মন্তব্য কলাম
দেশবিরোধী স্টারলিঙ্কের হাতে ইন্টারনেট-এর গোপনীয়তা এবং এর বাণিজ্য তুলে দেয়া হয়েছে। এবার মোবাইলের মালিকানা ৮০ ভাগ পর্যন্ত পছন্দের বিদেশী কোম্পানীর হাতে তুলে দেয়া হচ্ছে। দেশের ব্যবসায়ীদের সর্বস্বান্ত করে বিদেশী বেনিয়াদের প্রতিষ্ঠা করা তথা নতুন ইষ্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানী খোলাই কী এই সরকারের ঘাপটি মেরে থাকা এজেন্টদের উদ্দেশ্যে?
, ১৩ মুহররমুল হারাম শরীফ, ১৪৪৭ হিজরী সন, ১০ ছানী, ১৩৯৩ শামসী সন , ৯ জুলাই, ২০২৫ খ্রি:, ২৫ আষাঢ়, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) মন্তব্য কলাম
অন্তর্বর্তী সরকার প্রস্তাবিত টেলিকম নীতিমালা বাস্তবায়ন হলে লাখ লাখ পরিবারের জীবিকা হুমকির মুখে পড়বে।
দেশের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
এ খাতের হাজার হাজার প্রকৌশলী, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শ্রমিকের চাকরি হারাবে। বিদ্যমান আইএলডিটিএস নীতিমালার আওতায় গড়ে ওঠা দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলো কার্যত টিকে থাকতে পারবে না।
প্রস্তাবিত কাঠামো অনুযায়ী টেলিকম খাতের নিয়ন্ত্রণ মূলত বিদেশী বড় কোম্পানিগুলোর হাতে চলে যাবে।
যার ফলে ধীরে ধীরে স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলো শক্তিশালী করে বিদেশী কোম্পানিগুলোর নির্ভরতা কমানোর আর কোনো সুযোগ থাকবে না।
অন্তর্বর্তী সরকারের পাতা ফাঁদে পা দিয়ে বি.এন.পি. জনগণের অভিভাবক দলতো নয়ই বিদ্রোহী দলের ভূমিকাও পালন করছে না।
অন্তর্বর্তী সরকারের সীমানা বহির্ভূত সব সিদ্ধান্ত- তথা প্রস্তাবিত টেলিকম নীতির বিরুদ্ধে গত ৩রা জুলাই তাদের সংবাদ সম্মেলনে প্রতিবাদের ভাষা খুবই নতজানু ও দুর্বল।
সুতরাং জনগণকে মনে করতে হবে তারাই দেশের মালিক ও অভিভাবক।
অন্তর্বর্তী সরকারের দেশ বিরোধী দেশের অর্থনীতি বিধ্বংসী, দেশীয় ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি বিরোধী এবং ইসলাম বিরোধী সব এজেন্ডার বিরুদ্ধে
বিশেষত অন্তর্বর্তী সরকারের ক্ষমতা কুক্ষিগত করার ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে
জনগণকেই আবার ফুঁসে উঠে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন চেতনা বাস্তবায়ন করতে হবে ইনশাআল্লাহ।
গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় ব্যাপারে এককভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার মহা গুরুত্বর অভিযোগ উঠেছে অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে।
প্রশ্ন উঠেছে অন্তর্বর্তী সরকারের ম্যান্ডেট কতটুকু? সংস্কার ও নির্বাচনের বাইরে কী কী সিদ্ধান্ত নিতে পারে?
