নিয়ে যায়। এমনকি তারা এদেশীয় জেলেদের উপর হামলা চালিয়ে তাদের জাল-ট্রলারও ধ্বংস করে দেয়। এতে একদিকে যেমন সমুদ্রসীমার নিরাপত্তা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে, অপরদিকে সরকার হারাচ্ছে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব। আর এমন পরিস্থিতিতে ব্যাপারটা ঠিক এমনটাই দাড়াচ্ছে যে ‘দেশের মৎস্য সম্পদ লালন পালন করছে দেশের মৎস্যজীবিরা, কিন্তু বাগিয়ে নিচ্ছে ভীনদেশিরা।
দেশের মোট মৎস্য উৎপাদনে সামুদ্রিক মৎস্য খাতের অবদান খুবই কম। মোট মৎস্য উৎপাদনের মাত্র শতকরা ১৬ ভাগের মতো আসে সামুদ্রিক খাত থেকে। প্রায় ৫ লাখ লোক সামুদ্রিক মৎস্য খাতের সঙ্গে জড়িত। এমতাবস্থায় সরকারের উচিত ছিলো সমুদ্রে মৎস্য আহরণের জন্য দেশের মৎস্যজীবিদের পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধার ব্যবস্থা করে দেয়া। পৃষ্ঠপোষকতা করা। ভরা মৌসুমে আহরণ নিষিদ্ধ থাকায় প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকার মৎস্য সম্পদ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বাংলাদেশ।
প্রসঙ্গত আমরা মনে করি, সরকারের উচিত হবে দেশের স্বার্থে, দেশের প্রায় ২ কোটি মৎস্যজীবির জীবিকার বিষয়টি মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখে হলেও এই নিষেধাজ্ঞা বর্জন করা। আর নিষেধাজ্ঞা দিলেও উপযুক্ত সময়ে দেয়া। যখন ভারত ও মিয়ানমারও নিষেধাজ্ঞা প্রদান করে। এতে করে দেশের মৎস্যখাতও শক্তিশালী হবে, জেলেদেরও অবস্থার উন্নতি হবে। নচেৎ মাছ ধরার মৌসুমে যদি মাছ ধরা বন্ধ থাকে তাহলে এসব মৎস্যজীবীরা বেকার হয়ে পরবেন। আর এ বেকারত্ব সরকারের উপর তথা অর্থনীতির উপর বড় ধরনের ক্ষতিকর প্রভাব ফেলবে। পাশাপাশি দেশের কথিত যেসব মহল বলছে ‘সরকার ভারতকে সবকিছু উজার করে দিচ্ছে তারাও সরকারের বিরুদ্ধে আরো নিত্যনতুন অভিযোগ আনার সুযোগ পাবে’। এ ক্ষতিকর পরিনতি থেকে রক্ষার দায়-দায়িত্ব পুরোটাই সরকারের।
মূলত, এসব বিষয় বাস্তবায়নের অনুভূতি ও দায়িত্ববোধ আসে পবিত্র ঈমান ও পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনাদের অনুভূতি ও প্রজ্ঞা থেকে। এই অনুভূতি ও প্রজ্ঞা আসে পবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ অনন্তকালব্যাপী পালন করার ইলম ও জজবা থেকে। আর তার জন্য চাই নেক ছোহবত মুবারক তথা মুবারক ফয়েয-তাওয়াজ্জুহ।
-আল্লামা মুহম্মদ ওয়ালীউর রহমান।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
৪৮ বৎসর আগে ১৯৭৬ সালের ১৬ই মে ভাষানী ফারাক্কার বিরুদ্ধে ভারত অভিমুখে অগ্রযাত্রা করেছিলো সে আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় আজ জনগণও নেই, সরকারও নেই চুক্তি অনুযায়ী এ বছর বাংলাদেশ পানি পেয়েছে সবচেয়ে কম। বিভিন্ন বাধ, ব্যারেজ আর ড্যাম তৈরী করে বাংলাদেশকে পানিশুন্য করার জোরদার পায়তারা করছে ভারত।
১৯ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মেগা প্রকল্পে শুধু মেগা দুর্নীতিই নয় নির্ধারিত সময়ের পরে অতিরিক্ত মেগা সময়ও ব্যায় হয় এই স্বেচ্ছাচারিতার জবাবদিহীতা নাই কেন?
