দ্বীন ইসলাম উনার ঈমানদীপ্ত ঐতিহ্য (৫)
, ২২ রবীউছ ছানী শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ০৯ সাদিস ১৩৯১ শামসী সন , ০৭ নভেম্বর, ২০২৩ খ্রি:, ২২ কার্তিক, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের ঈমানদীপ্ত মুহব্বত তা’যীম তাকরীম প্রদর্শনের নমুনা:
হযরত উরওয়াহ বিন মাসঊদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি হুদায়বিয়া হতে ফিরে এসে উনার সাথীদেরকে বলেছিলেন- হে লোক সকল! মহান আল্লাহ পাক উনার কসম! আমি কিসরা, কায়সার ও নাজ্জাসীসহ বিশ্বের বিভিন্ন শাসকদের দরবারে গিয়েছি। কিন্তু কোনো শাসকের সঙ্গী-সাথী কিংবা গোলামরা তাদেরকে অতটুকু সম্মান প্রদর্শন করে না যতটুকু সম্মান নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার হযরত ছাহাবীগণ উনার প্রতি প্রদর্শন করেন। মহান আল্লাহ পাক উনার কসম! তিনি মহাসম্মানিত নূরুল বারাকাত (থুথু) মুবারক ফেলার সময় যদি কেউ তা হাত দিয়ে নিতে পারে তবে সঙ্গে সঙ্গে তা উনাদের চোখ মুখে মেখে নেন। যদি তিনি কাউকে কোন নির্দেশ মুবারক দেন তবে সেই নির্দেশ মুবারক পালন করার জন্য আদেশপ্রাপ্ত যিনি তিনি তা ঝাপিয়ে পড়ে সম্পাদন করেন। যখন তিনি ওযূ মুবারক করার ইচ্ছা ব্যক্ত করেন সাথে সাথে কার আগে কে ওযূ মুবারকের পানি নিয়ে আসবেন তার জন্য রীতিমত প্রতিযোগিতা আরম্ভ হয়ে যায়। যখন তিনি উনার মহাসম্মানিত নূরুস সালাম (জবান) মুবারক দিয়ে কোনো কথা মুবারক বলেন তখন সবাই এত বেশি নীরবতা পালন করেন যা বিরল। এমনকি সে সময় অত্যধিক তা’যীম-তাকরীম, আদব, সম্মানের জন্য কেউ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত নূরুর রহমাহ (চেহারা) মুবারকের প্রতি পূর্ণ দৃষ্টিতে তাকাতেও সাহস পান না। সুবহানাল্লাহ!
কোথায় আজ সেই ঈমানদীপ্ত মুহব্বত তা’যীম-তাকরীম এর নমুনা?
আজ পৃথিবীতে সাড়ে তিনশত কোটির অধিক মুসলমান। যারা তাদের মহাসম্মানিত নবী-রসূল হিসেবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকেই বিশ্বাস করে। নিজেদেরকে উনার উম্মত বলে দাবি করে। কিন্তু নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আদেশ-নিষেধ মুবারক পালনে, সুন্নত মুবারক অনুসরণে-অনুকরণে, পবিত্র রওযা শরীফ, পবিত্র মদীনা শরীফের ভাব গাম্ভীর্যতা, পবিত্রতা রক্ষায় সেখান থেকে সিসিটিভি নামানোর কোন উদ্যোগ উৎকণ্ঠার বহিঃপ্রকাশ ঘটায় না। এমনকি পবিত্র রওযা শরীফ-এর ছবি সম্বলিত জায়নামাযে তারা বসে থাকে। নাঊযুবিল্লাহ! পা দিয়ে মাড়িয়ে অজান্তেই চরম বেয়াদবী প্রদর্শন করে। নাঊযুবিল্লাহ! যা সম্পূর্ণরূপে হারাম-নাজায়িয কাট্টা কুফরীর অন্তর্ভুক্ত।
এ বিষয়টি থেকেও উম্মতকে রক্ষা করে ছাহাবা রঙ্গের আদবে উজ্জীবিত করতে বর্তমান যামানায় নিরলসভাবে ঈমানদীপ্ত হিদায়েতী জযবা দিয়ে যাচ্ছেন একমাত্র আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ, মুজাদ্দিদ আ’যম সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম। অতএব উনার নেক ছোহবত মুবারকেই উম্মাহ ফিরে পেতে পারে আবার সেই ছাহাবা রঙ্গের ঈমানদীপ্ত মুহব্বত, তা’যীম-তাকরীম-এর নমুনা। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার একটি ঈমানদীপ্ত তেজস্বী ঘোষণা:
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার দ্বীন ইসলাম গ্রহণের পূর্বে আমরা কা’বা শরীফ-এ নামায পড়তে পারতাম না। কিন্তু নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নেক দুআ মুবারকের বরকতে সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার দ্বীন ইসলাম গ্রহণের পর আমরা প্রকাশ্যভাবে কা’বা শরীফে নামায পড়তে শুরু করলাম। সুবহানাল্লাহ!