করিডর ও বন্দর নিয়ে এরইমধ্যে রাজপথে প্রতিবাদ কর্মসূচি দিয়েছে কিছু রাজনৈতিক দল। ‘বিনিয়োগের পরিবেশ নিয়ে সভা করা অন্তর্বর্তী সরকারের কাজ না’, এমন মন্তব্য করে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) মতবিনিময় সভায় যায়নি বিএনপি।
এছাড়াও আলোচনায় আছে কাতারকে বাংলাদেশে সামরিক সরঞ্জাম তৈরির কারখানা স্থাপনের অনুমতি দেওয়া। নারিকেল দ্বীপ নিয়ে কী হচ্ছে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে অনেক আগেই। প্রতিটা ক্ষেত্রেই সরকারের নিজস্ব ব্যাখ্যা থাকলেও নানা রাজনৈতিক দল এসব ব্যাখ্যা মানতে নারাজ।
বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল এরইমধ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের এইসব কাজের ম্যান্ডেট নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আইনুল ইসলাম মনে করেন, এই সরকার চাইলেই সব কিছু করতে পারে না।
অভিজ্ঞমহল বাংলাদেশের বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার সঙ্গে তুলনা করেন। তত্ত্বাবধায়ক সরকার রুটিন ওয়ার্ক করে। তাদের প্রধান কাজ হলো নির্বাচন। এই সরকারেরও উচিত তাদের নির্বাচনকে কেন্দ্র করেই এগিয়ে যাওয়া।
রাজনৈতিক নেতা ও বিশ্লেষকেরা বলছেন, সরকারের যে কয়টি সিদ্ধান্ত বা আলোচনা নিয়ে এখন বিরোধিতা তৈরি হয়েছে, সেগুলো হচ্ছে- চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবস্থাপনা বিদেশিদের হাতে দেওয়া, রাখাইনে মানবিক করিডোর, কাতারকে বাংলাদেশে সামরিক সরঞ্জাম তৈরির কারখানা করতে আহ্বান এবং নারিকেল দ্বীপ নিয়ে অস্বচ্ছতা।
পর্যবেক্ষক মহল বলছেন, এই বিষয়গুলোর সঙ্গে দেশের নিরাপত্তা, অর্থনীত স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রশ্ন জড়িত আছে। সরকার এর কোনো বিষয়ই পরিস্কার করছে না। ফলে এ আরো সন্দেহ তৈরি করছে। আর এই সরকার কতটুকু করতে পারবে সেই সীমানা সম্পর্কেও তাদের স্পষ্ট ধারণা থাকা উচিত।
অন্তর্বর্তী সরকার জনগণের অংশগ্রহণ ও স্বচ্ছতা উপেক্ষা করে ‘ড্রাফট টেলিকম নেটওয়ার্ক লাইসেন্সিং রিফর্ম পলিসি ২০২৫’ নামে একটি জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ নীতিমালা চূড়ান্ত করতে যাচ্ছে।
সরকারের ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের উদ্যোগে গত এপ্রিলে দেশের টেলিযোগাযোগ খাতের লাইসেন্স কাঠামোর পুনর্বিন্যাসের জন্য একটি খসড়া নীতিমালা করা হয়। এটি প্রকাশের পরই অংশীজনদের পক্ষ থেকে আপত্তি ওঠে। এ নীতিমালা বাস্তবায়ন হলে টেলিকম খাতের স্থানীয় উদ্যোগ ও কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন তারা।
খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, নতুন এ পলিসি বাস্তবায়ন হলে দেশে আন্তর্জাতিক কল আদান-প্রদানকারী ২৩টি আইজিডব্লিউ এবং আন্তঃঅপারেটর সেবাদানকারী ২৪টি আইসিএক্স প্রতিষ্ঠান বিলুপ্ত হয়ে যাবে। অথচ আইসিএক্স অপারেটররা তাদের আয়ের অর্ধেকই সরকারকে দেয়। অন্যদিকে প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে সরকার রাজস্বও পায়। নতুন পলিসি অনুসারে এটি স্থানান্তরিত হয়ে চলে যাবে মোবাইল অপারেটরদের কাছে। এতে সরকার রাজস্ববঞ্চিত হওয়ার পাশাপাশি বন্ধ হয়ে যাবে স্থানীয় এ প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবসাও। কর্মহীন হয়ে পড়বে কয়েক লাখ লোক। তাছাড়া টেলিকম খাতে ঘন ঘন নীতিমালা পরিবর্তন এ খাতের জন্য সহায়ক নয় বলেও মনে করছেন তারা।
ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (আইএসপিএবি) প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আইএসপিদের জন্য প্রথম নীতিমালা করা হয় ২০২১ সালে, যেটি পুরোপুরি বাস্তবায়ন হয়েছে ২০২২ সালে। সেই নীতিমালার আলোকে আমরা ব্যবসায়িক পরিকল্পনা ও কৌশল গুছিয়ে নিয়েছি। এখন ২০২৫ সালে এসে আবার আরেকটি নীতিমালার কথা বলা হচ্ছে। আমরা সবাই জানি সামনের বছর একটি রাজনৈতিক সরকার ক্ষমতায় আসবে। তখন যে আরেকটি নীতিমালা করা হবে না, তা কে বলতে পারে?’
