নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারকে মানহানীকারীদের যুগে যুগে ভয়াবহ পরিণতি (৩০)
, ১২ জুমাদাল ঊখরা শরীফ, ১৪৪৭ হিজরী সন, ০৫ সাবি’, ১৩৯৩ শামসী সন , ০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রি:, ১৯ অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ
উতবা ইবনে আবী ওয়াক্কাছের পরিণতি:
হযরত আনাস ইবনে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি হযরত হাতিব ইবনে আবী বালতা মাদানী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে বলতে শুনেছেন।
তিনি উহুদ যুদ্ধের দিন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট এসে দেখলেন তিনি অত্যন্ত নূরুল ইস্তিক্বামত মুবারক অর্থাৎ জিহাদে আহত হওয়া শান মুবারক প্রকাশ করেছেন। ইমামুল আউওয়াল, সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার হাত মুবারকে একটি ঢাল ভর্তি পানি ছিলো। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সেই পানি দিয়ে উনার মহাসম্মানিত নূরুর রহমত মুবারক অর্থাৎ চেহারা মুবারক ধৌত করছেন।
তখন হযরত হাতিব ইবনে বালতা’ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!
مَنْ فَعَلَ بِكَ هَذَا؟
‘আপনার সাথে কে এমনটা করেছে?’ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, উতবা ইবনে আবী ওয়াক্কাছ আমার মহাসম্মানিত নূরুর রহমত বা মুখ মুবারক বিদীর্ণ করেছে এবং একটি পাথর ছুঁড়ে আমার মহাসম্মানিত রুবাইয়া নূরুল্লাহ বা দাঁত মুবারক শহীদ করেছে। নাঊযুবিল্লাহ! আমি বললাম, পাহাড়ের উপরে একজনকে চিৎকার করে বলতে শুনলাম- নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি শাহাদাতী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন। তখন আমি দ্রুত আপনার নিকট এলাম, সে সময় (আপনার ফিকির মুবারকে) আমার জিসিম মুবারক থেকে যেন প্রাণ বের হয়ে যাচ্ছিলো।
এরপর আমি বললাম, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!
أَيْنَ تَوَجَّهَ عُتْبَةُ فَأَشَارَ إِلَى حَيْثُ تَوَجَّهَ
‘উতবা কোন দিকে গেছে? নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মালউনটা যে দিকে গিয়েছে সে দিকে ইশারা মুবারক করলেন।’
فَمَضَيْتُ حَتَّى ظَفِرْتُ بِهِ فَضَرَبْتُهُ بِالسَّيْفِ فَطَرَحْتُ رَأْسَهُ فَهَبَطْتُ فَأَخَذْتُ رَأْسَهُ وَسَلَبَهُ وَفَرَسَهُ وَجِئْتُ بِهِ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَسَلَّمَ ذَلِكَ إِلَيَّ
‘আমি সেই দিকেই ছুটলাম এমনকি তার উপর বিজয় লাভ করলাম অর্থাৎ তাকে পাকড়াও করলাম। অতঃপর আমি তরবারী দিয়ে আঘাত করে তার দেহ থেকে মাথা ফেলে দিলাম। তারপর আমি বাহন থেকে নিচে নেমে এলাম এবং তার কর্তিত মাথা, যুদ্ধলুণ্ঠিত সম্পদ ও তার ঘোড়া নিয়ে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খিদমত মুবারকে ফিরে আসলাম। তিনি সেগুলো আমার নিকটেই সমর্পন করলেন।’ এরপর আমার জন্য দোয়া মুবারক করলেন-
رَضِيَ اللَّهُ عَنْكَ مَرَّتَيْنِ
‘মহান আল্লাহ পাক তিনি আপনার প্রতি সন্তুষ্ট হোন।’ তিনি দুইবার একই দোয়া মুবারক করলেন। সুবহানাল্লাহ! (আল মুস্তাদরাক আলাছ ছহীহাইন ৩/৩০০, মাছাবীহুল জামী’ ৬/২৮৬, আস সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৬/৩০৮ ইত্যাদি)
আব্দুল্লাহ ইবনে ক্বামীয়াহর চরম পরিণতি:
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এই মালউনটার বিরুদ্ধে বদদোয়া করেছিলেন। যার ফলে সে ছিন্ন-ভিন্ন হয়ে মারা যায়।
হযরত আবূ উমামা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত রয়েছে- পবিত্র উহুদ যুদ্ধের দিন আব্দুল্লাহ ইবনে কামিয়াহ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে একটি পাথর ছুড়ে মারে। এতে উনার নূরুর রহমত বা চেহারা মুবারক আঘাতপ্রাপ্ত হন এবং উনার সামনের সম্মানিত নূরুল্লাহ্ মুবারক অর্থাৎ দাঁত মুবারক শহীদ হন। তখন মালউন ইবনে কামিয়াহ অহংকার করে বলে, ‘এটা (আঘাত) গ্রহণ করুন! আর আমি কামিয়াহর (চুর্ণকারিণীর) পুত্র!’ নাউযুবিল্লাহ!
