কাফিরদের প্রতিনিধি উলামায়ে সূ’রা:

মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-

وَدَّ كَثِيرٌ مِّنْ أَهْلِ الْكِتَابِ لَوْ يَرُدُّوْنَكُمْ مِّنْ بَعْدِ إِيْمَانِكُمْ كُفَّارًا حَسَدًا مِّنْ عِنْدِ أَنفُسِهِمْ مِّنْ بَعْدِ مَا تَبَيَّنَ لَهُمُ الْحَقُّ

অর্থ: আহলে কিতাবরা (কাফিররা) প্রতিহিংসাবশত চায় যে, তোমরা ঈমান আনার পর তোমাদেরকে কিভাবে কাফির বানানো যায়। তাদের কাছে সত্য প্রকাশিত হওয়ার পরও (তারা এটা চায়)। নাঊযুবিল্লাহ! (পবিত্র সূরা বাক্বারাহ শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ১০৯)

মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন,

وَلَنْ تَرْضٰى عَنْكَ الْيَهُوْدُ وَلَا النَّصَارٰى حَتّٰى تَتَّبِعَ مِلَّتَهُمْ

অর্থ: ইহুদী এবং নাছারারা কখনই তোমাদের প্রতি সন্তুষ্ট হবে না, যে পর্যন্ত না তোমরা তাদের ধর্মের অনুসরণ করো। (পবিত্র সূরা বাক্বারাহ শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ১২০)

অর্থাৎ কাফিররা সব সময়ই চায় কিভাবে মুসলমানদের সম্মানিত ঈমান, আক্বীদাহ ও আমলগুলো নষ্ট করা যায়। শুধু এতকুটুই নয় যতক্ষন পর্যন্ত তারা মুসলমানদের ঈমান-আমল নষ্ট করে তাদের ধর্মের অনুসারী না বানাতে পারবে ততক্ষন পর্যন্ত তারা মুসলমানদের উপর সন্তুষ্ট হবেনা। এটাই তাদের অভিপ্রায়। না‘ঊযুবিল্লাহ!

এক সময় কাফিররা বিভিন্ন যুদ্ধ করে, মুসলমানদের উপর যুলুম-নির্যাতন করে মুসলমানদেরকে কাফির বানানোর চেষ্টা করত, মুসলমানদের উপর কর্তৃত্ব করার চেষ্টা করত। কিন্তু ক্রুসেডর যুদ্ধে যখন কাফিররা পরাজিত হয় তখন তারা বুঝতে পারলো যে, মুসলমানদের সাথে সরাসরি যুদ্ধ-জিহাদ করে পারা যাবেনা। কেননা মুসলমানরা সংখ্যার আধিক্যে বা শারিরিক শক্তি দিয়ে বিজয় লাভ করেন না। বরং উনারা বিজয় লাভ করেন ঈমানী শক্তিতে। যতক্ষন উনাদের ঈমানী শক্তি দৃঢ় থাকবে ততক্ষন উনাদের সাথে সামরিক যুদ্ধে কখনোই বিজয় লাভ করা সম্ভব নয়। তাই মুসলমানদের ঈমানী শক্তিকেই দমন করা জরুরী। কেননা যখন তাদের নৈতিক অধপতন আর ঈমানী শক্তি দুর্বল হয়ে যাবে তখন সহজেই তাদেরকে ঘায়েল করা সম্ভব হবে।

তখন থেকেই তারা তাদের নতুন কৌশল শুরু করে। তারা জানে যে, যদি সরাসরি কোনো কাফির কোনো মুসলমানকে দীন ইসলাম উনার কোনো বিষয়ে ভুল বুঝায় বা কোনো বিষয়কে ছেড়ে দিতে বলে তাহলে কখনোই মুসলমানরা সেটা মেনে নিবে না। মুসলমানরা যাদেরকে সবচেয়ে বেশি সম্মান করে, যাদেরকে অনুসরণ করে উনারা হলেন- আলিম-উলামা, ইমাম-খতীব। যদি এই পর্যায়ে তাদের এজেন্ট নিয়োগ করা যায় তাহলে অতি সহজেই ফায়দা হাছিল করা যাবে। যেমন ভাবনা তেমন কাজ। কাফিররা মুসলমানদের সবচেয়ে সম্মানিত পদে নিয়োগ করে তাদের এজেন্ট। যারা সহজেই ভুল ফতওয়া দিয়ে মুসলমানদের ঈমান-আকীদাহ আমল নষ্ট করে দিতে পারে।

ইতিহাসে সেটাই দেখা যায় যে, হযরত সুলত্বান সালাহুদ্দীন আইয়্যুবী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার যামানায় প্রায় তিন হাজার ইমাম-খতীবকে হত্যা করার আদেশ দিয়েছিলেন। যারা একজনও মুসলমান ছিলোনা। বরং তারা ছিলো ছদ্মবেশী কাফির এবং তাদের এজেন্ট।

অত্যন্ত ফিকিরের বিষয় ঐসময়ই যদি এরকম ভয়াবহ অবস্থা হয় তাহলে বর্তমানে কি অবস্থা বিরাজ করছে? বর্তমানে মুসলমানদের মাঝে কত-শত কাফিররা ছদ্মবেশে ইমামতী আর খতীবগীরি করছে? মূলত বর্তমানে অসংখ্য ইমাম-খতীব, বক্তা-ওয়ায়েয রয়েছে যারা মুসলমানই নয় বরং তারা হয় কাফির বা তাদের এজেন্ট হয়ে কাজ করছে। আর এরাই বিভিন্ন ভুল-কুফরী ফতওয়া দিয়ে মুসলমানদের ঈমান, আক্বীদাহ এবং আমল নষ্ট করে যাচ্ছে। নাঊযুবিল্লাহ!



-হাফিয মুহম্মদ ইমামুল হুদা।