টেলিযোগাযোগ খাতের ব্যবসা উৎপাদন খাতের মতো নয় মন্তব্য করে আইএসপিএবি প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘এখানে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করে এগোতে হয়। ফলে ঘন ঘন নীতিমালার পরিবর্তন আমাদের জন্য সমস্যার সৃষ্টি করে। আমরা যারা ফিক্সড টেলিকম অপারেটর রয়েছি তারা সবাই স্থানীয় উদ্যোক্তা এবং এর ৯৫ শতাংশই আবার ছোট উদ্যোক্তা। লাস্ট মাইলটা কোনো কোনো জায়গায় বলা হচ্ছে যে টেলিকম অপারেটর দেবে না, আবার কোনো জায়গায় বলা হচ্ছে সেলুলার অপারেটর আইটিও স্ট্যান্ডার্ড মেইনটেইন করবে। আজকে যে আইটিও স্ট্যান্ডার্ড আছে সেটি আগামী বছর নাও থাকতে পারে। তার মানে আমার বিজনেস ডোমেইন তার হাতে চলে যেতে পারে। এখানে আমরা কোনো উন্মুক্ত নীতিমালা চাইছি না। বরং সুনির্দিষ্ট করে বলে দিতে হবে যে লাস্ট মাইল ফাইবার অপটিকসে ফিক্সড ব্রডব্যান্ড অপারেটর দেবে এবং লাস্ট মাইল ওয়্যারলেসে টেলিকম অপারেটর দেবে। ’
তিনি আরো বলেন, ‘এনটিটিএন অপারেটরদের নতুন নীতিমালায় এনআইসিএসপি বলা হচ্ছে। তাদের নামে-বেনামে ফিক্সড টেলিকম অপারেটরের লাইসেন্স রয়েছে। তাদের ক্ষেত্রে বলা হচ্ছে যে ফিক্সড টেলিকম অপারেটর চাইলে লাস্ট মাইলে চলে যেতে পারবে। যেহেতু তাদের নামে-বেনামে অন্যান্য লাইসেন্স রয়েছে, সেহেতু তাকে এটা বলার মানে হলো যে লাস্ট মাইলে ফাইবার অপটিকস আবার চলে যাবে। এক্ষেত্রে স্থানীয় উদ্যোক্তাদের জন্য কোনো সুরক্ষা থাকছে না। ’
টেলিকম পলিসির খসড়া প্রকাশ হওয়ার পরই এ বিষয়ে নিজেদের উদ্বেগ জানায় অ্যাসোসিয়েশন অব আইসিএক্স অপারেটরস অব বাংলাদেশ। সংগঠনটির মতে, প্রস্তাবিত টেলিকম নীতিমালা বাস্তবায়ন হলে লাখ লাখ পরিবারের জীবিকা হুমকির মুখে পড়বে। দেশের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। এ খাতের হাজার হাজার প্রকৌশলী, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শ্রমিকের চাকরি হারাবে। বিদ্যমান আইএলডিটিএস নীতিমালার আওতায় গড়ে ওঠা দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলো কার্যত টিকে থাকতে পারবে না। প্রস্তাবিত কাঠামো অনুযায়ী টেলিকম খাতের নিয়ন্ত্রণ মূলত বিদেশী বড় কোম্পানিগুলোর হাতে চলে যাবে। যার ফলে ধীরে ধীরে স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলো শক্তিশালী করে বিদেশী কোম্পানিগুলোর নির্ভরতা কমানোর আর কোনো সুযোগ থাকবে না।
স্থানীয় একটি আইটি প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, ‘এ ধরনের একটি নীতিমালা রাজনৈতিক সরকারের সময়ে করাই ভালো। তাছাড়া এটি করার আগে স্থানীয় উদ্যোক্তা ও কর্মসংস্থানের ওপর কী ধরনের প্রভাব পড়তে পারে, এ ধরনের কোনো মূল্যায়ন করা হয়েছে বলে মনে হয় না। এক্ষেত্রে বিদেশী প্রতিষ্ঠানগুলোই তুলনামূলক বেশি সুবিধা পাবে। ’
