পবিত্র মাহে রমাদ্বান শরীফ উনার ফাযায়িল-ফযীলত (১০)
, ০২ রমাদ্বান শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ১৪ আশির, ১৩৯১ শামসী সন , ১৩ মার্চ, ২০২৪ খ্রি:, ২৯ ফাল্গুন, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
পবিত্র রোযা উনার প্রকারভেদ
পবিত্র রোযা মোট ছয় প্রকার। যথা- ১.ফরয, ২. ওয়াজিব, ৩. সুন্নত, ৪. মুস্তাহাব, ৫. মাকরূহ, ৬. হারাম।
ফরয রোযা :
ক্স পবিত্র রমাদ্বান শরীফ উনার ২৯ দিন অথবা ৩০ দিনের রোযা হচ্ছে ফরয রোযা।
ওয়াজিব রোযা :
ক্স মানত-এর রোযা।
ক্স নফল রোযা উনার ক্বাযা, যা শুরু করার পর ফাসিদ (ভঙ্গ) হয়ে গিয়েছিলো।
ক্স বিভিন্ন কাফফারার রোযা।
সুন্নত রোযা :
ক্স পবিত্র আশূরা মিনাল মুহররম (১০ই মুহররমুল হারাম শরীফ) উপলক্ষে দুটি রোযা রাখা। অর্থাৎ ৯ ও ১০ অথবা ১০ ও ১১ তারিখে রোযা রাখা।
ক্স প্রতি মাসে তিনটি রোযা রাখা।
ক্স পহেলা রজব উনার দিনে রোযা রাখা।
ক্স পবিত্র মি’রাজ শরীফ উনার দিনে অর্থাৎ ২৭শে রজব শরীফ রোযা রাখা।
ক্স পবিত্র শবে বরাত উপলক্ষে ১৫ই শা’বানে রোযা রাখা।
ক্স শাওওয়াল মাসের ৬টি রোযা।
ক্স পবিত্র যিলহজ্জ শরীফ মাস উনার ১-৯ তারিখ পর্যন্ত ৯টি রোযা এবং পবিত্র ১০ই যিলহজ্জ শরীফ ছুবহি ছাদিক হতে শুরু করে দ্বিপ্রহেরর মাকরূহ ওয়াক্তের পূর্ব পর্যন্ত রোযা রাখা। এ সময়ের পরে রোযা রাখা হারাম। এ সময়ের মধ্যে পবিত্র কুরবানী করে তার গোশত দিয়ে রোযা ভঙ্গ করা সুন্নত। গোশত প্রস্তুত না হলে অন্যকিছু দিয়ে রোযা ভঙ্গ করতে হবে।
মুস্তাহাব রোযা :
ক্স প্রতি আরবী মাসের ১৩, ১৪, ১৫ তারিখে রোযা রাখা।
ক্স প্রতি সপ্তাহের ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ তথা সোমবার এবং বৃহস্পতিবার রোযা রাখা।
ক্স যে পাঁচ দিন রোযা রাখা নিষিদ্ধ সে পাঁচ দিন ব্যতীত অন্যান্য যে কোন দিন রোযা রাখা মুস্তাহাব।
মাকরূহ রোযা :
ক্স ইয়াওমুশ শক অর্থাৎ চাঁদের ত্রিশ তারিখ দিনে রোযা রাখা সাধারণভাবে মাকরূহ।
ক্স এছাড়া আশূরা উপলক্ষে ১ দিন রোযা রাখা মাকরূহ।
হারাম রোযা :
ক্স পবিত্র পবিত্র ঈদুল ফিতর উনার দিন।
ক্স পবিত্র ঈদুল আদ্বহার দিন।
ক্স পবিত্র ঈদুল আদ্বহা উনার পরবর্তী তিন দিন (১১, ১২, ১৩ই যিলহজ্জ শরীফ তারিখে) রোযা রাখা হারাম।
পবিত্র রোযা ফরয হওয়ার শর্তাবলী
পবিত্র রোযা ফরয হওয়ার জন্য নি¤œবর্ণিত শর্তগুলো থাকা আবশ্যক-
১. মুসলমান হওয়া। ২. বালিগ হওয়া।
৩. জ্ঞান সম্পন্ন হওয়া। ৪. সুস্থ হওয়া।
৫. মুক্বীম হওয়া। অর্থাৎ মুসাফির না হওয়া। কেননা মুসাফিরের জন্য পবিত্র রোযা রাখার বাধ্যবাধকতা থাকেনা। তবে মুক্বীম হওয়ার পর অবশ্যই তা ক্বাযা আদায় করতে হবে।
যাদের উপর রোযা ফরয নয়
১. মুসাফিরের জন্য পবিত্র রোযা আদায় করা ফরয নয়। তবে আদায় করাই উত্তম। যদি মুসাফির অবস্থায় আদায় না করে তবে মুক্বীম হওয়ার পর অবশ্যই ক্বাযা আদায় করতে হবে।
২. অসুস্থ ব্যক্তির উপর পবিত্র রোযা আদায় করা ফরয নয়। তবে সুস্থ হলে ক্বাযা আদায় করতে হবে।
