মন্তব্য কলাম
নির্মম হিন্দুত্ববাদীরা, নিষ্ঠুর বৌদ্ধরা, মহা জালিম খ্রীষ্টানরা যে নির্বাচনী পদ্ধতি (পি.আর) তাদের সুবিধার জন্য চেয়েছে সেই একই পি.আর পদ্ধতির নির্বাচন চাচ্ছে জামাত, চর্মনাই সহ তথাকথিত ইসলামী দলগুলো।
, ১৬ মুহররমুল হারাম শরীফ, ১৪৪৭ হিজরী সন, ১৩ ছানী, ১৩৯৩ শামসী সন , ১২ জুলাই, ২০২৫ খ্রি:, ২৮ আষাঢ়, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) মন্তব্য কলাম
গোবিন্দ, বড়–য়া, রোজারিওদের গুরু মেনে
তাদের দেখানো পথে চলছে ইসলামের নামের ব্যবসায়িক দলগুলো
ভারতের সাথে আতাত করে তাদের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী
পি.আর পদ্ধতিতে নির্বাচন চেয়ে তারা আবারো আওয়ামীলীগকে ক্ষমতাসীন করতে চাচ্ছে।
পি.আর পদ্ধতির নির্বাচন প্রয়োগ করেই হিটলার কুখ্যাত ফ্যাসিস্ট হয়েছিলো।
হিটলারকে অনুসরণ করে পি.আর পদ্ধতির নির্বাচন চাওয়ার নামে
তাদের কথিত নির্বাচনকে বিলম্বিত তথা বানচাল করে
বর্তমান ক্ষমতার ভাগ দীর্ঘায়িত করার জন্য
তারা হারাম, শিরক, কুফরী তথা বিধর্মীর সাথে মিলেতো বটেই
এমনকী তাদের ইমামতি গ্রহণেও কোমড় বেধে নামছে। (নাউযুবিল্লাহ)
অথচ হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, “যে সম্প্রদায়ের সাথে মিল রাখে তার হাশর-নশর তার সাথে হবে। ”
‘আর কিয়ামতের ময়দানে প্রত্যেককে তাদের ইমামসহ ডাকা হবে। ’
সুতরাং গোবিন্দ, বড়–য়া আর রোজারিওর ইমামতিতে ইসলামের নাম বিক্রীকারী রাজনৈতিক দলগুলো পরকালে কোথায় থাকে তা সত্যিই ভাব্বার বিষয়। (১ম পর্ব)
দলগুলোর আদর্শিক চিন্তা-চেতনা পৃথক। কিন্তু আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পিআর পদ্ধতি (প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যানুপাতিক হারে সংসদের আসন) দাবিতে একাট্টা তারা।
শনিবার (২৮ জুন) রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ইসলামী আন্দোলনের মহাসমাবেশে তারা উঠেছেন একমঞ্চে। ইসলামী আন্দোলনসহ একমঞ্চে ওঠা অন্য দলগুলো হলো; বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপি, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টি, গণঅধিকার পরিষদ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, ইসলামী ঐক্যজোট, খেলাফত মজলিস, নেজামে ইসলাম পার্টি, হেফাজতে ইসলাম, জাতীয় হিন্দু মহাজোট ও বাংলাদেশ খ্রিষ্টান অ্যাসোসিয়েশন।
এই দলগুলো একমঞ্চ থেকে পিআর পদ্ধতিতে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবি তুলেছে। সবার বক্তব্যেই ছিল এক সুর। এ পদ্ধতিতে নাখোশ থাকা বিএনপির প্রতি সর্বদলীয় সংসদ গঠন করতে পিআর পদ্ধতি মেনে নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। সেই সঙ্গে এই রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এই পদ্ধতির ব্যাপারে ঐকমত্য না হলে গণভোট আয়োজনের দাবিও জানিয়েছে দলগুলো।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য এরা এতই নাদান যে ইসলামের দৃষ্টিতে হারাম গণতন্ত্র করলেও এবং তারও ইতিহাস সম্পর্কেও নিরেট জাহেল। পৃথিবীর ইতিহাসের এক ভয়ংকর ফ্যাসিস্ট, স্বৈরাচার ও একনায়কের নাম এডলফ হিটলার। জার্মানির ইতিহাসে হিটলারের চ্যান্সেলর নির্বাচিত হওয়া এবং একনায়কত্ব কায়েম ছিল একটি দীর্ঘ রাজনৈতিক নাটকের পরিণতি।