প্রস্তাবিত এ পলিসিতে প্রতিষ্ঠানগুলোর বিদেশী মালিকানার সীমাও নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে এএনএসপি লাইসেন্সধারী প্রতিষ্ঠানে সর্বোচ্চ ৮০ শতাংশ বিদেশী মালিকানা থাকতে পারবে। এনআইসিএসপি লাইসেন্সধারী প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৫৫ শতাংশ বিদেশী মালিকানার সীমা নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। তবে বিশেষ ক্ষেত্রে তা ৮০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে।
টেলিকম খাতের খসড়া নীতিমালা নিয়ে করা জরুরি সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘টেলিকম খাতের পলিসি নির্ধারণে সরকার তড়িঘড়ি করে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। গ্রামীণ জনগণের ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তি বাড়াতে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হলেও তা টেলিকম খাতের টেকসই উন্নয়নে বাধা হতে পারে। ’
খসড়া নীতিমালাটি বিশ্লেষণ করে কিছু গুরুতর সমস্যা পাওয়া গেছে জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘টেলিকম খাতে সমতাভিত্তিক ও টেকসই উন্নয়নে বাধা হতে পারে এ নীতিমালা। এটা ছোট ও মাঝারি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও স্থানীয় উদ্যোক্তাদের ক্ষতিগ্রস্ত করবে। আমরা সরকারকে আহ্বান জানাই, এ গুরুত্বপূর্ণ নীতিমালা যেন পূর্ণাঙ্গ আর্থিক ও সামাজিক প্রভাব বিশ্লেষণ এবং সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে অংশগ্রহণমূলক আলোচনার পর চূড়ান্ত করা হয়। ’
খসড়া নীতিমালার সম্ভাব্য সমস্যা ও চ্যালেঞ্জের দিক তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘একাধিক সেবা খাতে মালিকানা রাখার নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলে বড় মোবাইল অপারেটররা একাধিক খাতে একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে পারে। এতে প্রতিযোগিতা কমে যাবে এবং ছোট প্রতিষ্ঠানগুলো পিছিয়ে পড়বে। ’
এসএমই আর্থিক সংকটে পড়বে- এমন আশঙ্কার কথা জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ডি-রেগুলেশনের (নিয়ন্ত্রণ শিথিল) পর এসএমই, বিশেষ করে স্থানীয় আইএসপি বা ছোট টেলিকম অপারেটরদের সম্পদ ও দায়বদ্ধতা নিয়ে সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা না থাকায় তারা বড় ধরনের আর্থিক সংকটে পড়তে পারে। বিদেশী মালিকানার সীমা নিয়ে অস্পষ্টতা রয়েছে, যা বিনিয়োগে নিরুৎসাহিত করতে পারে এবং এ খাতের স্থিতিশীলতা বিঘিœত করতে পারে। এছাড়া ক্রস-ওনারশিপের (যৌথ মালিকানা) ফাঁকফোকরে বড় কোম্পানিগুলো আরো বাজার দখল করে নিতে পারে। এ ধরনের জাতীয় পর্যায়ের টেলিকম নীতি প্রণয়নে অবশ্যই সতর্কতা, স্বচ্ছতা ও অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। সামনে জাতীয় নির্বাচন থাকায় তাড়াহুড়ো করে সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত নয়। ’
