দাদন ব্যবসায়ীদের কাছে দাসে পরিণত হচ্ছে ক্ষুদ্র খামারী, জেলেসহ দরিদ্র সাধারণ মানুষ।
সরকারি ব্যাংকগুলোর ঋণব্যবস্থা দারিদ্রবান্ধব না হওয়ায় গ্রামীণ ঋণের ৬৬% দাদন-মহাজনের নিয়ন্ত্রনে। দাদন ব্যবসা নির্মূল না হলে দেশের মানুষ কখনই অর্থনৈতিক মুক্তি পাবে না।
, ৩০ শাওওয়াল শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ২১ ছানী ‘আশার, ১৩৯০ শামসী সন , ২১ মে, ২০২৩ খ্রি:, ০৮ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) মন্তব্য কলাম
আঠারো শতকে দাদন ব্যবসা ব্রিটিশ ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির দালালদের মাধ্যমে পরিচালিত হতো। অতীতে কোম্পানির স্বার্থে শুরু হওয়া দাদন ব্যবসা একুশ শতকের বর্তমান বাংলাদেশে শুধু ব্যাপক আকারই ধারণ করেনি, বরং সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে পৌঁছে গেছে এর আগ্রাসী রূপ। বিনা লোকসানে রাতারাতি কোটিপতি হতে অভাবী ও নিম্নবিত্ত মানুষকে চড়া সুদে টাকা দিচ্ছে দাদন ব্যবসায়ীরা। সাধারণের কাছে এরা সুদারু নামেই পরিচিত।
উল্লেখ্য, দেশে কয়েক লাখ দাদন ব্যবসায়ী আছে। বেশিরভাগ দাদন ব্যবসায়ী সুদে টাকা দেওয়ার আগে গ্রহীতার কাছ থেকে সাদা স্ট্যাম্পে সই নেয়। শুধু তা-ই নয়, গরিব মানুষকে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে বাধ্য করে। ব্যাংকের ফাঁকা চেকে সই নিয়ে নিজের জিম্মায় নিয়ে নেয় দাদন ব্যবসায়ী তথা সুদখোররা। সুদে টাকা নিয়ে নির্ধারিত সময় সুদের টাকা দিতে ব্যর্থ হলেই গ্রহীতার ওপর চালানো হয় মানসিক ও অনেক ক্ষেত্রে শারীরিক নির্যাতন। গালাগালিও করা হয় অশ্লীল ভাষায়। কোনো ক্ষেত্রে দু’এক মাস সুদের টাকা দিতে না পারলে সুদের সুদ টেনে হিসাব পাকাপোক্ত করে গ্রহীতার ওপর চাপ সৃষ্টি করে সুদারুরা। তাদের কাছে গচ্ছিত ব্যাংকের চেক ও ফাঁকা স্ট্যাম্পে সই থাকায় প্রতিবাদও করতে পারে না দরিদ্র মানুষজন। এছাড়া, দাদনকে কেন্দ্র করে প্রতিনিয়তই ঘটছে আত্মহত্যা বা খুনের মতো ঘটনা। অনেক ক্ষেত্রে সুদের জন্য আত্মহত্যা করা মানুষটিকে মরার পরও ছাড় না দিয়ে পরিবারকে সুদের টাকা দিতে বাধ্য করার মতো বর্বর মানসিকতার পরিচয়ও দিয়ে চলেছে তারা।
দাদন শুধু ব্যক্তিপর্যায়েই সীমাবদ্ধ নেই। বিভিন্ন এনজিওর ব্যানারে ঋণ কর্মসূচির নামে চলছে চড়া সুদে দাদন ব্যবসা। আধুনিক নামে এখন বিভিন্ন সমিতি, ক্লাব, মাল্টিপারপাস নাম দিয়ে জাঁকালো অফিস সাজিয়ে জমজমাট ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। নীরবে হাজার হাজার কোটি টাকা খেটে খাওয়া দুস্থ মানুষ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে। এসব বিষয় রাষ্ট্র ও বিভিন্ন সংস্থার জানা থাকলেও কোনো প্রতিকার বাস্তবে দেখা যায় না। সমবায় সমিতির নিবন্ধন নিয়ে কোটি কোটি টাকার সুদি ব্যবসার মাধ্যমে লুটপাটের অনেক সংবাদ জাতীয় দৈনিকে শিরোনাম হতে দেখা যায়। প্রয়োজন আর লাভের আশায় অনেক মানুষ এসব প্রতিষ্ঠানে যায়। কয়েক মাসের মাথায় বড় অঙ্কের অর্থ আত্মসাৎ করে প্রতিষ্ঠানটি নিরুদ্দেশ হয়ে যায়। তখন তারা চলে যায় ধরাছোঁয়ার বাইরে।
