পবিত্র মাহে রমাদ্বান শরীফ উনার ফাযায়িল-ফযীলত (৬)
, ২৬ শাবান শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ০৯ আশির, ১৩৯১ শামসী সন , ০৮ মার্চ, ২০২৪ খ্রি:, ২৪ ফাল্গুন, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
শুরু ও শেষ করা সম্মানিত শরীয়ত উনার নির্দেশ
বান্দার যাবতীয় ইবাদত-বন্দেগী, কর্মপদ্ধতি তথা সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার সর্বপ্রকার সম্মানিত আমলসমূহ আরবী মাসের তারিখ ও সময়ের সাথে সম্পৃক্ত। এক্ষেত্রে চাঁদের সংশ্লিষ্টতা অপরিহার্য। সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার বিশেষ বিশেষ দিবস এবং আমলসমূহ বিভিন্ন মাসের সাথে সংশ্লিষ্ট। যেমন: সম্মানিত নামায, রোযা, হজ্জ, যাকাত, ঈদ, আশূরা, লাইলাতুল ক্বদর, লাইলাতুল বরাত, লাইলাতুর রগাইব, সর্বোপরি সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ পবিত্র ঈদে বিলাদতে রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
যেমন পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
حَضْرَتْ اَبَا الْبَخْتَرِيّ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ قَالَ اَهْلَلْنَا رَمَضَانَ وَنَـحْنُ بِذَاتِ عِرْقٍ فَاَرْسَلْنَا رَجُلًا اِلَى حَضْرَتْ اِبْنِ عَبَّاسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ يَسْاَلُهُ فَقَالَ حَضْرَتْ اِبْنُ عَبَّاسٍ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِنَّ اللهَ تَعَالٰى قَدْ اَمَدَّهُ لِرُؤْيَـتِهِ فَاِنْ اُغْمِيَ عَلَيْكُمْ فَاَكْمِلُوا الْعِدَّةَ.
অর্থ : হযরত আবুল বাখতারী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা যখন যাতু ‘ইর্ক্ব নামক স্থানে অবস্থান করছিলাম তখন পবিত্র রমাদ্বান শরীফ উনার চাঁদ দেখতে পেলাম। অতঃপর আমরা এক ব্যক্তিকে হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার কাছে এ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করার জন্য পাঠালাম। হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বললেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি চাঁদ দেখার সাথে মাস নির্ধারণ করেছেন, যদি তোমাদের নিকট (চাঁদ) অপ্রকাশিত থাকে (মেঘের কারণে) তাহলে তোমরা (৩০ দিনে) মাস পূর্ণ করো। (মুসলিম শরীফ : কিতাবুছ ছিয়াম : বাবু বায়াতি আন্নাহু লা’ তিবারা বি কুবরিল হিলালি ওয়া সিগারিহি ওয়া আন্নালাহু তায়ালা আমাদ্দাহু লির রুইয়াতি ফা ইন গুম্মা ফাল ইয়ুকমাল ছালাছুনা : হাদীছ শরীফ নং ১০৮৮, মিশকাত শরীফ)
উপরোল্লিখিত প্রতিটি দিবসই চাঁদের সাথে সংশ্লিষ্ট। চাঁদ উঠার মাধ্যমে মাস শুরু হওয়ার পরই এ সকল মহিমান্বিত দিবস এবং আমলসমূহের দিবস নির্ধারিত হয়ে থাকে। আর পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ দ্বারাই চাঁদ দেখে সংশ্লিষ্ট আমলসমূহ পালন করার নির্দেশ প্রমাণিত। সুতরাং পবিত্র রমাদ্বান শরীফ মাস অবশ্যই নির্ভুলভাবে চাঁদ দেখে শুরু ও শেষ করতে হবে।
যেমন এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اَبِـيْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ صُوْمُوا لِرُؤْيَـتِه وَأَفْطِرُوْا لِرُؤْيَـتِه فَاِنْ غُمَّ عَلَيْكُمْ فَاَكْمِلُوا عِدَّةَ شَعْبَانَ ثَلَاثِيْنَ.