নীতিতে নতুন প্রযুক্তির বিষয়ে দিকনির্দেশনা নেই বলেও মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘স্যাটেলাইট ব্রডব্যান্ড বা নতুন ডিজিটাল সেবা নিয়ে নীতিতে কোনো সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা নেই, যা বিনিয়োগকারীদের বিভ্রান্ত করতে পারে। এন্টারপ্রাইজ সার্ভিসের সীমা অস্পষ্ট। মোবাইল অপারেটরদের ফাইবারভিত্তিক ব্যবসা সংযোগ সেবার সীমাবদ্ধতা কোথায়, তা নীতিমালায় স্পষ্ট নয়। ফলে বিবাদ ও অসাম্য তৈরি হতে পারে। ’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, সবার জন্য উপকার বয়ে আনে এমন নীতিই গ্রহণযোগ্য। ’
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান বলেন, ‘আমরা আধুনিক প্রযুক্তির বিস্তার চাই। বিএনপি চায়, টেকনোলজি সামনের দিকে যাবে, কিন্তু তার সুফলটা যেন জনগণ পায়। এখানে বড় মোবাইল অপারেটররা বিরাট সুবিধা পাবে। আর যারা বাংলাদেশের ভেতরে বড় রকমের বিনিয়োগ করতে পারবে, তারা সুবিধা পাবে। সুবিধার লক্ষ্য হলো গণতান্ত্রিক সমাজের সাধারণ মানুষ যাতে সুফলটা পায়। কিন্তু আমরা যতটুকু জানি, প্রস্তাবিত নীতিমালায় তা অনুপস্থিত।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য অন্তর্বর্তী সরকার তার স্থায়িত্বকাল নিয়ে মহা ধোয়াশার সৃষ্টি করছে। অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ ও কার্যপরিধি নিয়ে রাজনৈতিক ও নাগরিক সমাজে তুমুল ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া চলছে।
একটি অন্তর্বর্তী সরকারের দীর্ঘকাল টিকে থাকা দেশীয় ও বৈশ্বিক বিনিয়োগকারীদের মধ্যে অনিশ্চয়তা তৈরি করে। তারা জানে না, এই সরকার কত দিন থাকবে, কী নীতিমালা চালু হবে, নতুন সরকার কবে আসবে। ফলে দীর্ঘমেয়াদি কোনো বিনিয়োগ পরিকল্পনা করা যায় না। এমনকি বৈদেশিক সহায়তাও বিঘিœত হয়। বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের মতো সংস্থাগুলো নীতিনির্ধারক ও গণতান্ত্রিকভাবে দায়বদ্ধ সরকারের সঙ্গে কাজ করতে চায়। ফলে একটি দীর্ঘমেয়াদি অন্তর্বর্তী সরকার অর্থনীতিতে একধরনের স্থবিরতা তৈরি করে, যা সাধারণ মানুষের জীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
আন্তর্জাতিক সম্পর্কের দিক থেকেও এটি অস্বস্তিকর। পৃথিবীর বড় বড় গণতান্ত্রিক দেশ ও জোটসমূহ নির্বাচিত সরকারের সঙ্গেই কূটনৈতিকভাবে জড়িত হতে চায়। অন্তর্বর্তী বা অস্থায়ী সরকারগুলো তাদের নীতিগত অবস্থান প্রকাশ বা আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতি প্রদানে সাবধানতা অবলম্বন করে, যা দেশের পররাষ্ট্রনীতিতে স্থবিরতা তৈরি করে। যেমনটি দেখা গেছে ২০০৭-০৮ সালের বাংলাদেশে।
সবচেয়ে বড় কথা, জনগণের প্রত্যাশা ও অংশগ্রহণের জায়গা থেকে অন্তর্বর্তী সরকারের দীর্ঘায়ন গণতন্ত্রের মূল আত্মাকে খ-িত করে। জনগণ চায় তারা যেন তাদের প্রতিনিধি নির্বাচনের সুযোগ পায় এবং সেই সরকার যেন রাষ্ট্র চালায়। জনগণ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে। কিন্তু দীর্ঘ সময় একটি অনির্বাচিত, অদৃশ্য বা অগণতান্ত্রিক প্রশাসন রাষ্ট্র চালালে জনগণের ভোটের অধিকার মূল্যহীন হয়ে পড়ে। এতে জনগণের আস্থা হারিয়ে যায়, রাজনীতিতে নিস্পৃহতা আসে আর গণতন্ত্র একটা কাগুজে ব্যবস্থায় পরিণত হয়।