প্রসঙ্গত, দাদন ব্যবসা বাংলাদেশে ফুলে ফেপে ওঠার মূল কারণই হলো, সাধারণ মানুষের ঋণপ্রাপ্তিতে দুর্ভোগ ও অনিশ্চয়তা। রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে সহজ শর্তে (সুদমুক্ত) ঋণের ব্যবস্থা না থাকায় বিপন্ন অসহায় মানুষ টাকার প্রয়োজন পড়লেই সুদখোরদের দ্বারস্থ হচ্ছে। গ্রামের মানুষের ঋণ প্রাপ্তি সহজ করতে শহরে একটি শাখার বিপরীতে গ্রামেও একটি শাখা খুলতে ব্যাংকগুলোর প্রতি নির্দেশনা রয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের। কিন্তু সরকারের এই নির্দেশনাগুলো মানছে না ব্যাংকগুলো। ফলে গ্রামীণ ঋণের নিয়ন্ত্রণ এখনো দাদন ব্যবসায়ীদের হাতেই। বিবিএস প্রতিবেদন বলছে, গ্রামীণ ঋণের ৬৩% এখনো এনজিওগুলোর নিয়ন্ত্রণে। এক্ষেত্রে ব্যাংকের অবদান মাত্র ২৬%। পাশাপাশি স্থানীয় মহাজন, দাদন ব্যবসায়ী এবং আত্মীয়-স্বজন ও গ্রামীণ ঋণের গুরুত্বপূর্ণ উৎস। মোট ঋণের ৩.৬৭% জোগান দেয় স্থানীয় মহাজনরা।
বলাবাহুল্য, সরকারি ব্যাংকগুলো থেকে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের দুর্নীতি, জোর-জবরদস্তি ও সিন্ডিকেটের কারণে ব্যাংকগুলো থেকে সহজে ঋণ পায়না দারিদ্র ও নিম্ন পেশাজীবি মানুষ। আর ঋণ নিতে গেলেও দিতে হয় বড় অঙ্কের সুদ। যা এই দারিদ্র জনগোষ্ঠীর পক্ষে বহন করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। পাশাপাশি, যা মুসলমানদের জন্য শরীয়ত অনুযায়ী হারাম। যদি এক্ষেত্রে ব্যাংকগুলো দেশের দারিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য বিনা সুদে উপযুক্ত ঋণ গ্রহণের ব্যবস্থা করতো তাহলে এই দাদন ব্যবসায়ীরা গ্রামীণ জনগোষ্ঠীকে ঋণের ফাঁদে ফেলে সর্বস্বান্ত করতে পারতো না। এক্ষেত্রে সরকার যদি ব্যাংক খাতকে দারিদ্রবান্ধব করে এবং ব্যাংক খাতের সুদের কারবার বন্ধ করে তাহলেই এই বিশৃঙ্খলা থেকে মুক্তি পাবে জনগণ। কাজেই সরকারের উচিত দেশ থেকে রক্তচোষা দাদন অর্থাৎ সুদভিত্তিক অর্থনীতি দূর করে হাক্বীকী ইসলামী শরীয়াহভিত্তিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তোলা।
-আল্লামা মুহম্মদ ওয়ালীউর রহমান।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
রেলপথ দেশব্যাপী পণ্য পরিবহনের জন্য সাশ্রয়ী ও নিরাপদ মাধ্যম হিসেবে বিবেচিত। রেলের ইঞ্জিন স্বল্পতার কারণে আগ্রহ থাকলেও প্রতিষ্ঠান বেছে নিচ্ছে অন্য পথ চট্টগ্রাম বন্দরের কনটেইনার পরিবহনের ৯৬ শতাংশই হয় সড়কপথে অপরদিকে রেল অথবা সড়কপথে যাত্রী চলাচল কিংবা পণ্য পরিবহনে তুলনামূলকভাবে খরচ অনেক কম হয় পানিপথে।
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
পশ্চিমা সম্রাজ্যবাদীদের দীর্ঘদিনের শোষণ আর অব্যাহত লুটপাটের কারণে সোমালিয়া, চাদ, নাইজেরিয়া, নাইজার, দক্ষিণ সুদান, কেনিয়া ও ইথিওপিয়ার প্রায় ২ কোটি মানুষ এখন দুর্ভিক্ষ আক্রান্ত। দুর্ভিক্ষ নেমে আসতে আর দেরি নেই, এরকম দুঃসহ দিন গুনছে পূর্ব-আফ্রিকার উগান্ডা, রুয়ান্ডা, বুরুন্ডি, তানজানিয়ার প্রায় ৫ কোটিরও বেশি মানুষ। কিন্তু নিশ্চুপ বিশ্ব গণমাধ্যম, নিষ্ক্রিয় বিশ্ববিবেক, নীরব মুসলিম বিশ্ব!