এ প্রসঙ্গে সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল আউওয়াল কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, যখন সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম হিজরতের ইচ্ছা করলেন তখন তিনি গলদেশে উন্মুক্ত তরবারী ঝুলিয়ে বহু তীর ধনুকসহ সর্বপ্রথম মসজিদে হারাম বা বাইতুল্লাহ শরীফে গেলেন। পরম শান্তিতে তাওয়াফ করলেন এবং অত্যন্ত ধীর সুস্থিরভাবে নামায আদায় করলেন। অতঃপর কুরাইশ কাফির মুশরিকদের সম্মুখে গিয়ে ঈমানদীপ্ত জযবায় উদাত্ত তেজস্বী কণ্ঠে ঘোষণা দিলেন, যে ব্যক্তি তার মাকে কাঁদানোর বাসনা রাখে, আহলিয়া বা স্ত্রীকে বিধবা করতে চায়, সন্তান-সন্ততিকে ইয়াতিম রাখতে চায়, সেই ব্যক্তি যাতে পবিত্র কা’বা শরীফের বাইরে এসে আমার সম্মুখীন হয়।” এভাবে তিনি কাফির মুশরিকদের বিভিন্ন দলের নিকট গিয়ে হুংকার দিয়ে শাসিয়ে আসলেন। কিন্তু সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনাকে বাধা দিতে কোন কাফির মুশরিকের অগ্রসর হওয়ার সাহসেই কুলালো না। কারণ তিনি ছিলেন “আশিদ্দাউ আলাল কুফ্ফার” অর্থাৎ কাফিরদের প্রতি ছিলেন অত্যন্ত কঠোর মনোভাবাপন্ন। উনার প্রসঙ্গেই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন- “আমার পরে যদি কেউ নবী হতেন তবে তিনি হতেন সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম।” সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার পুনরুজ্জীবন দানে বর্তমান যামানায় সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার ঈমানদীপ্ত ঘোষণার একটি বেমেছাল নমুনা:
বর্তমান বিশ্বে সাড়ে তিনশত কোটির অধিক মুসলমান এবং অর্ধশতকের বেশি মুসলিম শাসিত দেশ থাকা সত্ত্বেও ইহুদী-মুশরিক-নাছারা অর্থাৎ বিশ্ব সন্ত্রাসী, দখলদার ইসরায়েল, ভারত, ইঙ্গ-মার্কিনীদের আধিপাত্যমূলক আগ্রাসী অপতৎপরতায় মুসলমানরা ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে শুধু মার খেয়েই যাচ্ছে। কাফির-মুশরিক-নাছারাদের দ্বীন ইসলাম বিধ্বংসী অপতৎপরতার প্রতিবাদ প্রতিরোধে ঈমানদীপ্ত জযবার কোন সাড়া শব্দই পাওয়া যাচ্ছে না। এ অবস্থায় সাড়ে তিনশত কোটি মুসলমানের পক্ষ হতে একমাত্র তাজদীদী মুখপাত্র দৈনিক আল ইহসান শরীফের মহামান্য প্রতিষ্ঠাতা ও পৃষ্ঠপোষক সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনিই কেবল ঈমানদীপ্ত জযবায় তেজস্বী কণ্ঠে ঘোষণা দিয়েছেন- বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ক্ষমতাধর দাবিকারী মার্কিন সন্ত্রাসী শাসককে কানে ধরে উঠ-বস করানোর কথা। সত্যিই মুসলিম উম্মাহ যদি সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার ঈমানদীপ্ত তেজস্বী ডাকে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের ন্যায় সাড়া দিয়ে এগিয়ে আসে তবে অচিরেই সারা বিশ্ব থেকে বাতিল ইহুদী-মুশরিক-নাছারাদেরকে প্রকম্পিত ভীত সন্ত্রস্ত করে নববী মিছদাক্বে ইসলামী খিলাফত মুবারকের পূূনঃপ্রতিষ্ঠা করা সহজ এবং সম্ভব হবে। সুবহানাল্লাহ!
-মুহম্মদ মুহাজিরুল ইসলাম
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
অ্যান্টার্কটিকা নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় বিজ্ঞানীরা
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম (৪)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা অবশ্যই সত্যের মাপকাঠি; অস্বীকারকারীরা কাট্টা কাফির (১)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ উনাদের আলোকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দু‘আ বা মুনাজাত (১১তম অংশ)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম (৩)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুনিয়ার যমীনে অবস্থানকালীন সময়ে ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ যে রোযা মুবারক রাখতেন সে রোযা মুবারক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১২ই শরীফ উনার দিনে হওয়াটা ছিলো একটি বিরল ঘটনা (২)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত হাযির-নাযির শান মুবারক (১)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
প্রাণীর ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িজ
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
আল্লাহওয়ালী মহিলা উনাদের তিনটি বৈশিষ্ট্য-
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)