অতীত অভিজ্ঞতাও আমাদের শেখায়, অন্তর্বর্তী সরকারের দীর্ঘায়ন কতটা বিপজ্জনক হতে পারে। ২০০৭ সালে সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ৯০ দিনের জায়গায় প্রায় দুই বছর ক্ষমতায় থেকে একদিকে যেমন গণমাধ্যম, রাজনীতি ও নাগরিক পরিসরে ভয়ভীতির সংস্কৃতি চালু করেছিল, অন্যদিকে নির্বাচনের সময়সীমা পিছিয়ে দিয়ে জনগণকে একধরনের অনিশ্চয়তার মধ্যে রেখেছিল। একসময় সেই সরকার নিজেই নানা রাজনৈতিক প্রকল্পে জড়িয়ে পড়ে, যার ফল আজও বহন করতে হচ্ছে। রাজনীতিকদের কাছে এমন উদাহরণে এটা পরিষ্কার যে, অন্তর্বর্তী সরকারকে নির্বাচন ছাড়া অন্য কাজে জড়ানো মানেই একটি অজানা অন্ধকার পথে হাঁটা।
অন্তর্বর্তী সরকার যেন তার নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্দিষ্ট দায়িত্ব পালন করে, ক্ষমতালোভী শাসকের ভূমিকায় অবর্তীর্ণ না হয়- এই জন আকুতি এখন তুঙ্গে।
-আল্লামা মুহম্মদ ওয়ালীউর রহমান আরিফ।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
ইরান ফিলিস্তিনে ইসরাইলী হামলার জন্য বিশেষভাবে দায়ী সালাফী-লা মাযহাবী ওহাবী মালানারা কারণ তারাই সৌদি ইহুদী শাসকদের প্রশংসা করে, পৃষ্ঠপোষকতা করে তাদের দোষ-ত্রুটি এবং মুসলমান বিদ্বেষী ও ইসলাম বিরোধী কাজ চুপিয়ে রাখে বাংলাদেশসহ অন্যান্য মুসলিম দেশে তাদের কুফরী আক্বীদা প্রচার করে
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
বাজারে নতুন আলু উঠলেও দাম চড়া, কেজিতে ২০০ টাকা পুরোনো আলু নিয়ে বিপাকে ব্যবসায়ীরা আলু প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পের উদ্যোগ জরুরি আলু রফতানীতে কমপক্ষে লাখো কোটি টাকা আয় সম্ভব আলুর জাতের মান বৃদ্ধি এবং হিমাগার স্থাপনসহ রফতানীর ক্ষেত্রে সব বাধা দূর করে সরকারকে যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতা করতে হবে।
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
প্রশাসন খবর না রাখলেও প্রচ- শীতে মারা যায় হাজার হাজার লোক। চরম ভোগান্তিতে পড়ে কোটি কোটি লোক। সরকারি সাহায্যের হাত এখনও না বাড়ানো মর্মান্তিক। তবে শুধু লোক দেখানো উদ্যোগ গ্রহণই নয়; প্রকৃত সমাধানে চাই সম্মানিত ইসলামী চেতনার বিস্তার। তাহলে ৯৮ ভাগ মুসলমান অধ্যুষিত এদেশে কোনো আর্তেরই আহাজারি উচ্চারণ হবার নয়।
১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ভীনদেশী অ্যাপের ফাঁদে পড়ে বিপথে যাচ্ছে দেশের তরুণ প্রজন্ম। বাড়ছে নারীপাচার, দেশে বাড়ছে অশ্লীলতা ও পর্ণোগ্রাফির প্রচার। কিশোর-কিশোরীদের টার্গেট করেই একটি মহল এসব অপসংস্কৃতির প্রচার ও প্রসার ঘটাচ্ছে। এসব অপসংস্কৃতি নির্মূলে দ্বীন ইসলামই একমাত্র সমাধান।
