এই উপমহাদেশে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম ও মুসলমানদের ঈমান-আমলের ক্ষতিসাধনে দেওবন্দীদের কার্যক্রম এবং তাদের ভ্রান্ত ফতওয়া (৭)
, ২১ রমাদ্বান শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ২৩ আশির, ১৩৯২ শামসী সন , ২২ মার্চ, ২০২৫ খ্রি:, ৭ চৈত্র, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
কাশ্মিরীদের স্বাধীনতা আন্দোলন কতটা তীব্র আকার ধারণ করেছে সেটা বুঝানোর জন্য ভারতীয় সাহিত্যিক অরুন্ধতি রায় লন্ডনের দৈনিক গার্ডিয়ানে কয়েক বছর আগে একটা নিবন্ধ লিখেছিলো।
অরুন্ধতি রায় লিখেছে- গত ১৫ই আগষ্ট ছিল ভারতের স্বাধীনতা দিবস। সেদিন শ্রীনগরের কেন্দ্রস্থল লালা চক দখলে নিয়েছিলো বিশাল জনসমুদ্র। তারা আওয়াজ তুলছিলো ‘জিয়ে জিয়ে পাকিস্তান’। অর্থাৎ পাকিস্তান জিন্দাবাদ। স্লোগান তুলছিলো, ‘হাম কিয়া চাহতে হেঁ?’ (আমরা কি চাই?) জনতার মুখে জবাব ছিলো, ‘আযাদী’ (স্বাধীনতা)। জিজ্ঞাসার সুরে স্লোগান উঠছিলো, “আযাদী কা মতলিব কিয়া (অর্থ: স্বাধীনতার লক্ষ্য কি?) জনতা সমস্বরে জবাব দিচ্ছিলো- ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’। আওয়াজ উঠছিলো, পাকিস্তান সে রিশতা কিয়া? (অর্থ: পাকিস্তানের সাথে আমাদের সম্পর্ক কি?) জনতা জবাব দিচ্ছিলো, ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’। তারা বলেছে, “এ্যায় জাবেরো, এ্যায় জালেমো! কাশ্মির হামারা ছোড় দো” অর্থ: “হে অত্যাচারি, হে জালেম! আমাদের কাশ্মির ছেড়ে দাও। ” অরুন্ধতি রায় আরো লিখেছে, তারা আরো বলেছে, “নাঙ্গাভূখা হিন্দুস্তান, জান সে পেয়ারা পাকিস্তান। ”
১৫ই আগষ্টে সবুজ পতাকা ছেয়ে ফেলেছিলো শ্রীনগর শহর। অথচ ভারতের স্বাধীনতার এ দিনটিতে ভারতের পতাকা শোভা পাওয়াই স্বাভাবিক ছিলো। ঐ দিনকে ‘গোলামীর দিন’ রূপে ধ্বণিত করছিলো। জনতার ঢল নেমেছিলো শুধু শ্রীনগরে নয়, শহরতলীর গ্রামগুলোতেও। http://goo.gl/K1SNcU
কাশ্মীরী মুসলমানদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকের ভূমিকায় দেওবন্দীরা:
১৯৪৭ সালে দেশভাগের সময় হিন্দুদের সাথেই থাকতে চেয়েছিলো এই দেওবন্দরা। কথিত অখ- ভারত নীতির নামে হিন্দুদের পক্ষাবলম্বন করে হিন্দুদের সীমানাবৃদ্ধিতে তারা রেখেছিলো কার্যকর ভূমিকা। (আপনারা এজন্য দেখবেন, বাংলাদেশের দেওবন্দী-কওমীরাও বলে অখ- ভারত থাকলে খুব ভালো হতো এবং সে সিদ্ধান্ত খুবই সঠিক ছিলো)
বহু মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এলাকা দেওবন্দীদের বেঈমানির কারণে চলে যায় হিন্দুদের ক্ষমতায়। সেই ধারাবাহিকতায় ওয়াদা ভঙ্গকারী ভারতের পক্ষ নিয়ে কাশ্মীরের স্বাধীনতার বিরোধীতা করে যায় এই দেওবন্দীরা।
গত ৬৬ বছর ধরে নির্যাতিত কাশ্মীরীরা যে স্বাধীনতা চেয়েছে তা কখনই মেনে নিতে পারেনি তারা। হিন্দুত্ববাদী কংগ্রেস আর বিজেপির মত তারাও কাশ্মীরের মুসলমানদের পরাধীনতার শিকলে আবদ্ধ রাখতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। এমনকি ভারতে মুসলমানরা যেন জিহাদ না করতে পারে সে জন্যও ইসলামের নাম দিয়ে ভ্রান্ত ফতওয়া দিতে বুক কাঁপেনি এই দেওবন্দীদের। এনডিটিভি এই খবরটি দেখুন- http://goo.gl/wtOju0)
