নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র তারীখ মুবারক সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহূরিল আ’যম শরীফ উনার সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’দাদ শরীফ উনাকে ঈদ হিসেবে গ্রহণ বিষয়ে আপত্তি ও তার খন্ডনমূলক জবাব (১)
, ১৩ মুহররমুল হারাম শরীফ, ১৪৪৭ হিজরী সন, ১০ ছানী, ১৩৯৩ শামসী সন , ৯ জুলাই, ২০২৫ খ্রি:, ২৫ আষাঢ়, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ
সুওয়াল: বাতিল ৭২ ফিরক্বার কেউ কেউ বলে থাকে যে, “হযরত ইমাম ইবনে রজব হাম্বলী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার ‘লাত্বায়িফুল মা‘আরিফ’ নামক কিতাবে রোযার ঈদ, কুরবানীর ঈদ, আইয়্যামে তাশরীক্ব এবং জুমু‘আর দিন ব্যতীত অন্য কোনো দিনকে ঈদ হিসেবে গ্রহণ করতে নিষেধ করেছেন। কাজেই, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুনিয়ার যমীনে আগমন অর্থাৎ বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের তারীখ ১২ই রবীউল আউওয়াল শরীফ উনাকে ঈদ হিসেবে গ্রহণ করা যাবে না। ” এ বিষয়ে সঠিক জবাব দানে বাধিত করবেন।
জাওয়াব: বাতিল ৭২ ফিরক্বার লোকদের জাতিগত স্বভাব হচ্ছে- কিতাবের ইবারত কারচুপি করা এবং হযরত ইমাম-মুজতাহিদ রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের উপর ভর করে নিজেদের বাতিল মত ছাবিত করার অপচেষ্টা করা। যারা এরূপ বলে থাকে, তাদের নিকট সুওয়াল হচ্ছে- তাহলে কি হযরত ইমাম ইবনে রজব হাম্বলী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ছহীহ হাদীছ শরীফ উনার বিরুদ্ধে ফতওয়া দিয়েছেন? অথচ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ছহীহ হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছেন,
عَنْ حَضْرَتْ اَبِىْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِلصَّائِمِ فَرْحَتَانِ يَفْرَحُهُمَا اِذَا اَفْطَرَ فَرِحَ وَاِذَا لَقِىَ رَبَّهٗ فَرِحَ بِصَوْمِهٖ
অর্থ: “হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, সম্মানিত রোযাদার ব্যক্তি উনার জন্য দুটি খুশি বা ঈদ রয়েছেন, যেই দুটি খুশি বা ঈদ সম্মানিত রোযাদার ব্যক্তি প্রকাশ করে থাকেন। (১) যখন সম্মানিত রোযাদার ব্যক্তি ইফতার করেন, তখন তিনি খুশি বা ঈদ প্রকাশ করেন। আর (২) যখন সম্মানিত রোযাদার ব্যক্তি তিনি উনার রব তা‘য়ালা মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে সাক্ষাৎ করবেন, তখন তিনি খুশি বা ঈদ প্রকাশ করবেন সম্মানিত রোযা উনার কারণে। ” সুবহানাল্লাহ! (বুখারী শরীফ, নাসায়ী শরীফ, জুযউ ইবনে জুরাইজ ১/১৬, ফতহুল বারী ৪/১১৮, শরহে ইবনে বাত্ত্বাল ৪/২৪, উমদাতুল ক্বারী ১৬/২৮১, দলীলুল ফালিহীন ৭/২৪, ত্বরহুত তাছরীব ৪/৯৪, আল কাওয়াকিবুদ দুরারী ৯/৮৭, যখীরতুল উক্ববা ২১/৮০, ইরশাদুস সারী ৩/৩৫৪, আল কাওছারুল জারী ৪/২৬১, মাছাবীহুল জামি’ ৪/৩২৯, ই’লামুল হাদীছ ২/৯৪৬, আল লামি‘উছ ছবীহ্ ৬/৩৭০, আত্ তাওশীহ্ ৪/১৪২০ ইত্যাদি)