১২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘উচ্চ সুদহার ব্যবসায়ীরা আর সহ্য করতে পারছেন না। ‘অগ্রিম আয়কর (এআইটি) এবং উৎসে কর কর্তন (টিডিএস) ব্যবসায়ের ওপর অতিরিক্ত চাপ তৈরি করছে। এআইটি ও টিডিএস আসলে ট্যাক্স টেরোরিজম বা কর-সন্ত্রাস। ব্যবসায়ীরা ‘কর-সন্ত্রাস’ থেকে মুক্তি চান। ব্যবসায়ীরা অগ্রিম আয়কর ও উৎসে করের চাপ থেকে মুক্তি চান।
১১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
দেশে মজুদ খনিজ সম্পদের অর্থমূল্য প্রায় ৫০ ট্রিলিয়ন ডলারেরও বেশি কিন্তু উত্তোলনে বিনিয়োগ নাই বললেই চলে অথচ দেশ থেকে অর্থ পাচারের পরিমাণ ২০ লাখ কোটি টাকা সরকারের ঋণের পরিমাণ প্রায় ২০ লাখ কোটি টাকা
১০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমেছে, দেশে কেন উল্টো বেড়েছে? বিশ্ববাজারে জ্বালানি সহ খাদ্যপণ্যের দাম কমলেও বাংলাদেশে ভোক্তা বাড়তি দামে কিনছে বিশ্বে জ্বালানীসহ খাদ্য পণ্যের দাম ধারাবাহিকভাবে কমছে, কিন্তু বাংলাদেশে সুফল মিলছে না কেন? প্রতিবেশীরা স্বস্তিতে, বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতির চাপ বাড়ছে কেনো?
০৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩ লাখ ৬৮ হাজার ৩৫২ কোটি টাকা ‘আইএমএফের চাপে’ নতুন করের বোঝা বাড়ছে ৫৫ হাজার কোটি টাকা আইএমএফের শর্ত মানতে গিয়ে সরকারকে জ্বালানি, সার, বিদ্যুৎ এবং সামাজিক খাতে ভর্তুকি কমাতে হয়। এতে সমাজের নিচের স্তরের মানুষের ওপর চাপ বাড়ে।
০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলামে কী প্রকৃতির মুহব্বত ও ঋতু প্রিয়তার কথা নেই? নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কাছে শীতকাল যে কত প্রিয় তা অনেকেরই অজানা। শীতে আছে গণীমত (পর্ব -২)
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলামে কী প্রকৃতির মুহব্বত ও ঋতু প্রিয়তার কথা নেই? নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কাছে শীতকাল যে কত প্রিয় তা অনেকেরই অজানা। শীতে আছে গণীমত (পর্ব -১)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সন্ত্রাসবাদ নয়; জিহাদী যোগ্যতা অর্জন করা পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ অনুযায়ী ফরয। ৯৮ ভাগ মুসলমান অধ্যুষিত দেশে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় সব নাগরিকের জন্য সামরিক প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক করতে হবে। উন্নত প্রশিক্ষন, যুদ্ধকৌশল, সামরিক সক্ষমতা এবং আন্তর্জাতিক র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এখন সাফল্যের শীর্ষে। সরকারের উচিত- দেশের মর্যাদা বুলন্দ ও দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ত্বকে সমুন্নত রাখতে সেনাবাহিনীর প্রতি সকল প্রকার পৃষ্ঠপোষকতা নিশ্চিত করা।
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম এর তথ্যানুযায়ী বেনিয়া বৃটিশগুলো মুসলিম ভারত থেকে লুট করেছে ১২ হাজার লক্ষ কোটি টাকা প্রকৃতপক্ষে তারা লুট করেছে লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)