১৯১৮ সালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে পরাজয়ের মাধ্যমে জার্মান রাজতান্ত্রিক সাম্রাজ্য পতনের পর দেশটি গণতন্ত্রের পথে হাঁটলেও, দেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থা ছিল ভঙ্গুর ও বিশৃঙ্খল। ১৯১৮ থেকে ১৯৩৩ সাল পর্যন্ত ১৫ বছরে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের কারণে বিশ বারের মতো সরকার গঠন ও ভাঙনের ঘটনা ঘটে। ফলে জনগণের বিশ্বাস হারায় গণতন্ত্র- আর সেই সুযোগে আনুপাতিক নির্বাচন ব্যবস্থার বিদ্যমান দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে ক্ষমতার কেন্দ্রে উঠে আসেন হিটলার। ইতিহাস বিশ্লেষণ করে এমনটাই মনে করেন রাজনীতি বিশ্লেষক ও রাজনীতি গবেষকরা।
১৯১৮ সালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে পরাজয়ের পর জার্মানিতে চালু হয়েছিল ভাইমার গণতন্ত্র। সেই গণতন্ত্রে নির্বাচন পদ্ধতি ছিল আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বমূলক (চৎড়ঢ়ড়ৎঃরড়হধষ জবঢ়ৎবংবহঃধঃরড়হ- চজ)। পিআর সিস্টেমের কারণে সে সময় জার্মানিতে অর্ধ শতাধিক আঞ্চলিক ছোট ছোট দল গড়ে ওঠে। পিআর ব্যবস্থার কারণে ছোট ছোট ওই দলগুলোও সংসদে প্রবেশ করতে পারত কিন্তু কোনো দলই সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেত না। ফলে সরকার গঠন করতে বিভিন্ন মত ও পথের আঞ্চলিক ও প্রধান দলগুলোকে ক্ষমতাকেন্দ্রিক জোট করতে হতো। কিন্তু স্থিতিশীল সরকার গঠনের জন্য যেমন জোট প্রয়োজন ছিল সেটি গড়ে উঠতো না। ফলে সামান্য মত-পার্থক্য হলে সরকার থেকে ছোট দলগুলো সমর্থন প্রত্যাহার করে নিতো আর সরকারের পতন ঘটতো।
ভঙ্গুর সরকার ও জোট রাজনীতির অনৈক্যের সুযোগে রাজনীতিতে নিজের দলের ওপর বিশ্বাস রাখার দাবি নিয়ে জনপ্রিয় দলে পরিণত হয় হিটলারের নাৎসি পার্টি। ১৯৩২ সালের জুলাই মাসে পিআর পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে নাৎসি পার্টি সবচেয়ে বড় বেশি ভোট পেলেও সরকার গঠন করার মতো একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। ফলে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট হিন্ডেনবার্গ হিটলারকে চ্যান্সেলরের শপথ নিতে আমন্ত্রণ জানায়নি। কিন্তু হিটলার সরকার গঠনের জন্য ছোট দলগুলোর সাথে সমঝোতা শুরু করে। দীর্ঘ আলোচনা মাধ্যমে বিভিন্ন দলকে বেশি সংখ্যক মন্ত্রিত্ব দিয়ে জোট সরকার গঠনের প্রস্তাব দেয় হিটলার। হিটলার ডানপন্থী রাজনীতিবিদ ফ্রাঞ্জ ফন পাপেন ও ডিএনভিপি নেতা আলফ্রেড উগেনবার্গকেও তার মন্ত্রিসভায় গুরুত্বপূর্ণ পদ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী হিটলার চ্যান্সেলর পদ ও মাত্র দু'টি মন্ত্রিত্ব নিবে আর বাকি সব মন্ত্রিত্ব জোট দলগুলোকে দিয়ে দিবে। দু'জন বাদে সব মন্ত্রিত্ব পেয়ে জোটের এই দুই নেতার ধারণা ছিল, হিটলারকে চ্যান্সেলর বানানো হলেও যেহেতু সব মন্ত্রী তাদের তাই পেছন থেকে তারাই হিটলারকে নিয়ন্ত্রণ করবে। এই ভুল ধারণার ওপর ভিত্তি করে তারা প্রেসিডেন্ট হিন্ডেনবার্গকে জোট নেতা হিটলারকে শপথ পড়াতে রাজি করান। ১৯৩৩ সালের ৩০ জানুয়ারি জোট সরকারের প্রধান হিসেবে প্রথমবারে মতো এডলফ হিটলার জার্মানির চ্যান্সেলর হিসেবে নিয়োগ পায়।
জোট সরকার গঠনের কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই হিটলার রাষ্ট্রের সবকিছুতে নিজের একক নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা শুরু করে। এসময় জোট নেতারা হিটলারের বিরোধিতা শুরু করে। এর মধ্যে ২৭ ফেব্রুয়ারি ১৯৩৩- জার্মান পার্লামেন্টে আগুন লাগে। যে আগুন লাগার কারণ এখনও অস্পষ্ট। আগুন লাগার সাথে সাথে কোনো তদন্ত ছাড়াই হিটলার ঘোষণা করে, কমিউনিস্টরা সংসদে আগুন দিয়েছে। সারা দেশে তিনি এই সংবাদ ছড়িয়ে দেন। আর রাষ্ট্রপতিকে দিয়ে হিটলার সংসদে আগুন লেগেছে মর্মে জরুরি আইন জারি করে নাগরিক অধিকার স্থগিত করেন। এরপরই সারা দেশে হিটলার বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গণগ্রেফতার শুরু করে। আর সপ্তাহ খানেকের মধ্যে জরুরি পরিস্থিতি বিবেচনায় নতুন ডিক্রি জারি করে সংসদ ছাড়াই নিজে নিজেই আইন পাসের ক্ষমতা এককভাবে নিয়ে নেয়। এভাবেই একনায়ক হিসেবে যাত্রা শুরু হয় হিটলারের।
১৯৩৩ সালের মাঝামাঝিতে হিটলার কমিউনিস্ট পার্টি কেপিডি ও সোশালিস্ট পার্টি এসপিডি নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। এমন ঘোষণা দেখে হিটলারের সাবেক জোট সঙ্গীরা স্বেচ্ছায় নিজেদের দলকেই বিলুপ্ত ঘোষণা করে। এমনকি শক্তিশালী দল সেন্ট্রুমও নিজেদের বিলুপ্ত ঘোষণা করে। এরপর ১৪ জুলাই ১৯৩৩ সালে নাৎসি পার্টি ছাড়া সব রাজনৈতিক দলকেই নিষিদ্ধ ঘোষণা করে হিটলার। এভাবেই গণতান্ত্রিক পিআর পদ্ধতির সুযোগ নিয়ে একনায়ক হিটলার পুরো রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয়।
ইংল্যান্ডের ওয়ারউইক বিশ্ববিদ্যালের গবেষক ইমরান আহম্মেদ বলেন, এই আনুপাতিক ভোটিংয়ের ফলে জার্মানির একক দল সরকার গঠন করতে পারত না। সরকার গঠন করতে ও নানান সিদ্ধান্ত নিতে দলগুলোকে আপস করতে হতো। ফলে জোট সরকার দুর্বল হতো। এতে করে জনগণের মধ্যে সরকারের ওপর আস্থা কমে যেত। আর সরকার বার বার ভেঙে যাওয়ায় অর্থনৈতিক সংকটও প্রবল হয়ে উঠতো। এই ভঙ্গুর অর্থনীতি ও রাজনীতির শূন্যতার মাঝেই হিটলার শক্তিশালী নেতৃত্বের প্রতিশ্রুতি দিয়ে জনপ্রিয়তা অর্জন করে। যা তাকে অপ্রতিরোধ্য করে দেয়। এখান থেকে বাংলাদেশের মানুষেরও শিক্ষা নেওয়ার সুযোগ আছে। এখন যারা সমঝোতা বা আলোচনার টেবিলে বসছে না ভবিষ্যতে তাদের পরিণতি কি হবে সেটা ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত।