৩. মহিলাদের মাসিক স্বাভাবিক মাজুরতা, সন্তান হওয়ার কারণে মাজুরতার সময় তাদের উপর পবিত্র রোযা ফরয নয়, উক্ত সময়ে রোযা রাখা জায়িয নয়। তবে উভয় মাজুরতা থেকে পবিত্র হলে ক্বাযা আদায় করতে হবে।
বি. দ্র. বালিগ না হলেও ছোট ছেলে-মেয়ে যারা পবিত্র রোযা রাখতে পারবে তাদেরকে রোযা রাখিয়ে অভ্যাস করানো পিতা-মাতার দায়িত্ব-কর্তব্য।
যেসব কারণে রোযা ভঙ্গ হয় না
১. ভুলক্রমে কোন কিছু পানাহার করলে। অতঃপর শেষ সময় পর্যন্ত পানাহার না করলে।
২. ভুলক্রমে নির্জনবাস করলে।
৩. রোযারত অবস্থায় দিনে ঘুমালে এবং ঘুমের মধ্যে গোসল ফরয হলে।
৪. আহলিয়ার প্রতি দৃষ্টিপাত করার কারণে গোসল ফরয হওয়ার মতো কোন কিছু নির্গত হলে।
৫. শরীরে তেল মালিশ করলে।
৬. শিঙ্গা লাগালে যদিও রক্ত বা পুঁজ বের হয়।
৭. চোখে সুরমা বা ওষুধ দিলে। উল্লেখ্য, ওষুধের স্বাদ গলায় অনুভূত হলে বা সুরমার রঙ থুথুর সাথে দেখা গেলেও রোযা ভঙ্গ হবে না।
৮. আহলিয়াকে বুছা দিলে।
৯. অনিচ্ছাকৃত বমি করলে।
১০. রোযাদারের গলায় অনিচ্ছাকৃতভাবে ধোঁয়া গেলে।
১১. মুখে থুথু এলে বারবার না ফেলে গিলে ফেললে।
১২. রোযারত অবস্থায় নখ ও চুল কাটলে।
১৩. রোযাদার ব্যক্তি স্বপ্নে কিছু খেলে বা পান করলে।
১৪. রাস্তায় চলাচলের সময় গাড়ির ধোঁয়া, রান্না করার সময় রান্নার ধোঁয়া নাকে প্রবেশ করলে মাজূর বা অক্ষমতার কারণে রোযা ভঙ্গ হবে না।
১৫. রোযারত অবস্থায় সন্তানকে দুধ খাওয়ালে মায়ের রোযা ভঙ্গ হবে না। এমনকি ওযূও ভঙ্গ হবে না।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
খরচ করার ব্যাপারে মহান আল্লাহ পাক উনার ফায়সালা
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (৫)
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মুসলমানদের সবচেয়ে বড় শত্রু কাফির-মুশরিকরা (১)
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ছবি তোলা হারাম, যা জাহান্নামী হওয়ার কারণ
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
বিজাতীয় বিধর্মী তথা ইহুদী-নাছারাদেরকে অনুসরণ করা ইসলামী শরীয়তে হারাম-নাজায়িয
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পবিত্র ‘ছলাতুল জুমুয়াহ’ উনার পূর্বে ৪ রাকায়াত সুন্নত নামায অর্থাৎ পবিত্র ‘ক্বাবলাল জুমুয়াহ’ নামায নিয়ে বাতিলপন্থিদের বিভ্রান্ত্রিকর ও মিথ্যা বক্তব্যের দলীলভিত্তিক জাওয়াব (৬)
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ইলিম অর্জন করার পর সে অনুযায়ী যে আমল করে না, তার তিনটি অবস্থার যে কোনো একটি হবেই-
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (৪)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ঢিলা-কুলুখের বিধান
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
বেপর্দা হওয়া শয়তানের ওয়াসওয়াসাকে সহজ করার মাধ্যম
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার)