অন্য বর্ণনায় ইরশাদ মুবারক হয়েছেন,
عَنْ حَضْرَتْ اَبِىْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِلصَّائِمِ فَرْحَتَانِ فَرْحَةٌ عِنْدَ فِطْرِهٖ وَفَرْحَةٌ عِنْدَ لِقَاءِ رَبِّهٖ
অর্থ: “হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, সম্মানিত রোযাদার ব্যক্তি উনার জন্য দুটি খুশি বা ঈদ রয়েছেন। (১) একখানা খুশি বা ঈদ হচ্ছেন সম্মানিত রোযাদার ব্যক্তি যখন ইফতার করেন। আরেকখানা খুশি বা ঈদ হচ্ছেন (২) সম্মানিত রোযাদার ব্যক্তি যখন উনার রব তা‘য়ালা মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে সাক্ষাৎ করবেন। ” সুবহানাল্লাহ! (মুসলিম শরীফ, ইবনে মাজাহ শরীফ, তাফসীরে ছা‘আলাবী ১/১০৭, তাফসীরে খাযিন ১/১১৪, রূহুল বয়ান ১/২৩৮, গ¦রাইবুল কুরআন ১/৫২১, আস সিরাজুল মুনীর ১/১২১, তাফসীরে বাগবী ১/২০৩, তাফসীরে ইবনে রজব ২/২২২, তাফসীরে মাযহারী ১/২০০ ইত্যাদি)
-মুহাদ্দিছ মুহম্মদ আবূ আহমাদ ছিদ্দীক্বাহ্।
প্রায় সাড়ে ১৪০০ বছর পর আহলু বাইতি রসূলল্লিাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়মি মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, রহমাতুল্ললি আলামীন মামদূহ র্মুশদি ক্ববিলা সাইয়্যদিুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহসি সালাম উনার মহাসম্মানতি ও মহাপবত্রি নূরুস সালাম মুবারক-এ মহাসম্মানতি ও মহাপবত্রি কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে র্বণতি اِسْتَـوٰى (ইস্তাওয়া) শব্দ মুবারক উনার হাক্বীক্বত মুবারক প্রকাশ (১০)
ইস্তাওয়া সর্ম্পকে হযরত ইমাম মুজতাহদি রহমতুল্লাহি আলাইহমি উনাদরে অভমিত
বিশ্বখ্যাত মুফাসসির আল্লামা আবুল হাসান মুক্বাতিল ইবনে সুলাইমান রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ‘তাফসীরে মুক্বাতিলে’ বলেন,
ثُـمَّ اسْتَـوٰى عَلَى الْعَرْشِ يَـعْنِـىْ اِسْتَـقَرَّ عَلَى الْعَرْشِ
অর্থ: “ছুম্মাস তাওয়া ‘আলাল আরশ অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক তিনি আরশে আযীম উনার উপর স্থির হয়েছেন। ” (তাফসীরে মুক্বাতিল ২/১০৯)
‘তাফসীরে ত্ববারী শরীফ’ উনার ১৩ তম খ-ের ৪১১ পৃষ্ঠায় উল্লেখ রয়েছে,
ثُـمَّ اسْتَـوٰى عَلَى الْعَرْشِ فَاِنَّهٗ يَـعْنِـىْ عَلَا عَلَـيْهِ
অর্থ: “ছুম্মাস তাওয়া ‘আলাল আরশ অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক তিনি আরশে আযীম উনার উপর অবস্থান করেছেন। ”
‘তাফসীরে ত্ববারী শরীফ’ উনার ১৭ তম খ-ের ৪৮০ পৃষ্ঠায় উল্লেখ রয়েছে,
ثُـمَّ ارْتَـفَعَ عَلَى الْعَرْشِ الرَّحْـمـٰــنُ وَعَلَا عَلَيْهِ
অর্থ: “অতঃপর মহান আল্লাহ পাক তিনি আরশে আযীম উনার উপরে উঠেছেন এবং অবস্থান করেছেন। ”
‘তাফসীরে বাগভী শরীফ’ উনার ৪র্থ খ-ের ২৯৩ পৃষ্ঠায় উল্লেখ রয়েছে,
ثُـمَّ اسْتَـوٰى عَلَى الْعَرْشِ عَلَا عَلَيْهِ
