এই উপমহাদেশে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম ও মুসলমানদের ঈমান-আমলের ক্ষতিসাধনে দেওবন্দীদের কার্যক্রম এবং তাদের ভ্রান্ত ফতওয়া (৬)
, ২১ রমাদ্বান শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ২৩ আশির, ১৩৯২ শামসী সন , ২২ মার্চ, ২০২৫ খ্রি:, ৭ চৈত্র, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
কাশ্মীরের পরাধীনতার কষ্ট এবং দেওবন্দী রাজাকারদের মুখোশ উন্মোচন:
কাশ্মীর নিয়ে আমি ইতিহাস লিখতে বসিনি, ইতিহাস বললে বহু বলা যাবে। এ যাবত এ নিয়ে অনেক ইতিহাস গ্রন্থও রচনা হয়ে গেছে। আমরা অনেক চোখের পানিও ফেলেছি এই কাশ্মীরকে নিয়ে। কিন্তু আমরা যারা এই কাশ্মীর নিয়ে চোখের পানি ফেলি তারা কি কখনো অনুধাবন করেছি, কাশ্মীরিদের পরাধীনতার পেছনে কারণটা কি???
আমরা নিজেরাই কি চেয়েছি, কাশ্মীরের মুসলমানরা স্বাধীন হোক? নাকি নিজ স্বার্থের জন্য মুসলিম ভাইদের ঠেলে দিয়েছি হিন্দু হায়েনাদের মুখে?
তাই কাশ্মীরি মুসলমানদের স্বাধীনতা ও সেই কুখ্যাত রাজাকারদের নিয়ে আমার এই পঞ্চম নোট।
গণভোট ও স্বায়ত্ত্বশাসনের মিথ্যা আশ্বাস হিন্দুত্ববাদী ভারতের, অতঃপর ওয়াদা ভঙ্গ:
১৯৪৭ সালের ২৬ অক্টোবর দশাসক হরি সিং এর থেকে কাশ্মীরের ক্ষমতা নিয়েছিল ধোঁকাবাজ ভারত। হরি সিংকে দেখিয়েছিল স্বায়ত্বশাসনের মুলো আর পাকিস্তানকে দেখিয়েছিল গণভোটের মুলো। কিন্তু কোনটাই বাস্তবায়ন করেনি ভারত।
১৯৪৭ সালে ৩১শে অক্টোবর ভারতের প্রধানমন্ত্রী জহরলাল নেহেরু পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী খানের কাছে পাঠানো এক বার্তায় মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে বলেছিল, “আমরা আপনাকে আশ্বাস দিচ্ছি কাশ্মীরে শান্তি শৃঙ্খলা ফিরে আসা মাত্র আমরা সেখান থেকে সৈন্য প্রত্যাহার করবো এবং কাশ্মীরের ভবিষ্যত সম্পর্কে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ভার আমরা কাশ্মীরীদের উপর দেবো। আমরা এ প্রতিশ্রুতি শুধু আপনার সরকারকেই নয়, কাশ্মীরী জনগণ ও বিশ্বের কাছে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি। ”
১৯৪৮ সালের ১৩ই আগস্ট এবং ১৯৪৯ সালের ৫ই জানুয়ারি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ ভারতের অনুরোধে কাশ্মীর নিয়ে দুটি প্রস্তাব গ্রহণ করে। এই প্রস্তাবের একটিতে বলা হয় “কাশ্মীরের জনগণের মতামত যাচাইয়ে একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ গণভোট অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। গণভোটের ভিত্তিতেই নির্ধারিত হবে তারা ভারতে থাকবে, না পাকিস্তানে যাবে। ”
কিন্তু এই গণভোটের প্রস্তাবে শেষ পর্যন্ত রাজী হয়নি বিশ্বাসঘাতক ভারত। ১৯৫২ সালে ভারত এই গণভোটকে নাকচ করে দেয়। কারণ তারা জানত যে কাশ্মীরের ৯৩ শতাংশ জনগণ মুসলমান (১৯৪৭ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী) সেখানে গণভোটে জনগণের রায় অবশ্যই ভারতের বিপক্ষেই যাবে।
কাশ্মীরীরা স্বাধীনতা চায়, স্বায়ত্বশাসন চায় না। কিন্তু স্বায়ত্বশাসন নামক সেই দু’টাকার ভাগও মুসলমানদের দিতে নারাজ ছিল হিন্দুত্ববাদী ভারত।
গণভোট বাতিলের পর স্বায়ত্বশাসনের ওয়াদা করেছিল তারা। এজন্য ১৯৫২ সালের সংবিধানে ৩৭০ অনুচ্ছেদ সংযোজন করে কাশ্মীরকে বিশেষ মর্যাদা দেয় তারা। তখন কাশ্মীরের একটি সংবিধান এবং একটি স্বতন্ত্র পতাকা ছিল। ছিল একজন প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীও। কিন্তু তাতেও সহ্য হলো না হিন্দুদের। মাত্র ১ বছরের মাথায় বিলুপ্ত করা হয় এই বিশেষ মর্যাদার, সংশোধন করা সেই ৩৭০ ধারার। এরপর থেকে জম্মু কাশ্মীর পরিণত হয় খাচায় বন্দী ভারতীয় অঙ্গরাজ্যে। (উল্লেখ্য মোদির নির্বাচনী ওয়াদা হচ্ছে সংবিধানের উক্ত ৩৭০ ধারা সম্পূর্ণ বিলুপ্ত করা)
মুসলমান দমন করতে হিন্দুত্ববাদী ভারত কত সেনা নিয়োগ করেছে?
