দ্বীন ইসলাম উনার ঈমানদীপ্ত ঐতিহ্য (৩৭)
উহুদের ময়দানে হযরত নাসিয়া বিনতে কা’ব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা উনার ঈমানদীপ্ত বীরত্বের অতুলনীয় ঘটনা
, ১১ ছফর শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ১৯ ছালিছ, ১৩৯২ শামসী সন , ১৭ আগষ্ট, ২০২৪ খ্রি:, ০২ ভাদ্র , ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
বিশিষ্ট মহিলা ছাহাবীয়া হযরত নাসিয়া বিনতে কা’ব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা দ্বীন ইসলামের ঈমানদীপ্ত ইতিহাসে এক অকুতোভয় বীর সেনানীর নাম। উহুদের জিহাদের ঘটনা প্রসঙ্গে তিনি নিজেই বর্ণনা করেন, সেদিন আমি মশক ভরে ভরে পানি এনে মুসলিম মুজাহিদদের মাঝে সরবরাহ করছিলাম। হঠাৎ যখন দেখলাম, কাফির, মুশরিক বাহিনীর দুঃসাহস মাত্রাতিরিক্ত বৃদ্ধি পেয়েছে তখন আমি পানি সরবরাহের কাজটি বন্ধ রেখে সরাসরি জিহাদে লিপ্ত হলাম। এ সময় ইবনে কুমিয়্যা কর্তৃক আমার শরীরে ১৩টি আঘাত লাগে। চিকিৎসা নেয়ার পরও একটি আঘাত থেকে প্রায় সারাটি বৎসর রক্ত ঝড়েছে। ইবনে কুমিয়্যাকে আমিও দফায় দফায় আঘাত করেছি। কিন্তু সে দু’টি লৌহ বর্ম পরার কারণে সে আঘাত কার্যকরী হয়নি। আমি আহত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হযরত নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের নবী, হযরত রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমার পুত্র হযরত আম্মারা বিন যায়িদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে ডেকে নির্দেশ মুবারক দিলেন, শীঘ্রই আপনি আপনার মায়ের নিকট যান এবং উনার ক্ষতস্থানে পট্টি বেঁধে দিন। অতঃপর আমি এবং আমার পুত্র নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মুখেই যুদ্ধ করছিলাম।
উহুদের জিহাদের বিশেষ পরিস্থিতিটি তখন চলছিল যখন আমার নিকট কোন ‘ঢাল’ ছিল না। এই সময় নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ঢালধারী এক ব্যক্তিকে দেখতে পেয়ে ইরশাদ মুবারক করেন, ‘হে ঢালওয়ালা! জিহাদরত কাউকে আপনার ঢালটি দিয়ে দিন। ’ তিনি ঢালটি আমার দিকেই নিক্ষেপ করলেন। আমি তা উঠিয়ে নিলাম এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পার্শ্ব মুবারকে থেকেই কাফির-মুশরিকদের আক্রমণ প্রতিহত করছিলাম। এ সময় এক অশ্বারোহী মুশরিক আমাকে আঘাত করলো। কিন্তু তার আঘাত সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হলো। আমি তরবারী দ্বারা তাকে এমন প্রচ- জোরে আঘাত হানলাম যাতে তার ঘোড়াটি মাটিতে লুটিয়ে পড়লো এবং সে ঘোড়া হতে দূরে ছিটকে পড়লো। সরাসরি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এই দৃশ্যবলী অবলোকন করছিলেন। তিনি নিকটেই জিহাদরত আমার দু’ পুত্র হযরত আম্মারা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু এবং হযরত আব্দুল্লাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাদেরকে ডাক দিয়ে নির্দেশ মুবারক দিলেন, দ্রুত আপনাদের মায়ের নিকট যান। তারপর আমি আমার পুত্রদের সাথে নিয়ে সেই মুশরিকের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে তার মৃত্যুদ- নিশ্চিত করলাম। সুবহানাল্লাহ!