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছরে অর্থনীতি গভীর সংকটে শেষ প্রান্তিকে প্রবৃদ্ধি মাত্র ৩.৩৫ শতাংশ দেশের অর্থনীতি তলানী তথা বারোটা বাজার খবর এখন সর্বত্রই ব্যাপক সমালোচিত হচ্ছে
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ইতিহাসের নিরীখে, বর্তমান সংবিধান প্রণেতা গণপরিষদেরই কোন আইনী ভিত্তি বা বৈধতা ছিল না। গত ৫৫ বৎসর দেশবাসীকে যে অবৈধ সংবিধানের অধীনে বাধ্যগত করে রাখা হয়েছিলো এর প্রতিকার দিবে কে? ৯৮ ভাগ জনগোষ্ঠী মুসলমানের দ্বীন ইসলামের প্রতিফলন ব্যাতীত কোন সংবিধানই বৈধ হতে পারে না কারণ দেশের মালিক ৯৮ ভাগ জনগোষ্ঠী মুসলমান
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ইরান ফিলিস্তিনে ইসরাইলী হামলার জন্য বিশেষভাবে দায়ী সালাফী-লা মাযহাবী ওহাবী মালানারা কারণ তারাই সৌদি ইহুদী শাসকদের প্রশংসা করে, পৃষ্ঠপোষকতা করে তাদের দোষ-ত্রুটি এবং মুসলমান বিদ্বেষী ও ইসলাম বিরোধী কাজ চুপিয়ে রাখে বাংলাদেশসহ অন্যান্য মুসলিম দেশে তাদের কুফরী আক্বীদা প্রচার করে
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
বাজারে নতুন আলু উঠলেও দাম চড়া, কেজিতে ২০০ টাকা পুরোনো আলু নিয়ে বিপাকে ব্যবসায়ীরা আলু প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পের উদ্যোগ জরুরি আলু রফতানীতে কমপক্ষে লাখো কোটি টাকা আয় সম্ভব আলুর জাতের মান বৃদ্ধি এবং হিমাগার স্থাপনসহ রফতানীর ক্ষেত্রে সব বাধা দূর করে সরকারকে যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতা করতে হবে।
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
প্রশাসন খবর না রাখলেও প্রচ- শীতে মারা যায় হাজার হাজার লোক। চরম ভোগান্তিতে পড়ে কোটি কোটি লোক। সরকারি সাহায্যের হাত এখনও না বাড়ানো মর্মান্তিক। তবে শুধু লোক দেখানো উদ্যোগ গ্রহণই নয়; প্রকৃত সমাধানে চাই সম্মানিত ইসলামী চেতনার বিস্তার। তাহলে ৯৮ ভাগ মুসলমান অধ্যুষিত এদেশে কোনো আর্তেরই আহাজারি উচ্চারণ হবার নয়।
১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ভীনদেশী অ্যাপের ফাঁদে পড়ে বিপথে যাচ্ছে দেশের তরুণ প্রজন্ম। বাড়ছে নারীপাচার, দেশে বাড়ছে অশ্লীলতা ও পর্ণোগ্রাফির প্রচার। কিশোর-কিশোরীদের টার্গেট করেই একটি মহল এসব অপসংস্কৃতির প্রচার ও প্রসার ঘটাচ্ছে। এসব অপসংস্কৃতি নির্মূলে দ্বীন ইসলামই একমাত্র সমাধান।
১২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘উচ্চ সুদহার ব্যবসায়ীরা আর সহ্য করতে পারছেন না। ‘অগ্রিম আয়কর (এআইটি) এবং উৎসে কর কর্তন (টিডিএস) ব্যবসায়ের ওপর অতিরিক্ত চাপ তৈরি করছে। এআইটি ও টিডিএস আসলে ট্যাক্স টেরোরিজম বা কর-সন্ত্রাস। ব্যবসায়ীরা ‘কর-সন্ত্রাস’ থেকে মুক্তি চান। ব্যবসায়ীরা অগ্রিম আয়কর ও উৎসে করের চাপ থেকে মুক্তি চান।
১১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
দেশে মজুদ খনিজ সম্পদের অর্থমূল্য প্রায় ৫০ ট্রিলিয়ন ডলারেরও বেশি কিন্তু উত্তোলনে বিনিয়োগ নাই বললেই চলে অথচ দেশ থেকে অর্থ পাচারের পরিমাণ ২০ লাখ কোটি টাকা সরকারের ঋণের পরিমাণ প্রায় ২০ লাখ কোটি টাকা
১০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমেছে, দেশে কেন উল্টো বেড়েছে? বিশ্ববাজারে জ্বালানি সহ খাদ্যপণ্যের দাম কমলেও বাংলাদেশে ভোক্তা বাড়তি দামে কিনছে বিশ্বে জ্বালানীসহ খাদ্য পণ্যের দাম ধারাবাহিকভাবে কমছে, কিন্তু বাংলাদেশে সুফল মিলছে না কেন? প্রতিবেশীরা স্বস্তিতে, বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতির চাপ বাড়ছে কেনো?
০৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩ লাখ ৬৮ হাজার ৩৫২ কোটি টাকা ‘আইএমএফের চাপে’ নতুন করের বোঝা বাড়ছে ৫৫ হাজার কোটি টাকা আইএমএফের শর্ত মানতে গিয়ে সরকারকে জ্বালানি, সার, বিদ্যুৎ এবং সামাজিক খাতে ভর্তুকি কমাতে হয়। এতে সমাজের নিচের স্তরের মানুষের ওপর চাপ বাড়ে।
০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)












