পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের আলোকে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের মর্যাদা-মর্তবা ও ফযীলত মুবারক প্রসঙ্গে (৩২)
, ০৬ জুমাদাল ঊখরা শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ১১ সাবি’, ১৩৯২ শামসী সন , ০৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রি:, ২৪ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা বেমেছাল-ফাযায়িল-ফযীলত ও মর্যাদা-মর্তবার অধিকারী। স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক তিনি উনাদের ঈমান, সততা ও অন্যান্য বৈশিষ্ট্যাবলী বর্ণনা করেছেন। এবং তিনিই হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের অন্তরে প্রশান্তি দান করেছেন। যেমন মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “মহান আল্লাহ পাক তিনি মু’মিনের অন্তরে (অর্থাৎ হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের অন্তরে) প্রশান্তি দান করেন, যেন উনারা উনাদের ঈমানের সহিত ঈমানকে আরো দৃঢ় করে নেন। আর আসমান এবং যমীনের বাহিনীসমূহ মহান আল্লাহ পাক উনার জন্যই। আর তিনিই সর্বজ্ঞ প্রজ্ঞাময়। ” (পবিত্র সূরা ফাতাহ শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ০৪)
উক্ত আয়াত শরীফ উনার ব্যাখ্যায় উল্লেখ আছে যে, বুখারী ও মুসলিম শরীফ-এ হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বর্ণনা করেন, হুদায়বিয়ার সন্ধির পর হুদায়বিয়া থেকে প্রত্যাবর্তন কালে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম বিষণœ ছিলেন। তখন মহান আল্লাহ পাক তিনি উক্ত আয়াত শরীফ নাযিল করেন, “ইন্না ফাতাহ্না লাকা ফাত্হাম মুবীনা.....। ” আয়াত শরীফ নাযিল হলে মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদেরকে ডেকে বললেন; আজ আমার উপর এমন এক আয়াত শরীফ নাযিল হয়েছে যা আমার কাছে সমস্ত দুনিয়া অপেক্ষা অধিক প্রিয়। এরপর নাযিল হয়, “তিনিই মহান আল্লাহ পাক যিনি মু’মিনের অন্তরে (অর্থাৎ হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের অন্তরে) প্রশান্তি দান করেন, যেন উনারা উনাদের ঈমানের সহিত ঈমানকে আরো দৃঢ় করে নেন। আর আসমান এবং যমীনের বাহিনীসমূহ আল্লাহ পাক উনার জন্যই। আর মহান আল্লাহ পাক তিনিই সর্বজ্ঞ প্রজ্ঞাময়। ” এ কথার অর্থ হলো, মহান আল্লাহ পাক তিনিই হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের অন্তরে অপার্থিব এক শান্তিপ্রবাহ জারি করেন দেন। ফলে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের বিশ্বাস হয় আরো অধিকতর উজ্জ্বল, সবল।
উক্ত আয়াত শরীফ উনার ব্যাখ্যায় “তাফসীরে মাযহারীতে” আরো বলা হয়েছে, মহান আল্লাহ পাক তিনি যে বলেছেন, “তিনি মহান আল্লাহ পাক, মু’মিনের অন্তরে প্রশান্তি দান করেন। ” একথার অর্থ হলো, মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদেরকে প্রদান করেন ধৈর্য, সহ্য ও অটলতা। যেন জিহাদের ক্ষেত্রে উনাদের অন্তরে সৃষ্টি না হতে পারে কোন ধরনের উদ্বেগ ও শঙ্কা। পক্ষান্তরে কাফিরদের অন্তরে সৃষ্টি করে দেন অযৌক্তিক ক্রোধ।
বুখারী ও মুসলিম শরীফ-এ আরো উল্লেখ আছে, মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সূরা ফাতাহ্ শরীফের প্রথম তিন আয়াত শরীফ তিলাওয়াত করে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদেরকে শুনালে, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমাদের ব্যাপারে মহান আল্লাহ পাক উনার ফায়সালা কি? এরই প্রেক্ষিতে মহান আল্লাহ পাক তিনি উক্ত আয়াত শরীফ নাযিল করে বলেন, “তিনিই মহান আল্লাহ পাক মু’মিনের অন্তরে অর্থাৎ হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের অন্তরে প্রশান্তি দান করেন, যেন উনারা অর্থাৎ হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের ঈমানের সহিত ঈমানকে আরো দৃঢ় করে নেন। সুবহানাল্লাহ!
উক্ত আয়াত শরীফ উনার মধ্যে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদেরকে প্রদত্ত নিয়ামতসমূহ বর্ণনা করা হয়েছে। সুতরাং হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের মযাদা ও ফযীলত মুবারকের বিষয়টি জেনে উনাদেরকে অনুসরণ অনুকরণ করতে হবে। (চলবে)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
অ্যান্টার্কটিকা নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় বিজ্ঞানীরা
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম (৪)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা অবশ্যই সত্যের মাপকাঠি; অস্বীকারকারীরা কাট্টা কাফির (১)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ উনাদের আলোকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দু‘আ বা মুনাজাত (১১তম অংশ)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম (৩)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুনিয়ার যমীনে অবস্থানকালীন সময়ে ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ যে রোযা মুবারক রাখতেন সে রোযা মুবারক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১২ই শরীফ উনার দিনে হওয়াটা ছিলো একটি বিরল ঘটনা (২)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত হাযির-নাযির শান মুবারক (১)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
প্রাণীর ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িজ
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
আল্লাহওয়ালী মহিলা উনাদের তিনটি বৈশিষ্ট্য-
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)












