দ্বীন ইসলাম উনার সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দিবস পালন নিয়ে বিভ্রান্তির জাওয়াব
, ০২ ছফর শরীফ, ১৪৪৭ হিজরী সন, ২৯ ছানী, ১৩৯৩ শামসী সন , ২৮ জুলাই, ২০২৫ খ্রি:, ১৪ শ্রাবণ, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
মহান আল্লাহ পাক তিনি দিবস পালন সম্পর্কে ইরশাদ মুবারক করেন-
وَذَكِّرْهُمْ بِأَيَّامِ اللهِ إِنَّ فِيْ ذٰلِكَ لَاٰيَاتٍ لِّكُلِّ صَبَّارٍ شَكُوْرٍ
অর্থ: (হে হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) আপনি উম্মতদেরকে মহান আল্লাহ পাক উনার বিশেষ দিন বা দিবসসমূহ স্মরণ করিয়ে দিন। নিশ্চয়ই উক্ত দিনসমূহ স্মরণ বা পালন করার মধ্যে ছবরকারী ও শোকরকারী সকল বান্দা-বান্দীদের জন্য নিদর্শনাবলী রয়েছে। (পবিত্র সূরা ইবরাহীম শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৫)
উল্লেখ্য ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম, ইয়াওমে আশূরা, ইয়াওমুল জুমুয়াহ, ইয়াওমে আরাফাহ, আইয়্যামে তাশরীক্ব, ইয়াওমুল ফিতর, ইয়াওমুল আদ্বহা ইত্যাদি দিনসমূহ বিশেষ আইয়্যামুল্লাহ শরীফ উনার অন্তর্ভুক্ত। অনুরূপ আউওয়ালু লাইলাতিম মির রজব, লাইলাতুর রগায়িব, লাইলাতুল মি’রাজ, লাইলাতুন নিছফি মিন শা’বান, লাইলাতুল ক্বদর, লাইলাতাল ঈদাইন, লাইলাতুল জুমুআ ইত্যাদি রাতসমূহও আইয়্যামুল্লাহ শরীফ উনার অন্তর্ভুক্ত।
এক কথায় মহান আল্লাহ পাক উনার মনোনীত বান্দা-বান্দী উনাদের সৃষ্টি মুবারক, বিলাদতী শান মুবারক, বিছালী শান মুবারক, নিসবতে আযীমাহ মুবারকসহ অন্যান্য বিশেষ শান মুবারক প্রকাশিত হওয়ার দিন ও রাতসমূহ সম্মানিত আইয়্যামুল্লাহ শরীফ উনার অন্তর্ভুক্ত। সুবহানাল্লাহ!
উক্ত দিনসমূহ স্মরণ তথা পালন করার মধ্যে বান্দা-বান্দী উম্মতের জন্য রহমত, বরকত, নিয়ামত, নাজাত, সাকীনা, সালাম, রেযামন্দী ও কামিয়াবী হাছিলের বিষয় নিহিত রয়েছে। সুবহানাল্লাহ!
যেমন পবিত্র হাদীছ শরীফে বর্ণিত হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اَوْسِ بْنِ اَوْسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ اِنَّ مِنْ اَفْضَلِ اَيَّامِكُمْ يَوْمَ الْـجُمُعَةِ فِيْهِ خُلِقَ حَضْرَتْ سَيّدُنَا اٰدَمُ عَلَيْهِ السَّلَامُ وَفِيْهِ قُبِضَ.
অর্থ: “হযরত আউস ইবনে আউস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আপনাদের দিনগুলোর মধ্যে উত্তম দিন হচ্ছেন পবিত্র জুমুআ উনার দিন। এ দিনে আবুল বাশার হযরত ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি সৃষ্টি হয়েছেন এবং এ দিনেই তিনি পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন। ”
অন্য এক হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اِبْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِنَّ هٰذَا يَوْمُ عِيْدٍ جَعَلَهُ اللهُ لِلْمُسْلِمِيْنَ فَمَنْ جَاءَ اِلَى الْـجُمُعَةِ فَلْيَغْتَسِلْ وَاِنْ كَانَ طِيْبٌ فَلْيَمَسَّ مِنْهُ وَعَلَيْكُمْ بِالسِّوَاكِ.
অর্থ: “হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি এই দিনকে মুসলমানদের জন্য পবিত্র ঈদ উনার দিনরূপে নির্ধারণ করেছেন। অতএব যে ব্যক্তি পবিত্র জুমুআ উনার নামায আদায় করতে আসবে, তিনি যেন গোসল করেন এবং সুগন্ধি থাকলে তা শরীরে লাগান। আর মিসওয়াক করাও কর্তব্য। ”
উক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের মধ্যে পবিত্র জুমুআ উনার দিবসকে মুসলমানদের জন্য ঈদের দিন হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। তাই উক্ত দিন উনার সম্মানার্থে বা পালনার্থে মিসওয়াক করার জন্য, গোসল করার জন্য ও সুগন্ধি ব্যবহার করার জন্য বলা হয়েছে। সুবহানাল্লাহ!
পবিত্র হাদীছ শরীফে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اُمِّ الْمُؤْمِنِيْنَ الثَّاِلثَةِ الصِّدِّيْقَةِ عَلَيْهَا السَّلَامُ قَالَتْ كَانَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُـجَاوِرُ فِي الْعَشْرِ الْاَوَاخِرِ مِنْ رَّمَضَانَ وَيَقُوْلُ تَـحَرَّوْا لَيْلَةَ الْقَدْرِ فِي الْعَشْرِ الْاَوَاخِرِ مِنْ رَّمَضَانَ.
অর্থ: “উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছা হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র রমাদ্বান শরীফ মাস উনার শেষ দশকে ইতিকাফ করতেন এবং বলতেন, তোমরা পবিত্র রমাদ্বান শরীফ মাস উনার শেষ দশকে পবিত্র লাইলাতুল ক্বদর শরীফ তালাশ করো। ”
উক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার দ্বারা প্রমাণিত হয়েছে যে, স্বয়ং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র রমাদ্বান শরীফ উনার শেষ দশকের দিনসমূহে ই’তিকাফ করতেন এবং বিজোড় রাত্রিসমূহে সজাগ থেকে লাইলাতুল ক্বদর তালাশ করতেন এবং উম্মতওে তালাশ করার জন্য আদেশ মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
উপরোক্ত বর্ণনাসমূহ ছাড়াও আরো অনেক বর্ণনা রয়েছে যা দ্বারা প্রতিভাত হয়েছে যে, দিবস পালন করা সম্মানিত দ্বীন ইসলাম সম্মত তথা ফরয ওয়াজিব উনার অন্তর্ভুক্ত এবং রহমত, নিয়ামত, মাগফিরাত, শাফায়াত, নাজাত ও কামিয়াবী হাছিলের কারণ। সুবহানাল্লাহ!
-০-
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (৩)
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ইসলামী শরীয়ত মুতাবিক- ছবি তোলা হারাম
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক করেন-
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (২)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যাকাত সম্পর্কিত আহকাম, মাসায়িল ও ফাযায়িল (২)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পর্দা পালন করা পুরুষ-মহিলা সবার জন্য ফরজ
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত মুবারক করা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীর জন্য ফরযে আইন
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের আলোকে ছিরাতুল মুস্তাক্বীম উনার ছহীহ তাফসীর- ০১
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)