জার্মানির অভিজ্ঞতা দেখায়, যখন দেশে বারবার সরকার পরিবর্তন হয় কিংবা সরকার দুর্বল থাকে বা রাজনৈতিক দলগুলো ঐক্য করতে ব্যর্থ হয়, তখন গণতন্ত্রের ভিত নড়বড়ে হয়ে যায়। বাইরের শক্তিও সুযোগ নেয়। এমন সময় স্বৈরতন্ত্রেরও উত্থান ঘটে। এজন্যই জার্মানিতে ৫% ভোটের কম পেলে কোনো দল সংসদে আসন পায় না। বাংলাদেশের মতো ছোট দেশে পিআর পদ্ধতি দেশটিকে শুধু ভয়াবহ সংকটেই শুধু ফেলবে না বরং বহিঃশত্রুদের দেশের রাজনীতিতে হস্তক্ষেপের সুযোগও করে দেবে।
সংবিধান বিশেষজ্ঞরা বলেছে, পিআর পদ্ধতি পতিত স্বৈরাচারের ফিরে আসার পথ-মত, আদর্শ ও লোকবল জাতীয় রাজনীতিতে পুনবার্সিত হওয়ার সুযোগ তৈরি করবে।
সংবিধান বিশেষজ্ঞরা বলেছে, কিন্তু কিছু কিছু ছোটদল যেভাবে নিম্ন কক্ষেই অথবা বর্তমানে প্রচলিত সংসদীয় পদ্ধতিতে পিআর সিস্টেম চালুর দাবি করছে। তাতে জনবিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া পতিত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী রাজনীতি পুনর্বাসনের পথ দেশে তৈরি হবে।
পর্যবেক্ষক মহল বলেছে, হিন্দুত্ববাদী ভারত একের পর এক বাংলাদেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির ষড়যন্ত্র করছে। প্রতিটি চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর এখন আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিত্ব আগামী সংসদে রাখার নীলনকশা করছে। সেটি তারা বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মাধ্যমে বাস্তবায়নের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসলামের নামে রাজনৈতিক দলগুলো কি সে ফাঁদে পা দিচ্ছে?
যেহেতু আওয়ামী লীগ পালালেও তাদের প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ ভোটার সারা দেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। আগামী নির্বাচনে ওই ভোটাররা আওয়ামী লীগ এবং কৌশলগতভাবে তাদের মনোনীত প্রার্থীদের ভোট দেবেন। এতে করে ‘সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব’ পদ্ধতির নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা কমপক্ষে শতাধিক আসনে বিজয়ী হয়ে সংসদে যাবে। অন্যদিকে, বিএনপি ব্যাপক জনপ্রিয় হলের ভোটের হিসাবেও দলটির কার্যত ভোটারের সংখ্যা ৩৫ থেকে ৪০ শতাংশের মধ্যে। জোটগতভাবে ভোট করলে এই সংখ্যা কিছুটা বাড়তে পারে। ফলে আওয়ামী লীগকে আগামী নির্বাচনের মাধ্যমে সংসদে নেয়ার ভারতীয় নীলনকশা বাস্তবায়নে কি ‘সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব’ দাবি জোরালো করে তোলার চেষ্টায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে আলোচনা হচ্ছে?
আর অতীতে সংসদে যাদের জনপ্রিতিনিধিত্ব তেমন ছিল না এবং যাদের ছিল সেটিও যৎসামান্য তাদের দাবি অধিক গুরুত্ব দিয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন দিনের পর দিন আলোচনা চালিয়ে যাবে কেন?
