নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার তাবে’ সারা কায়িনাত, উনার মুবারক কর্তৃত্ব সারা কায়িনাতে বিরাজমান (৩)
(গত ২৫শে যিলক্বদ শরীফের পর)
, ২৮ যিলহজ্জ শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ০৭ ছানী, ১৩৯২ শামসী সন , ০৫ জুলাই, ২০২৪ খ্রি:, ২১ আষাঢ়, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
পবিত্র হাদীছ শরীফে আরো বর্ণিত রয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اِبْن عَبَّاس قَالَ: جَاءَتْ أَحْبَارُ الْيَهُوْدِ إِلٰى رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالُوا: أَرِنَا آيَةً حَتّٰى نُؤْمِنَ فَسَأَلَ النَّبِيُ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَبَّهٗ أَنْ يُّرِيَهُ آيَةً فَأَرَاهُمُ الْقَمَرَ قَدْ اِنْشَقَّ فَصَارَ قَمَرَيْنِ أَحَدُهُمَا عَلَى الصَّفَا وَالْآخَرُ عَلَى الْمَرْوَةِ قَدْرَ مَا بَيْنَ الْعَصْرِ إِلَى اللَّيْلِ يَنْظرُوْنَ إِلَيْهِ ثُمَّ غَابَ الْقَمَرُ فَقَالُوْا: هٰذَا {سِحْرٌ مُّسْتَمِرٌ}
অর্থ: হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট ইহুদীদের কতিপয় পাদ্রী আসলো এবং বললো, “আপনি আমাদেরকে এমন একখানা নিদর্শন মুবারক দেখান, যা দেখে আমরা ঈমান আনবো। ” তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তাদের আরজীর ব্যাপারে দুআ মুবারক করলেন। সাথে সাথে চাঁদ দ্বিখ-িত হয়ে এক খ- সাফা পাহাড় এবং অপর খ- মারওয়া পাহাড়ের দিকে চলে গেল। সুবহানাল্লাহ! আছর হতে মাগরিব পর্যন্ত যে সময়, সে পরিমাণ সময় চাঁদ দ্বিখ-িত অবস্থায় ছিলো। অতপর, দ্বিখ-িত চাঁদ একত্রিত হয়ে যায়। ইহুদীদের পাদ্রীরা ঈমান না এনে বললো, এটা তো প্রকাশ্য যাদু। নাঊযুবিল্লাহ। (আবু নুয়াইম)
যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, ইমামুল আইম্মাহ, মুজাদ্দিদে আযম, ক্বইয়ূমুয যামান, জাব্বারিউল আউওয়াল, ক্বউইয়্যুল আউওয়াল, সুলত্বানুন নাছীর, হাবীবুল্লাহ, জামিউল আলক্বাব, মাওলানা, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আনুষ্ঠানিক নুবুওওয়াত প্রকাশের ষষ্ঠ বছর পবিত্র ১৪ই যিলহজ্ব শরীফ রাতে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ইশারা মুবারকে চাঁদ দ্বিখ-িত হয়ে আছর হতে মাগরিব পর্যন্ত যে পরিমাণ সময়, সে পরিমাণ সময় থরথর করে কাপতে থাকে। যা দেখে সারা বিশ্বে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়। পূর্ববর্তী আসমানী কিতাবসমূহে এ সম্পর্কে বর্ণনা থাকায় সারা বিশ্বের মানুষ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারক সম্পর্কে জানতে পারে। এমনকি তা দেখে বিশ্বের তৎকালীন অনেক শাসক ঈমান আনে। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক খিদমতে লোক পাঠায়, হাদিয়া মুবারক পাঠায় এবং ঈমান ও দ্বীন ইসলাম স্বীকার করে নেয়। সুবহানাল্লাহ!