১৮ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
পানিবায়ু তহবিল: জাতিসংঘ ও বিশ্বব্যাংকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগই শেষ কথা না বরং আই.এম.এফ এবং চীনা ঋণের ফাঁদের মতই এটা এক মহা প্রতারণাযুক্ত ফাঁদ এ সম্পর্কে চাই জোরদার সচেতনতা
১৭ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
চলচ্চিত্র নামক জাহান্নামী সংস্কৃতির ফাঁদে মুসলিম উম্মাহ। নাটক-সিনেমার মাধ্যমে মুসলিম প্রজন্মকে দ্বীন ইসলাম থেকে দূরে সরিয়ে দেয়া হচ্ছে। সিনেমার মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী বিস্তার ঘটছে ইসলামোফোবিয়ার। পরকালের কথা স্মরণ করে মুসলিম উম্মাহকে বিধর্মীদের এসব ষড়যন্ত্র থেকে বের হয়ে আসতে হবে।
১৬ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
কুরিয়ার সার্ভিসে নজরদারি নেই। সেবার নামে গ্রাহক ভোগান্তি বাড়ছে কুরিয়ার সার্ভিসে। মাদক পাচার ও অবৈধ কর্মকা-ে কুরিয়ার সার্ভিসের যথেচ্ছা ব্যবহার।
১৫ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সারাদেশে চলছে ভুয়া প্রকল্প ও ভুয়া বিলের ছড়াছড়ি তথা সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে হাজার রকমের দুর্নীতি (৪৪৬)
১৪ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মুসলমানকে ‘মুসলমানিত্ব’ বুঝতে হবে। ‘আশহাদু আন্না মুহম্মাদার রসূলুল্লাহ’ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাক্বীক্বীভাবে বলতে হবে ও আমলে আনতে হবে।
১৩ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
পৃষ্ঠপোষকতার অভাব ও অবমূল্যায়নের কারণে দেশ ছাড়ছে মেধাবী বিজ্ঞানীরা। অথচ তাদের রাষ্ট্রীয়ভাবে মূল্যায়নে বাংলাদেশ হতে পারে তথ্য-প্রযুক্তিসহ সকল খাতে এশিয়ার সুপার পাওয়ার। দেশের গবেষক-বিজ্ঞানীদের মূল্যায়ন না করলে দেশ কোনোসময়ই উন্নত হবেনা, আর উন্নয়নের দাবীও করা যাবেনা।
১২ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
নিয়ন্ত্রণে আনা হচ্ছে না অনলাইন জুয়া-বেটিং-ক্যাসিনো মহামারির মতো ছড়িয়ে পড়েছে অনলাইন জুয়া কাজে আসছে না বিটিআরসির কলা-কৌশল নিয়ন্ত্রণ প্রায় অসম্ভব, বলছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ইসলামী মূল্যবোধের উজ্জীবনেই জুয়া বন্ধ সম্ভব (৩)
১১ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নিয়ন্ত্রণ প্রায় অসম্ভব, বলছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ইসলামী মূল্যবোধের উজ্জীবনেই জুয়া বন্ধ সম্ভব (পর্ব-২)
১০ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
নিয়ন্ত্রণ প্রায় অসম্ভব, বলছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ইসলামী মূল্যবোধের উজ্জীবনেই জুয়া বন্ধ সম্ভব (পর্ব-১)
০৯ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
মালয়েশিয়া, ব্রুনাই ইত্যাদি মুসলিম দেশে সম্ভাবনাময় শ্রমবাজার থাকলেও সেদিকে নজর দিচ্ছে না দেশের প্রবাসী মন্ত্রনালয় ১৬৮ দেশে কর্মী পাঠানোর দাবি করলেও শ্রমবাজার মূলত ১০-১১টি দেশে সীমাবদ্ধ নতুন শ্রমবাজার তৈরির চেষ্টা শুধুই মুখে মুখে।
০৮ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)