হিকায়াতুল আবরার বা নছীহতমূলক ঘটনাসমূহ
কোন অবস্থাতেই কাফির-মুশরিকদের অনুসরণ করা যাবে না
, ০৬ রবীউছ ছানী শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২৩ খ্বমীছ ১৩৯১ শামসী সন , ২২ অক্টোবর, ২০২৩ খ্রি:, ০৬ কার্তিক, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
এ প্রসঙ্গে একটা মেছাল বলা হয়ে থাকে যে, পবিত্র দ্বীন ইসলাম অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক উনার মনোনীত মত এবং পথ অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক উনার মতে মত, মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পথে পথ ছাড়া যে কোন মত, যে কোন পথ, যদি কেউ গ্রহণ করে, তাহলে সে ক্ষতিগ্রস্থের অন্তর্ভূক্ত হয়ে যাবে। এই প্রসঙ্গে কিতাবে উল্লেখ করা হয়, এই হিন্দুস্থানের মধ্যেই এক বুযুর্গ ব্যক্তি ছিলেন, খুব বড় মহান আল্লাহ পাক উনার ওলী। তিনি যখন ইন্তেকাল করলেন, ইন্তেকাল করার পরে আরেকজন দ্বীনদার, পরহেজগার আল্লাহওয়ালা লোক সেই বুযুর্গ ব্যক্তিকে স্বপে¦ দেখলেন। স্বপে¦ দেখে জিজ্ঞেস করলেন, হে মহান আল্লাহ পাক উনার ওলী কেমন আছেন? তিনি বললেন, আপাততঃ ভালই আছি। কিন্তু আমার উপর দিয়ে একটা কঠিন সময় অতিবাহিত হয়েছে। আমি যখনই ইন্তেকাল করলাম, আমাকে সরাসরি নিয়ে মহান আল্লাহ পাক উনার কাছে পেশ করা হলো। তখন মহান আল্লাহ পাক তিনি বললেন, “হে ফিরিস্তারা, তোমরা কেন তাকে এখানে নিয়ে এসেছ? ফিরিস্তারা বললেন, মহান আল্লাহ পাক, এই ব্যক্তি আপনার অনুগত ছিল। আপনার মতে, আপনার রসূল নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পথে পথ তিনি চলার জন্য কোশেশ করতেন। দ্বীনের উপর তিনি কায়েম ছিলেন। সেজন্য নিয়ে এসেছি আপনার সাক্ষাতের জন্য। মহান আল্লাহ পাক তিনি বললেন, “তাকে নিয়ে যাও এখান থেকে। তার হাশর, তার নশর, তার সবকিছু হবে হিন্দুদের সাথে। আমার এখানে তার কোন স্থান নেই।” সেই বুযুর্গ ব্যক্তি বলেন, আমি যখন এটা শুনলাম, আমার সমস্ত শরীর ভয়ে থরথর করে কাঁপতে লাগলো। আমি কিছুক্ষণ পরে বললাম, হে মহান আল্লাহ রাব্বুল আ’লামীন, আমি এমন কি অপরাধ করেছি যে, আমার হাশর-নশর হিন্দুদের সাথে হবে? আমি তো কোনদিন পুঁজা করিনি। আমি কোনদিন মন্দিরে যাইনি। আমার কেন হাশর-নশর হিন্দুদের সাথে হবে, হে মহান আল্লাহ রাব্বুল আ’লামিন? মহান আল্লাহ পাক তিনি বললেন, “দেখ তুমি স্মরণ করে দেখ, তুমি পুঁজা করেছিলে।” সেই বুযুর্গ ব্যক্তি বলেন, হে মহান আল্লাহ পাক আমি তো পুঁজা করিনি, আমি তো মন্দিরেও যাইনি। মহান আল্লাহ পাক তিনি বললেন, “সেই হোলি পুঁজার দিনের ঘটনার কথা কি তোমার স্মরণ আছে?” হিন্দুস্থানে একদিন হোলি পুঁজা হচ্ছিল, হোলি পুঁজা মানে রং ছিটাছিটি, এটাতো অনেক জায়গায়ই হয়ে থাকে, আজকাল সারা দেশে, সারা দুনিয়ায়। এটা নাজায়েয/হারাম প্রথা, বদ প্রথা, কুফরী প্রথা। এটা স্কুল-কলেজ, মাদরাসা, ইউনিভার্সিটিসহ সমস্ত জায়গায় হয়ে থাকে। যেকোন প্রতিষ্ঠানেই রং ছিটাছিটি হয়। মনে রাখবেন- এটা হারাম এবং জায়গা বিশেষে কুফরী-শেরেকীর অন্তর্ভূক্ত হয়ে যাবে এই রং ছিটাছিটি। সেই বুযুর্গ ব্যক্তিকে মহান আল্লাহ পাক তিনি বললেন, “তোমার কি সেই হোলি পুঁজার দিনের কথা স্মরণ আছে? তুমি একদিন হিন্দুস্থানের রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলে। সেইদিন ছিল হিন্দুদের হোলি পুঁজা, রং ছিটার দিন ছিল। সমস্ত গাছে, তরুলতা, পশু-পাখী