অপর পবিত্র হাদীছ শরীফে বর্ণিত রয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ أَسْمَاءَ بِنْتِ عُمَيْسٍ رَضِىَ اللّهُ تَعَالٰى عَنْهَا أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ رَأْسُهٗ فيِ حِجْرِ عَلِيٍّ عَلَيْهِ السَّلَامُ فَكَرِهَ أَنْ يُّحَرِّكَهٗ حَتّٰى غَابَتِ الشَّمْسُ وَلَـمْ يُصَلِّ الْعَصْرَ، فَفَرَغَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَذَكَرَ عَلِيٌّ عَلَيْهِ السَّلَامُ أَنَّهُ لَـمْ يُصَلِّ الْعَصْرَ ، فَدَعَا رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنْ يُّرَدَّ عَلَيْهِ الشَّمْسُ، فَأَقْبَلَتِ الشَّمْسُ وَ لَهَا خُوَارُ حَتّٰى اِرْتَفَعَتْ عَلٰى قَدْرِ مَا كَانَتْ وَقْتُ الْعَصْرِ، قَالَتْ: فَصَلّٰى ثُمَّ رَجَعَتْ
অর্থ: হযরত আসমা বিনতে উমাইস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা (বা’দ আছর) নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত ইমামুল আউওয়াল কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার কোল মুবারক বা জানু মুবারকে মাথা মুবারক রেখে বিশ্রাম মুবারক নিচ্ছিলেন। যার কারণে হযরত ইমামুল আউওয়াল কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি কোন নড়াচড়া করলেননা। সময়ের আবর্তনে সূর্য অস্ত গেল কিন্তু হযরত ইমামুল আউওয়াল কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার আছর নামায আদায় করা হয়নি। অতপর, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন নাওমী শান মুবারক হতে ফারেগ হলেন, তখন হযরত ইমামুল আউওয়াল কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি আছর নামায আদায় করতে না পারার বিষয়টি মুবারক খিদমতে পেশ করলেন। তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সূর্যকে ফিরে আসার ব্যাপারে দুআ মুবারক করলেন। ইতোমধ্যে সূর্য অস্ত গিয়েছিল, কিন্তু তা আছরের ওয়াক্তের অবস্থায় ফিরে আসলো। অতপর, হযরত ইমামুল আউওয়াল কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি আছর নামায আদায় করলেন। সূর্য আবার অস্ত গেল। সুবহানাল্লাহ। (ফারায়িদুস সামত্বীন, ১ম খ- ১৮৩ পৃষ্ঠা)
অর্থাৎ, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক ইচ্ছায় এবং ইশারায় পাহাড়ের কম্পন থেমে যায়, চন্দ্র দ্বিখ-িত হয় এবং সূর্যও তার চলার গতি পরিবর্তন করে । সুবহানাল্লাহ!
মূলকথা হলো, ক্বায়িদুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার তাবে’ মালায়িকাহ, আসমান-যমীন, গ্রহ-নক্ষত্র, জামাদাত, শাজারাত, হাজারাতসহ সমস্ত মাখলুকাত এবং সারা কায়িনাত। উনার মুবারক কর্তৃত্ত্ব সারা কায়িনাতের সমস্ত মাখলুকাতের উপর সর্বদা বিরাজমান। সুবহানাল্লাহ। কাজেই, সকলকে এ বিষয়ে সর্বোচ্চ হুসনে যন পোষণ করতে হবে। মহান আল্লাহ পাক তিনি সকলকে সর্বোচ্চ হুসনে যন পোষণ করার তাওফীক্ব দান করুন। আমীন।
-আহমদ নুছাইর।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
হযরত আব্বাস ইবনে মিরদাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যাকাত সম্পর্কিত আহকাম, মাসায়িল ও ফাযায়িল (৪)
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
প্রাণীর ছবি তোলা হারাম ও নাফরমানীমূলক কাজ
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
অ্যান্টার্কটিকা নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় বিজ্ঞানীরা
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম (৪)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা অবশ্যই সত্যের মাপকাঠি; অস্বীকারকারীরা কাট্টা কাফির (১)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ উনাদের আলোকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দু‘আ বা মুনাজাত (১১তম অংশ)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম (৩)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুনিয়ার যমীনে অবস্থানকালীন সময়ে ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ যে রোযা মুবারক রাখতেন সে রোযা মুবারক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১২ই শরীফ উনার দিনে হওয়াটা ছিলো একটি বিরল ঘটনা (২)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)