সোশ্যাল মিডিয়ায় এ নিয়ে তীব্র বিতর্ক চলছে। নেটিজেনদের কেউ কেউ বলছেন, ‘যারা ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করতে চায় তারা পিআর ইস্যুকে অধিক গুরুত্ব দিচ্ছে। কারণ এই ঐকমত্য কমিশনের যে অবস্থা তাতে মাসের পর মাস ধরে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করলেও এ সব ইস্যুতে ঐকমত্যে পৌঁছানো যাবে না। নেটিজেনদের কেউ কেউ লিখেছে, ‘জামায়াত ও ইসলামী আন্দোলন দিল্লির এজেন্ডা বাস্তবায়নে হঠাৎ করে পিআর পদ্ধতির নির্বাচনের দাবি সামনে নিয়ে এসেছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা লিখেছেন- “২৮ জুন ইসলামী আন্দোলনের সমাবেশে অংশ নেয়া জামায়াত, এনসিপি, এবি পার্টি, গণঅধিকার পরিষদসহ কয়েকটি দল ও হিন্দু নেতারা পিআর পদ্ধতির নির্বাচনের দাবি জানিয়ে সোচ্চার বক্তব্য দেয়। অথচ ইসলামী আন্দোলন ও জামায়াতের মধ্যে দা-কুড়াল সম্পর্ক। হাসিনা রেজিমের ১৫ বছর বিএনপিসহ কোনো দল সভা-সমাবেশ করতে না পারলেও ইসলামী আন্দোলন পুলিশ প্রহরায় সমাবেশ করেছে। ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থীদের প্রচারণায় নামতে দেয়া হয়নি অথচ ইসলামী আন্দোলনকে ব্যাপক প্রচারণা চালাতে দেয়া হয়। বছর দেড়েক আগে বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পা-ারা ঘুষি মেরে ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থীর মুখম-ল রক্তাক্ত করে। ওই ঘটনার প্রতিবাদে দলটি ২০১৪ সালের পাতানো নির্বাচনে অংশ নেয়া থেকে বিরত থাকে। দলটি দীর্ঘ ১৫ বছর যে আওয়ামী লীগ তাদের পৃষ্ঠপোষকতা করেছে আগামী সংসদে তাদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবি তোলা হচ্ছে। জামায়াতের স্বার্থ অন্য খানে এবং ছোট ছোট দলগুলো বিএনপির সঙ্গে বার্গেনিং শক্তি বাড়াতে পিআর পদ্ধতির নির্বাচনের দাবিতে সুর মেলাচ্ছে। এরা বুঝে গেছে নির্বাচন হয়ে গেলে এদের গুরুত্ব কমে যাবে। সে জন্য একদিকে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিত্ব সংসদে রাখতে চাচ্ছে; অন্যদিকে নির্বাচন বিলম্বিত করতে এই পিআর পদ্ধতির নির্বাচনের দাবির খেলা খেলছে। ”
হিন্দু সম্প্রদায় আগামী জাতীয় নির্বাচনে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতির নির্বাচন চায় বলে জানিয়েছে হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব গোবিন্দ।
সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিও। বৌদ্ধ বিহারের সভাপতি বড়ুয়া বলে, ‘স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও আমরা সংখ্যালঘু হিসেবে উপেক্ষিত। রাজনীতিকরা আমাদের ব্যবহার করে, কিন্তু সংসদে গিয়ে সংস্কারের কথা ভুলে যান। ’
বাংলাদেশ খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রোজারিও বলে, ‘আমরা যুগ যুগ ধরে এই দেশে সহাবস্থানে বিশ্বাস করি। কিন্তু আমাদের কণ্ঠস্বর সংসদে নেই। পিআর পদ্ধতি চালু হলে সংখ্যালঘুদের কথা বলার সুযোগ তৈরি হবে। ’
গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক, দয়াল কুমার বড়ুয়া ও নির্মল রোজারিওর বক্তব্যে প্রকাশ পায় তারা দিল্লির এজেন্ডা নিয়েই ইসলামী আন্দোলনের সমাবেশে হাজির হয়েছে। এর আগে দিল্লিকে খুশি করতে জামায়াত দলের হিন্দু শাখা গঠন করেছে। দলটির আমির নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সিলেট মহিলা মেডিকেল কলেজে ২০ শতাংশ হিন্দু ধর্মাবলম্বী ডাক্তার-কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগের ভিডিও করে দিল্লিতে পাঠিয়েছেন। তিনি ‘ফ্যাসিস্ট বলতে ভালো লাগে না’, ‘আমরা ভারতের বিরুদ্ধে নই’ ‘আমরা