অর্থ : হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, তোমরা চাঁদ দেখে পবিত্র রমাদ্বান শরীফ উনার রোযা রাখো এবং (পবিত্র শাওওয়াল মাস উনার) চাঁদ দেখেই রোযা শেষ করো তথা ঈদ পালন করো। আর যদি আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকায় তোমরা চাঁদ দেখতে না পাও তবে পবিত্র শা’বান শরীফ মাস ৩০ দিনে পূর্ণ করো। (বুখারী শরীফ : কিতাবুছ ছিয়াম : বাবু ক্বউলিন নাবীয়্যি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা ইজা রআইতুমুল হিলালা ফা ছূমূ ওয়া ইজা রআইতুমুহু ফা আফত্বিরু : হাদীছ শরীফ নং ১৯০৯)
মূলত সব মাসের ক্ষেত্রে একই হুকুম। এক্ষেত্রে একদিন আগ-পিছ হলেই উক্ত আমলসমূহ আদায় শুদ্ধ ও গ্রহণযোগ্য হবে না। আরবী মাস ২৯ কিংবা ৩০ দিনে পূর্ণ হয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে প্রতি মাসের ২৯ তারিখ শেষে চাঁদ তালাশ করে তারিখ নির্ধারণ করতে হয়। ২৯ তারিখে চাঁদ দেখা না গেলে সেই মাস ৩০ দিনে পূর্ণ হয়ে থাকে। তারপর থেকে পরবর্তী মাস গণনা শুরু করতে হয়।
সুতরাং এ থেকে বুঝা যায় যে, ইবাদতসমূহ ছহীহ-শুদ্ধভাবে আদায় করার জন্য চাঁদ দেখার গুরুত্ব অপরিসীম।
অতএব, প্রত্যেক এলাকা থেকে কিছু লোককে অবশ্যই চাঁদ তালাশ করতে হবে যা ওয়াজিবে কিফায়া। যদি কেউই তালাশ না করে তাহলে সকলেই ওয়াজিবে কিফায়া তরক করার কারণে কবীরা গুনাহে গুনাহগার হবে।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
فَاسْأَلُوا أَهْلَ الذِّكْرِ إِنْ كُنْتُمْ لَا تَعْلَمُونَ
২৮ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সারাবিশ্বে একই দিনে ঈদ পালন ও রোযা শুরু করার কথা বলার উদ্দেশ্য পবিত্র ঈদ ও পবিত্র রোযাকে নষ্ট করা, যা মূলত মুনাফিকদের একটি ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত (৩১)
২৮ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পবিত্র কুরবানী ও কুরবানীদাতার ফযীলত (২)
২৭ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ছাহিবু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, আস সাফফাহ, আল জাব্বারিউল আউওয়াল, আল ক্বউইউল আউওয়াল, হাবীবুল্লাহ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মাওলানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ওয়াজ শরীফ (৮)
২৭ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
দাড়ি ও গোঁফের আহকাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৬)
২৭ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
জীবানু অস্ত্র ও সাম্রাজ্যবাদীদের জাতি নিধনের ষড়যন্ত্র (২)
২৭ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ত্বাহারাতের ইস্তিব্রা ও ইস্তিন্ক্বার আহকাম
২৬ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ছাহিবু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, আস সাফফাহ, আল জাব্বারিউল আউওয়াল, আল ক্বউইউল আউওয়াল, হাবীবুল্লাহ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মাওলানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ওয়াজ শরীফ (৭)
২৬ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সম্মানিত হাম্বলী মাযহাব উনার প্রতিষ্ঠাতা ও ইমাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সংক্ষিপ্ত সাওয়ানেহ উমরী মুবারক (৩)
২৬ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
“আত তাক্বউইমুশ শামসী”একটি নতুন সৌর সন (২)
২৬ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
আসমাউর রিজাল, জারাহ ওয়াত তা’দীল, উছুলে হাদীছ শরীফ উনার অপব্যাখ্যা করে অসংখ্য ছহীহ হাদীছ শরীফ উনাদেরকে জাল বলছে ওহাবী সালাফীরা (৬)
২৫ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ছাহিবু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, আস সাফফাহ, আল জাব্বারিউল আউওয়াল, আল ক্বউইউল আউওয়াল, হাবীবুল্লাহ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মাওলানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ওয়াজ শরীফ (৫)
২৫ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)