কাফিরদের রচিত গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার মুসলমানদের জন্য নয় (২)
, ৩০ শাওওয়াল শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ৩০ হাদি আশির, ১৩৯২ শামসী সন , ২৯ এপ্রিল, ২০২৫ খ্রি:, ১৬ বৈশাখ, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারে সপ্তাহের সাতটি দিনের নামকরণ করা হয়েছে গ্রহ-নক্ষত্রের নাম থেকে। আর এই গ্রহ-নক্ষত্রগুলো ছিলো রোমানদের দেব-দেবী। প্রথম শতকের দিকে রোমানদের কাছে শনিবার ছিলো প্রথম দিন আর রবিবার ছিলো দ্বিতীয় দিন। পরে তাদের মাঝে সূর্যের উপাসনা বৃদ্ধি পেতে থাকে ফলে সপ্তাহের দ্বিতীয় দিন রবিবার (রবি=সূর্য) ইংরেজি Sunday (Sun = সূর্য) প্রথম দিনে পরিবর্তিত হয়।
সোমবার, ইংরেজিতে Monday এসেছে Moon থেকে। রোমানরা এই দিনটিকে উৎসর্গ করেছিলো চাঁদের দেবীর উদ্দেশ্যে। মঙ্গলবার এসেছে মঙ্গল গ্রহের নাম থেকে। আর ইংরেজি Tuesday এসেছে দেবতা Tyro -এর নাম থেকে।
বুধবার এসেছে বুধ গ্রহের নাম থেকে আর রোমানরা Mercury (বুধগ্রহ) কে দেবতা হিসেবে উপাসনা করতো। আর বুধগ্রহ পরিচিত ছিলো Wodan দেবতার নামে। Wodan দেবতার নামকরণ করেছিলো Wednesday । বৃহস্পতিবার এসেছে বৃহস্পতি গ্রহের (Jupitar) নাম থেকে। আর ইংরেজি Thursday এসেছে দেবতা Thor থেকে। বৃহস্পতিবার দিনটিকে তারা উৎসর্গ করেছিলো দেবতা Jupitar -এর নামে।
শুক্রবার এসেছে শুক্র গ্রহের (Venus) নাম থেকে। আর ইংরেজি Friday নামটি এসেছে দেবী Frigg -এর নাম থেকে। রোমানরা এই দিনটি রোমান দেবী Friday (শুক্র)-এর নামে উৎসর্গ করেছিলো।
শনিবার এসেছে শনি গ্রহের নাম থেকে আর ইংরেজিতে Saturday এসেছে Saturn (শনি) থেকে।
আমরা দেখতে পেলাম গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারে ইংরেজি সাতটি নাম এসেছে রোমানদের দেব-দেবী থেকে আর আমাদের পরিচিত গ্রহ-নক্ষত্রগুলো ছিলো তাদের দেব-দেবী এবং একেক দিন একেক দেবতার নামে উৎসর্গ করেছিলো। পরবর্তীতে যখন সাতটি ইংরেজি দিনের নাম বাংলা করা হয়, তখন এই সাতটি দিনের নাম গ্রহ-নক্ষত্রের নাম থেকে মুক্ত হতে পারেনি।
ইউরোপের খ্রিস্টানরা ২১শে মার্চ ইস্টার দিবস পালন করতো (২১শে মার্চ, যেদিন দিন-রাত সমান হয়)। কিন্তু দেখা গেলো জুলিয়ান ক্যালেন্ডার অনুসরণ করলে ইস্টার ডে চলে আসে ১২ই মার্চ। ফলে তারা তাদের এই ইস্টার ডে পালনের জন্যই জুলিয়ান ক্যালেন্ডার সংশোধন করে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার করে। জুলিয়ান ক্যালেন্ডারের শেষ তারিখ ছিল ৪ঠা অক্টোবর ১৫৮২ বৃহস্পতিবার আর ১০ দিন সংশোধন করে ১৫ই অক্টোবর, ১৫৮২ শুক্রবার থেকে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারের ১ম তারিখ গণনা করা হয়।
উল্লেখ্য, ইস্টার ডে হচ্ছে কাফিরদের কাছে সেই দিন, যেদিন তারা মনে করে হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম তিনি নাকি ক্রুশবিদ্ধ হওয়ার তিন দিন পর এইদিনে আবার ফিরে আসেন। নাঊযুবিল্লাহ!
মহান আল্লাহ পাক তিনি কুরআন শরীফে ইরশাদ মুবারক করেন, “তোমরা কাফির, মুশরিক তথা ইহুদী-নাছারা ও মুশরিকদেরকে অনুসরণ-অনুকরণ করো না।
এছাড়াও হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, “যে ব্যক্তি যে সম্প্রদায়ের অনুসরণ করবে, সে ব্যক্তি তাদেরই দলভুক্ত বলে গণ্য হবে। ”
মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “তোমরা আমাকে স্মরণ করো, আমিও তোমাদের স্মরণ করবো। ” মহান আল্লাহ পাক তিনি মূলত বান্দাকে স্মরণ করেন রহমত, বরকত, সাকীনা দানের মাধ্যমে। এখন কোনো রীতি, বিষয় বা পদ্ধতিকে অনুসরণ করতে গিয়ে যদি মহান আল্লাহ পাক উনার স্মরণ না হয় তবে রহমতের বিপরীতে গযব আসবে, এটাই স্বাভাবিক। নাঊযুবিল্লাহ!
কাফিরদের তৈরি গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার অনুসরণের ফলে শুধু কাফিরদের স্মরণ হয় (খ্রিস্টান ধর্মযাজক পোপ গ্রেগরির নামে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার হয়েছে), যা মুসলমানগণের জন্য হারাম এবং এর অনুসরণ পরিত্যাজ্য। এর অনুসরণে কল্যাণ নেই বরং অকল্যাণ রয়েছে।
কাফিরদের গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার অনুসরণ না করে মুসলমানগণের নিজস্ব একটা ক্যালেন্ডার রচনা করা প্রয়োজন, যেন সেই মুবারক ক্যালেন্ডার অনুসরণ করা যায় অর্থাৎ পবিত্র কুরআন শরীফ এবং পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের পূর্ণ অনুসরণ করা যায়। তখন কাফিরদের স্মরণ না হয়ে মহান আল্লাহ পাক উনার স্মরণ হবে।
-আল হিলাল।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
অ্যান্টার্কটিকা নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় বিজ্ঞানীরা
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম (৪)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা অবশ্যই সত্যের মাপকাঠি; অস্বীকারকারীরা কাট্টা কাফির (১)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ উনাদের আলোকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দু‘আ বা মুনাজাত (১১তম অংশ)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম (৩)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুনিয়ার যমীনে অবস্থানকালীন সময়ে ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ যে রোযা মুবারক রাখতেন সে রোযা মুবারক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১২ই শরীফ উনার দিনে হওয়াটা ছিলো একটি বিরল ঘটনা (২)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত হাযির-নাযির শান মুবারক (১)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
প্রাণীর ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িজ
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
আল্লাহওয়ালী মহিলা উনাদের তিনটি বৈশিষ্ট্য-
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)












