পবিত্র মাহে রমাদ্বান শরীফ উনার ফাযায়িল-ফযীলত (১৮)
, ১১ রমাদ্বান শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২৩ আশির, ১৩৯১ শামসী সন , ২২ মার্চ, ২০২৪ খ্রি:, ০৮ চৈত্র, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
দেওবন্দীদের অনেক কিতাবেই তারা ফতওয়া দিয়েছে- “পবিত্র তারাবীহ উনার নামায বা অন্যান্য সময়ে পবিত্র কুরআন শরীফ খতম করে উজরত বা পারিশ্রমিক গ্রহণ করা হারাম। নাঊযুবিল্লাহ!
মূলতঃ পবিত্র কুরআন শরীফ খতম বা তিলাওয়াত করে উজরত গ্রহণ করা সম্পর্কিত দেওবন্দীদের উক্ত ফতওয়া অসম্পূর্ণ ও অশুদ্ধ। কারণ উজরত গ্রহণ করা শর্ত সাপেক্ষে জায়িয, আবার শর্ত সাপেক্ষে নাজায়িয। অর্থাৎ সময় অথবা স্থান নির্ধারণ করে দেয়া হলে ইমামতী, শিক্ষকতা, হজ্জের মাসয়ালা-মাসায়িল ও পবিত্র কুরআন শরীফ শিক্ষা দিয়ে খতম বা তিলাওয়াত করে উজরত গ্রহণ করা জায়িয। আর সময় অথবা স্থান নির্ধারণ করা না হলে উজরত গ্রহণ করা জায়িয নেই। এর উপরই উলামায়ে মুতাআখ্খিরীনগণ উনাদের ফতওয়া এবং এটাই গ্রহণযোগ্য ও ফতওয়াগ্রাহ্য মত।
যেমন, ফিক্বাহর বিখ্যাত কিতাব “বাহরুর রায়িক”-এ উল্লেখ আছে-
ان الـمفتى به جواز الاخذ على القرائة.
অর্থ : নিশ্চয়ই পবিত্র কুরআন শরীফ তিলাওয়াত করে উজরত গ্রহণ করা জায়িয হওয়া ফতওয়াগ্রাহ্য মত।
বি. দ্র. এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে মাসিক আল বাইয়্যিনাত উনার ২৩ ও ২৪তম সংখ্যা দ্রষ্টব্য। সেখানে ৫১টি নির্ভরযোগ্য কিতাবের দলীল পেশ করা হয়েছে।
পবিত্র রমাদ্বান মাসসহ যে কোন সময়ই পবিত্র তাহাজ্জুদ নামায জামায়াতে আদায় করা বিদয়াত
পবিত্র তারাবীহ্, ছলাতুল ইস্তিস্কা ও ছলাতুল কুসূফ, এই তিন প্রকার নামায ব্যতীত কোন সুন্নত বা নফল নামাযই জামায়াতে আদায় করা জায়িয নেই। বরং ফক্বীহ্গণের মতে তা মাকরূহ্ তাহ্রীমী ও বিদ্য়াতে সাইয়িয়াহ্। তাই তাহাজ্জুদ নামায পবিত্র রমাদ্বান মাস উনার মধ্যে হোক অথবা অন্য যে কোন মাসেই হোক না কেন জামায়াতে আদায় করা মাকরূহ তাহরীমী ও বিদ্য়াতে সাইয়িয়াহ্।
বর্তমানে পবিত্র যাকাত-ফিতরা ইত্যাদি ফরয-ওয়াজিব ও নফল দান ছদকা
দেয়ার সঠিক ও সর্বোত্তম স্থান হলো ঢাকা রাজারবাগ
‘মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ মাদরাসা ও ইয়াতীমখানা’
পবিত্র যাকাত পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার পাঁচটি বুনিয়াদের মধ্যে অন্যতম বুনিয়াদ। যাকাত মালী ইবাদত। খিলাফতের যুগে পবিত্র যাকাত উনার মাল-সম্পদ বাইতুল মালে জমা হতো। সেখান থেকে খলীফা উনার পক্ষ হতে পবিত্র যাকাত উনার হক্বদারদের মধ্যে বণ্টন করে দেয়া হতো। কিন্তু বর্তমানে সেই খিলাফত ব্যবস্থা না থাকায় যাকাতদাতাগণ নিজেই পবিত্র যাকাত উনার মাল হক্বদারদের মধ্যে বণ্টন করে থাকেন। এ কারণে যাকাতদাতার মধ্যে ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় গইরুল্লাহ অর্থাৎ রিয়া বা লৌকিকতা নামক এ ধ্বংসাত্মক বদ গুণটি জন্ম নেয়। ফলে তার যাকাত কবুল হওয়ার বিপরীতে বরবাদ হয়ে যায়। নাউযুবিল্লাহ!