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার সম্মানিত নূরুর রহমত মুবারক থেকে সম্মানিত নূরুন নাজাত (রক্ত মুবারক) মুছতে মুছতে তাকে বললেন-
مَا لَكَ أَقْمَأَكَ اللَّهُ
‘তোর কি হলো? মহান আল্লাহ পাক তিনি তোকে টুকরো টুকরো করে দিন।’
فَسَلَّطَ اللَّهُ عَلَيْهِ تَيْسَ جَبَلٍ، لا تَيْسَ، فَلَمْ يَزَلْ يَنْطَحُهُ حَتَّى قَطَعَهُ قِطْعَةً قِطْعَةً
‘অতঃপর মহান আল্লাহ পাক তিনি তার উপর একটি পাহাড়ী ছাগলকে প্রবল করে দিলেন। এটা কোনো সাধারণ ছাগল নয়। ছাগলটি তাকে ক্রমাগত শিং দিয়ে আঘাত করতে করতে টুকরো টুকরো করে ফেললো। (এবং সে সেখানেই মারা গেলো।) (আল মু’জামুল কাবীর লিত্ব ত্ববারানী ৭/১৪১, ফাতহুল বারী ৭/৩৬৬)
(অসমাপ্ত)
-হাফিয মুহম্মদ ইমামুল হুদা।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
ইজতিহাদ সংক্রান্ত মওযূ হাদীছ ও তার খন্ডনমূলক জবাব (৫)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্মানিত সম্বোধন মুবারক করার বিষয়ে কতিপয় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র লফ্য বা পরিভাষা মুবারক
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনি তিনজন উনাদের মুহব্বত ফরয করে দিয়েছেন-
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ মেহমানদারী করার মাধ্যমে উদযাপনে শাফায়াত মুবারক লাভ
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা ও বাক্বা সারা কায়িনাত (৩০)
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ইজতিহাদ সংক্রান্ত মওযূ হাদীছ ও তার খন্ডনমূলক জবাব (৪)
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ইত্তিবা বা অনুসরণ করার ক্ষেত্রে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের কোন মেছাল নেই
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা ও বাক্বা সারা কায়িনাত (২৯)
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ইজতিহাদ সংক্রান্ত মওযূ হাদীছ ও তার খন্ডনমূলক জবাব (৩)
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্মানিত সম্বোধন মুবারক করার বিষয়ে কতিপয় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র লফ্য বা পরিভাষা মুবারক
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ইজতিহাদ সংক্রান্ত মাওযূ হাদীছ ও তার খন্ডনমূলক জবাব (২)
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্মানিত সম্বোধন মুবারক করার বিষয়ে কতিপয় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র লফ্য বা পরিভাষা মুবারক
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)