সেখানে মুসলমানদের জন্য বুক ভাসিয়ে দিচ্ছে দেওবন্দে হুসেন মদনীর নাতি আর আসাদ মদনীর ছেলে মেহমুদ মদনী। কিন্তু তার মূল কথার সারকথা হচ্ছে, কাশ্মীরকে ভারতের অংশ হিসেবেই থাকতে হবে, ভারতীয় হিন্দুত্ববাদী সংবিধান মেনে চলতে হবে, তাদের স্বাধীনতা সংগ্রাম কিছুতেই মেনে নেয়া যাবে না।
হিন্দুত্ববাদীদের এত জুলুম নির্যাতনের পর ভারতে জিহাদ করার কোন দরকার নেই বলে বক্তব্য দিয়েছে দেওবন্দগুলো। তারা বলেছে, ভারত হচ্ছে মুসলিম বান্ধব এলাকা বা ‘দারুল আল আমান’, তাই এখানে জিহাদ অপ্রয়োজনীয়। আবার লক্ষ্য করুন, এই বক্তব্য তারা দিয়েছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের ‘ধর্ম রক্ষা মঞ্চ’র অনুরোধে, যারা চায় ভারতের মুসলমানদের স্বাধীনতা সংগ্রাম বন্ধ হোক। সূত্র: http://goo.gl/ycnJ6p
উপসংহার:
আসলে দেওবন্দীরা কথিত ‘অখ- ভারতে বিশ্বাসী’ এই অতিভদ্র শব্দ দ্বারা তাদের আখ্যায়িত করা কখনই উচিত নয়। যারা বাংলাদেশ সৃষ্টির বিরোধী ছিলো তাদেরকে যদি ‘রাজাকার’ নামে ডাকা হয়, তবে ’৪৭ এ যারা মুসলমান দেশ সৃষ্টির বিরুদ্ধে ছিলো এবং এখনো মুসলমানদের স্বাধীনতার বিরুদ্ধতা করে যাচ্ছে তাদেরকেও রাজাকার নামে ডাকা উচিত।
সময় এসেছে এই ঘৃণ্য রাজাকারদের চিহ্নিত করার এবং বর্জন করার। মহান আল্লাহ পাক তিনি সকলকে সেই তৌফিক দান করুন। (সমাপ্ত)
-০-
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম (৩)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুনিয়ার যমীনে অবস্থানকালীন সময়ে ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ যে রোযা মুবারক রাখতেন সে রোযা মুবারক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১২ই শরীফ উনার দিনে হওয়াটা ছিলো একটি বিরল ঘটনা (২)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত হাযির-নাযির শান মুবারক (১)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
প্রাণীর ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িজ
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
আল্লাহওয়ালী মহিলা উনাদের তিনটি বৈশিষ্ট্য-
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
পুরুষের জন্য কমপক্ষে একমুষ্ঠি পরিমাণ দাড়ি রাখা ফরয
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম (২)
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মুসলমানদের সবচেয়ে বড় শত্রু কাফির-মুশরিকরা (২)
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পর্দা পালন করা নারী-পুরুষ সকলের জন্যই শান্তি ও পবিত্রতা হাছিলের কারণ
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সীমালঙ্ঘনকারী কাফির-মুশরিকদের বিরুদ্ধে জিহাদ করা মহান আল্লাহ পাক উনার নির্দেশ মুবারক
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)