এছাড়া সে এমন সব লোককে যাকাত দেয় যাদের আক্বীদা ও আমলের মধ্যে কুফরী রয়েছে অথবা যারা হারাম-নাজায়িয বিদয়াত-বেশরা কাজে মশগুল। অথবা যারা নামায কালাম পড়ে না, পর্দা-পুশিদায় চলে না, গান-বাজনা করে, টিভি-সিনেমা দেখে, খেলাধুলা করে ইত্যাদি যা চরম ফাসিকী ও নাফরমানীমূলক কাজের অন্তর্ভুক্ত। অথবা এমন সব মাদরাসায় যাকাত দেয় যেসব মাদরাসার ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে পর্দা নেই। হারাম খেলাধুলায় লিপ্ত। হারাম দল-মত ও আন্দোলনের সাথে জড়িত অর্থাৎ হক্কানী আলিম- আল্লাহওয়ালা হওয়ার পরিবর্তে তাদের উদ্দেশ্য থাকে গইরুল্লাহ। অর্থাৎ দুনিয়াবী ফায়দা হাছিল করা। এদেরকে পবিত্র যাকাত, পবিত্র ফিতরা, পবিত্র কুরবানী উনার চামড়া ইত্যাদি ফরয, ওয়াজিব দান-ছদকা দেয়া মোটেই পবিত্র ইসলামী শরীয়তসম্মত নয়। কারণ মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “তোমরা নেকী ও পরহেযগারীর মধ্যে সাহায্য করো। আর পাপ ও শত্রুতা অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের বিরোধিতা বা নাফরমানীর মধ্যে সাহায্য করো না। এ বিষয়ে তোমরা মহান আল্লাহ পাক উনাকে ভয় করো। নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি কঠোর শাস্তিদাতা।” (পবিত্র সূরা মায়িদা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ২)
তাই যাকাতদাতাগণ যেন সঠিক স্থানে যাকাত, ফিতরা, উশর ইত্যাদি দান-ছদকা দিয়ে পরিপূর্ণ ফায়দা হাছিল করতে পারেন সেজন্য যামানার লক্ষ্যস্থল ওলীআল্লাহ, যামানার লক্ষ্যস্থল আওলাদে রসূল, মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি উনার সার্বিক তত্ত্বাবধানে পরিচালনা করছেন হাক্বীক্বী আল্লাহওয়ালা ও আল্লাহওয়ালী হওয়ার, শরয়ী পর্দা পালন ও সুন্নতের পাবন্দ হওয়ার একমাত্র দ্বীনী প্রতিষ্ঠান মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ মাদরাসা ও ইয়াতীমখানা।
-শুয়াইব আহমদ।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
পরিভাষা, শব্দ ও বানান আগ্রাসন (৯)
০১ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
হালাল হারামের কথা-১৪
০১ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সুমহান পবিত্র ২১শে শাওওয়াল শরীফ: মুবারক প্রেক্ষাপট
০১ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
দ্বীন ইসলাম উনার সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দিবস পালন নিয়ে বিভ্রান্তির দলীলসম্মত জাওয়াব
৩০ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
রাজারবাগ শরীফ উনার পরিচিতি
৩০ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আল খ্বমিসাহ আলাইহাস সালাম উনার পবিত্র সাওয়ানেহ উমরী মুবারক
৩০ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ইলিম এবং আলিম উনাদের ফযীলত
৩০ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
فَاسْأَلُوا أَهْلَ الذِّكْرِ إِنْ كُنْتُمْ لَا تَعْلَمُونَ
২৮ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সারাবিশ্বে একই দিনে ঈদ পালন ও রোযা শুরু করার কথা বলার উদ্দেশ্য পবিত্র ঈদ ও পবিত্র রোযাকে নষ্ট করা, যা মূলত মুনাফিকদের একটি ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত (৩১)
২৮ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পবিত্র কুরবানী ও কুরবানীদাতার ফযীলত (২)
২৭ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ছাহিবু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, আস সাফফাহ, আল জাব্বারিউল আউওয়াল, আল ক্বউইউল আউওয়াল, হাবীবুল্লাহ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মাওলানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ওয়াজ শরীফ (৮)
২৭ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
দাড়ি ও গোঁফের আহকাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৬)
২৭ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার)