পবিত্র আশূরা শরীফ উনার মহাসম্মানিত মহাপবিত্র সুন্নতী আমল মুবারক
, ১০ মুহররমুল হারাম শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ৩০ ছানী, ১৩৯১ শামসী সন , ২৯ জুলাই, ২০২৩ খ্রি:, ১৪ শ্রাবণ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) সুন্নত মুবারক তা’লীম
পবিত্র আশূরা শরীফ উনার দিন পরিবারবর্গকে ভালো খাওয়ানো সম্পর্কে মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে-
عَنِ حضرت عبد الله بْنِ مَسْعُودٍ رضى الله تعالى عنه قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ وَسَّعَ عَلَى عِيَالِهِ فِي النَّفَقَةِ يَوْمَ عَاشُورَاءَ وَسَّعَ اللَّهُ عَلَيْهِ سَائِرَ سَنَتِهِ.
অর্থ : “যে ব্যক্তি পবিত্র আশূরা শরীফ উনার দিন তার পরিবারবর্গকে ভালো খাওয়াবে-পরাবে, মহান আল্লাহ পাক তিনি সারা বৎসর ওই ব্যক্তিকে স্বচ্ছলতা দান করবেন।” (তবারানী শরীফ, শুয়াবুল ঈমান, মা ছাবাতা বিস্সুন্নাহ, মুমিন কে মাহে ওয়াসাল ইত্যাদি)
২) পবিত্র আশূরা শরীফ উপলক্ষে দু’দিন রোযা রাখা খাছ সুন্নত মুবারক ও বেমেছাল ফযীলত মুবারক লাভের উছীলা:-
পবিত্র আশূরা শরীফ উপলক্ষে ১টি নয় বরং; ২টি রোযা রাখা মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক। পবিত্র মুহররমুল হারাম শরীফ মাসের ৯ ও ১০ তারিখে অথবা ১০ ও ১১ তারিখে।
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عن حضرت ابى قتادة رضى الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم صِيَامُ يَوْمِ عَاشُورَاءَ أَحْتَسِبُ عَلَى اللَّهِ أَنْ يُكَفِّرَ السَّنَةَ الَّتِي قَبْلَهُ" )رواه مسلم(
অর্থ : হযরত আবূ ক্বাতাদাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “পবিত্র আশূরা শরীফ উনার রোযা পালনে আমি মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট আশা করি যে, তিনি (উম্মতের) বিগত বছরের গুনাহখতা ক্ষমা করে দিবেন।” (মুসলিম শরীফ, কিতাবুছ ছিয়াম : মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ ১১৬২, ইবনে মাজাহ শরীফ, কিতাবুছ ছিয়াম: মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ ১৭৩৮, তিরমিযী শরীফ : মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ: ৭৫২
৩) পবিত্র আশূরা শরীফ উপলক্ষে রোযাদারদেরকে ইফতার করানো খাছ সুন্নত মুবারক ও বেমেছাল ফযীলত মুবারক লাভের উছীলা:-
রোযাদারদেরকে ইফতার করানো সম্পর্কে মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে-
من فطر فيه صائما فكانـما افطر عنده جميع امة (سيدنا حبيبنا شفيعنا مولانا) محمد صلى الله عليه وسلم
অর্থ: “পবিত্র আশূরা শরীফ উনার দিন যে ব্যক্তি কোন রোযাদারকে ইফতার করাবে, সে যেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সমস্ত উম্মতকে ইফতার করালো।” সুবহানাল্লাহ! (আল বাইয়্যিনাত শরীফ)
৪) পবিত্র আশূরা শরীফ উনার দিনে গরিবদের পানাহার করানো ও ইয়াতীমের মাথায় হাত বুলানো খাছ সুন্নত মুবারক ও বেমেছাল ফযীলত মুবারক লাভের উছীলা:
গরিবদের পানাহার করানো ও ইয়াতীমের মাথায় হাত বুলানো সম্পর্কে মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে-
مَنْ مَّسَحَ فِيْهِ عَلٰى رَأْسِ يَتِيْمَ وَاَطْعَمَ جَائِعًا وَسَقٰى شَرْبَةً مِّنْ مَّاءٍ أَطْعَمَهُ اللهُ مِنْ مَّوَائِدِ الْـجَنَّةِ وَسَقَاهُ مِنْ الرَّحِيْقِ السَّلْسَبِيْلِ.
অর্থ : “পবিত্র আশূরা শরীফ উনার দিন কোন মুসলমান যদি কোন ইয়াতীমের মাথায় হাত স্পর্শ করে, কোন ক্ষুধার্তকে খাদ্য খাওয়ায় এবং কোন পিপাসার্তকে পানি পান করায় তাহলে মহান আল্লাহ পাক তিনি তাকে সম্মানিত জান্নাত উনার দস্তরখানায় খাদ্য খাওয়াবেন এবং ‘সালসাবীল’ নামক ঝর্ণা থেকে পানীয় (শরবত) পান করাবেন।” (আল বাইয়্যিনাত শরীফ)
৫) পবিত্র আশূরা শরীফ উনার দিনে চোখে (ইছমিদ) সুরমা দেয়া খাছ সুন্নত মুবারক ও বেমেছাল ফযীলত মুবারক লাভের উছীলা :
চোখে সুরমা দেয়া সম্পর্কে মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে-
مَنْ اكْتَحَلَ يَوْمَ عَاشُوْرَاءَ بِكُحْلٍ فِيْهِ مِسْكٌ لَـمْ يَشْكُ عَيْنُهٗ إِلٰى قَبِيْلٍ مِّنْ ذٰلِكَ الْيَوْمِ.
অর্থ : “যে ব্যক্তি পবিত্র আশূরা শরীফ উনার দিন মিশক মিশ্রিত সুরমা চোখে দিবে, সেদিন হতে পরবর্তী এক বৎসর তার চোখে কোন প্রকার রোগ হবেনা।” (মাক্বাছিদে হাসানাহ, শুয়াবুল ঈমান, দায়লামী, মা ছাবাতা বিস্সুন্নাহ্)
৬) পবিত্র আশূরা শরীফ উনার দিনে গোসল করা খাছ সুন্নত মুবারক ও বেমেছাল ফযীলত মুবারক লাভের উছীলা :
পবিত্র আশূরা শরীফ উনার দিনে গোসল করা সম্পর্কে মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
مَنْ اِغْتَسَلَ فِيْهِ عُفِىَ وَلَـمْ يَـمْرَضْ اِلَّا مَرَضَ الْـمَوْتِ وَاَمِنَ مِنَ الْكَسْلِ وَالتَّعْلِيْلِ.
অর্থ : “যে ব্যক্তি পবিত্র আশূরা শরীফ উনার দিন গোসল করবে, মহান আল্লাহ পাক তিনি তাকে রোগ থেকে মুক্তি দান করবেন। মৃত্যু ব্যতীত তার কোন কঠিন রোগ হবেনা এবং সে অলসতা ও দুঃখ-কষ্ট হতে নিরাপদ থাকবে।” (আল বাইয়্যিনাত শরীফ)
উল্লেখিত মহাসম্মানিত সুন্নতী আমল মুবারক সঠিকভাবে আদায় করতে পারলে, দুনিয়া-আখিরাতে বেমেছাল ফাযায়িল-ফযীলত, নেয়ামত-রহমত মুবারক হাছিল করা সহজ ও সম্ভব।
অতএব, পবিত্র মুহররমুল হারাম শরীফ মাস এবং উনার মধ্যস্থিত পবিত্র আশূরা শরীফ উনার দিনের ফাযায়িল-ফযীলত ও মহাসম্মানিত সুন্নতী আমল মুবারক সম্পর্কে জেনে সে মুতাবিক আমল করে মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার মহাসম্মানিত হাবীব ও মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মহাসম্মানিত সন্তুষ্টি মুবারক হাছিল করা প্রত্যেক মুসলমান জ্বিন-ইনসান, পুরুষ-মহিলা, বালক-বালিকা, ছোট-বড় সকলের দায়িত্ব-কর্তব্য। মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে কবুল করুন। আমীন!
-আহমদ হুসাইন
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
ওযূ করার খাছ সুন্নতী তারতীব মুবারক ও মাসয়ালা-মাসায়িল (২)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ওযূ করার খাছ সুন্নতী তারতীব মুবারক ও মাসয়ালা-মাসায়িল (১)
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ইস্তিঞ্জার আদব ও ঢিলা-কুলুখ ব্যবহার করা সম্পর্কে (২)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ইস্তিঞ্জার আদব ও ঢিলা-কুলুখ ব্যবহার করা সম্পর্কে (১)
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
প্রয়োজনে ছুরি এবং চাকু দিয়ে খাবার কেটে খাওয়াও মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
জুতা-মোজা ঝেড়ে পরিস্কার করে পরিধান করা খাছ সুন্নত মুবারক
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
চামড়ার মোজা পরিধান করা খাছ সুন্নত মুবারক
৩০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
খাছ সুন্নতী না’লাইন বা স্যান্ডেলের বর্ণনা (০৩)
২৯ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
খাছ সুন্নতী না’লাইন বা স্যান্ডেলের বর্ণনা (০২)
২৮ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
খাছ সুন্নতী না’লাইন বা স্যান্ডেলের বর্ণনা (০২)
২৮ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী খাবার ‘পনির’
২৮ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
খাছ সুন্নতী না’লাইন বা স্যান্ডেলের বর্ণনা (০১)
২৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)












