মুসলমানদের স্বর্ণালী ইতিহাস
দেশ পরিচালনায় আমীরুল মু’মিনীন সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার বেমেছাল অবদান (৫)
এডমিন, ০৫ জুমাদাল উলা শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২২ সাদিস ১৩৯১ শামসী সন , ২০ নভেম্বর, ২০২৩ খ্রি:, ০৪ অগ্রহায়ণ কার্তিক, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা

খলীফাতুল মুসলিমীন আমীরুল মু’মিনীন সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার শাসনের অন্যতম প্রধান কৃতিত্ব ছিল কারাগার প্রতিষ্ঠা। গাফওয়ান বিন উমাইয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার বাসস্থান ৪০০ দিরহামে ক্রয় করে তিনি একে প্রথম জেলখানায় রূপান্তরিত করেন। মদীনা শরীফে কেন্দ্রীয় কারাগার বা জেলখানা ব্যতীত প্রত্যেক প্রাদেশিক রাজধানী ও জেলায় একটি করে কারাগার নির্মাণ করেন। সেখানে পর্যাপ্ত প্রহরী, খাবার, ইবাদতের জায়গাসহ দরকারী সব জিনিস মজুদ রাখতেন। কোনোও অপরাধী প্রাপ্যের অতিরিক্ত কষ্ট যাতে পেতে না হয় তার সব ব্যবস্থা রেখেছিলেন। উনার খিলাফতকালে সর্বপ্রথম নির্বাসন দ- প্রবর্তিত হয়।
গোয়েন্দা বিভাগ:
খলীফাতুল মুসলিমীন আমীরুল মু’মিনীন সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার শাসন ব্যবস্থাকে ইসলামী আদর্শযুক্ত, শত্রুমুক্ত, দুর্নীতিমুক্ত, সঠিক বিচার-ব্যবস্থার জন্য তিনি গোয়েন্দা বিভাগ প্রবর্তন করেন। প্রাদেশিক শাসনব্যবস্থা সম্বন্ধে সঠিক জ্ঞান লাভ করার জন্য গোয়েন্দা নিযুক্ত করেন এবং উনাদের মাধ্যমে খলীফা খিলাফতী কর্মচারীদের উপর কঠোর দৃষ্টি রাখতে সক্ষম হন। কোথাও কোনো অনিয়ম বা অসুবিধা সৃষ্টি হলে সাথে সাথে খলীফাকে অভিহত করতেন গোয়েন্দারা।
রাজস্ব আদায় ও হিসাব বিভাগ:
খলীফাতুল মুসলিমীন আমীরুল মু’মিনীন সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি ইসলামী খিলাফতের অর্থনীতিকে শক্তিশালী ও মজবুত ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠা করার জন্য রাজস্ব ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন সাধন করেন। সুষ্ঠু কর প্রদানের মাধ্যমে খিলাফতের অর্থনৈতিক অচলাবস্থা দূর করে স্থিতিশীল ও বলিষ্ঠ প্রশাসনিক কাঠামো গঠনের জন্য তিনিই প্রথম দৃঢ় পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। খিলাফতের আয়-ব্যয়ের হিসেব ঠিক রাখার জন্য তিনি ‘দিওয়ান’ নামে একটি রাজস্ব বিভাগ প্রবর্তন করেন। খিলাফতের রাজস্ব উৎস ছিল যাকাত, খারাজ, জিযিয়া, ফসলের উশর, আলফে, গনিমাহ, আল উশর ও হিমা।
কৃষিকাজ:
খলীফাতুল মুসলিমীন সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি কৃষির উন্নতির জন্য অগ্রিম ঋণ দেয়ার প্রথা প্রবর্তন করেন। তিনি কৃষিভিত্তিক অর্থনীতির জন্য অগ্রিম খিলাফতী ঋণ দেয়ার প্রথা প্রবর্তন করেন। তিনি কৃষিভিত্তিক অর্থনীতির উন্নতিকল্পে আইন বিন্যাস্ত করে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি করার ব্যাপক প্রয়াস চালান। কৃষির উন্নতির জন্য তিনি খাল খনন ও বাঁধ নির্মাণ করেন। তিনি কৃষিকাজ, ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসারের জন্য আরব ও মিসরের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি করেন এবং বাণিজ্য শুল্ক লাঘব করেন। পারসিক ও রোমান শাসনামলে যারা জমিজমা হতে বঞ্চিত হয়েছিল খলীফা তাদের সেসব জমিজমা ফিরিয়ে দিয়ে তাদের কৃষিকাজ করার সুযোগ দান করেন। যেখানে ফসল উৎপাদন কম হতো সেখানে বেশি উৎপদিত এলাকা থেকে দ্রত খাবার সরবরাহের ব্যবস্থা রাখতেন। যার জন্য কোথাও খাদ্য সঙ্কট হতো না।
-মুহম্মদ আবদুর রহমান।