নিকাহ বা বিবাহের আহকাম
, ৩০ শাওওয়াল শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ২১ ছানী ‘আশার, ১৩৯০ শামসী সন , ২১ মে, ২০২৩ খ্রি:, ০৮ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
বিবাহের প্রস্তাব দেয়া এবং সম্মতি জ্ঞাপন করার সুন্নতী তরতীব
ছেলে পক্ষ কিংবা মেয়ে পক্ষ উভয়পক্ষ থেকে বিবাহের প্রস্তাব আসতে পারে। আবার সম্মতির বিষয়টিও উভয় পক্ষ থেকে হতে পারে। বিবাহের প্রস্তাব দানের ক্ষেত্রে কোন দ্বিধা-দ্বন্দ্ব, সংশয়-সন্দেহ থাকা সমীচীন নয়। তবে যে কোন পক্ষ থেকে বিবাহের প্রস্তাব আসুক না কেন তা বিবেচনায় নেয়া উচিত। তার মূল্যায়ন করা দরকার। আর যদি একান্ত সামঞ্জস্যশীল না হয় বা কুফু (সমকক্ষতা) না মিলে তাহলে হিকমতে জাওয়াব দেয়া আবশ্যক। সেক্ষেত্রে উচ্চ্য বাচ্চ্য করা, প্রতিপক্ষকে হেয় প্রতিপন্ন করা, অসৌজন্যমূলক আচরণ করা জায়িয নেই। কেননা তাতে সামাজিক জীবনে নানাবিধ ফিতনা-ফাসাদ, দ্বন্দ্ব-কলহের সূত্রপাত ঘটতে পারে।
সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, উম্মু আবীহা সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি’য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার নিসবাতুল আযীমাহ মুবারক সুসম্পন্ন করার ব্যাপারেও প্রস্তাব এসেছিল। আফদ্বালুন নাস বা’দাল আম্বিয়া হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম এবং সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূকে আ’যম আলাইহিস সালাম উনারা দুজনই প্রস্তাব দিয়েছিলেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হিকমতপূর্ণ জাওয়াব দিয়েছিলেন।
পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ عَبْدِ اللهِ بْنِ بُرَيْدَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ عَنْ أَبِيْهِ قَالَ خَطَبَ حَضْرَتْ أَبُوْ بَكْرٍ عَلَيْهِ السَّلَامُ وَحَضْرَتْ عُمَرُ عَلَيْهِ السَّلَامُ حَضْرَتْ فَاطِمَةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِنَّـهَا صَغِيرَةٌ فَخَطَبَهَا حَضْرَتْ عَلِيٌّ عَلَيْهِ السَّلَامُ فَزَوَّجَهَا مِنْهُ
অর্থ: হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে বুরায়দা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি উনার সম্মানিত পিতা থেকে বর্ণনা করেন। সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি এবং সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি অর্থাৎ উনারা সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি’য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার সাথে নিসবাতুল আযীমাহ শরীফের জন্য প্রস্তাব দিয়েছিলেন। জাওয়াবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার বয়স মুবারক তো কম। অতঃপর সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল আউওয়াল কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি প্রস্তাব দিলেন। আর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে মহাসম্মানিত নিসবাতুল আযীমাহ শরীফ সুসম্পন্ন করেন। সুবহানাল্লাহ! (নাসাঈ শরীফ)
উল্লেখ্য যে, দাম্পত্য জীবন সাময়িক বা ক্ষণস্থায়ী জীবন নয়। এটা চিরস্থায়ী ব্যাপার। কাজেই হঠাৎ করে বিবাহ বন্ধন হওয়া স্বাভাবিক নয়। যারা তড়িঘরি করে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয় সাধারণত তাদের অনেকের সংসার জীবনে ফেৎনা সৃষ্টি হয়। যা তাদের পারিবারিক জীবন পরিচালনায় কষ্টের কারণ হয়। বৈবাহিক জীবনে নেমে আসে ঘোর অন্ধকার। এজন্য শরয়ী বিধান হচ্ছে, কারো সাথে বৈবাহিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করার পূর্বে উভয় পক্ষের অভিভাবকগণ পরস্পর প্রস্তাব দিয়ে, আলাপ-আলোচনা করবে। যাচাই-বাছাই করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এক্ষেত্রে ছেলে বা মেয়েও তারা তাদের বিবাহের প্রস্তাব দিতে পারবে। মতামত পেশ করতে পারবে। এ ব্যাপারে শরীয়তে কোন নিষেধাজ্ঞা নেই।
হযরত জুলাইবিব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার বিবাহের বিষয়টি বিশেষভাবে প্রনিধানযোগ্য। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত জুলাইবিব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার জন্য একজন আনছারী কন্যার বিবাহের প্রস্তাব কন্যার পিতার নিকট পেশ করলেন। কন্যার পিতা উনার আহলিয়া তথা কন্যার মায়ের মতামত জেনে এর জাওয়াব দিবেন বলে ওয়াদা করলেন। সেই ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি উনার আহলিয়ার নিকট এ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলেন। উনার আহলিয়া স্পষ্টভাবে অমত জানিয়ে দিলেন।
সেই কন্যা আড়াল থেকে পিতা-মাতার কথোপকথন শুনতে পান। উনার পিতা যখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট অমতের বিষয়টি জানাতে রওয়ানা হলেন, তখন মেয়েটি পিতা-মাতাকে লক্ষ্য করে বললেন, আপনারা কি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এ প্রস্তাব মুবারকটি প্রত্যাখ্যান করতে চান? তিনি যদি বরকে আমাদের জন্য পছন্দ করে থাকেন তাহলে আপনারা এ বিয়ে সুসম্পন্ন করুন। (চলবে)
-আল্লামা কাওছার আহমদ
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (৩)
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ইসলামী শরীয়ত মুতাবিক- ছবি তোলা হারাম
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক করেন-
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (২)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যাকাত সম্পর্কিত আহকাম, মাসায়িল ও ফাযায়িল (২)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পর্দা পালন করা পুরুষ-মহিলা সবার জন্য ফরজ
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত মুবারক করা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীর জন্য ফরযে আইন
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের আলোকে ছিরাতুল মুস্তাক্বীম উনার ছহীহ তাফসীর- ০১
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)