জম্মু ও কাশ্মীরের মুসলমানদের দমন করতে সামরিক-আধা সামরিক সব হিন্দুদের হাতেই অস্ত্র তুলে দিয়েছিল ভারত।
উল্লেখ্য, কাশ্মিরের জনসংখ্যা মাত্র এক কোটি। সেখানে ভারত নিয়োজিত করেছে প্রায় ৫ লক্ষ সেনা। অর্থাৎ প্রতি একলাখ মানুষের জন্য ইরাকে যেখানে ৫৪৫ জন এবং আফগানিস্তানে যেখানে ৩১২ জন দখলদার সেনা রয়েছে, সেখানে কাশ্মিরে রয়েছে প্রায় ৫ হাজার সেনা!!!
যুলুম-নির্যাতনের সংক্ষিপ্ত হিসেব:
জম্মু ও কাশ্মীরে মুসলমানদের উপর ভারতীয় দখলদার বাহিনীর যুলুম নিপীড়নের একটি হিসাব (জানুয়ারি ১৯৮৯ থেকে জুলাই ২০১৩ পর্যন্ত)
১) সর্বমোট হত্যা: ৯৩, ৯১০ জন।
২) কারাগারে হত্যা: ৭,০০৩ জন।
৩) সাধারণ মানুষ গ্রেফতার: ১,২১,৭৩৯ জন।
৪) বাড়িঘর ও স্থাপনা ধ্বংস: ১,০৫,৯৮২টি।
৫) মুসলিম নারী বিধবা হন: ২২,৭৭০ জন।
৬) মুসলিম শিশু এতিম হয়: ১,০৭,৪৫৭ জন।
৭) মুসলিম নারী গণসম্ভ্রহানীর শিকার হন: ১০,০৬২ জন
২৪ বছরে এই হিসেব হলে, ৬৬ বছরের হিসেব কত আপনারাই বলুন??? (ইনশাআল্লাহ চলবে)
-০-
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম (৩)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুনিয়ার যমীনে অবস্থানকালীন সময়ে ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ যে রোযা মুবারক রাখতেন সে রোযা মুবারক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১২ই শরীফ উনার দিনে হওয়াটা ছিলো একটি বিরল ঘটনা (২)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত হাযির-নাযির শান মুবারক (১)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
প্রাণীর ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িজ
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
আল্লাহওয়ালী মহিলা উনাদের তিনটি বৈশিষ্ট্য-
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
পুরুষের জন্য কমপক্ষে একমুষ্ঠি পরিমাণ দাড়ি রাখা ফরয
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম (২)
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মুসলমানদের সবচেয়ে বড় শত্রু কাফির-মুশরিকরা (২)
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পর্দা পালন করা নারী-পুরুষ সকলের জন্যই শান্তি ও পবিত্রতা হাছিলের কারণ
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সীমালঙ্ঘনকারী কাফির-মুশরিকদের বিরুদ্ধে জিহাদ করা মহান আল্লাহ পাক উনার নির্দেশ মুবারক
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)












