তরজমাতুল মুজাদ্দিদিল আ’যম আলাইহিস সালাম পবিত্র কুরআন শরীফ উনার ছহীহ্ তরজমা
(পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনার আলোকে সংক্ষিপ্ত তাফসীরসহ)
, ২২ রবীউছ ছানী শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ২৮ খ্বমিস , ১৩৯২ শামসী সন , ২৬ অক্টোবর , ২০২৪ খ্রি:, ১০ কার্তিক, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
‘পবিত্র সূরা নছর শরীফ’ উনার বরকতময় শানে নুযূল সম্পর্কে কয়েক প্রকার বর্ণনা রয়েছে। উনার শানে নুযূলে বলা হয়, প্রথমবার নাযিল হয়েছে হুদায়বিয়ার সন্ধির পর। কারণ হুদায়বিয়ার সন্ধিকে পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে প্রকাশ্য বিজয় বলে উল্লেখ করা হয়েছে। আর এই পবিত্র সূরা শরীফ উনার প্রথমেই মহান আল্লাহ পাক উনার সাহায্য ও প্রকাশ্য বিজয় মুবারক উনার কথা বর্ণনা করেন। উল্লেখ্য, হুদায়বিয়ার সন্ধি উনার পরেই কুরাঈশ ও অন্যান্য কওমের লোকেরা মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে সরাসরি দেখা সাক্ষাত করার সুযোগ লাভ করেন।
দ্বিতীয়ত বলা হয়, এই পবিত্র সূরা শরীফ নাযিল হয়েছে পবিত্র মক্কা শরীফ উনার বিজয় মুবারক উনার দিন। এই পবিত্র সূরা শরীফ উনার দ্বিতীয় পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে বলা হয়েছে, জিন-ইনসান দলে দলে দ্বীন ইসলাম উনাতে দাখিল হবে। আর তা স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে পবিত্র মক্কা শরীফ উনার বিজয়ের মাধ্যম দিয়ে।
তৃতীয়ত বলা হয়, এই সূরা শরীফ নাযিল হয়েছে বিদায় হজ্জ উনার সময়। বিদায় হজ্জ উনার সময় মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদেরকে বলেন, আপনারা আমার কাছ থেকে পবিত্র হজ্জ উনার নিয়ম-কানূন শিখে নিন, হয়ত সামনে আর সুযোগ নাও হতে পারে। এর মাধ্যম দিয়ে মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র বিছাল শরীফ উনার ইঙ্গিত দিয়েছেন।
তাই পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ও পবিত্র কুরআন শরীফ উনার তাফসীর উনাতে বর্ণিত রয়েছে, ‘পবিত্র সূরা নছর শরীফ’ যখন নাযিল হলো তখন হযরত আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, হযরত আবূ বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালাম, হযরত উমর ফারূক্ব আলাইহিস সালাম, হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুসহ আরো অনেক হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা কেঁদেছিলেন। উনাদের কান্নার কারণ সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি জিজ্ঞাসা করলেন তখন উনারা পবিত্র বিছাল শরীফ উনার ইঙ্গিতের কথা উল্লেখ করেন। স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এটা সঠিক বলে জানান।
অতএব, ‘পবিত্র সূরা নছর শরীফ’ থেকে উম্মতে হাবীবী উনাদের এ শিক্ষাই গ্রহণ করা উচিত, তারা যতদিন পর্যন্ত সর্বপ্রকার গুনাহ-খতা থেকে খালিছভাবে তওবা-ইস্তিগফার করে মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের উভয়ের প্রশংসা, ছানা-ছিফত ও পবিত্রতা মুবারক বর্ণনা করবে এবং আদেশ-নিষেধের উপর ইস্তিক্বামাত থাকবে ততদিন মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের উভয়ের তরফ থেকে সাহায্য, বিজয়, ইহসান তথা গইবী মদদ মুবারক লাভ করবে। এবং উনাদের দ্বারা হিদায়াত উনার কাজ সূচারুরূপে সম্পন্ন হবে। অর্থাৎ উনাদের মাধ্যম দিয়ে মানুষ হিদায়াত মুবারক লাভ করবে ও পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনাতে দাখিল হবে।
এই হিদায়াত ও গইবী মদদ মুবারক লাভ করতে হলে রূহানী কুওওয়াত মুবারক হাছিল করতে হবে। আর রূহানী কুওওয়াত মুবারক হাছিল করতে হলে হক্কানী-রব্বানী শায়খ উনার নিকট বাইয়াত গ্রহণ করে ক্বল্বী যিকির ও ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করার মাধ্যমে ফয়েজ-তাওয়াজ্জুহ মুবারক হাছিল করতে হবে। (তাফসীরে জরীর তাবারী, তাফসীরে ইবনে কাছীর, তাফসীরে কুরতুবী, তাফসীরে কবীর, তাফসীরে খাযিন, তাফসীরে বাগবী, তাফসীরে ইবনে আব্বাস, তাফসীরে রূহুল মায়ানী, তাফসীরে মাযহারী, তাফসীরে আমীনীয়া, বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, মিশকাত শরীফ)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
হযরত আব্বাস ইবনে মিরদাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যাকাত সম্পর্কিত আহকাম, মাসায়িল ও ফাযায়িল (৪)
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
প্রাণীর ছবি তোলা হারাম ও নাফরমানীমূলক কাজ
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
অ্যান্টার্কটিকা নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় বিজ্ঞানীরা
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম (৪)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা অবশ্যই সত্যের মাপকাঠি; অস্বীকারকারীরা কাট্টা কাফির (১)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ উনাদের আলোকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দু‘আ বা মুনাজাত (১১তম অংশ)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম (৩)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুনিয়ার যমীনে অবস্থানকালীন সময়ে ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ যে রোযা মুবারক রাখতেন সে রোযা মুবারক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১২ই শরীফ উনার দিনে হওয়াটা ছিলো একটি বিরল ঘটনা (২)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)