অর্থ: “(ছুম্মাস তাওয়া ‘আলাল আরশ) মহান আল্লাহ পাক তিনি আরশে আযীম উনার উপর অবস্থান করেছেন। ”
‘তাফসীরে সাম‘আনী শরীফ’ উনার ২য় খ-ের ৩৬৬ পৃষ্ঠায় উল্লেখ রয়েছে,
ثُـمَّ اسْتَـوٰى عَلَى الْعَرْشِ قَدْ بَيينَا مَذْهَبَ اَهْلِ السُّنَّةِ فِـى الْاِسْتِوَاءِ وَهُوَ اَنَّهٗ نُـؤْمِنُ بِهٖ وَنَكِلُ عِلْمَهٗ اِلَـى اللهِ تَـعَالـى مِنْ غَيْـرِ تَاْوِيْلٍ وَلَا تَـفْسِيْـرٍ
অর্থ: “(ছুম্মাস তাওয়া ‘আলাল আরশ) আমরা ইস্তাওয়া বিষয়ে আহলু সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের অভিমত বর্ণনা করেছি। আর তা হচ্ছে- মহান আল্লাহ পাক তিনি ইস্তাওয়া হয়েছেন এটা আমরা বিশ্বাস করি এবং আমরা এর কোনো প্রকার ব্যাখ্যা ও তাফসীর ছাড়া এর ইলিমকে মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট অর্পন করেছি। ”
এরূপ আরো অসংখ্য বর্ণনা রয়েছে। কলেবর বৃদ্ধির আশাঙ্কায় অতি সংক্ষেপে এখানেই শেষ করা হলো। প্রকৃতপক্ষে اِسْتَـوٰى (ইস্তাওয়া) সম্পর্কে বর্ণিত অভিমতগুলো কোনটাই শুদ্ধ না। কেউ اِسْتَـوٰى (ইস্তাওয়া) শব্দের হাক্বীক্বতটা বুঝতে পারেনি।
-মুহাদ্দিছ মুহম্মদ আল আমীন।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা ও বাক্বা সারা কায়িনাত (৩১)
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ইজতিহাদ সংক্রান্ত মওযূ হাদীছ ও তার খন্ডনমূলক জবাব (৬)
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক শানে ব্যবহৃত একখানা শব্দ মুবারক পবিত্র “নূরুন নাজাত” মুবারক উনার ব্যাপকতা ও বিশালতা
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারকে মানহানীকারীদের যুগে যুগে ভয়াবহ পরিণতি (৩০)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ইজতিহাদ সংক্রান্ত মওযূ হাদীছ ও তার খন্ডনমূলক জবাব (৫)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্মানিত সম্বোধন মুবারক করার বিষয়ে কতিপয় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র লফ্য বা পরিভাষা মুবারক
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনি তিনজন উনাদের মুহব্বত ফরয করে দিয়েছেন-
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ মেহমানদারী করার মাধ্যমে উদযাপনে শাফায়াত মুবারক লাভ
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা ও বাক্বা সারা কায়িনাত (৩০)
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ইজতিহাদ সংক্রান্ত মওযূ হাদীছ ও তার খন্ডনমূলক জবাব (৪)
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ইত্তিবা বা অনুসরণ করার ক্ষেত্রে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের কোন মেছাল নেই
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা ও বাক্বা সারা কায়িনাত (২৯)
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)