সব মাফ করে দিয়েছি’ এবং ‘জামায়াত ক্ষমতায় গেলে মেয়েরা যেমন খুশি তেমন পোশাক পরে রাস্তায় চলাফেরা করতে পারবে’ এমন বক্তব্য দিয়ে দিল্লির আস্থা অর্জনের চেষ্টা করে। সমাবেশে ইসলামী আন্দোলনের আমির ও চরমোনাই পীর সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম বলেন, ‘আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে হওয়া ছাড়া বিকল্প নেই। সংসদের প্রস্তাবিত উভয় কক্ষেই এ পদ্ধতিতে নির্বাচন হতে হবে। এটি হলে কোনো দল জালেম হওয়ার সুযোগ পাবে না। আমরা ৫৪ বছরে অনেক দলকে দেশ শাসন করতে দেখেছি; কিন্তু ইসলামকে ক্ষমতায় নিতেই পারিনি। এবার ইসলামপন্থিদের ঐক্যের ব্যাপারে গণপ্রত্যাশা তৈরি হয়েছে। ’ তার এ বক্তব্য নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিতর্ক চলছে। নেটিজেনদের অনেকেই লিখেছে, ‘পরের সমালোচনা করার আগে আয়নায় নিজের চেহারা দেখা উচিত। ৫৪ বছরে অনেক দলকে দেশ শাসন করতে দেখেছে; এ সময় কতবার সংসদে প্রতিনিধিত্ব করেছে? ১৫ বছর ফ্যাসিস্ট হাসিনার ছায়ার নিচে থেকেছে। এখন বড় বড় কথা বলছে। সারা জীবন জামায়াতের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিয়েছে। এখন জামায়াত বন্ধ হয়ে গেল? ইসলামী ধারার দল হয়ে বোধিজ্ঞান ভাবনাকেন্দ্রের সভাপতি দয়াল কুমার বড়ুয়া, বাংলাদেশ খ্রিষ্টান অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নির্মল রোজারিও এবং হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিককে আমন্ত্রণের রহস্য কি?’
(ইনশাআল্লাহ চলবে)
-আল্লামা মুহম্মদ ওয়ালীউর রহমান আরিফ।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সন্ত্রাসবাদ নয়; জিহাদী যোগ্যতা অর্জন করা পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ অনুযায়ী ফরয। ৯৮ ভাগ মুসলমান অধ্যুষিত দেশে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় সব নাগরিকের জন্য সামরিক প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক করতে হবে। উন্নত প্রশিক্ষন, যুদ্ধকৌশল, সামরিক সক্ষমতা এবং আন্তর্জাতিক র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এখন সাফল্যের শীর্ষে। সরকারের উচিত- দেশের মর্যাদা বুলন্দ ও দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ত্বকে সমুন্নত রাখতে সেনাবাহিনীর প্রতি সকল প্রকার পৃষ্ঠপোষকতা নিশ্চিত করা।
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম এর তথ্যানুযায়ী বেনিয়া বৃটিশগুলো মুসলিম ভারত থেকে লুট করেছে ১২ হাজার লক্ষ কোটি টাকা প্রকৃতপক্ষে তারা লুট করেছে লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
রামপাল তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র এখনও বন্ধ করলে যা লাভ হবে চালু রাখলে তার চেয়ে অনেক বেশী ক্ষতি হবে ৫৩টি পরিবেশবাদী সংগঠনের দাবী অবিলম্বে রামপাল তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ করে সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্র করা হোক কিন্তু তাদের উপেক্ষা করে পরিবেশ উপদেষ্টা প্রমাণ করছে তার পরিবেশবাদী তৎপরতা অন্য পরিবেশবাদীদের সাথে সাংঘর্ষিক এবং তার পরিবেশবাদী প্রচারণা কার্যকলাপ আসলে দেশ ও দেশের মানুষের জন্য নয় বরং বিশেষ প্রভুর নির্দেশনায় (প্রথম পর্ব)
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
জুয়ার নেশায় বুদ হচ্ছে শিশু-কিশোররা-শিক্ষার্থীরা অধিকাংশ সাইটই পরিচালিত হয় দেশের বাইরে থেকে অনলাইনে জুয়ায় ছোট ছোট বাজির টাকা দিন শেষে একটি বড় অঙ্কের অর্থ হয়ে দেশ থেকে ডলারের মাধ্যমে পাচার হচ্ছে প্রতিদিন এসব খেলা স্বাভাবিক গেমের মতো হওয়ায় প্রকাশ্যে খেলা হলেও আশপাশের মানুষ তা বুঝতে পারেন না কেবলমাত্র ইসলামী মূল্যবোধের উজ্জীবনেই জুয়া বন্ধ সম্ভব ইনশাআল্লাহ