ঈমানদীপ্ত ইবরত:
উহুদের জিহাদের কঠিন মুহূর্তে বিশিষ্ট মহিলা ছাহাবীয়া হযরত নাসিয়া বিনতে কা’ব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা উনার বীরত্ব, সাহসে প্রমাণিত হয়- তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুহব্বতে জান-মাল কুরবানী করতে যেমন কুণ্ঠিত হননি। তদ্রুপ আপন পুত্রদেরকে নিয়ে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুশমনদের বিনাশ করতে গিয়ে জীবন দিতে বিন্দুমাত্র পরোয়াও করেননি।
বর্তমান যামানায় অনুরূপ জান-মালের কুরবানী দিয়ে দ্বীন ইসলামের ঐতিহ্য তথা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সুমহান শান মুবারক বুলন্দ করতে মুজাদ্দিদে আ’যম সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনি এবং উনার সম্মানিত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা অবিরামভাবে রত রয়েছেন।
মুসলিম উম্মাহ যেদিন হযরত নাসিয়া বিনতে কা’ব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা এবং উনার বীর পুত্রগণের ন্যায় মুজাদ্দিদে আ’যম সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার ছোহবতে নিজেদের জান-মালের নজরানা দিতে দৃঢ় প্রত্যয়ী হবে সেদিনই প্রতিষ্ঠিত হবে দুনিয়ায় ইসলামের সেই হারানো ঈমানদীপ্ত সোনালী ঐতিহ্য। (সমাপ্ত)
-মুহম্মদ মুহাজিরুল ইসলাম।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
পবিত্র কুরবানী বিষয়ক সুওয়াল-জাওয়াব
২৩ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
২৩ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৩ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
যে সকল ওলামায়ে সূ’রা মন্দির ও মূর্তি পাহারা দিয়েছে, হিন্দুদের পূজায় গিয়েছে, তাদেরকে পূজা করতে সাহায্য-সহযোগীতা করেছে, সমর্থন করেছে, সম্মতি প্রকাশ করেছে, তাদের সাথে মুছাফাহা ও মুয়ানাক্বা করেছে, তাদেরকে সম্মান করেছে, তা’যীম করেছে, তাদের সম্পর্কে সম্মানসূচক শব্দ ব্যবহার করেছে এবং সম্মানসূচক শব্দ দ্বারা সম্বোধন করেছে, বাহ বাহ দিয়েছে এবং বেশী বেশী মূর্তি তৈরি করতে বলেছে এবং বেশী বেশী পূঁজা করতে বলেছে তারা প্রত্যেকেই মূর্তিপূজারী ও মুশরিক হয়ে কাট্টা কাফির ও মুরতাদ হয়েছে (১৯)
২৩ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সউদি সরকারের উম্মুল কুরা ক্যালেন্ডার দ্বারা হজ্জের তারিখসহ অন্যান্য আরবী মাসের ঘোষণা শরীয়ত সমর্থিত নয়
২৩ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, রহমাতুল্লিল আলামীন, ক্বয়িদুল মুরসালীন, রউফুর রহীম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র জীবনী মুবারক (২২৮২)
২৩ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার যে কোন বিষয়ে কার ফতওয়া সঠিক এবং গ্রহণ করা ফরয ও কার ফতওয়া গ্রহণ করা হারাম
২৩ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মুসলমানদের জন্য সমস্ত খেলাধুলা হারাম
২৩ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িজ
২২ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২২ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যে সকল ওলামায়ে সূ’রা মন্দির ও মূর্তি পাহারা দিয়েছে, হিন্দুদের পূজায় গিয়েছে, তাদেরকে পূজা করতে সাহায্য-সহযোগীতা করেছে, সমর্থন করেছে, সম্মতি প্রকাশ করেছে, তাদের সাথে মুছাফাহা ও মুয়ানাক্বা করেছে, তাদেরকে সম্মান করেছে, তা’যীম করেছে, তাদের সম্পর্কে সম্মানসূচক শব্দ ব্যবহার করেছে এবং সম্মানসূচক শব্দ দ্বারা সম্বোধন করেছে, বাহ বাহ দিয়েছে এবং বেশী বেশী মূর্তি তৈরী করতে বলেছে এবং বেশী বেশী পূজা করতে বলেছে তারা প্রত্যেকেই মূর্তিপূজারী ও মুশরিক হয়ে কাট্টা কাফির ও মুরতাদ হয়েছে (১৮)
২২ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-
২২ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)