ওযূ করার খাছ সুন্নতী তারতীব মুবারক ও মাসয়ালা-মাসায়িল (১)
, ০৪ রজবুল হারাম শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ১৯ সামিন, ১৩৯১ শামসী সন , ১৭ জানুয়ারি, ২০২৪ খ্রি:, ০২ মাঘ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) সুন্নত মুবারক তা’লীম
সম্মানিত শরীয়ত উনার পরিভাষায়, পবিত্র পানি দ্বারা শরয়ী পদ্ধতিতে হাত, মুখ, পা ধৌত করা ও (ভিজা হাতে) মাথা মাসেহ করাকে ‘ওযূ’ বলে।
নামায পড়ার জন্য ওযূ করা ফরয। সব সময় ওযূ অবস্থায় থাকা মুস্তাহাব। ঘুমানোর সময় ওযূ করা মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক। এতে হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের সাথে হাশর-নাশর হয়।
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آَمَنُوا إِذَا قُمْتُمْ إِلَى الصَّلَاةِ فَاغْسِلُوا وُجُوهَكُمْ وَأَيْدِيَكُمْ إِلَى الْمَرَافِقِ وَامْسَحُوا بِرُءُوسِكُمْ وَأَرْجُلَكُمْ إِلَى الْكَعْبَيْنِ
অর্থ: “হে মু’মিনগণ! যখন তোমরা নামাযের জন্য প্রস্তুত হবে, তখন তোমরা তোমাদের মুখমন্ডল ও দুই হাত কনুই সহ ধৌত করবে এবং তোমাদের মাথা মাসেহ করবে, আর দুই পা গোড়ালীসহ ধৌত করবে। ” (পবিত্র সূরা মায়িদা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ০৬)
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرتْ أَبي هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالَى عَنْهُ مرفوعاً: يَعْقِدُ الشيطان على قَافِيَةِ رأسِ أحدِكم، إذا هو نام، ثلاث عُقَدٍ، يَضْرِب على كل عُقْدَةٍ: عليك لَيلٌ طويل فَارْقُدْ، فإن استيقظ، فذكر الله تعالى انحَلَّتْ عُقْدَةٌ، فإن تَوضِّأ، انْحَلّتْ عُقدَةٌ، فإن صلى، انْحَلَّتْ عُقَدُهُ كُلُّها، فأصبح نشيطا طَيِّبَ النفس، وإلا أصبح خَبِيثَ النَّفْس كَسْلَان
অর্থ: হযরত আবূ হুরায়রা রদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে মারফু‘ হিসেবে বর্ণিত, “যখন তোমাদের কেউ নিদ্রা যায় তখন তার গ্রীবাদেশে শয়তান তিনটি করে গাঁট বেঁধে দেয়; প্রত্যেক গাঁটে সে এই বলে মন্ত্র পড়ে যে, ‘তোমার সামনে রয়েছে দীর্ঘ রাত, অতএব তুমি ঘুমাও। ’ অতঃপর যদি সে জেগে উঠে মহান আল্লাহ পাক উনার যিকির করে, তাহলে একটি গাঁট খুলে যায়। তারপর যদি ওযূ করে, তবে তার আরেকটি গাঁট খুলে যায়। তারপর যদি নামায পড়ে, তাহলে সমস্ত গাঁট খুলে যায়। আর তার প্রভাত হয় খোশ ও ভালো মনে। নচেৎ সে সকালে ওঠে কলুষিত মনে ও অলসতা নিয়ে। ” (বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ)
ওযূর ফরয চারটি: ১) মুখমন্ডল ধৌত করা। ২) কনুই সহ উভয় হাত ধৌত করা। ৩) মাথার চার ভাগের এক ভাগ মাছেহ করা এবং ৪) উভয় পা টাখনু সহ ধৌত করা।
পরিপূর্ণ ওযূ করতে গেলে অবশ্যই পবিত্র সুন্নত মুবারক অনুসারে করতে হবে। অন্যথায় কখনোই ওযূ পরিপূর্ণ হবে না বা শুদ্ধ হবে না। কাজেই সময়ের এবং পানির অভাব না থাকলে, অবশ্যই পবিত্র সুন্নত মুবারক মুতাবিক ওযূ করতে হবে।
ওযূর মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক সমূহ:
নিয়ত করা।
বিস্মিল্লাহ্ বলে ওযূ শুরু করা।
হাতের আঙ্গুল খিলাল করা।
উভয় হাত কবজি পর্যন্ত ধৌত করা।
মিসওয়াক করা।
তিনবার কুলি করা।
তিনবার নাকে পানি দেয়া।
সম্পূর্ণ মুখ মন্ডল তিনবার ধৌত করা।
ঘন দাড়িতে খিলাল করা।
উভয় হাতের কনুইসহ তিনবার ধৌত করা।
সমস্ত মাথা একবার মাছেহ করা।
এক অঙ্গ শুকানোর পূর্বে অন্য অঙ্গ ধৌত করা।
সম্পূর্ণ মাথা মাছেহ করা।
উভয় কান মাছেহ করা
অঙ্গসমূহ হাত লাগিয়ে ভালো করে ধোয়া।
প্রত্যেক অঙ্গ ডান দিক থেকে আরম্ভ করা
হাত ও পা আঙ্গুলের দিক থেকে ধোয়া আরম্ভ করা।
মাথা মাছেহ সামনের দিক হতে আরম্ভ করা।
গর্দান মাছেহ করা।
টাখনু সহ উভয় পা তিনবার ধৌত করা।
পায়ের আঙ্গুল নিচের দিক থেকে খিলাল করা।
ধারাবাহিকতা বজায় রেখে ওযুর কাজ গুলো সম্পূর্ন করা।
-আহমদ হুসাইন
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
ওযূ করার খাছ সুন্নতী তারতীব মুবারক ও মাসয়ালা-মাসায়িল (৪)
০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
ওযূ করার খাছ সুন্নতী তারতীব মুবারক ও মাসয়ালা-মাসায়িল (৩)
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ওযূ করার খাছ সুন্নতী তারতীব মুবারক ও মাসয়ালা-মাসায়িল (২)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ওযূ করার খাছ সুন্নতী তারতীব মুবারক ও মাসয়ালা-মাসায়িল (১)
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ইস্তিঞ্জার আদব ও ঢিলা-কুলুখ ব্যবহার করা সম্পর্কে (২)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ইস্তিঞ্জার আদব ও ঢিলা-কুলুখ ব্যবহার করা সম্পর্কে (১)
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
প্রয়োজনে ছুরি এবং চাকু দিয়ে খাবার কেটে খাওয়াও মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
জুতা-মোজা ঝেড়ে পরিস্কার করে পরিধান করা খাছ সুন্নত মুবারক
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
চামড়ার মোজা পরিধান করা খাছ সুন্নত মুবারক
৩০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
খাছ সুন্নতী না’লাইন বা স্যান্ডেলের বর্ণনা (০৩)
২৯ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
খাছ সুন্নতী না’লাইন বা স্যান্ডেলের বর্ণনা (০২)
২৮ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
খাছ সুন্নতী না’লাইন বা স্যান্ডেলের বর্ণনা (০২)
২৮ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার)