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
গার্মেন্টসের চেয়েও বড় অবস্থানে তথা বিশ্বের শীর্ষ অবস্থানে অধিষ্ঠান হতে পারে বাংলাদেশের জাহাজ নির্মাণ শিল্প। যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতা করলে শুধু মাত্র এ খাত থেকেই বছরে ১১ লাখ কোটি টাকা অর্জন সম্ভব ইনশাআল্লাহ। যা বর্তমান বাজেটের প্রায় দেড়গুণ আর শুধু অনিয়ম এবং সরকারের অবহেলা, অসহযোগীতা দূর করলে বর্তমানেই সম্ভব প্রায় ২ লাখ কোটি টাকা অর্জন জাহাজ নির্মাণ শিল্পের সমৃদ্ধি সম্পর্কে সচেতন হওয়া এবং সরকারের গাফলতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা জনগণের জন্যও জরুরী। (২য় পর্ব)
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আ’যম সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার রোবে, দোয়ার বরকতে- কুদরতীভাবে কমে যাচ্ছে ডলারের আধিপত্য বাংলাদেশের রিজার্ভ ডলারে রাখা উচিৎ নয়- এতে লাভ আমেরিকার মুসলিম বিশ্বে অভিন্ন মুদ্রা ব্যবস্থা বিশেষত মূল্যহীন কাগজী মুদ্রা বাদ দিয়ে সুন্নতী দিনার-দিরহাম মুদ্রা চালু করা আবশ্যক ইনশাআল্লাহ (দ্বিতীয় পর্ব)
৩০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
বিদেশি হাইব্রিড বীজের ফাঁদে দেশের কৃষি। হারিয়ে যাচ্ছে দেশীয় ফসলের জাত, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে জীববৈচিত্র্য। ফুলে-ফেঁপে উঠছে বীজ কোম্পানিগুলো।
২৯ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
মুশরিক ভারতের প্রতি লা’নত ওদের জনসংখ্যা দিন দিন নিম্নমুখী পক্ষান্তরে ৯৮ ভাগ জনগোষ্ঠী মুসলমানের দেশ বাংলাদেশে খোদায়ী রহমত। (সুবহানাল্লাহ) বাংলাদেশে জনসংখ্যার এখন ৬৫ ভাগই কর্মক্ষম এবং জনসংখ্যার বৃদ্ধির হার উর্ধ্বগামী বাংলাদেশ ভোগ করছে ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ডের নিয়ামত। সুবহানাল্লাহ!
২৮ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
প্রসঙ্গ: মধ্যম আয়ের ফাঁদ এড়াতে সতর্কতা তথা মধ্যম আয়ের স্থবিরতা তাওয়াক্কুল আর তাকওয়া অবলম্বনে সব সমস্যা দূর হয়ে অচিরেই বাংলাদেশ হতে পারবে শীর্ষ সমৃদ্ধশালী দেশ ইনশাআল্লাহ
২৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
রিজওয়ানার পরিবেশবাদী প্রচারণার বিপরীতে রবি ঠগ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস স্থাপনে ইতিবাচক বার্তা এবং ইউনুসের পানি ও প্রকৃতি প্রেমের বানীর পরিবর্তে আপত্তি সত্ত্বেও একনেকে রবি ঠগ বিশ্ববিদ্যালয় প্রকল্প অনুমোদনে জনগণ তথা নেটিজনের মূল্যায়নটা কী?
২৬ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যখন কোনো দেশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে যুদ্ধবিমান কিনে, তখন তা শুধু একটি বিমান কেনার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না। এর সাথে যুক্ত হয় একাধিক শর্ত, নিষেধাজ্ঞা এবং জটিল টার্মস অ্যান্ড কন্ডিশনস
২৫ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
লাগামহীন ব্যর্থতার পর মাদক নিয়ন্ত্রণেও সরকার চরমভাবে ব্যর্থ। আইন শৃঙ্খলা বাহিনী নিজস্ব দুর্বলতার কারণে মাদক নিয়ন্ত্রণে নজরই দিতে পারছে না। উল্টো আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর অনেক সদস্য নিজেরাও জড়িয়ে পড়ছে মাদক ব্যবসায়।
২৪ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)