সবকিছুর মধ্যে রং দেওয়া হয়েছিল। তোমার সামনে দিয়ে একটা গাধা যাচ্ছিল, তার শরীরে কোন রং ছিল না। অথচ অন্যান্য সমস্ত পশুর গায়ে রং ছিল। তখন তুমি পান চিবাচ্ছিলে, পান খাচ্ছিলে। তুমি বলেছিলে, হে গর্দভ, তোমার গায়ে তো কেউ রং দেয়নি। আমি একটু রং দিয়ে দেই। তুমি এক চিপটি পানের পিক দিয়েছিলে সেই গাধার গায়ে। এটা কি হোলি পুঁজা হয়নি?” যখন একথা মহান আল্লাহ পাক রাব্বুল আ’লামিন তিনি বললেন, সেই বুযুর্গ ব্যক্তি বললেন- আমি লা-জাওয়াব হয়ে গেলাম, আমি চুপ হয়ে গেলাম। আমার শরীর আরো থরথর করে কাঁপতে লাগলো। সত্যিইতো আমার ভুল হয়ে গেছে। আমি বললাম- হে মহান আল্লাহ পাক আমিতো বুঝি নাই, এটা করলে যে হোলি পুঁজা হয়ে যাবে। এটা যে তাদের সাথে
من تشبه بقوم فهو منهم.
অর্থাৎ “যে যেই সম্প্রদায়ের সাথে মিল রাখে, তার হাশর-নশর তাদের সাথে হবে,” আমি এটা বুঝতে পারিনি মহান আল্লাহ পাক। মহান আল্লাহ পাক তিনি বললেন, “কোথায় তুমি আমার মতে রইলে? আমার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পথে রইলে?”
ومن يبتغى غير الاسلام دينا فلن يقبل منه وهو فى الاخرة من الخاسرين.
“যে ব্যক্তি আমার দ্বীন ছাড়া অন্য কোন দ্বীন তালাশ করে, অনুসরণ অনুকরণ করে, তার থেকে সেটা গ্রহণ করা হবে না। সে অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যাবে। কাজেই তোমার অবস্থা কঠিন। তোমার তো হাশর-নশর হিন্দুদের সাথে হওয়া উচিত।” সে ব্যক্তি অর্থাৎ বুযুর্গ ব্যক্তি বললেন, আমি খুব কম্পিত অবস্থায় ছিলাম। কিছুক্ষন পরে মহান আল্লাহ পাক উনার রহমত হলো, দয়া হলো। মহান আল্লাহ পাক তিনি বললেন, “হে ব্যক্তি আমি তোমাকে অন্যান্য আমলের কারণে ক্ষমা করেছি। আর না হলে আমি তোমাকে ক্ষমা করতাম না। তুমি এটা হয়তো বুঝতে পারনি, তাই তোমার অন্যান্য আমল থাকার কারণে আমি তোমাকে ক্ষমা করে দিলাম।”
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পবিত্র ‘ছলাতুল জুমুয়াহ’ উনার পূর্বে ৪ রাকায়াত সুন্নত নামায অর্থাৎ পবিত্র ‘ক্বাবলাল জুমুয়াহ’ নামায নিয়ে বাতিলপন্থিদের বিভ্রান্ত্রিকর ও মিথ্যা বক্তব্যের দলীলভিত্তিক জাওয়াব (৮)
২১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
কাফির মুশরিকদের থেকে দূরে থাকতে এবং তাদেরকেও দূরে রাখার ব্যাপারে নির্দেশ মুবারক
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সম্মানিত ইসলামী শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে- ফুটবল-ক্রিকেটসহ সর্বপ্রকার খেলাধুলা করা, সমর্থন করা হারাম ও নাজায়িয (২)
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
যেখানে প্রাণীর ছবি থাকে, সেখানে রহমতের ফেরেশতা প্রবেশ করেন না
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত ৩টি স্তর
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
আসমাউর রিজাল, জারাহ ওয়াত তা’দীল, উছুলে হাদীছ শরীফ উনার অপব্যাখ্যা করে অসংখ্য ছহীহ হাদীছ শরীফ উনাকে জাল বলছে ওহাবী সালাফীরা (৩)
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া কবীরা গুনাহ
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হযরত আব্বাস ইবনে মিরদাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যাকাত সম্পর্কিত আহকাম, মাসায়িল ও ফাযায়িল (৪)
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)












